لَعَلَّكَ بَـٰخِعࣱ نَّفۡسَكَ أَلَّا یَكُونُواْ مُؤۡمِنِینَ ﴿٣﴾
তারা মুমিন হচ্ছে না বলে আপনি হয়ত মনোকষ্টে আত্মঘাতী হয়ে পড়বেন।
إِن نَّشَأۡ نُنَزِّلۡ عَلَیۡهِم مِّنَ ٱلسَّمَاۤءِ ءَایَةࣰ فَظَلَّتۡ أَعۡنَـٰقُهُمۡ لَهَا خَـٰضِعِینَ ﴿٤﴾
আমরা ইচ্ছে করলে আসমান থেকে তাদের কাছে এক নিদর্শন নাযিল করতাম, ফলে সেটার প্রতি তাদের ঘাড় বিনত হয়ে পড়ত।
وَمَا یَأۡتِیهِم مِّن ذِكۡرࣲ مِّنَ ٱلرَّحۡمَـٰنِ مُحۡدَثٍ إِلَّا كَانُواْ عَنۡهُ مُعۡرِضِینَ ﴿٥﴾
আর যখনই তাদের কাছে দয়াময়ের কাছ থেকে কোনো নতুন উপদেশ আসে, তখনই তারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
فَقَدۡ كَذَّبُواْ فَسَیَأۡتِیهِمۡ أَنۢبَـٰۤؤُاْ مَا كَانُواْ بِهِۦ یَسۡتَهۡزِءُونَ ﴿٦﴾
অতএব, তারা তো মিথ্যারোপ করেছে। কাজেই তারা যা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত তার প্রকৃত বার্তা তাদের কাছে শীঘ্রই এসে পড়বে।
أَوَلَمۡ یَرَوۡاْ إِلَى ٱلۡأَرۡضِ كَمۡ أَنۢبَتۡنَا فِیهَا مِن كُلِّ زَوۡجࣲ كَرِیمٍ ﴿٧﴾
তারা কি যমীনের দিকে লক্ষ্য করে না? আমরা তাতে প্ৰত্যেক প্রকারের অনেক উৎকৃষ্ট উদ্ভিদ উদ্গত করেছি [১]!
إِنَّ فِی ذَ ٰلِكَ لَـَٔایَةࣰۖ وَمَا كَانَ أَكۡثَرُهُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿٨﴾
নিশ্চয় এতে আছে নিদর্শন, আর তাদের অধিকাংশই মুমিন নয়।
وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلرَّحِیمُ ﴿٩﴾
আর নিশ্চয় আপনার রব, তিনি তো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
وَإِذۡ نَادَىٰ رَبُّكَ مُوسَىٰۤ أَنِ ٱئۡتِ ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿١٠﴾
আর স্মরণ করুন, যখন আপনার রব মূসাকে ডেকে বললেন, ‘আপনি যালিম সম্পপ্রদায়ের কাছে যান,
قَوۡمَ فِرۡعَوۡنَۚ أَلَا یَتَّقُونَ ﴿١١﴾
‘ফির‘আউনের সম্পপ্রদায়ের কাছে; তারা কি তাকওয়া অবলম্বন করবে না?’
قَالَ رَبِّ إِنِّیۤ أَخَافُ أَن یُكَذِّبُونِ ﴿١٢﴾
মূসা বলেছিলেন, ‘হে আমার রব! আমি আশংকা করছি যে, তারা আমার উপর মিথ্যারোপ করবে,
وَیَضِیقُ صَدۡرِی وَلَا یَنطَلِقُ لِسَانِی فَأَرۡسِلۡ إِلَىٰ هَـٰرُونَ ﴿١٣﴾
‘এবং আমার বক্ষ সংকুচিত হয়ে পড়ছে, আর আমার জিহ্বা তো সাবলীল নেই। কাজেই হারূনের প্রতিও ওহী পাঠান।
وَلَهُمۡ عَلَیَّ ذَنۢبࣱ فَأَخَافُ أَن یَقۡتُلُونِ ﴿١٤﴾
‘আর আমার বিরুদ্ধে তো তাদের এক অভিযোগ আছে, সুতরাং আমি আশংকা করছি যে, তারা আমাকে হত্যা করবে।’
قَالَ كَلَّاۖ فَٱذۡهَبَا بِـَٔایَـٰتِنَاۤۖ إِنَّا مَعَكُم مُّسۡتَمِعُونَ ﴿١٥﴾
আল্লাহ্ বললেন, ‘না, কখনই নয়, অতএব আপনারা উভয়ে আমাদের নিদর্শনসহ যান, আমরা তো আপনাদের সাথেই আছি, শ্রবণকারী।
فَأۡتِیَا فِرۡعَوۡنَ فَقُولَاۤ إِنَّا رَسُولُ رَبِّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿١٦﴾
‘অতএব, আপনারা উভয়ে ফির‘আউনের কাছে যান এবং বলুন, ‘আমরা তো সৃষ্টিকুলের রবের রাসূল,
أَنۡ أَرۡسِلۡ مَعَنَا بَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ ﴿١٧﴾
যাতে তুমি আমাদের সাথে যেতে দাও বনী ইসরাইলকে [১]।’
قَالَ أَلَمۡ نُرَبِّكَ فِینَا وَلِیدࣰا وَلَبِثۡتَ فِینَا مِنۡ عُمُرِكَ سِنِینَ ﴿١٨﴾
ফির‘আউন বলল, ‘আমরা কি তোমাকে শৈশবে আমাদের মধ্যে লালন-পালন করিনি? আর তুমি তো তোমার জীবনের বহু বছর আমাদের মধ্যে কাটিয়েছ,
وَفَعَلۡتَ فَعۡلَتَكَ ٱلَّتِی فَعَلۡتَ وَأَنتَ مِنَ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿١٩﴾
‘এবং তুমি তোমার কাজ যা করার তা করেছ; তুমি তো অকৃতজ্ঞ।’
قَالَ فَعَلۡتُهَاۤ إِذࣰا وَأَنَا۠ مِنَ ٱلضَّاۤلِّینَ ﴿٢٠﴾
মূসা বললেন, ‘আমি তো এটা করেছিলাম তখন, যখন আমি ছিলাম বিভ্ৰান্ত’ [২]।
فَفَرَرۡتُ مِنكُمۡ لَمَّا خِفۡتُكُمۡ فَوَهَبَ لِی رَبِّی حُكۡمࣰا وَجَعَلَنِی مِنَ ٱلۡمُرۡسَلِینَ ﴿٢١﴾
‘তারপর আমি যখন তোমাদের ভয়ে ভীত হলাম তখন আমি তোমাদের কাছ থেকে পালিয়ে গিয়েছিলাম। এরপর আমার রব আমাকে প্রজ্ঞা (নবুওয়ত) দিয়েছেন এবং আমাকে রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
وَتِلۡكَ نِعۡمَةࣱ تَمُنُّهَا عَلَیَّ أَنۡ عَبَّدتَّ بَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ ﴿٢٢﴾
‘আর আমার প্রতি তোমার যে অনুগ্রহের কথা উল্লেখ করে তুমি দয়া দেখাচ্ছ তা তো এই যে, তুমি বনী ইসরাঈলকে দাসে পরিণত করেছ [১] ।’
قَالَ رَبُّ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا بَیۡنَهُمَاۤۖ إِن كُنتُم مُّوقِنِینَ ﴿٢٤﴾
মূসা বললেন, ‘তিনি আসমানসমূহ ও যমীন এবং তাদের মধ্যবর্তী সব কিছুর রব, যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাসী হও।’
قَالَ لِمَنۡ حَوۡلَهُۥۤ أَلَا تَسۡتَمِعُونَ ﴿٢٥﴾
ফির‘আউন তার আশেপাশের লোকদের লক্ষ করে বলল, ‘তোমরা কি ভাল করে শুনছ না?’
