الۤمۤ ﴿١﴾
আলিফ্-লাম-মীম [১],
ٱللَّهُ لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡحَیُّ ٱلۡقَیُّومُ ﴿٢﴾
আল্লাহ্, তিনি ব্যতীত কোনো প্রকৃত ইলাহ্ নেই [১], তিনি চিরঞ্জীব, সর্বসত্তার রক্ষক[২]।
نَزَّلَ عَلَیۡكَ ٱلۡكِتَـٰبَ بِٱلۡحَقِّ مُصَدِّقࣰا لِّمَا بَیۡنَ یَدَیۡهِ وَأَنزَلَ ٱلتَّوۡرَىٰةَ وَٱلۡإِنجِیلَ ﴿٣﴾
তিনি সত্যসহ আপনার প্রতি কিতাব নাযিল করেছেন, পূর্বে যা এসেছে [১] তার সত্যতা প্রতিপন্নকারীরুপে। আর তিনি নাযিল করেছিলেন তাওরাত ও ইঞ্জীল।
مِن قَبۡلُ هُدࣰى لِّلنَّاسِ وَأَنزَلَ ٱلۡفُرۡقَانَۗ إِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ بِـَٔایَـٰتِ ٱللَّهِ لَهُمۡ عَذَابࣱ شَدِیدࣱۗ وَٱللَّهُ عَزِیزࣱ ذُو ٱنتِقَامٍ ﴿٤﴾
ইতোপূর্বে মানুষের জন্য হেদায়াতসরূপ [১]; আর তিনি ফুরকান নাযিল করেছেন [২]। নিশ্চয় যারা আল্লাহ্র আয়াতসমূহে কুফরী করে তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। আর আল্লাহ্ মহা-পরাক্রমশালী, প্রতিশোধ গ্রহণকারী [৩]।
إِنَّ ٱللَّهَ لَا یَخۡفَىٰ عَلَیۡهِ شَیۡءࣱ فِی ٱلۡأَرۡضِ وَلَا فِی ٱلسَّمَاۤءِ ﴿٥﴾
নিশ্চয় আল্লাহ্, আসমান ও যমীনের কোনো কিছুই তাঁর কাছে গোপন থাকে না [১]।
هُوَ ٱلَّذِی یُصَوِّرُكُمۡ فِی ٱلۡأَرۡحَامِ كَیۡفَ یَشَاۤءُۚ لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلۡحَكِیمُ ﴿٦﴾
তিনিই মাতৃগর্ভে যেভাবে ইচ্ছে তোমাদের আকৃতি গঠন করেন [১]। তিনি ছাড়া অন্য কোনো সত্য ইলাহ্ নেই; (তিনি) প্রবল পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
هُوَ ٱلَّذِیۤ أَنزَلَ عَلَیۡكَ ٱلۡكِتَـٰبَ مِنۡهُ ءَایَـٰتࣱ مُّحۡكَمَـٰتٌ هُنَّ أُمُّ ٱلۡكِتَـٰبِ وَأُخَرُ مُتَشَـٰبِهَـٰتࣱۖ فَأَمَّا ٱلَّذِینَ فِی قُلُوبِهِمۡ زَیۡغࣱ فَیَتَّبِعُونَ مَا تَشَـٰبَهَ مِنۡهُ ٱبۡتِغَاۤءَ ٱلۡفِتۡنَةِ وَٱبۡتِغَاۤءَ تَأۡوِیلِهِۦۖ وَمَا یَعۡلَمُ تَأۡوِیلَهُۥۤ إِلَّا ٱللَّهُۗ وَٱلرَّ ٰسِخُونَ فِی ٱلۡعِلۡمِ یَقُولُونَ ءَامَنَّا بِهِۦ كُلࣱّ مِّنۡ عِندِ رَبِّنَاۗ وَمَا یَذَّكَّرُ إِلَّاۤ أُوْلُواْ ٱلۡأَلۡبَـٰبِ ﴿٧﴾
তিনিই আপনার প্রতি এই কিতাব নাযিল করেছেন যার কিছু আয়াত ‘মুহ্কাম’, এগুলো কিতাবের মূল; আর অন্যগুলো ‘মুতাশাবিহ্’ [১]। সুতরাং যাদের অন্তরে বক্রতা রয়েছে শুধু তারাই ফেৎনা এবং ভুল ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে মুতাশাবিহাতের অনুসরণ করে [২]। অথচ আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কেউ এর ব্যাখ্যা জানে না। আর যারা জ্ঞানে সুগভীর [৩] তারা বলে, ‘আমরা এগুলোতে ঈমান রাখি, সবই আমাদের রবের কাছ থেকে এসেছে’[৪]; এবং জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন লোকেরা ছাড়া আর কেউ উপদেশ গ্রহণ করে না।
رَبَّنَا لَا تُزِغۡ قُلُوبَنَا بَعۡدَ إِذۡ هَدَیۡتَنَا وَهَبۡ لَنَا مِن لَّدُنكَ رَحۡمَةًۚ إِنَّكَ أَنتَ ٱلۡوَهَّابُ ﴿٨﴾
‘হে আমাদের রব! সরল পথ দেয়ার পর আপনি আমাদের অন্তরসমূহকে সত্য লঙ্ঘনপ্রবণ করবেন না। আর আপনার কাছ থেকে আমাদেরকে করুণা দান করুন, নিশ্চয়ই আপনি মহাদাতা।’
رَبَّنَاۤ إِنَّكَ جَامِعُ ٱلنَّاسِ لِیَوۡمࣲ لَّا رَیۡبَ فِیهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا یُخۡلِفُ ٱلۡمِیعَادَ ﴿٩﴾
‘হে আমাদের রব! নিশ্চয় আপনি সমস্ত মানুষকে একদিন একত্রে সমবেত করবেন এতে কোনো সন্দেহ নেই [১]; নিশ্চয় আল্লাহ্ ওয়াদা খেলাফ করেন না।’
إِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ لَن تُغۡنِیَ عَنۡهُمۡ أَمۡوَ ٰلُهُمۡ وَلَاۤ أَوۡلَـٰدُهُم مِّنَ ٱللَّهِ شَیۡـࣰٔاۖ وَأُوْلَـٰۤىِٕكَ هُمۡ وَقُودُ ٱلنَّارِ ﴿١٠﴾
নিশ্চয় যারা কুফরী করে আল্লাহ্র নিকট তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কোনো কাজে আসবে না এবং এরাই আগুনের ইন্ধন [১]।
كَدَأۡبِ ءَالِ فِرۡعَوۡنَ وَٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِهِمۡۚ كَذَّبُواْ بِـَٔایَـٰتِنَا فَأَخَذَهُمُ ٱللَّهُ بِذُنُوبِهِمۡۗ وَٱللَّهُ شَدِیدُ ٱلۡعِقَابِ ﴿١١﴾
তাদের অভ্যাস ফির’আউনী সম্প্রদায় ও তাদের পূর্ববর্তীদের অভ্যাসের ন্যায়, তারা আমার আয়াতগুলোতে মিথ্যারোপ করেছিল, ফলে আল্লাহ্ তাদের পাপের জন্য তাদেরকে পাকড়াও করেছিলেন [১]। আর আল্লাহ্ শাস্তি দানে অত্যন্ত কঠোর।
قُل لِّلَّذِینَ كَفَرُواْ سَتُغۡلَبُونَ وَتُحۡشَرُونَ إِلَىٰ جَهَنَّمَۖ وَبِئۡسَ ٱلۡمِهَادُ ﴿١٢﴾
যারা কুফরী করে তাদেরকে বলুন, ‘তোমরা শীঘ্রই পরাভূত হবে এবং তোমাদেরকে জাহান্নামের দিকে একত্রিত করা হবে। আর তা কতই না নিকৃষ্ট আবাসস্থল!’
قَدۡ كَانَ لَكُمۡ ءَایَةࣱ فِی فِئَتَیۡنِ ٱلۡتَقَتَاۖ فِئَةࣱ تُقَـٰتِلُ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ وَأُخۡرَىٰ كَافِرَةࣱ یَرَوۡنَهُم مِّثۡلَیۡهِمۡ رَأۡیَ ٱلۡعَیۡنِۚ وَٱللَّهُ یُؤَیِّدُ بِنَصۡرِهِۦ مَن یَشَاۤءُۚ إِنَّ فِی ذَ ٰلِكَ لَعِبۡرَةࣰ لِّأُوْلِی ٱلۡأَبۡصَـٰرِ ﴿١٣﴾
দু’টি দলের পরস্পর সম্মুখীন হওয়ার মধ্যে তোমাদের জন্য অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে। একদল যুদ্ধ করছিল আল্লাহ্র পথে, অন্য দল ছিল কাফের; তারা তাদেরকে চোখের দেখায় দেখছিল তাদের দ্বিগুণ। আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা আপন সাহায্য দ্বারা শক্তিশালী করেন [১]। নিশ্চয়ই এতে অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন লোকদের জন্য শিক্ষা রয়েছে [২]।
زُیِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ ٱلشَّهَوَ ٰتِ مِنَ ٱلنِّسَاۤءِ وَٱلۡبَنِینَ وَٱلۡقَنَـٰطِیرِ ٱلۡمُقَنطَرَةِ مِنَ ٱلذَّهَبِ وَٱلۡفِضَّةِ وَٱلۡخَیۡلِ ٱلۡمُسَوَّمَةِ وَٱلۡأَنۡعَـٰمِ وَٱلۡحَرۡثِۗ ذَ ٰلِكَ مَتَـٰعُ ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَاۖ وَٱللَّهُ عِندَهُۥ حُسۡنُ ٱلۡمَـَٔابِ ﴿١٤﴾
নারী, সন্তান, সোনা-রুপার স্তূপ, বাছাই কড়া ঘোড়া, গবাদি পশু এবং খেত-খামারের প্রতি আসক্তি মানুষের নিকট সুশোভিত করা হয়েছে। এসব দুনিয়ার জীবনের ভোগ্য বস্তু [১]। আর আল্লাহ্, তাঁরই নিকট রয়েছে উত্তম প্রত্যাবর্তনস্থল।
۞ قُلۡ أَؤُنَبِّئُكُم بِخَیۡرࣲ مِّن ذَ ٰلِكُمۡۖ لِلَّذِینَ ٱتَّقَوۡاْ عِندَ رَبِّهِمۡ جَنَّـٰتࣱ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَا وَأَزۡوَ ٰجࣱ مُّطَهَّرَةࣱ وَرِضۡوَ ٰنࣱ مِّنَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ بَصِیرُۢ بِٱلۡعِبَادِ ﴿١٥﴾
বলুন, ‘আমি কি তোমাদেরকে এসব বস্তু থেকে উৎকৃষ্টতর কোনো কিছুর সংবাদ দেব? যারা তাকওয়া অবলম্বন করে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতসমূহ যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আর পবিত্র স্ত্রীগণ এবং আল্লাহ্র নিকট থেকে সন্তুষ্টি [১]। আর আল্লাহ্ বান্দাদের সম্পর্কে সম্যক দ্রষ্টা।
ٱلَّذِینَ یَقُولُونَ رَبَّنَاۤ إِنَّنَاۤ ءَامَنَّا فَٱغۡفِرۡ لَنَا ذُنُوبَنَا وَقِنَا عَذَابَ ٱلنَّارِ ﴿١٦﴾
যারা বলে, হে আমাদের রব! নিশ্চয় আমরা ঈমান এনেছি; কাজেই আপনি আমাদের গোনাহ্সমূহ ক্ষমা করুন এবং আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে রক্ষা করুন।’
ٱلصَّـٰبِرِینَ وَٱلصَّـٰدِقِینَ وَٱلۡقَـٰنِتِینَ وَٱلۡمُنفِقِینَ وَٱلۡمُسۡتَغۡفِرِینَ بِٱلۡأَسۡحَارِ ﴿١٧﴾
তারা ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, অনুগত, ব্যায়কারী এবং শেষ রাতে ক্ষমাপ্রার্থী [১]।
شَهِدَ ٱللَّهُ أَنَّهُۥ لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ وَٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُ وَأُوْلُواْ ٱلۡعِلۡمِ قَاۤىِٕمَۢا بِٱلۡقِسۡطِۚ لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلۡحَكِیمُ ﴿١٨﴾
আল্লাহ্ সাক্ষ্য দেন [১] যে, নিশ্চয় তিনি ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ্ নেই। আর ফেরেশতাগণ এবং জ্ঞানীগণও; আল্লাহ্ ন্যায়নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত। তিনি ছাড়া অন্য কোনো সত্য ইলাহ নেই, (তিনি) পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
إِنَّ ٱلدِّینَ عِندَ ٱللَّهِ ٱلۡإِسۡلَـٰمُۗ وَمَا ٱخۡتَلَفَ ٱلَّذِینَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَـٰبَ إِلَّا مِنۢ بَعۡدِ مَا جَاۤءَهُمُ ٱلۡعِلۡمُ بَغۡیَۢا بَیۡنَهُمۡۗ وَمَن یَكۡفُرۡ بِـَٔایَـٰتِ ٱللَّهِ فَإِنَّ ٱللَّهَ سَرِیعُ ٱلۡحِسَابِ ﴿١٩﴾
নিশ্চয় ইসলামই আল্লাহ্র নিকট একমাত্র দীন [১]। আর যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিল তারা কেবল পরস্পর বিদ্বেষবশতঃ তাদের নিকট জ্ঞান আসার পর মতানৈক্য ঘটিয়েছিল। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্র আয়াতসমূহে কুফরী করে, তবে নিশ্চয় আল্লাহ্ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।
فَإِنۡ حَاۤجُّوكَ فَقُلۡ أَسۡلَمۡتُ وَجۡهِیَ لِلَّهِ وَمَنِ ٱتَّبَعَنِۗ وَقُل لِّلَّذِینَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَـٰبَ وَٱلۡأُمِّیِّـۧنَ ءَأَسۡلَمۡتُمۡۚ فَإِنۡ أَسۡلَمُواْ فَقَدِ ٱهۡتَدَواْۖ وَّإِن تَوَلَّوۡاْ فَإِنَّمَا عَلَیۡكَ ٱلۡبَلَـٰغُۗ وَٱللَّهُ بَصِیرُۢ بِٱلۡعِبَادِ ﴿٢٠﴾
সুতরাং যদি তারা আপনার সাথে বিতর্কে লিপ্ত হয় তবে আপনি বলুন, ‘আমি আল্লাহ্র নিকট আত্মসমর্পণ করেছি এবং আমার অনুসারীগণও।’ আর যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদেরকে ও নিরক্ষরদেরকে বলুন, ‘তোমরাও কি আত্মসমর্পণ করেছ?’ যদি তারা আত্মসমর্পণ করে তবে নিশ্চয় তারা হেদায়াত পাবে। আর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে আপনার কর্তব্য শুধু প্রচার করা। আর আল্লাহ্ বান্দাদের সম্পর্কে সম্যক দ্রষ্টা [১]।
إِنَّ ٱلَّذِینَ یَكۡفُرُونَ بِـَٔایَـٰتِ ٱللَّهِ وَیَقۡتُلُونَ ٱلنَّبِیِّـۧنَ بِغَیۡرِ حَقࣲّ وَیَقۡتُلُونَ ٱلَّذِینَ یَأۡمُرُونَ بِٱلۡقِسۡطِ مِنَ ٱلنَّاسِ فَبَشِّرۡهُم بِعَذَابٍ أَلِیمٍ ﴿٢١﴾
নিশ্চয় যারা আল্লাহ্র আয়াতসমূহে কুফরী করে, অন্যায়ভাবে নবীগণকে হত্যা করে এবং মানুষের মধ্যে যারা ন্যায়পরায়ণতার নির্দেশ দেয় তাদেরকে হত্যা করে, আপনি তাদেরকে মর্মন্তদ শাস্তির সংবাদ দিন।
أُوْلَـٰۤىِٕكَ ٱلَّذِینَ حَبِطَتۡ أَعۡمَـٰلُهُمۡ فِی ٱلدُّنۡیَا وَٱلۡـَٔاخِرَةِ وَمَا لَهُم مِّن نَّـٰصِرِینَ ﴿٢٢﴾
এসব লোক, এদের কার্যাবলী দুনিয়া ও আখিরাতে নিষ্ফল হয়েছে এবং তাদের কোনো সাহায্যকারী নেই।
أَلَمۡ تَرَ إِلَى ٱلَّذِینَ أُوتُواْ نَصِیبࣰا مِّنَ ٱلۡكِتَـٰبِ یُدۡعَوۡنَ إِلَىٰ كِتَـٰبِ ٱللَّهِ لِیَحۡكُمَ بَیۡنَهُمۡ ثُمَّ یَتَوَلَّىٰ فَرِیقࣱ مِّنۡهُمۡ وَهُم مُّعۡرِضُونَ ﴿٢٣﴾
আপনি কি তাদেরকে দেখেননি যাদেরকে কিতাবের অংশ প্রদান করা হয়েছিল? তাদেরকে আল্লাহ্র কিতাবের দিকে আহবান করা হয়েছিল যাতে তা তাদের মধ্যে মীমাংশা করে দেয়; তারপর তাদের এক দল ফিরে যায় বিমুখ হয়ে [১]।
ذَ ٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ قَالُواْ لَن تَمَسَّنَا ٱلنَّارُ إِلَّاۤ أَیَّامࣰا مَّعۡدُودَ ٰتࣲۖ وَغَرَّهُمۡ فِی دِینِهِم مَّا كَانُواْ یَفۡتَرُونَ ﴿٢٤﴾
এটা এ জন্যে যে, তারা বলে থাকে, ‘মাত্র কয়েকদিন ছাড়া আগুন আমাদেরকে কখনই স্পর্শ করবে না।’ আর তাদের নিজেদের দীন সম্পর্কে তাদের মিথ্যা উদ্ভাবন তাদেরকে প্রবঞ্চিত করেছে [১]।
فَكَیۡفَ إِذَا جَمَعۡنَـٰهُمۡ لِیَوۡمࣲ لَّا رَیۡبَ فِیهِ وَوُفِّیَتۡ كُلُّ نَفۡسࣲ مَّا كَسَبَتۡ وَهُمۡ لَا یُظۡلَمُونَ ﴿٢٥﴾
সুতরাং (সেদিন) কি অবস্থা হবে? যেদিন আমি তাদেরকে একত্র করব যাতে কোনো সন্দেহ নেই এবং প্রত্যেককে তাদের অর্জিত কাজের প্রতিদান পূর্ণভাবে দেয়া হবে। আর তাদের প্রতি যুলুম করা হবেনা।
قُلِ ٱللَّهُمَّ مَـٰلِكَ ٱلۡمُلۡكِ تُؤۡتِی ٱلۡمُلۡكَ مَن تَشَاۤءُ وَتَنزِعُ ٱلۡمُلۡكَ مِمَّن تَشَاۤءُ وَتُعِزُّ مَن تَشَاۤءُ وَتُذِلُّ مَن تَشَاۤءُۖ بِیَدِكَ ٱلۡخَیۡرُۖ إِنَّكَ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرࣱ ﴿٢٦﴾
বলুন, ‘হে সার্বভৌম শক্তির মালিক আল্লাহ্! আপনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান করেন এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা কেড়ে নেন; যাকে ইচ্ছা আপনি সম্মানিত করেন আর যাকে ইচ্ছা আপনি হীন করেন। কল্যান আপনারই হাতে [১]। নিশ্চয়ই আপনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।
تُولِجُ ٱلَّیۡلَ فِی ٱلنَّهَارِ وَتُولِجُ ٱلنَّهَارَ فِی ٱلَّیۡلِۖ وَتُخۡرِجُ ٱلۡحَیَّ مِنَ ٱلۡمَیِّتِ وَتُخۡرِجُ ٱلۡمَیِّتَ مِنَ ٱلۡحَیِّۖ وَتَرۡزُقُ مَن تَشَاۤءُ بِغَیۡرِ حِسَابࣲ ﴿٢٧﴾
‘আপনি রাতকে দিনে এবং দিনকে রাতে প্রবিষ্ট করান; আপনি মৃত থেকে জীবন্তের আবির্ভাব ঘটান, আবার জীবন্ত থেকে মৃতের আবির্ভাব ঘটান। আর আপনি যাকে ইচ্ছা অপরিমিত রিয্ক দান করেন। ’
لَّا یَتَّخِذِ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ٱلۡكَـٰفِرِینَ أَوۡلِیَاۤءَ مِن دُونِ ٱلۡمُؤۡمِنِینَۖ وَمَن یَفۡعَلۡ ذَ ٰلِكَ فَلَیۡسَ مِنَ ٱللَّهِ فِی شَیۡءٍ إِلَّاۤ أَن تَتَّقُواْ مِنۡهُمۡ تُقَىٰةࣰۗ وَیُحَذِّرُكُمُ ٱللَّهُ نَفۡسَهُۥۗ وَإِلَى ٱللَّهِ ٱلۡمَصِیرُ ﴿٢٨﴾
মুমিনগণ যেন মুমিনগণ ছাড়া কাফেরদেরকে বন্ধুরুপে গ্রহণ না করে। আর যে কেউ এরূপ করবে তার সাথে আল্লাহ্র কোনো সম্পর্ক থাকবে না; তবে ব্যতিক্রম, যদি তোমরা তাদের নিকট থেকে আত্মরক্ষার জন্য সতর্কতা অবলম্বন কর [১]। আর আল্লাহ্ তাঁর নিজের সম্বন্ধে তোমাদেরকে সাবধান করেছেন [২] এবং আল্লাহ্র দিকেই প্রত্যাবর্তন।
قُلۡ إِن تُخۡفُواْ مَا فِی صُدُورِكُمۡ أَوۡ تُبۡدُوهُ یَعۡلَمۡهُ ٱللَّهُۗ وَیَعۡلَمُ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرࣱ ﴿٢٩﴾
বলুন, ‘তোমাদের অন্তরে যা আছে তা যদি তোমরা গোপন বা ব্যক্ত কর, আল্লাহ্ তা অবগত আছেন [১]। আর আসমানসমূহে যা আছে এবং যমীনে যা আছে তাও তিনি জানেন। আল্লাহ্ সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।’
یَوۡمَ تَجِدُ كُلُّ نَفۡسࣲ مَّا عَمِلَتۡ مِنۡ خَیۡرࣲ مُّحۡضَرࣰا وَمَا عَمِلَتۡ مِن سُوۤءࣲ تَوَدُّ لَوۡ أَنَّ بَیۡنَهَا وَبَیۡنَهُۥۤ أَمَدَۢا بَعِیدࣰاۗ وَیُحَذِّرُكُمُ ٱللَّهُ نَفۡسَهُۥۗ وَٱللَّهُ رَءُوفُۢ بِٱلۡعِبَادِ ﴿٣٠﴾
যেদিন প্রত্যেকে সে যা ভাল আমল করেছে এবং সে যা মন্দ কাজ করেছে তা উপস্থিত পাবে, সেদিন সে কামনা করবে- যদি তার এবং এর মধ্যে বিশাল ব্যবধান থাকত [১]! আল্লাহ্ তাঁর নিজের সম্বন্ধে তোমাদেরকে সাবধান করছেন। আর আল্লাহ্ বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত স্নেহশীল।
قُلۡ إِن كُنتُمۡ تُحِبُّونَ ٱللَّهَ فَٱتَّبِعُونِی یُحۡبِبۡكُمُ ٱللَّهُ وَیَغۡفِرۡ لَكُمۡ ذُنُوبَكُمۡۚ وَٱللَّهُ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿٣١﴾
বলুন, ‘তোমরা যদি আল্লহকে ভালোবাস তবে আমাকে অনুসরণ কর [১], আল্লাহ্ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন। আল্লাহ্ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’
قُلۡ أَطِیعُواْ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَۖ فَإِن تَوَلَّوۡاْ فَإِنَّ ٱللَّهَ لَا یُحِبُّ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿٣٢﴾
বলুন, ‘তোমরা আল্লাহ্ ও রাসূলের আনুগত্য কর।’ তারপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে নিশ্চয় আল্লাহ্ কাফেরদেরকে পছন্দ করেন না [১]।
۞ إِنَّ ٱللَّهَ ٱصۡطَفَىٰۤ ءَادَمَ وَنُوحࣰا وَءَالَ إِبۡرَ ٰهِیمَ وَءَالَ عِمۡرَ ٰنَ عَلَى ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿٣٣﴾
নিশ্চয় আল্লাহ্ আদম, নূহ ও ইবরাহীমের বংশধর এবং ইমরানের [১] বংশধরকে সমগ্র সৃষ্টিজগতের উপর মনোনীত করেছেন [২]।
ذُرِّیَّةَۢ بَعۡضُهَا مِنۢ بَعۡضࣲۗ وَٱللَّهُ سَمِیعٌ عَلِیمٌ ﴿٣٤﴾
তারা একে অপরের বংশধর। আর আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
إِذۡ قَالَتِ ٱمۡرَأَتُ عِمۡرَ ٰنَ رَبِّ إِنِّی نَذَرۡتُ لَكَ مَا فِی بَطۡنِی مُحَرَّرࣰا فَتَقَبَّلۡ مِنِّیۤۖ إِنَّكَ أَنتَ ٱلسَّمِیعُ ٱلۡعَلِیمُ ﴿٣٥﴾
স্মরণ করুন, যখন ইমরানের স্ত্রী বলেছিল, ‘হে আমার রব! আমার গর্ভে যা আছে নিশ্চয় আমি তা একান্ত আপনার জন্য মানত করলাম [১]। কাজেই আপনি আমার নিকট থেকে তা কবুল করুন, নিশ্চয় আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।'