قَالَ رَبُّكُمۡ وَرَبُّ ءَابَاۤىِٕكُمُ ٱلۡأَوَّلِینَ ﴿٢٦﴾
মূসা বললেন, ‘তিনি তোমাদের রব এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদেরও রব।’
قَالَ إِنَّ رَسُولَكُمُ ٱلَّذِیۤ أُرۡسِلَ إِلَیۡكُمۡ لَمَجۡنُونࣱ ﴿٢٧﴾
ফির‘আউন বলল, ‘তোমাদের প্রতি প্রেরিত তোমাদের রাসূল তো অবশ্যই পাগল।’
قَالَ رَبُّ ٱلۡمَشۡرِقِ وَٱلۡمَغۡرِبِ وَمَا بَیۡنَهُمَاۤۖ إِن كُنتُمۡ تَعۡقِلُونَ ﴿٢٨﴾
মূসা বললেন, ‘তিনি পূর্ব ও পশ্চিমের এবং তাদের মধ্যবর্তী সব কিছুর রব; যদি তোমরা বুঝে থাকো!’
قَالَ لَىِٕنِ ٱتَّخَذۡتَ إِلَـٰهًا غَیۡرِی لَأَجۡعَلَنَّكَ مِنَ ٱلۡمَسۡجُونِینَ ﴿٢٩﴾
ফির‘আউন বলল, ‘তুমি যদি আমার পরিবর্তে অন্যকে ইলাহরূপে গ্ৰহণ কর আমি তোমাকে অবশ্যই কারারুদ্ধ করব।’
قَالَ أَوَلَوۡ جِئۡتُكَ بِشَیۡءࣲ مُّبِینࣲ ﴿٣٠﴾
মূসা বললেন, ‘আমি যদি তোমার কাছে কোনো স্পষ্ট বিষয় নিয়ে আসি, তবুও [১]?’
قَالَ فَأۡتِ بِهِۦۤ إِن كُنتَ مِنَ ٱلصَّـٰدِقِینَ ﴿٣١﴾
ফির‘আউন বলল, ‘তুমি যদি সত্যবাদী হও তবে তা উপস্থিত কর।’
فَأَلۡقَىٰ عَصَاهُ فَإِذَا هِیَ ثُعۡبَانࣱ مُّبِینࣱ ﴿٣٢﴾
তারপর মূসা তাঁর লাঠি নিক্ষেপ করলে তৎক্ষণাৎ তা এক স্পষ্ট অজগরে [১] পরিণত হল।
وَنَزَعَ یَدَهُۥ فَإِذَا هِیَ بَیۡضَاۤءُ لِلنَّـٰظِرِینَ ﴿٣٣﴾
আর মূসা তার হাত বের করলে তৎক্ষনাৎ তা দর্শকদের দৃষ্টিতে শুভ্র উজ্জ্বল প্রতিভাত হল।
قَالَ لِلۡمَلَإِ حَوۡلَهُۥۤ إِنَّ هَـٰذَا لَسَـٰحِرٌ عَلِیمࣱ ﴿٣٤﴾
ফির‘আউন তার আশেপাশের পরিষদবৰ্গকে বলল, ‘এ তো এক সুদক্ষ জাদুকর!
یُرِیدُ أَن یُخۡرِجَكُم مِّنۡ أَرۡضِكُم بِسِحۡرِهِۦ فَمَاذَا تَأۡمُرُونَ ﴿٣٥﴾
‘সে তোমাদেরকে তোমাদের দেশ থেকে তার জাদুবলে বহিস্কৃত করতে চায়। এখন তোমরা কী করতে বল?’
قَالُوۤاْ أَرۡجِهۡ وَأَخَاهُ وَٱبۡعَثۡ فِی ٱلۡمَدَاۤىِٕنِ حَـٰشِرِینَ ﴿٣٦﴾
তারা বলল, ‘তাকে ও তার ভাইকে কিছু অবকাশ দাও এবং নগরে নগরে সংগ্রাহকদেরকে পাঠাও,
فَجُمِعَ ٱلسَّحَرَةُ لِمِیقَـٰتِ یَوۡمࣲ مَّعۡلُومࣲ ﴿٣٨﴾
অতঃপর এক নির্ধারিত দিনে নির্দিষ্ট সময়ে জাদুকরদেরকে একত্র করা হল,
لَعَلَّنَا نَتَّبِعُ ٱلسَّحَرَةَ إِن كَانُواْ هُمُ ٱلۡغَـٰلِبِینَ ﴿٤٠﴾
‘যেন আমরা জাদুকরদের অনুসরণ করতে পারি, যদি তারা বিজয়ী হয়।’
فَلَمَّا جَاۤءَ ٱلسَّحَرَةُ قَالُواْ لِفِرۡعَوۡنَ أَىِٕنَّ لَنَا لَأَجۡرًا إِن كُنَّا نَحۡنُ ٱلۡغَـٰلِبِینَ ﴿٤١﴾
অতঃপর জাদুকরেরা এসে ফির‘আউনকে বলল, ‘আমরা যদি বিজয়ী হই আমাদের জন্য পুরস্কার থাকবে তো?’
قَالَ نَعَمۡ وَإِنَّكُمۡ إِذࣰا لَّمِنَ ٱلۡمُقَرَّبِینَ ﴿٤٢﴾
ফির‘আউন বলল, ‘হ্যাঁ, তখন তো তোমরা অবশ্যই আমার ঘনিষ্ঠদের শামিল হবে।’
قَالَ لَهُم مُّوسَىٰۤ أَلۡقُواْ مَاۤ أَنتُم مُّلۡقُونَ ﴿٤٣﴾
মূসা তাদেরকে বললেন, ‘তোমরা যা নিক্ষেপ করার তা নিক্ষেপ কর।’
فَأَلۡقَوۡاْ حِبَالَهُمۡ وَعِصِیَّهُمۡ وَقَالُواْ بِعِزَّةِ فِرۡعَوۡنَ إِنَّا لَنَحۡنُ ٱلۡغَـٰلِبُونَ ﴿٤٤﴾
অতঃপর তারা তাদের রশি ও লাঠি নিক্ষেপ করল এবং তারা বলল, ‘ফির‘আউনের ইযযতের শপথ! আমরাই তো বিজয়ী হব।’
فَأَلۡقَىٰ مُوسَىٰ عَصَاهُ فَإِذَا هِیَ تَلۡقَفُ مَا یَأۡفِكُونَ ﴿٤٥﴾
অতঃপর মূসা তার লাঠি নিক্ষেপ করলেন, সহসা সেটা তাদের অলীক কীর্তিগুলোকে গ্ৰাস করতে লাগল।
قَالُوۤاْ ءَامَنَّا بِرَبِّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿٤٧﴾
তারা বলল, ‘আমরা ঈমান আনলাম সৃষ্টিকুলের রবের প্রতি---
قَالَ ءَامَنتُمۡ لَهُۥ قَبۡلَ أَنۡ ءَاذَنَ لَكُمۡۖ إِنَّهُۥ لَكَبِیرُكُمُ ٱلَّذِی عَلَّمَكُمُ ٱلسِّحۡرَ فَلَسَوۡفَ تَعۡلَمُونَۚ لَأُقَطِّعَنَّ أَیۡدِیَكُمۡ وَأَرۡجُلَكُم مِّنۡ خِلَـٰفࣲ وَلَأُصَلِّبَنَّكُمۡ أَجۡمَعِینَ ﴿٤٩﴾
ফির‘আউন বলল, ‘কী! আমি তোমাদেরকে অনুমতি দেয়ার আগেই তোমরা তার প্রতি বিশ্বাস করলে? সে-ই তো তোমাদের প্রধান যে তোমাদেরকে জাদু শিক্ষা দিয়েছে। সুতরাং শীঘ্রই তোমরা এর পরিণাম জানবে। আমি অবশ্যই তোমাদের হাত এবং তোমাদের পা বিপরীত দিক থেকে কেটে ফেলব এবং তোমাদের সবাইকে শূলবিদ্ধ করবই।’
قَالُواْ لَا ضَیۡرَۖ إِنَّاۤ إِلَىٰ رَبِّنَا مُنقَلِبُونَ ﴿٥٠﴾
তারা বলল, ‘কোনো ক্ষতি নেই [১], আমরা তো আমাদের রবের কাছেই প্রত্যাবর্তনকারী।
إِنَّا نَطۡمَعُ أَن یَغۡفِرَ لَنَا رَبُّنَا خَطَـٰیَـٰنَاۤ أَن كُنَّاۤ أَوَّلَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿٥١﴾
আমরা আশা করি যে, আমাদের রব আমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন, কারণ আমরা মুমিনদের মধ্যে অগ্রণী।’
۞ وَأَوۡحَیۡنَاۤ إِلَىٰ مُوسَىٰۤ أَنۡ أَسۡرِ بِعِبَادِیۤ إِنَّكُم مُّتَّبَعُونَ ﴿٥٢﴾
আর আমরা মূসার প্রতি ওহী করেছিলাম এ মর্মে যে, ‘আমার বান্দাদেরকে নিয়ে রাতে বের হউন [১], অবশ্যই তোমাদের পশ্চাদ্ধাবন করা হবে।’
فَأَرۡسَلَ فِرۡعَوۡنُ فِی ٱلۡمَدَاۤىِٕنِ حَـٰشِرِینَ ﴿٥٣﴾
তারপর ফির‘আউন শহরে শহরে লোক সংগ্রহকারী পাঠাল,
فَأَخۡرَجۡنَـٰهُم مِّن جَنَّـٰتࣲ وَعُیُونࣲ ﴿٥٧﴾
পরিণামে আমরা ফির‘আউন গোষ্ঠীকে বহিষ্কৃত করলাম তাদের উদ্যানরাজি ও প্রস্রবণ হতে
كَذَ ٰلِكَۖ وَأَوۡرَثۡنَـٰهَا بَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ ﴿٥٩﴾
এরূপই ঘটেছিল এবং আমরা বনী ইসরাঈলকে করেছিলাম এসবের অধিকারী [১]।
فَلَمَّا تَرَ ٰۤءَا ٱلۡجَمۡعَانِ قَالَ أَصۡحَـٰبُ مُوسَىٰۤ إِنَّا لَمُدۡرَكُونَ ﴿٦١﴾
অতঃপর যখন দু‘দল পরস্পরকে দেখল, তখন মূসার সঙ্গীরা বলল, ‘আমরা তো ধরা পড়ে গেলাম!’