فَلَمَّا وَضَعَتۡهَا قَالَتۡ رَبِّ إِنِّی وَضَعۡتُهَاۤ أُنثَىٰ وَٱللَّهُ أَعۡلَمُ بِمَا وَضَعَتۡ وَلَیۡسَ ٱلذَّكَرُ كَٱلۡأُنثَىٰۖ وَإِنِّی سَمَّیۡتُهَا مَرۡیَمَ وَإِنِّیۤ أُعِیذُهَا بِكَ وَذُرِّیَّتَهَا مِنَ ٱلشَّیۡطَـٰنِ ٱلرَّجِیمِ ﴿٣٦﴾
তারপর যখন সে তা প্রসব করল তখন সে বলল, ‘হে আমার রব! নিশ্চয় আমি তা প্রসব করেছি কন্যারুপে।’ সে যা প্রসব করেছে তা সম্পর্কে আল্লাহ্ সম্যক অবগত। আর পুত্রসন্তান কন্যা সন্তানের মত নয়। আর আমি তার নাম মারিয়াম রেখেছি [১] এবং অভিসপ্ত শয়তান হতে তার ও তার সন্তানকে আপনার আশ্রয়ে দিচ্ছি [২]।’
فَتَقَبَّلَهَا رَبُّهَا بِقَبُولٍ حَسَنࣲ وَأَنۢبَتَهَا نَبَاتًا حَسَنࣰا وَكَفَّلَهَا زَكَرِیَّاۖ كُلَّمَا دَخَلَ عَلَیۡهَا زَكَرِیَّا ٱلۡمِحۡرَابَ وَجَدَ عِندَهَا رِزۡقࣰاۖ قَالَ یَـٰمَرۡیَمُ أَنَّىٰ لَكِ هَـٰذَاۖ قَالَتۡ هُوَ مِنۡ عِندِ ٱللَّهِۖ إِنَّ ٱللَّهَ یَرۡزُقُ مَن یَشَاۤءُ بِغَیۡرِ حِسَابٍ ﴿٣٧﴾
তারপর তার রব তাকে ভালোভাবেই কবুল করলেন এবং তাকে উত্তমরূপে লালন-পালন করলেন [১] এবং তিনি তাকে যাকারিয়্যার তত্ত্বাবধানে রেখেছিলেন [২]। যখনই যাকারিয়্যা তার কক্ষে প্রবেশ করত তখনই তার নিকট খাদ্য সামগ্রী দেখতে পেত। তিনি বলতেন, ‘হে মারিয়াম! এ সব তুমি কথায় পেলে?’ (মার্ইয়াম) বলতেন, ‘তা আল্লাহ্র নিকট হতে।’ নিশ্চয় আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছে অপরিমিত রিয্ক দান করেন।
هُنَالِكَ دَعَا زَكَرِیَّا رَبَّهُۥۖ قَالَ رَبِّ هَبۡ لِی مِن لَّدُنكَ ذُرِّیَّةࣰ طَیِّبَةًۖ إِنَّكَ سَمِیعُ ٱلدُّعَاۤءِ ﴿٣٨﴾
সেখানেই যাকারিয়্যা তার রবের নিকট প্রার্থনা করে বললেন, ‘হে আমার রব! আমাকে আপনি আপনার নিকট থেকে উত্তম সন্তান দান করুন। নিশ্চয়ই আপনি প্রার্থনা শ্রবণকারী [১]।’
فَنَادَتۡهُ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُ وَهُوَ قَاۤىِٕمࣱ یُصَلِّی فِی ٱلۡمِحۡرَابِ أَنَّ ٱللَّهَ یُبَشِّرُكَ بِیَحۡیَىٰ مُصَدِّقَۢا بِكَلِمَةࣲ مِّنَ ٱللَّهِ وَسَیِّدࣰا وَحَصُورࣰا وَنَبِیࣰّا مِّنَ ٱلصَّـٰلِحِینَ ﴿٣٩﴾
অতঃপর যখন যাকারিয়্যা ইবাদত কক্ষে সালাতে দাঁড়িয়েছিলেন তখন ফেরেশ্তারা তাকে আহবান করে বলল, ‘নিশ্চয় আল্লাহ্ আপনাকে ইয়াহ্ইয়ার সুসংবাদ দিচ্ছেন, সে হবে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে আগমনকৃত এক কালেমাকে সত্যায়নকারী [১], নেতা [২], ভোগ আসক্তিমুক্ত [৩] এবং পূণ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত একজন নবী।’
قَالَ رَبِّ أَنَّىٰ یَكُونُ لِی غُلَـٰمࣱ وَقَدۡ بَلَغَنِیَ ٱلۡكِبَرُ وَٱمۡرَأَتِی عَاقِرࣱۖ قَالَ كَذَ ٰلِكَ ٱللَّهُ یَفۡعَلُ مَا یَشَاۤءُ ﴿٤٠﴾
তিনি বললেন, ‘হে আমার রব! আমার পুত্র হবে কিভাবে? অথচ আমার বার্ধক্য এসে গিয়েছে [১] এবং আমার স্ত্রী বন্ধ্যা’। তিনি (আল্লাহ্) বললেন, ‘এভাবেই।’ আল্লাহ্ যা ইচ্ছা তা করেন [২]।
قَالَ رَبِّ ٱجۡعَل لِّیۤ ءَایَةࣰۖ قَالَ ءَایَتُكَ أَلَّا تُكَلِّمَ ٱلنَّاسَ ثَلَـٰثَةَ أَیَّامٍ إِلَّا رَمۡزࣰاۗ وَٱذۡكُر رَّبَّكَ كَثِیرࣰا وَسَبِّحۡ بِٱلۡعَشِیِّ وَٱلۡإِبۡكَـٰرِ ﴿٤١﴾
তিনি বললেন, ‘হে আমার রব! আমাকে একটি নিদর্শন দিন [১]।’ তিনি বললেন, ‘আপনার নিদর্শন এই যে, তিন দিন আপনি ইঙ্গিত ছাড়া কথা বলবেন না [২] আর আপনার রবকে অধিক স্মরণ করুন এবং সন্ধ্যায় ও প্রভাতে তাঁর পবিত্রতা-মহীমা ঘোষণা করুন।’
وَإِذۡ قَالَتِ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُ یَـٰمَرۡیَمُ إِنَّ ٱللَّهَ ٱصۡطَفَىٰكِ وَطَهَّرَكِ وَٱصۡطَفَىٰكِ عَلَىٰ نِسَاۤءِ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿٤٢﴾
আর স্মরণ করুন, যখন ফেরেশতাগণ বলেছিল, ‘হে মার্ইয়াম! নিশ্চয় আল্লাহ্ আপনাকে মনোনীত করেছেন এবং পবিত্র করেছেন আর বিশ্বজগতের নারীগণের উপর আপনাকে মনোনীত করেছেন [১]’
یَـٰمَرۡیَمُ ٱقۡنُتِی لِرَبِّكِ وَٱسۡجُدِی وَٱرۡكَعِی مَعَ ٱلرَّ ٰكِعِینَ ﴿٤٣﴾
‘হে মার্ইয়াম! আপনার রবের অনুগত হন এবং সিজদা করুন আর রুকু‘ কারীদের সাথে রুকূ‘ করুন।’
ذَ ٰلِكَ مِنۡ أَنۢبَاۤءِ ٱلۡغَیۡبِ نُوحِیهِ إِلَیۡكَۚ وَمَا كُنتَ لَدَیۡهِمۡ إِذۡ یُلۡقُونَ أَقۡلَـٰمَهُمۡ أَیُّهُمۡ یَكۡفُلُ مَرۡیَمَ وَمَا كُنتَ لَدَیۡهِمۡ إِذۡ یَخۡتَصِمُونَ ﴿٤٤﴾
এটা গায়েবের সংবাদের অন্তর্ভুক্ত, যা আমরা আপনাকে ওহী দ্বারা অবহিত করছি। আর মার্ইমের তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব তাদের মধ্যে কে গ্রহণ করবে এর জন্য যখন তারা তাদের কলম নিক্ষেপ করছিল [১] আপনি তখন তাদের নিকট ছিলেন না এবং তারা যখন বাদানুবাদ করছিল তখনো আপনি তাদের নিকট ছিলেন না।
إِذۡ قَالَتِ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُ یَـٰمَرۡیَمُ إِنَّ ٱللَّهَ یُبَشِّرُكِ بِكَلِمَةࣲ مِّنۡهُ ٱسۡمُهُ ٱلۡمَسِیحُ عِیسَى ٱبۡنُ مَرۡیَمَ وَجِیهࣰا فِی ٱلدُّنۡیَا وَٱلۡـَٔاخِرَةِ وَمِنَ ٱلۡمُقَرَّبِینَ ﴿٤٥﴾
স্মরণ করুন, যখন ফেরেশ্তাগণ বললেন, ‘হে মারিয়াম! নিশ্চয়ই আল্লাহ্ আপনাকে তাঁর পক্ষ থেকে একটি কালেমার সুসংবাদ দিচ্ছেন [১]। তার নাম মসীহ্, মারিয়াম তনয় ঈসা, তিনি দুনিয়া ও আখেরাতে সম্মানিত এবং সান্নিধ্যপ্রাপ্তগণের অন্যতম হবেন [২]।
وَیُكَلِّمُ ٱلنَّاسَ فِی ٱلۡمَهۡدِ وَكَهۡلࣰا وَمِنَ ٱلصَّـٰلِحِینَ ﴿٤٦﴾
আর তিনি দোলনায় [১] ও বয়োঃপ্রাপ্ত অবস্থায় মানুষের সাথে কথা বলবেন [২] এবং তিনি হবেন পুণ্যবানদের একজন।’
قَالَتۡ رَبِّ أَنَّىٰ یَكُونُ لِی وَلَدࣱ وَلَمۡ یَمۡسَسۡنِی بَشَرࣱۖ قَالَ كَذَ ٰلِكِ ٱللَّهُ یَخۡلُقُ مَا یَشَاۤءُۚ إِذَا قَضَىٰۤ أَمۡرࣰا فَإِنَّمَا یَقُولُ لَهُۥ كُن فَیَكُونُ ﴿٤٧﴾
সে বলল, ‘হে আমার রব! আমাকে কোনো পুরুষ স্পর্শ করেনি, এমতাবস্থায় আমার সন্তান হবে কিভাবে?’ তিনি (আল্লাহ্) বললেন, ‘এভাবেই’, আল্লাহ্ যা ইচ্ছে সৃষ্টি করেন। তিনি যখন কিছু স্থির করেন তখন বলেন, ‘হও’, ফলে তা হয়ে যায় [১]।
وَیُعَلِّمُهُ ٱلۡكِتَـٰبَ وَٱلۡحِكۡمَةَ وَٱلتَّوۡرَىٰةَ وَٱلۡإِنجِیلَ ﴿٤٨﴾
আর তিনি তাকে শিক্ষা দেবেন কিতাব, হিকমত, তাওরাত ও ইঞ্জীল।’
وَرَسُولًا إِلَىٰ بَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ أَنِّی قَدۡ جِئۡتُكُم بِـَٔایَةࣲ مِّن رَّبِّكُمۡ أَنِّیۤ أَخۡلُقُ لَكُم مِّنَ ٱلطِّینِ كَهَیۡـَٔةِ ٱلطَّیۡرِ فَأَنفُخُ فِیهِ فَیَكُونُ طَیۡرَۢا بِإِذۡنِ ٱللَّهِۖ وَأُبۡرِئُ ٱلۡأَكۡمَهَ وَٱلۡأَبۡرَصَ وَأُحۡیِ ٱلۡمَوۡتَىٰ بِإِذۡنِ ٱللَّهِۖ وَأُنَبِّئُكُم بِمَا تَأۡكُلُونَ وَمَا تَدَّخِرُونَ فِی بُیُوتِكُمۡۚ إِنَّ فِی ذَ ٰلِكَ لَـَٔایَةࣰ لَّكُمۡ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿٤٩﴾
আর তাকে বনী ইসরাঈলের জন্য রাসূলরূপে’ (প্রেরণ করবেন, তিনি বলবেন) ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট নিদর্শন নিয়ে এসেছি যে, অবশ্যই আমি তোমাদের জন্য কাদামাটি দ্বারা একটি পাখিসদৃশ আকৃতি গঠন করব; তারপর তাতে আমি ফুঁ দেব; ফলে আল্লাহ্র হুকুমে সেটা পাখি হয়ে যাবে। আর আমি আল্লাহ্র হুকুমে জন্মান্ধ ও কুষ্ঠ ব্যাধিগ্রস্থকে নিরাময় করব এবং মৃতকে জীবিত করব। আর তোমরা তোমাদের ঘরে যা খাও এবং মজুদ কর তা আমি তোমাদেরকে জানিয়ে দেব। নিশ্চয় এতে তোমাদের জন্য নিদর্শন রয়েছে যদি তোমরা মুমিন হও।’
وَمُصَدِّقࣰا لِّمَا بَیۡنَ یَدَیَّ مِنَ ٱلتَّوۡرَىٰةِ وَلِأُحِلَّ لَكُم بَعۡضَ ٱلَّذِی حُرِّمَ عَلَیۡكُمۡۚ وَجِئۡتُكُم بِـَٔایَةࣲ مِّن رَّبِّكُمۡ فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَأَطِیعُونِ ﴿٥٠﴾
‘আর আমার সামনে তাওরাতের যা রয়েছে তার সত্যায়নকারীরূপে এবং তোমাদের জন্য যা হারাম ছিল তার কিছু হালাল করে দিতে। এবং আমি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট নিদর্শন নিয়ে এসেছি। কাজেই তোমরা আল্লাহ্র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর।’
إِنَّ ٱللَّهَ رَبِّی وَرَبُّكُمۡ فَٱعۡبُدُوهُۚ هَـٰذَا صِرَ ٰطࣱ مُّسۡتَقِیمࣱ ﴿٥١﴾