قَالَ كَلَّاۤۖ إِنَّ مَعِیَ رَبِّی سَیَهۡدِینِ ﴿٦٢﴾
মূসা বললেন, ‘কখনই নয়! আমার সঙ্গে আছেন আমার রব [১]; সত্বর তিনি আমাকে পথনির্দেশ করবেন।’
فَأَوۡحَیۡنَاۤ إِلَىٰ مُوسَىٰۤ أَنِ ٱضۡرِب بِّعَصَاكَ ٱلۡبَحۡرَۖ فَٱنفَلَقَ فَكَانَ كُلُّ فِرۡقࣲ كَٱلطَّوۡدِ ٱلۡعَظِیمِ ﴿٦٣﴾
অতঃপর আমরা মূসার প্রতি ওহী করলাম যে, আপনার লাঠি দ্বারা সাগরে আঘাত করুন। ফলে তা বিভক্ত প্ৰত্যেক ভাগ বিশাল পর্বতের মত হয়ে গেল [১];
إِنَّ فِی ذَ ٰلِكَ لَـَٔایَةࣰۖ وَمَا كَانَ أَكۡثَرُهُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿٦٧﴾
এতে তো অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই মুমিন নয়।
إِذۡ قَالَ لِأَبِیهِ وَقَوۡمِهِۦ مَا تَعۡبُدُونَ ﴿٧٠﴾
যখন তিনি তার পিতা ও তার সম্প্রদায়কে বলেছিলেন, ‘তোমরা কিসের ইবাদাত করা?’
قَالُواْ نَعۡبُدُ أَصۡنَامࣰا فَنَظَلُّ لَهَا عَـٰكِفِینَ ﴿٧١﴾
তারা বলল, ‘আমরা মূর্তির পূজা করি সুতরাং আমরা নিষ্ঠার সাথে সেগুলোকে আঁকড়ে থাকব।’
قَالَ هَلۡ یَسۡمَعُونَكُمۡ إِذۡ تَدۡعُونَ ﴿٧٢﴾
তিনি বললেন, ‘তোমরা যখন আহ্বান কর তখন তারা তোমাদের আহ্বান শোনে কি?’
قَالُواْ بَلۡ وَجَدۡنَاۤ ءَابَاۤءَنَا كَذَ ٰلِكَ یَفۡعَلُونَ ﴿٧٤﴾
তারা বলল, ‘না, তবে আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে পেয়েছি, তারা এরূপই করত।’
قَالَ أَفَرَءَیۡتُم مَّا كُنتُمۡ تَعۡبُدُونَ ﴿٧٥﴾
ইবরাহীম বললেন, ‘তোমরা কি ভাবে দেখেছ, যাদের ‘ইবাদাত তোমরা করে থাক,
فَإِنَّهُمۡ عَدُوࣱّ لِّیۤ إِلَّا رَبَّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿٧٧﴾
সৃষ্টিকুলের রব ব্যতীত এরা সবাই তো আমার শত্ৰু।
ٱلَّذِی خَلَقَنِی فَهُوَ یَهۡدِینِ ﴿٧٨﴾
‘যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনিই আমাকে হেদায়াত দিয়েছেন।
وَإِذَا مَرِضۡتُ فَهُوَ یَشۡفِینِ ﴿٨٠﴾
‘এবং রোগাক্রান্ত হলে তিনিই আমাকে আরোগ্য দান করেন [১];
وَٱلَّذِی یُمِیتُنِی ثُمَّ یُحۡیِینِ ﴿٨١﴾
‘আর তিনিই আমার মৃত্যু ঘটাবেন, তারপর আমাকে পুনর্জীবিত করবেন।
وَٱلَّذِیۤ أَطۡمَعُ أَن یَغۡفِرَ لِی خَطِیۤـَٔتِی یَوۡمَ ٱلدِّینِ ﴿٨٢﴾
‘এবং যার কাছে আশা করি যে, তিনি কিয়ামতের দিন আমার অপরাধ ক্ষমা করে দেবেন।
رَبِّ هَبۡ لِی حُكۡمࣰا وَأَلۡحِقۡنِی بِٱلصَّـٰلِحِینَ ﴿٨٣﴾
‘হে আমার রব! আমাকে প্রজ্ঞা দান করুন এবং সৎকর্মশীলদের সাথে মিলিয়ে দিন।
وَٱجۡعَل لِّی لِسَانَ صِدۡقࣲ فِی ٱلۡـَٔاخِرِینَ ﴿٨٤﴾
‘আর আমাকে পরবর্তীদের মধ্যে যশস্বী করুন [১],
وَٱجۡعَلۡنِی مِن وَرَثَةِ جَنَّةِ ٱلنَّعِیمِ ﴿٨٥﴾
‘এবং আমাকে সুখময় জান্নাতের অধিকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন,
وَٱغۡفِرۡ لِأَبِیۤ إِنَّهُۥ كَانَ مِنَ ٱلضَّاۤلِّینَ ﴿٨٦﴾
‘আর আমার পিতাকে ক্ষমা করুন, তিনি তো পথভ্রষ্টদের শামিল ছিলেন [১]।
وَلَا تُخۡزِنِی یَوۡمَ یُبۡعَثُونَ ﴿٨٧﴾
‘এবং আমাকে লাঞ্ছিত করবেন না পুনরুত্থানের দিনে [২]
إِلَّا مَنۡ أَتَى ٱللَّهَ بِقَلۡبࣲ سَلِیمࣲ ﴿٨٩﴾
‘সে দিন উপকৃত হবে শুধু সে, যে আল্লাহ্র কাছে আসবে বিশুদ্ধ অন্তঃকরণ নিয়ে।’
وَبُرِّزَتِ ٱلۡجَحِیمُ لِلۡغَاوِینَ ﴿٩١﴾
এবং পথভ্রষ্টদের জন্য উন্মোচিত করা হবে জাহান্নাম [১];
وَقِیلَ لَهُمۡ أَیۡنَ مَا كُنتُمۡ تَعۡبُدُونَ ﴿٩٢﴾
তাদেরকে বলা হবে, ‘তারা কোথায়, তোমরা যাদের ‘ইবাদাত করতে---
مِن دُونِ ٱللَّهِ هَلۡ یَنصُرُونَكُمۡ أَوۡ یَنتَصِرُونَ ﴿٩٣﴾
‘আল্লাহ্র পরিবর্তে? তারা কি তোমাদের সাহায্য করতে পারে অথবা তারা কি আত্মরক্ষা করতে সক্ষম?’