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ আমার রব এবং তোমাদেরও রব, কাজেই তোমরা তাঁরই ইবাদত কর। এটাই সরল পথ [১]।’
۞ فَلَمَّاۤ أَحَسَّ عِیسَىٰ مِنۡهُمُ ٱلۡكُفۡرَ قَالَ مَنۡ أَنصَارِیۤ إِلَى ٱللَّهِۖ قَالَ ٱلۡحَوَارِیُّونَ نَحۡنُ أَنصَارُ ٱللَّهِ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ وَٱشۡهَدۡ بِأَنَّا مُسۡلِمُونَ ﴿٥٢﴾
যখন ‘ঈসা তাদের থেকে কুফরী উপলব্ধি করলেন তখন তিনি বললেন, ‘আল্লাহ্র পথে কারা আমার সাহায্যকারী [১]?’ হাওয়ারীগণ [২] বলল, ‘আমরাই আল্লাহ্র সাহায্যকারী। আমরা আল্লাহ্তে ঈমান এনেছি। আর আপনি সাক্ষী থাকুন যে, নিশ্চয় আমরা মুসলিম।
رَبَّنَاۤ ءَامَنَّا بِمَاۤ أَنزَلۡتَ وَٱتَّبَعۡنَا ٱلرَّسُولَ فَٱكۡتُبۡنَا مَعَ ٱلشَّـٰهِدِینَ ﴿٥٣﴾
‘হে আমার রব! আপনি যা নাযিল করেছেন তার প্রতি আমরা ঈমান এনেছি এবং আমরা এ রাসূলের অনুসরণ করেছি। কাজেই আমাদেরকে সাক্ষ্যদানকারীদের তালিকাভুক্ত করে নিন।’
وَمَكَرُواْ وَمَكَرَ ٱللَّهُۖ وَٱللَّهُ خَیۡرُ ٱلۡمَـٰكِرِینَ ﴿٥٤﴾
আর তারা কুটকৌশল করেছিল, আল্লাহ্ও কৌশল করেছিলেন; আর আল্লাহ্ শ্রেষ্ঠতম কৌশলী [১]।
إِذۡ قَالَ ٱللَّهُ یَـٰعِیسَىٰۤ إِنِّی مُتَوَفِّیكَ وَرَافِعُكَ إِلَیَّ وَمُطَهِّرُكَ مِنَ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ وَجَاعِلُ ٱلَّذِینَ ٱتَّبَعُوكَ فَوۡقَ ٱلَّذِینَ كَفَرُوۤاْ إِلَىٰ یَوۡمِ ٱلۡقِیَـٰمَةِۖ ثُمَّ إِلَیَّ مَرۡجِعُكُمۡ فَأَحۡكُمُ بَیۡنَكُمۡ فِیمَا كُنتُمۡ فِیهِ تَخۡتَلِفُونَ ﴿٥٥﴾
স্মরণ করুন, যখন আল্লাহ্ বললেন, ‘হে ‘ঈসা! নিশ্চয় আমি আপনাকে পরিগ্রহণ করব [১], আমার নিকট আপনাকে উঠিয়ে নিব [২] এবং যারা কুফরী করে তাদের মধ্য থেকে আপনাকে পবিত্র করব। আর আপনার অনুসারিগণকে কেয়ামত পর্যন্ত প্রাধান্য দিব, তারপর আমার কাছেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন। ’ অতঃপর যে বিষয়ে তোমাদের মতান্তর ঘটেছে আমি তোমাদের মধ্যে তা মীমাংসা করে দেব [৩]।
فَأَمَّا ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ فَأُعَذِّبُهُمۡ عَذَابࣰا شَدِیدࣰا فِی ٱلدُّنۡیَا وَٱلۡـَٔاخِرَةِ وَمَا لَهُم مِّن نَّـٰصِرِینَ ﴿٥٦﴾
তারপর যারা কুফরী করেছে আমি তাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতে কঠোর শাস্তি প্রদান করব এবং তাদের কোনো সাহায্যকারী নেই [১]।
وَأَمَّا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ فَیُوَفِّیهِمۡ أُجُورَهُمۡۗ وَٱللَّهُ لَا یُحِبُّ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿٥٧﴾
আর যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তিনি তাদের প্রতিফল পুরোপুরিভাবে প্রদান করবেন। আর আল্লাহ্ যালেমদেরকে পছন্দ করেন না।
ذَ ٰلِكَ نَتۡلُوهُ عَلَیۡكَ مِنَ ٱلۡـَٔایَـٰتِ وَٱلذِّكۡرِ ٱلۡحَكِیمِ ﴿٥٨﴾
এটা আমরা আপনার নিকট তেলাওয়াত করছি আয়াতসমূহ ও হেকমতপূর্ণ বাণী থেকে।
إِنَّ مَثَلَ عِیسَىٰ عِندَ ٱللَّهِ كَمَثَلِ ءَادَمَۖ خَلَقَهُۥ مِن تُرَابࣲ ثُمَّ قَالَ لَهُۥ كُن فَیَكُونُ ﴿٥٩﴾
নিশ্চয় আল্লাহ্র নিকট ‘ঈসার দৃষ্টান্ত আদমের দৃষ্টান্তসদৃশ। তিনি তাকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছিলেন; তারপর তাকে বলেছিলেন, ‘হও’, ফলে তিনি হয়ে যান।
ٱلۡحَقُّ مِن رَّبِّكَ فَلَا تَكُن مِّنَ ٱلۡمُمۡتَرِینَ ﴿٦٠﴾
(এটা) আপনার রবের নিকট থেকে সত্য, কাজেই আপনি সন্দেহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না [১]।
فَمَنۡ حَاۤجَّكَ فِیهِ مِنۢ بَعۡدِ مَا جَاۤءَكَ مِنَ ٱلۡعِلۡمِ فَقُلۡ تَعَالَوۡاْ نَدۡعُ أَبۡنَاۤءَنَا وَأَبۡنَاۤءَكُمۡ وَنِسَاۤءَنَا وَنِسَاۤءَكُمۡ وَأَنفُسَنَا وَأَنفُسَكُمۡ ثُمَّ نَبۡتَهِلۡ فَنَجۡعَل لَّعۡنَتَ ٱللَّهِ عَلَى ٱلۡكَـٰذِبِینَ ﴿٦١﴾
অতঃপর আপনার নিকট জ্ঞান আসার পর যে কেউ এ বিষয়ে আপনার সাথে তর্ক করে তাকে বলুন, ‘এস, আমরা আহবান করি আমাদের পুত্রদেরকে ও তোমাদের পুত্রদেরকে, আমাদের নারীদেরকে ও তোমাদের নারীদেরকে, আমাদের নিজেদেরকে ও তোমাদের নিজেদেরকে, তারপর আমরা মুবাহালা (বিনীত প্রার্থনা) করি, অতঃপর মিথ্যাবাদীদের উপর দেই আল্লাহ্র লা’নত [১]।’
إِنَّ هَـٰذَا لَهُوَ ٱلۡقَصَصُ ٱلۡحَقُّۚ وَمَا مِنۡ إِلَـٰهٍ إِلَّا ٱللَّهُۚ وَإِنَّ ٱللَّهَ لَهُوَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلۡحَكِیمُ ﴿٦٢﴾
নিশ্চয় এগুলো সত্য বিবরণ এবং আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোনো হক ইলাহ্ নেই। আর নিশ্চয় আল্লাহ্, তিনি তো পরম পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
فَإِن تَوَلَّوۡاْ فَإِنَّ ٱللَّهَ عَلِیمُۢ بِٱلۡمُفۡسِدِینَ ﴿٦٣﴾
অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ফাসাদকারীদের সম্পর্কে সম্যক অবগত [১]।
قُلۡ یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ تَعَالَوۡاْ إِلَىٰ كَلِمَةࣲ سَوَاۤءِۭ بَیۡنَنَا وَبَیۡنَكُمۡ أَلَّا نَعۡبُدَ إِلَّا ٱللَّهَ وَلَا نُشۡرِكَ بِهِۦ شَیۡـࣰٔا وَلَا یَتَّخِذَ بَعۡضُنَا بَعۡضًا أَرۡبَابࣰا مِّن دُونِ ٱللَّهِۚ فَإِن تَوَلَّوۡاْ فَقُولُواْ ٱشۡهَدُواْ بِأَنَّا مُسۡلِمُونَ ﴿٦٤﴾
আপনি বলুন। ‘হে আহ্লে কিতাবগণ! এস সে কথায় যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই; যেন আমরা একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া কারো ইবাদাত না করি, তাঁর সাথে কোনো কিছুকে শরীক না করি এবং আমাদের কেউ আল্লাহ্ ছাড়া একে অন্যকে রব হিসেবে গ্রহণ না করি। ’ তারপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে তোমরা বল, তোমরা সাক্ষী থাক যে, নিশ্চয় আমরা মুসলিম [১]।’
یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ لِمَ تُحَاۤجُّونَ فِیۤ إِبۡرَ ٰهِیمَ وَمَاۤ أُنزِلَتِ ٱلتَّوۡرَىٰةُ وَٱلۡإِنجِیلُ إِلَّا مِنۢ بَعۡدِهِۦۤۚ أَفَلَا تَعۡقِلُونَ ﴿٦٥﴾
হে আহ্লে কিতাবগণ! ইব্রাহীম সম্বন্ধে কেন তোমরা তর্ক কর, অথচ তাওরাত ও ইঞ্জীল তো তার পরেই নাযিল হয়েছিল? সুতরাং তোমরা কি বুঝ না [১]?
هَـٰۤأَنتُمۡ هَـٰۤؤُلَاۤءِ حَـٰجَجۡتُمۡ فِیمَا لَكُم بِهِۦ عِلۡمࣱ فَلِمَ تُحَاۤجُّونَ فِیمَا لَیۡسَ لَكُم بِهِۦ عِلۡمࣱۚ وَٱللَّهُ یَعۡلَمُ وَأَنتُمۡ لَا تَعۡلَمُونَ ﴿٦٦﴾
সাবধান, তোমরা তো সে সব লোক, যে বিষয়ে তোমাদের সামান্য জ্ঞান আছে সে বিষয়ে তোমরা তর্ক করেছ, তবে যে বিষয়ে তোমাদের কোনো জ্ঞান নেই সে বিষয়ে কেন তর্ক করছ? আর আল্লাহ্ জানেন এবং তোমরা জান না।
مَا كَانَ إِبۡرَ ٰهِیمُ یَهُودِیࣰّا وَلَا نَصۡرَانِیࣰّا وَلَـٰكِن كَانَ حَنِیفࣰا مُّسۡلِمࣰا وَمَا كَانَ مِنَ ٱلۡمُشۡرِكِینَ ﴿٦٧﴾
ইব্রাহীম ইয়াহূদীও ছিলেন না, নাসারাও ছিলেন না; বরং তিনি ছিলেন একনিষ্ঠ মুসলিম এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।
إِنَّ أَوۡلَى ٱلنَّاسِ بِإِبۡرَ ٰهِیمَ لَلَّذِینَ ٱتَّبَعُوهُ وَهَـٰذَا ٱلنَّبِیُّ وَٱلَّذِینَ ءَامَنُواْۗ وَٱللَّهُ وَلِیُّ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿٦٨﴾
নিশ্চয় মানুষের মধ্যে তারাই ইব্রাহীমের ঘনিষ্ঠতম যারা তার অনুসরণ করেছে এবং এ নবী ও যারা ঈমান এনেছে; আর আল্লাহ্ মুমিনদের অভিভাবক [১]।
وَدَّت طَّاۤىِٕفَةࣱ مِّنۡ أَهۡلِ ٱلۡكِتَـٰبِ لَوۡ یُضِلُّونَكُمۡ وَمَا یُضِلُّونَ إِلَّاۤ أَنفُسَهُمۡ وَمَا یَشۡعُرُونَ ﴿٦٩﴾
কিতাবীদের একদল চায় যেন তোমাদেরকে বিপথগামী করতে পারে, অথচ তারা নিজেদেরকেই বিপথগামী করে। আর তারা উপলব্ধি করে না।
یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ لِمَ تَكۡفُرُونَ بِـَٔایَـٰتِ ٱللَّهِ وَأَنتُمۡ تَشۡهَدُونَ ﴿٧٠﴾
হে কিতাবীরা! তোমরা কেন আল্লাহ্র আয়াতসমূহের সাথে কুফরী কর, যখন তোমরাই সাক্ষ্য বহন কর [১]?
یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ لِمَ تَلۡبِسُونَ ٱلۡحَقَّ بِٱلۡبَـٰطِلِ وَتَكۡتُمُونَ ٱلۡحَقَّ وَأَنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ﴿٧١﴾
হে কিতাবীরা! তোমরা কেন সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত কর [১] এবং সত্য গোপন কর, যখন তোমরা জান [২] ?