فَكُبۡكِبُواْ فِیهَا هُمۡ وَٱلۡغَاوُۥنَ ﴿٩٤﴾
অতঃপর তাদেরকে এবং পথ ভ্ৰষ্টকারীদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে অধোমুখী করে [১],
تَٱللَّهِ إِن كُنَّا لَفِی ضَلَـٰلࣲ مُّبِینٍ ﴿٩٧﴾
‘আল্লাহ্র শপথ! আমরা তো স্পষ্ট পথভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত ছিলাম,’
إِذۡ نُسَوِّیكُم بِرَبِّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿٩٨﴾
‘যখন আমরা তোমাদেরকে সৃষ্টিকুলের রবের সমকক্ষ গণ্য করতাম।
فَلَوۡ أَنَّ لَنَا كَرَّةࣰ فَنَكُونَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿١٠٢﴾
‘হায়, যদি আমাদের একবার ফিরে যাওয়ার সুযোগ ঘটত, তাহলে আমরা মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যেতাম [১]!’
إِنَّ فِی ذَ ٰلِكَ لَـَٔایَةࣰۖ وَمَا كَانَ أَكۡثَرُهُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿١٠٣﴾
এতে তো অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই মুমিন নয়।
إِذۡ قَالَ لَهُمۡ أَخُوهُمۡ نُوحٌ أَلَا تَتَّقُونَ ﴿١٠٦﴾
যখন তাদের ভাই নূহ তাদেরকে বলেছিলেন, ‘তোমরা কি তাকওয়া অবলম্বন করবে না?
فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَأَطِیعُونِ ﴿١٠٨﴾
‘অতএব, তোমরা আল্লাহ্র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর [১]।
وَمَاۤ أَسۡـَٔلُكُمۡ عَلَیۡهِ مِنۡ أَجۡرٍۖ إِنۡ أَجۡرِیَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿١٠٩﴾
‘আর আমি তোমাদের কাছে এর জন্য কোনো প্রতিদান চাই না; আমার পুরস্কার তো সৃষ্টিকুলের রবের কাছেই আছে।
فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَأَطِیعُونِ ﴿١١٠﴾
‘কাজেই তোমরা আল্লাহ্র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর।’
۞ قَالُوۤاْ أَنُؤۡمِنُ لَكَ وَٱتَّبَعَكَ ٱلۡأَرۡذَلُونَ ﴿١١١﴾
তারা বলল, ‘আমরা কি তোমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করব অথচ ইতরজনেরা তোমার অনুসরণ করছে?’
قَالَ وَمَا عِلۡمِی بِمَا كَانُواْ یَعۡمَلُونَ ﴿١١٢﴾
নূহ বললেন, ‘তারা কী করত তা আমার জানার কি দরকার?’
إِنۡ حِسَابُهُمۡ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّیۖ لَوۡ تَشۡعُرُونَ ﴿١١٣﴾
‘তাদের হিসেব গ্রহণ তো আমার রবেরই কাজ; যদি তোমরা বুঝতে!
قَالُواْ لَىِٕن لَّمۡ تَنتَهِ یَـٰنُوحُ لَتَكُونَنَّ مِنَ ٱلۡمَرۡجُومِینَ ﴿١١٦﴾
তারা বলল, ‘হে নূহ! তুমি যদি নিবৃত্ত না হও তবে তুমি অবশ্যই পাথরের আঘাতে নিহতদের মধ্যে শামিল হবে।’
قَالَ رَبِّ إِنَّ قَوۡمِی كَذَّبُونِ ﴿١١٧﴾
নূহ বললেন, ‘হে আমার রব! আমার সম্প্রদায় তো আমার উপর মিথ্যারোপ করেছে।
فَٱفۡتَحۡ بَیۡنِی وَبَیۡنَهُمۡ فَتۡحࣰا وَنَجِّنِی وَمَن مَّعِیَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿١١٨﴾
কাজেই আপনি আমার ও তাদের মধ্যে স্পষ্ট মীমাংসা করে দিন এবং আমাকে ও আমার সাথে যেসব মুমিন আছে, তাদেরকে রক্ষা করুন [১]।’
فَأَنجَیۡنَـٰهُ وَمَن مَّعَهُۥ فِی ٱلۡفُلۡكِ ٱلۡمَشۡحُونِ ﴿١١٩﴾
অতঃপর আমরা তাকে ও তার সঙ্গে যারা ছিল, তাদেরকে রক্ষা করলাম বোঝাই নৌযানে [১]।
إِنَّ فِی ذَ ٰلِكَ لَـَٔایَةࣰۖ وَمَا كَانَ أَكۡثَرُهُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿١٢١﴾
এতে তো অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই ঈমানদার নয়।
إِذۡ قَالَ لَهُمۡ أَخُوهُمۡ هُودٌ أَلَا تَتَّقُونَ ﴿١٢٤﴾
যখন তাদের ভাই হূদ তাদেরকে বললেন, ‘তোমরা কি তাকওয়া অবলম্বন করবে না?
فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَأَطِیعُونِ ﴿١٢٦﴾
‘অতএব, তোমরা আল্লাহ্র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর।
وَمَاۤ أَسۡـَٔلُكُمۡ عَلَیۡهِ مِنۡ أَجۡرٍۖ إِنۡ أَجۡرِیَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿١٢٧﴾
‘আর আমি তোমাদের কাছে এর জন্য কোনো প্রতিদান চাই না, আমার পুরস্কার তো সৃষ্টিকুলের রবের কাছেই।
أَتَبۡنُونَ بِكُلِّ رِیعٍ ءَایَةࣰ تَعۡبَثُونَ ﴿١٢٨﴾
‘তোমরা কি প্রতিটি উচ্চ স্থানে [১] স্তম্ভ নির্মাণ করছ নিরর্থক [২]?
وَتَتَّخِذُونَ مَصَانِعَ لَعَلَّكُمۡ تَخۡلُدُونَ ﴿١٢٩﴾
‘আর তোমরা প্রাসাদসমূহ [১] নির্মাণ করছ যেন তোমরা স্থায়ী হবে [২]।
وَإِذَا بَطَشۡتُم بَطَشۡتُمۡ جَبَّارِینَ ﴿١٣٠﴾
আর যখন তোমরা আঘাত হান তখন আঘাত হেনে থাক স্বেচ্ছাচারী হয়ে।
فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَأَطِیعُونِ ﴿١٣١﴾
সুতরাং তোমরা আল্লাহ্র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর।
وَٱتَّقُواْ ٱلَّذِیۤ أَمَدَّكُم بِمَا تَعۡلَمُونَ ﴿١٣٢﴾
আর তোমরা তাঁর তাকওয়া অবলম্বন কর যিনি তোমাদেরকে দান করেছেন সে সমুদয়, যা তোমরা জান।
إِنِّیۤ أَخَافُ عَلَیۡكُمۡ عَذَابَ یَوۡمٍ عَظِیمࣲ ﴿١٣٥﴾
‘আমি তো তোমাদের জন্য আশংকা করি মহাদিনের শাস্তির।’
قَالُواْ سَوَاۤءٌ عَلَیۡنَاۤ أَوَعَظۡتَ أَمۡ لَمۡ تَكُن مِّنَ ٱلۡوَ ٰعِظِینَ ﴿١٣٦﴾
তারা বলল, ‘তুমি উপদেশ দাও বা না-ই দাও, উভয়ই আমাদের জন্য সমান।
فَكَذَّبُوهُ فَأَهۡلَكۡنَـٰهُمۡۚ إِنَّ فِی ذَ ٰلِكَ لَـَٔایَةࣰۖ وَمَا كَانَ أَكۡثَرُهُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿١٣٩﴾
সুতরাং তারা তার প্রতি মিথ্যারোপ করল ফলে আমরা তাদেরকে ধ্বংস করলাম। এতে তো অবশ্যই আছে নিদর্শন; কিন্তু তাদের অধিকাংশই মুমিন নয় [১]।
إِذۡ قَالَ لَهُمۡ أَخُوهُمۡ صَـٰلِحٌ أَلَا تَتَّقُونَ ﴿١٤٢﴾
যখন তাদের ভাই সালিহ তাদেরকে বললেন, ‘তোমরা কি তাকওয়া অবলম্বন করবে না?
فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَأَطِیعُونِ ﴿١٤٤﴾
সুতরাং তোমরা আল্লাহ্র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর,
وَمَاۤ أَسۡـَٔلُكُمۡ عَلَیۡهِ مِنۡ أَجۡرٍۖ إِنۡ أَجۡرِیَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿١٤٥﴾
‘আর আমি তোমাদের কাছে এর জন্য কোনো প্রতিদান চাই না, আমার প্রতিদান তো সৃষ্টিকুলের রবের কাছেই আছে।
أَتُتۡرَكُونَ فِی مَا هَـٰهُنَاۤ ءَامِنِینَ ﴿١٤٦﴾
‘তোমাদেরকে কি নিরাপদ অবস্থায় ছেড়ে রাখা হবে, যা এখানে আছে তাতে-
وَتَنۡحِتُونَ مِنَ ٱلۡجِبَالِ بُیُوتࣰا فَـٰرِهِینَ ﴿١٤٩﴾
‘আর তোমরা নৈপুণ্যের সাথে পাহাড় কেটে ঘর নির্মাণ করছ।
فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَأَطِیعُونِ ﴿١٥٠﴾
সুতরাং তোমরা আল্লাহ্র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর
ٱلَّذِینَ یُفۡسِدُونَ فِی ٱلۡأَرۡضِ وَلَا یُصۡلِحُونَ ﴿١٥٢﴾
‘যারা যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে এবং সংশোধন করে না।’
مَاۤ أَنتَ إِلَّا بَشَرࣱ مِّثۡلُنَا فَأۡتِ بِـَٔایَةٍ إِن كُنتَ مِنَ ٱلصَّـٰدِقِینَ ﴿١٥٤﴾
‘তুমি তো আমাদের মতই একজন মানুষ, কাজেই তুমি যদি সত্যবাদী হও তবে একটি নিদর্শন উপস্থিত কর।’
قَالَ هَـٰذِهِۦ نَاقَةࣱ لَّهَا شِرۡبࣱ وَلَكُمۡ شِرۡبُ یَوۡمࣲ مَّعۡلُومࣲ ﴿١٥٥﴾
সালিহ বললেন, ‘এটা একটা উষ্ট্ৰী, এর জন্য আছে পানি পানের পালা এবং তোমাদের জন্য আছে নির্ধারিত দিনে পানি পানের পালা;
وَلَا تَمَسُّوهَا بِسُوۤءࣲ فَیَأۡخُذَكُمۡ عَذَابُ یَوۡمٍ عَظِیمࣲ ﴿١٥٦﴾
‘আর তোমরা এর কোনো অনিষ্ট সাধন করো না; করলে মহাদিনের শাস্তি তোমাদের উপর আপতিত হবে।’
فَأَخَذَهُمُ ٱلۡعَذَابُۚ إِنَّ فِی ذَ ٰلِكَ لَـَٔایَةࣰۖ وَمَا كَانَ أَكۡثَرُهُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿١٥٨﴾
অতঃপর শাস্তি তাদেরকে গ্ৰাস করল। এতে অবশ্যই রয়েছে নিদর্শন, কিন্তু তাদের অধিকাংশই মুমিন নয়।
إِذۡ قَالَ لَهُمۡ أَخُوهُمۡ لُوطٌ أَلَا تَتَّقُونَ ﴿١٦١﴾
যখন তাদের ভাই লূত তাদেরকে বললেন, ‘তোমরা কি তাকওয়া অবলম্বন করবে না?
فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَأَطِیعُونِ ﴿١٦٣﴾
‘কাজেই তোমরা আল্লাহ্র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর।
وَمَاۤ أَسۡـَٔلُكُمۡ عَلَیۡهِ مِنۡ أَجۡرٍۖ إِنۡ أَجۡرِیَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿١٦٤﴾
‘আর আমি এর জন্য তোমাদের কাছে কোনো প্রতিদান চাই না, আমার প্রতিদান তো সৃষ্টিকুলের রবের কাছেই আছে।
أَتَأۡتُونَ ٱلذُّكۡرَانَ مِنَ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿١٦٥﴾
‘সৃষ্টিকুলের মধ্যে তো তোমরাই কি পুরুষের সাথে উপগত হও?