وَقَالَت طَّاۤىِٕفَةࣱ مِّنۡ أَهۡلِ ٱلۡكِتَـٰبِ ءَامِنُواْ بِٱلَّذِیۤ أُنزِلَ عَلَى ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ وَجۡهَ ٱلنَّهَارِ وَٱكۡفُرُوۤاْ ءَاخِرَهُۥ لَعَلَّهُمۡ یَرۡجِعُونَ ﴿٧٢﴾
আর কিতাবীদের একদল বলল, ‘যারা ঈমান এনেছে তাদের প্রতি যা নাযিল হয়েছে তোমরা দিনের শুরুতে তাতে ঈমান আন এবং দিনের শেষে কুফরী কর; যাতে তারা ফিরে আসে [১]।
وَلَا تُؤۡمِنُوۤاْ إِلَّا لِمَن تَبِعَ دِینَكُمۡ قُلۡ إِنَّ ٱلۡهُدَىٰ هُدَى ٱللَّهِ أَن یُؤۡتَىٰۤ أَحَدࣱ مِّثۡلَ مَاۤ أُوتِیتُمۡ أَوۡ یُحَاۤجُّوكُمۡ عِندَ رَبِّكُمۡۗ قُلۡ إِنَّ ٱلۡفَضۡلَ بِیَدِ ٱللَّهِ یُؤۡتِیهِ مَن یَشَاۤءُۗ وَٱللَّهُ وَ ٰسِعٌ عَلِیمࣱ ﴿٧٣﴾
আর যে তোমাদের দীনের অনুসরণ করে তাদেরকে ছাড়া আর কাউকেও বিশ্বাস করো না [১]।’ বলুন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ্র নির্দেশিত পথই একমাত্র পথ। এটা এ জন্যে যে তোমাদেরকে যা দেয়া হয়েছে অনুরূপ আর কাউকেও দেয়া হবে অথবা তোমাদের রবের সামনে তারা তোমাদের সাথে বিতর্ক করবে [২]।’ বলুন, ‘নিশ্চয় অনুগ্রহ আল্লাহ্র হাতে; তিনি যাকে ইচ্ছে তা প্রদান করেন। আর আল্লাহ্ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।’
یَخۡتَصُّ بِرَحۡمَتِهِۦ مَن یَشَاۤءُۗ وَٱللَّهُ ذُو ٱلۡفَضۡلِ ٱلۡعَظِیمِ ﴿٧٤﴾
তিনি স্বীয় অনুগ্রহের জন্য যাকে ইচ্ছে একান্ত করে বেছে নেন [১]। আর আল্লাহ্ মহা অনুগ্রহশীল।
۞ وَمِنۡ أَهۡلِ ٱلۡكِتَـٰبِ مَنۡ إِن تَأۡمَنۡهُ بِقِنطَارࣲ یُؤَدِّهِۦۤ إِلَیۡكَ وَمِنۡهُم مَّنۡ إِن تَأۡمَنۡهُ بِدِینَارࣲ لَّا یُؤَدِّهِۦۤ إِلَیۡكَ إِلَّا مَا دُمۡتَ عَلَیۡهِ قَاۤىِٕمࣰاۗ ذَ ٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ قَالُواْ لَیۡسَ عَلَیۡنَا فِی ٱلۡأُمِّیِّـۧنَ سَبِیلࣱ وَیَقُولُونَ عَلَى ٱللَّهِ ٱلۡكَذِبَ وَهُمۡ یَعۡلَمُونَ ﴿٧٥﴾
আর কিতাবীদের মধ্যে এমন লোক রয়েছে, যে বিপুল সম্পদ আমানত রাখলেও ফেরত দেবে [১]; আবার এমন লোকও আছে যার কাছে একটি দিনার আমানত রাখলেও তার উপর সর্বোচ্চ তাগাদা না দিলে সে তা ফেরত দেবে না। এটা এ কারণে যে, তারা বলে, ‘উম্মীদের ব্যাপারে আমাদের উপর কোনো বাধ্যবাধকতা নেই’ [২] আর তারা জেনে-বুঝে আল্লাহ্র উপর মিথ্যা বলে।
بَلَىٰۚ مَنۡ أَوۡفَىٰ بِعَهۡدِهِۦ وَٱتَّقَىٰ فَإِنَّ ٱللَّهَ یُحِبُّ ٱلۡمُتَّقِینَ ﴿٧٦﴾
হ্যাঁ অবশ্যই, কেউ যদি তার অংগীকার পূর্ণ করে এবং তাকওয়া অবলম্বন করে তবে নিশ্চয় আল্লাহ্ মুত্তাকীদেরকে ভালবাসেন [১]।
إِنَّ ٱلَّذِینَ یَشۡتَرُونَ بِعَهۡدِ ٱللَّهِ وَأَیۡمَـٰنِهِمۡ ثَمَنࣰا قَلِیلًا أُوْلَـٰۤىِٕكَ لَا خَلَـٰقَ لَهُمۡ فِی ٱلۡـَٔاخِرَةِ وَلَا یُكَلِّمُهُمُ ٱللَّهُ وَلَا یَنظُرُ إِلَیۡهِمۡ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِ وَلَا یُزَكِّیهِمۡ وَلَهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمࣱ ﴿٧٧﴾
নিশ্চয় যারা আল্লাহ্র সাথে করা প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথের বিনিময়ে তুচ্ছ মূল্য খরিদ করে, আখেরাতে তাদের কোনো অংশ নেই [১]। আর আল্লাহ্ তাদের সাথে কথা বলবেন না এবং তাদের দিকে তাকাবেন না কেয়ামতের দিন। আর তাদেরকে পরিশুদ্ধও করবেন না; এবং তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি [২]।
وَإِنَّ مِنۡهُمۡ لَفَرِیقࣰا یَلۡوُۥنَ أَلۡسِنَتَهُم بِٱلۡكِتَـٰبِ لِتَحۡسَبُوهُ مِنَ ٱلۡكِتَـٰبِ وَمَا هُوَ مِنَ ٱلۡكِتَـٰبِ وَیَقُولُونَ هُوَ مِنۡ عِندِ ٱللَّهِ وَمَا هُوَ مِنۡ عِندِ ٱللَّهِ وَیَقُولُونَ عَلَى ٱللَّهِ ٱلۡكَذِبَ وَهُمۡ یَعۡلَمُونَ ﴿٧٨﴾
আর নিশ্চয়ই তাদের মধ্যে একদল আছে যারা কিতাবকে জিহ্বা দ্বারা বিকৃত করে যাতে তোমরা সেটাকে আল্লাহ্র কিতাবের অংশ মনে কর; অথচ সেটা কিতাবের অংশ নয়। আর তারা বলে, ‘সেটা আল্লাহ্র পক্ষ থেকে’; অথচ সেটা আল্লাহ্র পক্ষ থেকে নয়। আর তারা জেনে-বুঝে আল্লাহ্র উপর মিথ্যা বলে [১]।
مَا كَانَ لِبَشَرٍ أَن یُؤۡتِیَهُ ٱللَّهُ ٱلۡكِتَـٰبَ وَٱلۡحُكۡمَ وَٱلنُّبُوَّةَ ثُمَّ یَقُولَ لِلنَّاسِ كُونُواْ عِبَادࣰا لِّی مِن دُونِ ٱللَّهِ وَلَـٰكِن كُونُواْ رَبَّـٰنِیِّـۧنَ بِمَا كُنتُمۡ تُعَلِّمُونَ ٱلۡكِتَـٰبَ وَبِمَا كُنتُمۡ تَدۡرُسُونَ ﴿٧٩﴾
কোনো ব্যক্তির জন্য সঙ্গত নয় যে, আল্লাহ্ তাকে কিতাব, হেকমত ও নবুওয়াত দান করার পর তিনি মানুষকে বলবেন, ‘আল্লাহ্র পরিবর্তে তোমরা আমার দাস হয়ে যাও’ [১], বরং তিনি বলবেন, ‘তোমরা রব্বানী [২] হয়ে যাও, যেহেতু তোমরা কিতাব শিক্ষা দাও এবং যেহেতু তোমরা অধ্যয়ন কর।’
وَلَا یَأۡمُرَكُمۡ أَن تَتَّخِذُواْ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةَ وَٱلنَّبِیِّـۧنَ أَرۡبَابًاۗ أَیَأۡمُرُكُم بِٱلۡكُفۡرِ بَعۡدَ إِذۡ أَنتُم مُّسۡلِمُونَ ﴿٨٠﴾
অনুরূপভাবে ফেরেশ্তাগণ ও নবীগণকে রবরূপ গ্রহণ করতে তিনি তোমাদেরকে নির্দেশ দেন না। তোমাদের মুসলিম হওয়ার পর তিনি কি তোমাদেরকে কুফরীর নির্দেশ দেবেন?
وَإِذۡ أَخَذَ ٱللَّهُ مِیثَـٰقَ ٱلنَّبِیِّـۧنَ لَمَاۤ ءَاتَیۡتُكُم مِّن كِتَـٰبࣲ وَحِكۡمَةࣲ ثُمَّ جَاۤءَكُمۡ رَسُولࣱ مُّصَدِّقࣱ لِّمَا مَعَكُمۡ لَتُؤۡمِنُنَّ بِهِۦ وَلَتَنصُرُنَّهُۥۚ قَالَ ءَأَقۡرَرۡتُمۡ وَأَخَذۡتُمۡ عَلَىٰ ذَ ٰلِكُمۡ إِصۡرِیۖ قَالُوۤاْ أَقۡرَرۡنَاۚ قَالَ فَٱشۡهَدُواْ وَأَنَا۠ مَعَكُم مِّنَ ٱلشَّـٰهِدِینَ ﴿٨١﴾
আর স্মরণ করুন, যখন আল্লাহ্ নবীদের অংগীকার নিয়েছিলেন [১] যে, আমি তোমাদেরকে কিতাব ও হিকমত যা কিছু দিয়েছি; তারপর তোমাদের কাছে যা আছে তার সত্যায়নকারীরূপে যখন একজন রাসূল আসবে– তখন তোমরা অবশ্যই তার প্রতি ঈমান আনবে এবং তাকে সাহায্য করবে।’ তিনি বললেন, ‘তোমরা কি স্বীকার করলে এবং এর উপর আমার অংগীকার কি তোমরা গ্রহণ করলে?’ তারা বলল, ‘আমরা স্বীকার করলাম’। তিনি বললেন, ‘তবে তোমরা সাক্ষী থাক এবং আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষী রইলাম [২]।’
فَمَن تَوَلَّىٰ بَعۡدَ ذَ ٰلِكَ فَأُوْلَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡفَـٰسِقُونَ ﴿٨٢﴾
সুতরাং এরপর যারা মুখ ফিরাবে তারাই তো ফাসেক।
أَفَغَیۡرَ دِینِ ٱللَّهِ یَبۡغُونَ وَلَهُۥۤ أَسۡلَمَ مَن فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ طَوۡعࣰا وَكَرۡهࣰا وَإِلَیۡهِ یُرۡجَعُونَ ﴿٨٣﴾
তারা কি চায় আল্লাহ্র দীনের পরিবর্তে অন্য কিছু? অথচ আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে সবকিছুই ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে [১]! আর তাঁর দিকেই তাদের ফিরিয়ে নেয়া হবে।
قُلۡ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ وَمَاۤ أُنزِلَ عَلَیۡنَا وَمَاۤ أُنزِلَ عَلَىٰۤ إِبۡرَ ٰهِیمَ وَإِسۡمَـٰعِیلَ وَإِسۡحَـٰقَ وَیَعۡقُوبَ وَٱلۡأَسۡبَاطِ وَمَاۤ أُوتِیَ مُوسَىٰ وَعِیسَىٰ وَٱلنَّبِیُّونَ مِن رَّبِّهِمۡ لَا نُفَرِّقُ بَیۡنَ أَحَدࣲ مِّنۡهُمۡ وَنَحۡنُ لَهُۥ مُسۡلِمُونَ ﴿٨٤﴾
বলুন, ‘আমরা আল্লাহ্তে ও আমাদের প্রতি যা নাযিল হয়েছে এবং ইব্রাহীম, ইসমা’ঈল, ইসহাক, ইয়া’কূব ও তাঁর বংশধরগণের প্রতি যা নাযিল হয়েছিল এবং যা মূসা, ‘ঈসা ও অন্যান্য নবীগণকে তাঁদের রবের পক্ষ থেকে প্রদান করা হয়েছিল তাতে ঈমান এনেছি; আমরা তাঁদের কারও মধ্যে কোনো তারতম্য করি না। আর আমরা তাঁরই কাছে আত্মসমর্পণকারী।’
وَمَن یَبۡتَغِ غَیۡرَ ٱلۡإِسۡلَـٰمِ دِینࣰا فَلَن یُقۡبَلَ مِنۡهُ وَهُوَ فِی ٱلۡـَٔاخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَـٰسِرِینَ ﴿٨٥﴾
আর কেউ ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো দীন গ্রহণ করতে চাইলে তা কখনো তার পক্ষ থেকে কবুল করা হবে না এবং সে হবে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।
كَیۡفَ یَهۡدِی ٱللَّهُ قَوۡمࣰا كَفَرُواْ بَعۡدَ إِیمَـٰنِهِمۡ وَشَهِدُوۤاْ أَنَّ ٱلرَّسُولَ حَقࣱّ وَجَاۤءَهُمُ ٱلۡبَیِّنَـٰتُۚ وَٱللَّهُ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿٨٦﴾
আল্লাহ্ কিভাবে হেদায়াত করবেন সে সম্প্রদায়কে, যারা ঈমান আনার পর ও রাসূলকে সত্য বলে সাক্ষ্য দেয়ার পর এবং তাদের কাছে স্পষ্ট নিদর্শন আসার পর কুফরী করে? আর আল্লাহ যালেম সম্প্রদায়কে হেদায়াত দেন না [১]।
أُوْلَـٰۤىِٕكَ جَزَاۤؤُهُمۡ أَنَّ عَلَیۡهِمۡ لَعۡنَةَ ٱللَّهِ وَٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةِ وَٱلنَّاسِ أَجۡمَعِینَ ﴿٨٧﴾
এরাই তারা যাদের প্রতিদান হলো, তাদের উপর আল্লাহ্র, ফেরেশ্তাগণের এবং সকল মানুষের লা’নত।
خَـٰلِدِینَ فِیهَا لَا یُخَفَّفُ عَنۡهُمُ ٱلۡعَذَابُ وَلَا هُمۡ یُنظَرُونَ ﴿٨٨﴾
তারা তাতে স্থায়ী হবে, তাদের শাস্তি শিথিল করা হবে না এবং তাদেরকে বিরামও দেয়া হবে না;
إِلَّا ٱلَّذِینَ تَابُواْ مِنۢ بَعۡدِ ذَ ٰلِكَ وَأَصۡلَحُواْ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمٌ ﴿٨٩﴾
কিন্তু তারা ব্যতীত, যারা এর পরে তাওবাহ্ করেছে এবং নিজেদেরকে সংশোধণ করে নিয়েছে। তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
إِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ بَعۡدَ إِیمَـٰنِهِمۡ ثُمَّ ٱزۡدَادُواْ كُفۡرࣰا لَّن تُقۡبَلَ تَوۡبَتُهُمۡ وَأُوْلَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلضَّاۤلُّونَ ﴿٩٠﴾
নিশ্চয় যারা ঈমান আনার পর কুফরী করেছে তারপর তারা কুফরীতে বেড়ে গিয়েছে তাদের তওবা কখনো কবুল করা হবে না। আর তারাই পথ ভ্রষ্ট [১]।
إِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ وَمَاتُواْ وَهُمۡ كُفَّارࣱ فَلَن یُقۡبَلَ مِنۡ أَحَدِهِم مِّلۡءُ ٱلۡأَرۡضِ ذَهَبࣰا وَلَوِ ٱفۡتَدَىٰ بِهِۦۤۗ أُوْلَـٰۤىِٕكَ لَهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمࣱ وَمَا لَهُم مِّن نَّـٰصِرِینَ ﴿٩١﴾
নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে এবং কাফেররূপে মৃত্যু ঘটেছে তাদের কারো কাছ থেকে যমীনভরা সোনা বিনিময়স্বরূপ প্রদান করলেও তা কখনো কবুল করা হবে না [১]। এরাই তারা, যাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে; আর তাদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই।