وَتَذَرُونَ مَا خَلَقَ لَكُمۡ رَبُّكُم مِّنۡ أَزۡوَ ٰجِكُمۚ بَلۡ أَنتُمۡ قَوۡمٌ عَادُونَ ﴿١٦٦﴾
‘আর তোমাদের রব তোমাদের জন্য যে স্ত্রীগণকে সৃষ্টি করেছেন তাদেরকে তোমরা বর্জন করে থাক। বরং তোমরা তো এক সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়।’
قَالُواْ لَىِٕن لَّمۡ تَنتَهِ یَـٰلُوطُ لَتَكُونَنَّ مِنَ ٱلۡمُخۡرَجِینَ ﴿١٦٧﴾
তারা বলল, ‘হে লূত! তুমি যদি নিবৃত্ত না হও, তবে অবশ্যই তুমি নির্বাসিত হবে।’
رَبِّ نَجِّنِی وَأَهۡلِی مِمَّا یَعۡمَلُونَ ﴿١٦٩﴾
‘হে আমার রব! আমাকে এবং আমার পরিবার-পরিজনকে, তারা যা করে তা থেকে রক্ষা করুন।’
فَنَجَّیۡنَـٰهُ وَأَهۡلَهُۥۤ أَجۡمَعِینَ ﴿١٧٠﴾
তারপর আমরা তাকে এবং তার পরিবার-পরিজনকে সকলকে রক্ষা করলাম।
إِلَّا عَجُوزࣰا فِی ٱلۡغَـٰبِرِینَ ﴿١٧١﴾
এক বৃদ্ধা ছাড়া [১], যে ছিল পিছনে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত।
وَأَمۡطَرۡنَا عَلَیۡهِم مَّطَرࣰاۖ فَسَاۤءَ مَطَرُ ٱلۡمُنذَرِینَ ﴿١٧٣﴾
আর আমরা তাদের উপর শাস্তি মূলক বৃষ্টি বর্ষণ করেছিলাম, ভীতি প্রদর্শিতদের জন্য এ বৃষ্টি ছিল কত নিকৃষ্ট [১]!
إِنَّ فِی ذَ ٰلِكَ لَـَٔایَةࣰۖ وَمَا كَانَ أَكۡثَرُهُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿١٧٤﴾
এতে তো অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই মুমিন নয়।
كَذَّبَ أَصۡحَـٰبُ لۡـَٔیۡكَةِ ٱلۡمُرۡسَلِینَ ﴿١٧٦﴾
আইকাবাসীরা [১] রাসূলগণের প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল,
إِذۡ قَالَ لَهُمۡ شُعَیۡبٌ أَلَا تَتَّقُونَ ﴿١٧٧﴾
যখন শু‘আইব তাদেরকে বলেছিলেন, ‘তোমরা কি তাকওয়া অবলম্বন করবে না?
فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَأَطِیعُونِ ﴿١٧٩﴾
‘কাজেই তোমরা আল্লাহ্র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর।
وَمَاۤ أَسۡـَٔلُكُمۡ عَلَیۡهِ مِنۡ أَجۡرٍۖ إِنۡ أَجۡرِیَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿١٨٠﴾
‘আর আমি তোমাদের কাছে এর জন্য কোনো প্রতিদান চাই না। আমার পুরস্কার তো সৃষ্টিকুলের রবের কাছেই আছে।
۞ أَوۡفُواْ ٱلۡكَیۡلَ وَلَا تَكُونُواْ مِنَ ٱلۡمُخۡسِرِینَ ﴿١٨١﴾
‘মাপে পূর্ণ মাত্রায় দেবে; আর যারা মাপে কম দেয় তোমরা তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না
وَلَا تَبۡخَسُواْ ٱلنَّاسَ أَشۡیَاۤءَهُمۡ وَلَا تَعۡثَوۡاْ فِی ٱلۡأَرۡضِ مُفۡسِدِینَ ﴿١٨٣﴾
‘আর লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিও না এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়িও না।
وَٱتَّقُواْ ٱلَّذِی خَلَقَكُمۡ وَٱلۡجِبِلَّةَ ٱلۡأَوَّلِینَ ﴿١٨٤﴾
আর তাঁর তাকওয়া অবলম্বন কর যিনি তোমাদেরকে ও তোমাদের আগে যারা গত হয়েছে তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন।’
وَمَاۤ أَنتَ إِلَّا بَشَرࣱ مِّثۡلُنَا وَإِن نَّظُنُّكَ لَمِنَ ٱلۡكَـٰذِبِینَ ﴿١٨٦﴾
‘আর তুমি তো আমাদের মতই একজন মানুষ, আমরা তো তোমাকে মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত মনে করি।
فَأَسۡقِطۡ عَلَیۡنَا كِسَفࣰا مِّنَ ٱلسَّمَاۤءِ إِن كُنتَ مِنَ ٱلصَّـٰدِقِینَ ﴿١٨٧﴾
‘সুতরাং তুমি যদি সত্যবাদী হও তবে আকাশের এক খণ্ড আমাদের উপর ফেলে দাও।’
فَكَذَّبُوهُ فَأَخَذَهُمۡ عَذَابُ یَوۡمِ ٱلظُّلَّةِۚ إِنَّهُۥ كَانَ عَذَابَ یَوۡمٍ عَظِیمٍ ﴿١٨٩﴾
সুতরাং তারা তার প্রতি মিথ্যারোপ করল, ফলে তাদেরকে মেঘাচ্ছন্ন দিনের শাস্তি গ্রাস করল [১]। এ তো ছিল এক ভীষণ দিনের শাস্তি!
إِنَّ فِی ذَ ٰلِكَ لَـَٔایَةࣰۖ وَمَا كَانَ أَكۡثَرُهُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿١٩٠﴾
এতে তো অবশ্যই রয়েছে নিদর্শন [১], আর তাদের অধিকাংশই মুমিন নয়।
وَإِنَّهُۥ لَتَنزِیلُ رَبِّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿١٩٢﴾
আর নিশ্চয় এটা (আল-কুরআন) সৃষ্টিকুলের রব হতে নাযিলকৃত।
عَلَىٰ قَلۡبِكَ لِتَكُونَ مِنَ ٱلۡمُنذِرِینَ ﴿١٩٤﴾
আপনার হৃদয়ে, যাতে আপনি সতর্ককারীদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন।
بِلِسَانٍ عَرَبِیࣲّ مُّبِینࣲ ﴿١٩٥﴾
সুস্পষ্ট আরবী ভাষায় [১]।
أَوَلَمۡ یَكُن لَّهُمۡ ءَایَةً أَن یَعۡلَمَهُۥ عُلَمَـٰۤؤُاْ بَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ ﴿١٩٧﴾
বনী ইসরাইলের আলেমগণ এ সম্পর্কে জানে---এটা কি তাদের জন্য নিদর্শন নয় [১]?