لَن تَنَالُواْ ٱلۡبِرَّ حَتَّىٰ تُنفِقُواْ مِمَّا تُحِبُّونَۚ وَمَا تُنفِقُواْ مِن شَیۡءࣲ فَإِنَّ ٱللَّهَ بِهِۦ عَلِیمࣱ ﴿٩٢﴾
তোমরা যা ভালোবাস তা থেকে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনো সওয়াব অর্জন করবে না। আর তোমরা যা কিছু ব্যয় কর, নিশ্চয় আল্লাহ সে সম্পর্কে সবিশেষ অবগত [১]।
۞ كُلُّ ٱلطَّعَامِ كَانَ حِلࣰّا لِّبَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ إِلَّا مَا حَرَّمَ إِسۡرَ ٰۤءِیلُ عَلَىٰ نَفۡسِهِۦ مِن قَبۡلِ أَن تُنَزَّلَ ٱلتَّوۡرَىٰةُۚ قُلۡ فَأۡتُواْ بِٱلتَّوۡرَىٰةِ فَٱتۡلُوهَاۤ إِن كُنتُمۡ صَـٰدِقِینَ ﴿٩٣﴾
তাওরাত নাযিল হওয়ার আগে ইস্রাঈল তার নিজের উপর যা হারাম করেছিল [১] তা ছাড়া বনী ইসরাঈলের জন্য যাবতীয় খাদ্যই হালাল ছিল [২]। বলুন, ‘যদি তোমরা সত্যবাদী হও তবে তাওরাত আন এবং তা পাঠ কর।’
فَمَنِ ٱفۡتَرَىٰ عَلَى ٱللَّهِ ٱلۡكَذِبَ مِنۢ بَعۡدِ ذَ ٰلِكَ فَأُوْلَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلظَّـٰلِمُونَ ﴿٩٤﴾
এরপরও যারা আল্লাহ্র উপর মিথ্যা রটনা করে তারাই যালেম।
قُلۡ صَدَقَ ٱللَّهُۗ فَٱتَّبِعُواْ مِلَّةَ إِبۡرَ ٰهِیمَ حَنِیفࣰاۖ وَمَا كَانَ مِنَ ٱلۡمُشۡرِكِینَ ﴿٩٥﴾
বলুন, ‘আল্লাহ্ সত্য বলেছেন। কাজেই তোমরা একনিষ্ঠভাবে ইব্রাহীমের মিল্লাত অনুসরণ কর, আর তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।’
إِنَّ أَوَّلَ بَیۡتࣲ وُضِعَ لِلنَّاسِ لَلَّذِی بِبَكَّةَ مُبَارَكࣰا وَهُدࣰى لِّلۡعَـٰلَمِینَ ﴿٩٦﴾
নিশ্চয় মানব জাতির [১] জন্য সর্বপ্রথম [২] যে ঘর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা তো বাক্কায়, বরকতময় ও সৃষ্টিজগতের দিশারী হিসাবে [৩]।
فِیهِ ءَایَـٰتُۢ بَیِّنَـٰتࣱ مَّقَامُ إِبۡرَ ٰهِیمَۖ وَمَن دَخَلَهُۥ كَانَ ءَامِنࣰاۗ وَلِلَّهِ عَلَى ٱلنَّاسِ حِجُّ ٱلۡبَیۡتِ مَنِ ٱسۡتَطَاعَ إِلَیۡهِ سَبِیلࣰاۚ وَمَن كَفَرَ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَنِیٌّ عَنِ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿٩٧﴾
তাতে অনেক সুস্পষ্ট নিদর্শন আছে [১], যেমন মাকামে ইবরাহীম [২]। আর যে কেউ সেখানে প্রবেশ করে সে নিরাপদ [৩]। আর মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে ঐ ঘরের হজ্ব [৪] করা তার জন্য অবশ্য কর্তব্য [৫]। আর যে কেউ কুফরী করল সে জেনে রাখুক, নিশ্চয় আল্লাহ সৃষ্টিজগতের মুখাপেক্ষী নন [৬]।
قُلۡ یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ لِمَ تَكۡفُرُونَ بِـَٔایَـٰتِ ٱللَّهِ وَٱللَّهُ شَهِیدٌ عَلَىٰ مَا تَعۡمَلُونَ ﴿٩٨﴾
বলুন, ‘হে আহলে কিতাবগণ! তোমরা আল্লাহ্র নিদর্শনসমূহের সাথে কেন কুফরী কর? আর তোমরা যা কর আল্লাহ তার সাক্ষী’।
قُلۡ یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ لِمَ تَصُدُّونَ عَن سَبِیلِ ٱللَّهِ مَنۡ ءَامَنَ تَبۡغُونَهَا عِوَجࣰا وَأَنتُمۡ شُهَدَاۤءُۗ وَمَا ٱللَّهُ بِغَـٰفِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُونَ ﴿٩٩﴾
বলুন, ‘হে আহলে কিতাবগণ! যে ব্যক্তি ঈমান এনেছে তাকে কেন আল্লাহ্র পথে বাধা দিচ্ছ, তাতে বক্রতা অন্বেষণ করে? অথচ তোমরা সাক্ষী [১]। আর তোমরা যা কর, আল্লাহ্ সে সম্পর্কে অনবহিত নন।’
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤاْ إِن تُطِیعُواْ فَرِیقࣰا مِّنَ ٱلَّذِینَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَـٰبَ یَرُدُّوكُم بَعۡدَ إِیمَـٰنِكُمۡ كَـٰفِرِینَ ﴿١٠٠﴾
হে মুমিনগণ! যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে, তোমরা যদি তাদের দল বিশেষের আনুগত্য কর, তবে তারা তোমাদেরকে ঈমান আনার পর আবার কাফের বানিয়ে ছাড়বে [১]।
وَكَیۡفَ تَكۡفُرُونَ وَأَنتُمۡ تُتۡلَىٰ عَلَیۡكُمۡ ءَایَـٰتُ ٱللَّهِ وَفِیكُمۡ رَسُولُهُۥۗ وَمَن یَعۡتَصِم بِٱللَّهِ فَقَدۡ هُدِیَ إِلَىٰ صِرَ ٰطࣲ مُّسۡتَقِیمࣲ ﴿١٠١﴾
আর কিভাবে তোমরা কুফরী করবে অথচ আল্লাহ্র আয়াতসমূহ তোমাদের কাছে তিলাওয়াত করা হয় এবং তোমাদের মধ্যে তাঁর রাসূল রয়েছেন [১]? আর কেউ আল্লাহকে দৃঢ়ভাবে অবলম্বন করলে সে অবশ্যই সরল পথের হেদায়াতপ্রাপ্ত হবে।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِۦ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنتُم مُّسۡلِمُونَ ﴿١٠٢﴾
হে মুমিনগণ! তোমরা যথার্থভাবে আল্লাহ্র তাকওয়া অবলম্বন কর [১] এবং তোমরা মুসলিম (পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণকারী) না হয়ে কোনো অবস্থায় মৃত্যুবরণ করো না [২]
وَٱعۡتَصِمُواْ بِحَبۡلِ ٱللَّهِ جَمِیعࣰا وَلَا تَفَرَّقُواْۚ وَٱذۡكُرُواْ نِعۡمَتَ ٱللَّهِ عَلَیۡكُمۡ إِذۡ كُنتُمۡ أَعۡدَاۤءࣰ فَأَلَّفَ بَیۡنَ قُلُوبِكُمۡ فَأَصۡبَحۡتُم بِنِعۡمَتِهِۦۤ إِخۡوَ ٰنࣰا وَكُنتُمۡ عَلَىٰ شَفَا حُفۡرَةࣲ مِّنَ ٱلنَّارِ فَأَنقَذَكُم مِّنۡهَاۗ كَذَ ٰلِكَ یُبَیِّنُ ٱللَّهُ لَكُمۡ ءَایَـٰتِهِۦ لَعَلَّكُمۡ تَهۡتَدُونَ ﴿١٠٣﴾
আর তোমরা সকলে আল্লাহ্র রশি দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। আর তোমাদের প্রতি আল্লাহ্র অনুগ্রহ স্মরণ কর, তোমরা ছিলে পরস্পর শত্রু, অতঃপর তিনি তোমাদের হৃদয়ে প্রীতির সঞ্চার করেন, ফলে তাঁর অনুগ্রহে তোমরা পরস্পর ভাই হয়ে গেলে। তোমরা তো অগ্নিগর্তের দ্বারপ্রান্তে ছিলে, তিনি তোমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করেছেন। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর নিদর্শনসমূহ স্পষ্টভাবে বিবৃত করেন যাতে তোমরা হেদায়াত পেতে পার।
وَلۡتَكُن مِّنكُمۡ أُمَّةࣱ یَدۡعُونَ إِلَى ٱلۡخَیۡرِ وَیَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَیَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِۚ وَأُوْلَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ ﴿١٠٤﴾
আর তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল যেন থাকে যারা কল্যাণের দিকে আহবান করবে এবং সৎকাজের নির্দেশ দেবে ও অসৎকাজে নিষেধ করবে [১]; আর তারাই সফলকাম।
وَلَا تَكُونُواْ كَٱلَّذِینَ تَفَرَّقُواْ وَٱخۡتَلَفُواْ مِنۢ بَعۡدِ مَا جَاۤءَهُمُ ٱلۡبَیِّنَـٰتُۚ وَأُوْلَـٰۤىِٕكَ لَهُمۡ عَذَابٌ عَظِیمࣱ ﴿١٠٥﴾
তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা তাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শনসমূহ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে [১] ও নিজেদের মধ্যে মতান্তর সৃষ্টি করেছে। আর তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি।
یَوۡمَ تَبۡیَضُّ وُجُوهࣱ وَتَسۡوَدُّ وُجُوهࣱۚ فَأَمَّا ٱلَّذِینَ ٱسۡوَدَّتۡ وُجُوهُهُمۡ أَكَفَرۡتُم بَعۡدَ إِیمَـٰنِكُمۡ فَذُوقُواْ ٱلۡعَذَابَ بِمَا كُنتُمۡ تَكۡفُرُونَ ﴿١٠٦﴾
সেদিন কিছু মুখ উজ্জল হবে এবং কিছু মুখ কালো হবে [১]; যাদের মুখ কালো হবে (তাদেরকে বলা হবে), ‘তোমরা কি ঈমান আনার পর কুফরী করেছিলে [২]? সুতরাং তোমরা শাস্তি ভোগ কর, যেহেতু তোমরা কুফরী করতে।’
وَأَمَّا ٱلَّذِینَ ٱبۡیَضَّتۡ وُجُوهُهُمۡ فَفِی رَحۡمَةِ ٱللَّهِۖ هُمۡ فِیهَا خَـٰلِدُونَ ﴿١٠٧﴾
আর যাদের মুখ উজ্জল হবে তারা আল্লাহ্র অনুগ্রহে থাকবে [১], সেখানে তারা স্থায়ী হবে।
تِلۡكَ ءَایَـٰتُ ٱللَّهِ نَتۡلُوهَا عَلَیۡكَ بِٱلۡحَقِّۗ وَمَا ٱللَّهُ یُرِیدُ ظُلۡمࣰا لِّلۡعَـٰلَمِینَ ﴿١٠٨﴾
এগুলো আল্লাহ্র আয়াত, যা আমরা আপনার কাছে যথাযথভাবে তেলাওয়াত করছি। আর আল্লাহ সৃষ্টিজগতের প্রতি যুলুম করতে চান না।
وَلِلَّهِ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۚ وَإِلَى ٱللَّهِ تُرۡجَعُ ٱلۡأُمُورُ ﴿١٠٩﴾
আর আসমানে যা কিছু আছে ও যমীনে যা কিছু আছে সব আল্লাহ্রই এবং আল্লাহ্র কাছেই এসব কিছু প্রত্যাবর্তিত হবে।
كُنتُمۡ خَیۡرَ أُمَّةٍ أُخۡرِجَتۡ لِلنَّاسِ تَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَتَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَتُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِۗ وَلَوۡ ءَامَنَ أَهۡلُ ٱلۡكِتَـٰبِ لَكَانَ خَیۡرࣰا لَّهُمۚ مِّنۡهُمُ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ وَأَكۡثَرُهُمُ ٱلۡفَـٰسِقُونَ ﴿١١٠﴾
তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত [১], মানব জাতির জন্য যাদের বের করা হয়েছে; তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দিবে, অসৎকাজে নিষেধ করবে [২] এবং আল্লাহ্র উপর ঈমান আনবে [৩]। আর আহলে কিতাবগণ যদি ঈমান আনতো তবে তা ছিল তাদের জন্য ভালো। তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক মুমিন আছে; কিন্তু তাদের অধিকাংশই ফাসেক।
لَن یَضُرُّوكُمۡ إِلَّاۤ أَذࣰىۖ وَإِن یُقَـٰتِلُوكُمۡ یُوَلُّوكُمُ ٱلۡأَدۡبَارَ ثُمَّ لَا یُنصَرُونَ ﴿١١١﴾
সামান্য কষ্ট দেয়া ছাড়া তারা তোমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। আর যদি তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে তবে তারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে; তারপর তারা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না।
ضُرِبَتۡ عَلَیۡهِمُ ٱلذِّلَّةُ أَیۡنَ مَا ثُقِفُوۤاْ إِلَّا بِحَبۡلࣲ مِّنَ ٱللَّهِ وَحَبۡلࣲ مِّنَ ٱلنَّاسِ وَبَاۤءُو بِغَضَبࣲ مِّنَ ٱللَّهِ وَضُرِبَتۡ عَلَیۡهِمُ ٱلۡمَسۡكَنَةُۚ ذَ ٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ كَانُواْ یَكۡفُرُونَ بِـَٔایَـٰتِ ٱللَّهِ وَیَقۡتُلُونَ ٱلۡأَنۢبِیَاۤءَ بِغَیۡرِ حَقࣲّۚ ذَ ٰلِكَ بِمَا عَصَواْ وَّكَانُواْ یَعۡتَدُونَ ﴿١١٢﴾
আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি ও মানুষের প্রতিশ্রুতির বাইরে যেখানেই তাদেরকে পাওয়া গেছে সেখানেই তারা লাঞ্ছিত হয়েছে। আর তারা আল্লাহ্র ক্রোধের পাত্র হয়েছে এবং তাদের উপর দারিদ্র নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এটা এ জন্যে যে, তারা আল্লাহ্র আয়াতসমূহের সাথে কুফরী করত এবং অন্যায়ভাবে নবীগণকে হত্যা করত; তা এজন্য যে, তারা অবাধ্য হয়েছিল এবং সীমালংঘন করত।
۞ لَیۡسُواْ سَوَاۤءࣰۗ مِّنۡ أَهۡلِ ٱلۡكِتَـٰبِ أُمَّةࣱ قَاۤىِٕمَةࣱ یَتۡلُونَ ءَایَـٰتِ ٱللَّهِ ءَانَاۤءَ ٱلَّیۡلِ وَهُمۡ یَسۡجُدُونَ ﴿١١٣﴾