وَلَوۡ نَزَّلۡنَـٰهُ عَلَىٰ بَعۡضِ ٱلۡأَعۡجَمِینَ ﴿١٩٨﴾
আর আমরা যদি এটা কোনো অনারবের উপর নাযিল করতাম
فَقَرَأَهُۥ عَلَیۡهِم مَّا كَانُواْ بِهِۦ مُؤۡمِنِینَ ﴿١٩٩﴾
এবং এটা সে তাদের কাছে পাঠ করত, তবে তারা তাতে ঈমান আনত না;
كَذَ ٰلِكَ سَلَكۡنَـٰهُ فِی قُلُوبِ ٱلۡمُجۡرِمِینَ ﴿٢٠٠﴾
এভাবে আমরা সেটা অপরাধীদের অন্তরে সঞ্চার করেছি [১]।
لَا یُؤۡمِنُونَ بِهِۦ حَتَّىٰ یَرَوُاْ ٱلۡعَذَابَ ٱلۡأَلِیمَ ﴿٢٠١﴾
তারা এতে ঈমান আনবে না যতক্ষণ না তারা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেখতে পাবে;
فَیَأۡتِیَهُم بَغۡتَةࣰ وَهُمۡ لَا یَشۡعُرُونَ ﴿٢٠٢﴾
সুতরাং তা তাদের কাছে এসে পড়বে হঠাৎ করে; অথচ তারা কিছুই উপলব্ধি করতে পারবে না।
أَفَرَءَیۡتَ إِن مَّتَّعۡنَـٰهُمۡ سِنِینَ ﴿٢٠٥﴾
আপনি ভেবে দেখুন, যদি আমরা তাদেরকে দীর্ঘকাল ভোগ-বিলাস করতে দেই [১],
ثُمَّ جَاۤءَهُم مَّا كَانُواْ یُوعَدُونَ ﴿٢٠٦﴾
তারপর তাদেরকে যে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল তা তাদের কাছে এসে পড়ে,
مَاۤ أَغۡنَىٰ عَنۡهُم مَّا كَانُواْ یُمَتَّعُونَ ﴿٢٠٧﴾
তখন যা তাদের ভোগ-বিলাসের উপকরণ হিসেবে দেয়া হয়েছিল তা তাদের কি উপকারে আসবে?
وَمَاۤ أَهۡلَكۡنَا مِن قَرۡیَةٍ إِلَّا لَهَا مُنذِرُونَ ﴿٢٠٨﴾
আর আমরা এমন কোনো জনপদ ধ্বংস করিনি যার জন্য সতর্ককারী ছিল না [১];
وَمَا یَنۢبَغِی لَهُمۡ وَمَا یَسۡتَطِیعُونَ ﴿٢١١﴾
আর তারা এ কাজের যোগ্যও নয় এবং তারা এর সামর্থ্যও রাখে না।
فَلَا تَدۡعُ مَعَ ٱللَّهِ إِلَـٰهًا ءَاخَرَ فَتَكُونَ مِنَ ٱلۡمُعَذَّبِینَ ﴿٢١٣﴾
অতএব আপনি অন্য কোনো ইলাহকে আল্লাহ্র সাথে ডাকবেন না, ডাকলে আপনি শাস্তিপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবেন।
وَٱخۡفِضۡ جَنَاحَكَ لِمَنِ ٱتَّبَعَكَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿٢١٥﴾
এবং যারা আপনার অনুসরণ করে সেসব মুমিনদের প্রতি আপনার পক্ষপুট অবনত করে দিন।
فَإِنۡ عَصَوۡكَ فَقُلۡ إِنِّی بَرِیۤءࣱ مِّمَّا تَعۡمَلُونَ ﴿٢١٦﴾
অতঃপর তারা যদি আপনার অবাধ্য হয় তাহলে আপনি বলুন, ‘তোমরা যা কর নিশ্চয় আমি তা থেকে দায়মুক্ত।’
وَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱلۡعَزِیزِ ٱلرَّحِیمِ ﴿٢١٧﴾
আর আপনি নির্ভর করুন পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু আল্লাহ্র উপর,
ٱلَّذِی یَرَىٰكَ حِینَ تَقُومُ ﴿٢١٨﴾
যিনি আপনাকে দেখেন যখন আপনি দাঁড়ান [১],
وَتَقَلُّبَكَ فِی ٱلسَّـٰجِدِینَ ﴿٢١٩﴾
এবং সাজদাকারীদের মাঝে আপনার উঠাবসা [১]।
هَلۡ أُنَبِّئُكُمۡ عَلَىٰ مَن تَنَزَّلُ ٱلشَّیَـٰطِینُ ﴿٢٢١﴾
তোমাদেরকে কি আমি জানাব কার কাছে শয়তানরা নাযিল হয়?
تَنَزَّلُ عَلَىٰ كُلِّ أَفَّاكٍ أَثِیمࣲ ﴿٢٢٢﴾
তারা তো নাযিল হয় প্রত্যেকটি ঘোর মিথ্যাবাদী ও পাপীর কাছে।
یُلۡقُونَ ٱلسَّمۡعَ وَأَكۡثَرُهُمۡ كَـٰذِبُونَ ﴿٢٢٣﴾
তারা কান পেতে থাকে এবং তাদের অধিকাংশই মিথ্যাবাদী [১]।
أَلَمۡ تَرَ أَنَّهُمۡ فِی كُلِّ وَادࣲ یَهِیمُونَ ﴿٢٢٥﴾
আপনি কি দেখেন না যে, ওরা উদভ্ৰান্ত হয়ে প্রত্যেক উপত্যকায় ঘুরে বেড়ায়?
إِلَّا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ وَذَكَرُواْ ٱللَّهَ كَثِیرࣰا وَٱنتَصَرُواْ مِنۢ بَعۡدِ مَا ظُلِمُواْۗ وَسَیَعۡلَمُ ٱلَّذِینَ ظَلَمُوۤاْ أَیَّ مُنقَلَبࣲ یَنقَلِبُونَ ﴿٢٢٧﴾
কিন্তু তারা ছাড়া যারা ঈমান এনেছে, সৎকাজ করেছে, আল্লাহ্কে বেশী পরিমাণ স্মরণ করেছে এবং অত্যাচারিত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্ৰহণ করেছে। আর যালিমরা শীঘ্রই ফিরে যাবে জানবে কোন ধরনের গন্তব্যস্থলে তারা ফিরে যাবে।