তারা সবাই এক রকম নয়। কিতাবীদের মধ্যে অবিচলিত এক দল আছে; তারা রাতে আল্লাহ্র আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করে এবং তারা সাজ্দা করে [১]।
یُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ وَیَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَیَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَیُسَـٰرِعُونَ فِی ٱلۡخَیۡرَ ٰتِۖ وَأُوْلَـٰۤىِٕكَ مِنَ ٱلصَّـٰلِحِینَ ﴿١١٤﴾
তারা আল্লাহ এবং শেষ দিনে ঈমান আনে, সৎকাজের নির্দেশ দেয়, অসৎকাজে নিষেধ করে এবং তারা কল্যাণকর কাজে প্রতিযোগিতা করে [১]। আর তারাই পূণ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত।
وَمَا یَفۡعَلُواْ مِنۡ خَیۡرࣲ فَلَن یُكۡفَرُوهُۗ وَٱللَّهُ عَلِیمُۢ بِٱلۡمُتَّقِینَ ﴿١١٥﴾
আর উত্তম কাজের যা কিছু তারা করে তা থেকে তাদেরকে কখনো বঞ্চিত করা হবে না। আর আল্লাহ মুত্তাকীদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবগত।
إِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ لَن تُغۡنِیَ عَنۡهُمۡ أَمۡوَ ٰلُهُمۡ وَلَاۤ أَوۡلَـٰدُهُم مِّنَ ٱللَّهِ شَیۡـࣰٔاۖ وَأُوْلَـٰۤىِٕكَ أَصۡحَـٰبُ ٱلنَّارِۖ هُمۡ فِیهَا خَـٰلِدُونَ ﴿١١٦﴾
নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে, তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি আল্লাহ্র কাছে কোনো কাজে আসবে না। আর তারাই অগ্নিবাসী, তারা সেখানে স্থায়ী হবে।
مَثَلُ مَا یُنفِقُونَ فِی هَـٰذِهِ ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَا كَمَثَلِ رِیحࣲ فِیهَا صِرٌّ أَصَابَتۡ حَرۡثَ قَوۡمࣲ ظَلَمُوۤاْ أَنفُسَهُمۡ فَأَهۡلَكَتۡهُۚ وَمَا ظَلَمَهُمُ ٱللَّهُ وَلَـٰكِنۡ أَنفُسَهُمۡ یَظۡلِمُونَ ﴿١١٧﴾
এ পার্থিব জীবনে যা তারা ব্যয় করে তার দৃষ্টান্ত হিমশীতল বায়ূ, যা আঘাত করে ঐ জাতির শস্যক্ষেতে যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছে; অতঃপর তা ধ্বংস করে দেয়। আর আল্লাহ তাদের প্রতি কোনো যুলুম করেননি, তারাই নিজেদের প্রতি যুলুম করে।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ لَا تَتَّخِذُواْ بِطَانَةࣰ مِّن دُونِكُمۡ لَا یَأۡلُونَكُمۡ خَبَالࣰا وَدُّواْ مَا عَنِتُّمۡ قَدۡ بَدَتِ ٱلۡبَغۡضَاۤءُ مِنۡ أَفۡوَ ٰهِهِمۡ وَمَا تُخۡفِی صُدُورُهُمۡ أَكۡبَرُۚ قَدۡ بَیَّنَّا لَكُمُ ٱلۡـَٔایَـٰتِۖ إِن كُنتُمۡ تَعۡقِلُونَ ﴿١١٨﴾
হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদের ছাড়া অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না [১]। তারা তোমাদের অনিষ্ট করতে ত্রুটি করবে না; যা তোমাদেরকে বিপন্ন করে তা-ই তারা কামনা করে। তাদের মুখে বিদ্বেষ প্রকাশ পায় এবং তাদের হৃদয় যা গোপন রাখে তা আরো গুরুতর [২]। তোমাদের জন্য আয়াতসমূহ বিশদভাবে বিবৃত করেছি, যদি তোমরা অনুধাবন কর [৩]।
هَـٰۤأَنتُمۡ أُوْلَاۤءِ تُحِبُّونَهُمۡ وَلَا یُحِبُّونَكُمۡ وَتُؤۡمِنُونَ بِٱلۡكِتَـٰبِ كُلِّهِۦ وَإِذَا لَقُوكُمۡ قَالُوۤاْ ءَامَنَّا وَإِذَا خَلَوۡاْ عَضُّواْ عَلَیۡكُمُ ٱلۡأَنَامِلَ مِنَ ٱلۡغَیۡظِۚ قُلۡ مُوتُواْ بِغَیۡظِكُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِیمُۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ ﴿١١٩﴾
দেখ, তোমরাই তাদেরকে ভালোবাস কিন্তু তারা তোমাদেরকে ভালোবাসে না অথচ তোমরা সব কিতাবে ঈমান রাখ। আর তারা যখন তোমাদের সংস্পর্শে আসে তখন বলে, ‘আমরা ঈমান এনেছি; কিন্তু তারা যখন একান্তে মিলিত হয় তখন তোমাদের প্রতি আক্রোশে তারা নিজেদের আঙ্গুলের অগ্রভাগ দাঁত দিয়ে কাটতে থাকে।’ বলুন, ‘তোমাদের আক্রোশেই তোমরা মর।’ নিশ্চয় অন্তরে যা রয়েছে সে সম্পর্কে আল্লাহ সবিশেষ অবগত।
إِن تَمۡسَسۡكُمۡ حَسَنَةࣱ تَسُؤۡهُمۡ وَإِن تُصِبۡكُمۡ سَیِّئَةࣱ یَفۡرَحُواْ بِهَاۖ وَإِن تَصۡبِرُواْ وَتَتَّقُواْ لَا یَضُرُّكُمۡ كَیۡدُهُمۡ شَیۡـًٔاۗ إِنَّ ٱللَّهَ بِمَا یَعۡمَلُونَ مُحِیطࣱ ﴿١٢٠﴾
তোমাদের মঙ্গল হলে তা তাদেরকে কষ্ট দেয় আর তোমাদের অমঙ্গল হলে তারা তাতে আনন্দিত হয়। তোমরা যদি ধৈর্যশীল হও এবং মুত্তাকী হও তবে তাদের ষড়যন্ত্র তোমাদের কিছুই ক্ষতি করতে পারবে না [১]। তারা যা করে নিশ্চয় আল্লাহ তা পরিবেষ্টন করে রয়েছেন।
وَإِذۡ غَدَوۡتَ مِنۡ أَهۡلِكَ تُبَوِّئُ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ مَقَـٰعِدَ لِلۡقِتَالِۗ وَٱللَّهُ سَمِیعٌ عَلِیمٌ ﴿١٢١﴾
আর স্মরণ করুন, যখন আপনি আপনার পরিজনদের নিকট থেকে প্রত্যূষে বের হয়ে যুদ্ধের জন্য মুমিনগণকে ঘাঁটিতে বিন্যস্ত করেছিলেন; আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
إِذۡ هَمَّت طَّاۤىِٕفَتَانِ مِنكُمۡ أَن تَفۡشَلَا وَٱللَّهُ وَلِیُّهُمَاۗ وَعَلَى ٱللَّهِ فَلۡیَتَوَكَّلِ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ﴿١٢٢﴾
যখন তোমাদের মধ্যে দু’দলের সাহস হারানোর উপক্রম হয়েছিল অথচ আল্লাহ্ উভয়ের অভিভাবক ছিলেন [১], আর আল্লাহ্র উপরই যেন মুমিনগণ নির্ভর করে [২]।
وَلَقَدۡ نَصَرَكُمُ ٱللَّهُ بِبَدۡرࣲ وَأَنتُمۡ أَذِلَّةࣱۖ فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ﴿١٢٣﴾
আর [১] বদরের যুদ্ধে আল্লাহ অবশ্যই তোমাদেরকে সাহায্য করেছিলেন অথচ তোমরা হীনবল ছিলে। কাজেই তোমরা আল্লাহ্র তাকওয়া অবলম্বন কর, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পার।
إِذۡ تَقُولُ لِلۡمُؤۡمِنِینَ أَلَن یَكۡفِیَكُمۡ أَن یُمِدَّكُمۡ رَبُّكُم بِثَلَـٰثَةِ ءَالَـٰفࣲ مِّنَ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةِ مُنزَلِینَ ﴿١٢٤﴾
স্মরণ করুন, যখন আপনি মুমিনগণকে বলছিলেন, ‘এটা কি তোমাদের জন্য যথেষ্ট নয় যে, তোমাদের রব তিন হাজার ফিরিশ্তা নাযিল করে তোমাদেরকে সহযোগিতা করবেন? [১]’
بَلَىٰۤۚ إِن تَصۡبِرُواْ وَتَتَّقُواْ وَیَأۡتُوكُم مِّن فَوۡرِهِمۡ هَـٰذَا یُمۡدِدۡكُمۡ رَبُّكُم بِخَمۡسَةِ ءَالَـٰفࣲ مِّنَ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةِ مُسَوِّمِینَ ﴿١٢٥﴾
হ্যাঁ, নিশ্চয়, যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর, তাকওয়া অবলম্বন কর এবং তারা দ্রুত গতিতে তোমাদের উপর আক্রমণ করে, তবে আল্লাহ পাঁচ হাজার চিহ্নিত ফিরিশ্তা দিয়ে তোমাদের সাহায্য করবেন [১]।
وَمَا جَعَلَهُ ٱللَّهُ إِلَّا بُشۡرَىٰ لَكُمۡ وَلِتَطۡمَىِٕنَّ قُلُوبُكُم بِهِۦۗ وَمَا ٱلنَّصۡرُ إِلَّا مِنۡ عِندِ ٱللَّهِ ٱلۡعَزِیزِ ٱلۡحَكِیمِ ﴿١٢٦﴾
আর এটা তো আল্লাহ্ তোমাদের জন্য শুধু সুসংবাদ ও তোমাদের আত্মিক প্রশান্তির জন্য করেছেন। আর সাহায্য তো শুধু পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময় আল্লাহ্র কাছ থেকেই হয়।
لِیَقۡطَعَ طَرَفࣰا مِّنَ ٱلَّذِینَ كَفَرُوۤاْ أَوۡ یَكۡبِتَهُمۡ فَیَنقَلِبُواْ خَاۤىِٕبِینَ ﴿١٢٧﴾
যাতে তিনি কাফেরদের এক অংশকে ধ্বংস করেন বা তাদেরকে লাঞ্ছিত করেন [১]; ফলে তারা নিরাশ হয়ে ফিরে যায়।
لَیۡسَ لَكَ مِنَ ٱلۡأَمۡرِ شَیۡءٌ أَوۡ یَتُوبَ عَلَیۡهِمۡ أَوۡ یُعَذِّبَهُمۡ فَإِنَّهُمۡ ظَـٰلِمُونَ ﴿١٢٨﴾
তিনি তাদের তাওবা কবুল করবেন বা তাদেরকে শাস্তি দেবেন– এ বিষয়ে আপনার করণীয় কিছুই নেই; কারণ তারা তো যালেম [১]।
وَلِلَّهِ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۚ یَغۡفِرُ لِمَن یَشَاۤءُ وَیُعَذِّبُ مَن یَشَاۤءُۚ وَٱللَّهُ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿١٢٩﴾
আর আসমানে যা কিছু আছে ও যমীনে যা কিছু আছে সব আল্লাহ্রই। তিনি যাকে ইচ্ছে ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছে শাস্তি দেন। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ لَا تَأۡكُلُواْ ٱلرِّبَوٰۤاْ أَضۡعَـٰفࣰا مُّضَـٰعَفَةࣰۖ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ﴿١٣٠﴾
হে মুমিনগণ! তোমরা চক্রবৃ্দ্ধি হারে সুদ [১] খেয়ো না [২] এবং আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।
وَٱتَّقُواْ ٱلنَّارَ ٱلَّتِیۤ أُعِدَّتۡ لِلۡكَـٰفِرِینَ ﴿١٣١﴾
আর তোমরা সে আগুন থেকে বেঁচে থাক যা কাফেরদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে [১]
وَأَطِیعُواْ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَ لَعَلَّكُمۡ تُرۡحَمُونَ ﴿١٣٢﴾
আর তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য কর যাতে তোমরা কৃপা লাভ করতে পার [১]।
۞ وَسَارِعُوۤاْ إِلَىٰ مَغۡفِرَةࣲ مِّن رَّبِّكُمۡ وَجَنَّةٍ عَرۡضُهَا ٱلسَّمَـٰوَ ٰتُ وَٱلۡأَرۡضُ أُعِدَّتۡ لِلۡمُتَّقِینَ ﴿١٣٣﴾
আর তোমরা তীব্র গতিতে চল নিজেদের রবের ক্ষমার দিকে এবং সে জান্নাতের দিকে [১] যার বিস্তৃতি আসমানসমূহ ও যমীনের সমান [২], যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে মুত্তাকীদের জন্য [৩]।
ٱلَّذِینَ یُنفِقُونَ فِی ٱلسَّرَّاۤءِ وَٱلضَّرَّاۤءِ وَٱلۡكَـٰظِمِینَ ٱلۡغَیۡظَ وَٱلۡعَافِینَ عَنِ ٱلنَّاسِۗ وَٱللَّهُ یُحِبُّ ٱلۡمُحۡسِنِینَ ﴿١٣٤﴾
যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল অবস্থায় ব্যয় [১] করে, যারা ক্রোধ সংবরণকারী [২] এবং মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল; আর আল্লাহ মুহ্সিনদেরকে ভালবাসেন;
وَٱلَّذِینَ إِذَا فَعَلُواْ فَـٰحِشَةً أَوۡ ظَلَمُوۤاْ أَنفُسَهُمۡ ذَكَرُواْ ٱللَّهَ فَٱسۡتَغۡفَرُواْ لِذُنُوبِهِمۡ وَمَن یَغۡفِرُ ٱلذُّنُوبَ إِلَّا ٱللَّهُ وَلَمۡ یُصِرُّواْ عَلَىٰ مَا فَعَلُواْ وَهُمۡ یَعۡلَمُونَ ﴿١٣٥﴾
আর যারা কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেললে বা নিজেদের প্রতি যুলুম করলে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজেদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করবে [১]? এবং তারা যা করে ফেলে, জেনে-বুঝে তারা তা পুনরায় করতে থাকে না।
أُوْلَـٰۤىِٕكَ جَزَاۤؤُهُم مَّغۡفِرَةࣱ مِّن رَّبِّهِمۡ وَجَنَّـٰتࣱ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَاۚ وَنِعۡمَ أَجۡرُ ٱلۡعَـٰمِلِینَ ﴿١٣٦﴾
তারাই, যাদের পুরস্কার হলো তাদের রবের পক্ষ থেকে ক্ষমা এবং জান্নাত, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত; সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আর সৎকর্মশীলদের পুরস্কার কতইনা উত্তম!
قَدۡ خَلَتۡ مِن قَبۡلِكُمۡ سُنَنࣱ فَسِیرُواْ فِی ٱلۡأَرۡضِ فَٱنظُرُواْ كَیۡفَ كَانَ عَـٰقِبَةُ ٱلۡمُكَذِّبِینَ ﴿١٣٧﴾
তোমাদের পূর্বে বহু (জাতির) চরিত গত হয়েছে [১], কাজেই তোমরা যমীনে ভ্রমণ কর এবং দেখ মিথ্যারোপকারীদের কি পরিণাম [২]!
هَـٰذَا بَیَانࣱ لِّلنَّاسِ وَهُدࣰى وَمَوۡعِظَةࣱ لِّلۡمُتَّقِینَ ﴿١٣٨﴾
এগুলো মানুষের জন্য স্পষ্ট বর্ণনা এবং মুত্তাকীদের জন্য হেদায়াত ও উপদেশ।
وَلَا تَهِنُواْ وَلَا تَحۡزَنُواْ وَأَنتُمُ ٱلۡأَعۡلَوۡنَ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿١٣٩﴾
তোমরা হীনবল হয়ো না এবং চিন্তিত ও হয়ো না; তোমরাই বিজয়ী যদি তোমরা মুমিন হও [১]।
إِن یَمۡسَسۡكُمۡ قَرۡحࣱ فَقَدۡ مَسَّ ٱلۡقَوۡمَ قَرۡحࣱ مِّثۡلُهُۥۚ وَتِلۡكَ ٱلۡأَیَّامُ نُدَاوِلُهَا بَیۡنَ ٱلنَّاسِ وَلِیَعۡلَمَ ٱللَّهُ ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ وَیَتَّخِذَ مِنكُمۡ شُهَدَاۤءَۗ وَٱللَّهُ لَا یُحِبُّ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿١٤٠﴾
যদি তোমাদের আঘাত লেগে থাকে, অনুরূপ আঘাত তো তাদেরও লেগেছে। মানুষের মধ্যে পর্যায়ক্রমে আমরা এ দিনগুলোর আবর্তন ঘটাই, যাতে আল্লাহ মুমিনগণকে জানতে পারেন এবং তোমাদের মধ্য থেকে কিছু সংখ্যককে শহীদরূপে গ্রহণ করতে পারেন। আর আল্লাহ যালেমদেরকে পছন্দ করেন না।
وَلِیُمَحِّصَ ٱللَّهُ ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ وَیَمۡحَقَ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿١٤١﴾
আর যাতে আল্লাহ মুমিনদেরকে পরিশোধন করতে পারেন এবং কাফেরদেরকে নিশ্চিহ্ন করতে পারেন।
أَمۡ حَسِبۡتُمۡ أَن تَدۡخُلُواْ ٱلۡجَنَّةَ وَلَمَّا یَعۡلَمِ ٱللَّهُ ٱلَّذِینَ جَـٰهَدُواْ مِنكُمۡ وَیَعۡلَمَ ٱلصَّـٰبِرِینَ ﴿١٤٢﴾
তোমরা কি মনে কর যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে, অথচ আল্লাহ তোমাদের মধ্যে কে জিহাদ করেছে আর কে ধৈর্য্যশীল তা এখনো প্রকাশ করেননি [১]?
وَلَقَدۡ كُنتُمۡ تَمَنَّوۡنَ ٱلۡمَوۡتَ مِن قَبۡلِ أَن تَلۡقَوۡهُ فَقَدۡ رَأَیۡتُمُوهُ وَأَنتُمۡ تَنظُرُونَ ﴿١٤٣﴾
মৃত্যুর সম্মুখীন হওয়ার আগে তোমরা তো তা কামনা করতে [১], এখনতো তোমরা তা স্বচক্ষে দেখলে।
وَمَا مُحَمَّدٌ إِلَّا رَسُولࣱ قَدۡ خَلَتۡ مِن قَبۡلِهِ ٱلرُّسُلُۚ أَفَإِیْن مَّاتَ أَوۡ قُتِلَ ٱنقَلَبۡتُمۡ عَلَىٰۤ أَعۡقَـٰبِكُمۡۚ وَمَن یَنقَلِبۡ عَلَىٰ عَقِبَیۡهِ فَلَن یَضُرَّ ٱللَّهَ شَیۡـࣰٔاۗ وَسَیَجۡزِی ٱللَّهُ ٱلشَّـٰكِرِینَ ﴿١٤٤﴾
আর মুহাম্মদ একজন রাসূল মাত্র; তার আগে বহু রাসূল গত হয়েছেন। কাজেই যদি তিনি মারা যান বা নিহত হন তবে কি তোমরা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে? আর কেউ পৃষ্ঠ প্রদর্শন করলে সে কখনো আল্লাহ্র ক্ষতি করবে না; আর আল্লাহ শীঘ্রই কৃতজ্ঞদেরকে পুরস্কৃত করবেন [১]।
وَمَا كَانَ لِنَفۡسٍ أَن تَمُوتَ إِلَّا بِإِذۡنِ ٱللَّهِ كِتَـٰبࣰا مُّؤَجَّلࣰاۗ وَمَن یُرِدۡ ثَوَابَ ٱلدُّنۡیَا نُؤۡتِهِۦ مِنۡهَا وَمَن یُرِدۡ ثَوَابَ ٱلۡـَٔاخِرَةِ نُؤۡتِهِۦ مِنۡهَاۚ وَسَنَجۡزِی ٱلشَّـٰكِرِینَ ﴿١٤٥﴾
আল্লাহ্র অনুমতি ছাড়া কারো মৃত্যু হতে পারে না, যেহেতু সেটার মেয়াদ সুনির্ধারিত [১]। কেউ পার্থিব পুরস্কার চাইলে আমরা তাকে তার কিছু দিয়ে থাকি [২] এবং কেউ আখেরাতের পুরস্কার চাইলে আমরা তাকে তার কিছু দিয়ে থাকি এবং শীঘ্রই আমরা কৃতজ্ঞদেরকে পুরস্কৃত করবো।
وَكَأَیِّن مِّن نَّبِیࣲّ قَـٰتَلَ مَعَهُۥ رِبِّیُّونَ كَثِیرࣱ فَمَا وَهَنُواْ لِمَاۤ أَصَابَهُمۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ وَمَا ضَعُفُواْ وَمَا ٱسۡتَكَانُواْۗ وَٱللَّهُ یُحِبُّ ٱلصَّـٰبِرِینَ ﴿١٤٦﴾
আর বহু নবী ছিলেন, তাদের সাথে বিরাট সংখ্যক (ঈমান ও আমলে সালেহর উপর প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত) লোক যুদ্ধ করেছেন। আল্লাহর পথে তাদের যে বিপর্যয় ঘটেছিল তাতে তারা হীনবল হয়নি, দুর্বল হয়নি এবং নত হয়নি। আর আল্লাহ ধৈর্যশীলদেরকে ভালোবাসেন।
وَمَا كَانَ قَوۡلَهُمۡ إِلَّاۤ أَن قَالُواْ رَبَّنَا ٱغۡفِرۡ لَنَا ذُنُوبَنَا وَإِسۡرَافَنَا فِیۤ أَمۡرِنَا وَثَبِّتۡ أَقۡدَامَنَا وَٱنصُرۡنَا عَلَى ٱلۡقَوۡمِ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿١٤٧﴾
এ কথা ছাড়া তাদের আর কোনো কথা ছিল না, ‘হে আমাদের রব! আমাদের পাপ এবং আমাদের কাজের সীমালংঘন আপনি ক্ষমা করুন, আমাদের পা সুদৃঢ় রাখুন এবং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন।’
فَـَٔاتَىٰهُمُ ٱللَّهُ ثَوَابَ ٱلدُّنۡیَا وَحُسۡنَ ثَوَابِ ٱلۡـَٔاخِرَةِۗ وَٱللَّهُ یُحِبُّ ٱلۡمُحۡسِنِینَ ﴿١٤٨﴾
তারপর আল্লাহ তাদেরকে দুনিয়ার পুরস্কার এবং আখেরাতের উত্তম পুরস্কার দান করেন। আর আল্লাহ মুহসিনদেরকে ভালবাসেন।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤاْ إِن تُطِیعُواْ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ یَرُدُّوكُمۡ عَلَىٰۤ أَعۡقَـٰبِكُمۡ فَتَنقَلِبُواْ خَـٰسِرِینَ ﴿١٤٩﴾
হে মুমিনগণ! যদি তোমরা কাফেরদের আনুগত্য কর তবে তারা তোমাদেরকে বিপরীত দিকে ফিরিয়ে দেবে, ফলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে।
بَلِ ٱللَّهُ مَوۡلَىٰكُمۡۖ وَهُوَ خَیۡرُ ٱلنَّـٰصِرِینَ ﴿١٥٠﴾
বরং আল্লাহই তো তোমাদের অভিভাবক এবং তিনিই শ্রেষ্ঠ সাহায্যকারী।
سَنُلۡقِی فِی قُلُوبِ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ ٱلرُّعۡبَ بِمَاۤ أَشۡرَكُواْ بِٱللَّهِ مَا لَمۡ یُنَزِّلۡ بِهِۦ سُلۡطَـٰنࣰاۖ وَمَأۡوَىٰهُمُ ٱلنَّارُۖ وَبِئۡسَ مَثۡوَى ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿١٥١﴾
অচিরেই আমরা কাফেরদের হৃদয়ে ভীতির সঞ্চার করব [১], যেহেতু তারা আল্লাহ্র সাথে শরীক করেছে, যার সপক্ষে আল্লাহ কোনো সনদ পাঠাননি। আর জাহান্নাম তাদের আবাস এবং কত নিকৃষ্ট আবাস যালেমদের।
وَلَقَدۡ صَدَقَكُمُ ٱللَّهُ وَعۡدَهُۥۤ إِذۡ تَحُسُّونَهُم بِإِذۡنِهِۦۖ حَتَّىٰۤ إِذَا فَشِلۡتُمۡ وَتَنَـٰزَعۡتُمۡ فِی ٱلۡأَمۡرِ وَعَصَیۡتُم مِّنۢ بَعۡدِ مَاۤ أَرَىٰكُم مَّا تُحِبُّونَۚ مِنكُم مَّن یُرِیدُ ٱلدُّنۡیَا وَمِنكُم مَّن یُرِیدُ ٱلۡـَٔاخِرَةَۚ ثُمَّ صَرَفَكُمۡ عَنۡهُمۡ لِیَبۡتَلِیَكُمۡۖ وَلَقَدۡ عَفَا عَنكُمۡۗ وَٱللَّهُ ذُو فَضۡلٍ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿١٥٢﴾
অবশ্যই আল্লাহ তোমাদের সাথে তাঁর প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করেছিলেন যখন তোমরা আল্লাহ্র অনুমতিক্রমে তাদেরকে বিনাশ করছিলে, যে পর্যন্ত না তোমরা সাহস হারালে, নির্দেশ সম্বন্ধে মতভেদ সৃষ্টি করলে এবং যা তোমরা ভালবাস তা তোমাদেরকে দেখানোর পর তোমরা অবাধ্য হলে। তোমাদের কিছু সংখ্যক দুনিয়া চাচ্ছিল [১] এবং কিছু সংখ্যক চাচ্ছিল আখেরাত। তারপর তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য তাদের (তোমাদের শত্রুদের) থেকে তোমাদেরকে ফিরিয়ে দিলেন [২]। অবশ্য তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করলেন এবং আল্লাহ মুমিনদের প্রতি অনুগ্রহশীল।
۞ إِذۡ تُصۡعِدُونَ وَلَا تَلۡوُۥنَ عَلَىٰۤ أَحَدࣲ وَٱلرَّسُولُ یَدۡعُوكُمۡ فِیۤ أُخۡرَىٰكُمۡ فَأَثَـٰبَكُمۡ غَمَّۢا بِغَمࣲّ لِّكَیۡلَا تَحۡزَنُواْ عَلَىٰ مَا فَاتَكُمۡ وَلَا مَاۤ أَصَـٰبَكُمۡۗ وَٱللَّهُ خَبِیرُۢ بِمَا تَعۡمَلُونَ ﴿١٥٣﴾
স্মরণ কর, তোমরা যখন উপরের (পাহাড়ের) দিকে ছুটছিলে এবং পিছন ফিরে কারো প্রতি লক্ষ্য করছিলে না, আর রাসূল তোমাদেরকে পিছন দিক থেকে ডাকছিলেন। ফলে তিনি তোমাদেরকে বিপদের উপর বিপদ দিলেন [১], যাতে তোমরা যা হারিয়েছ এবং যে বিপদ তোমাদের উপর এসেছে তার জন্য তোমরা দুঃখিত না হও। আর তোমরা যা কর আল্লাহ তা বিশেষভাবে অবহিত।
ثُمَّ أَنزَلَ عَلَیۡكُم مِّنۢ بَعۡدِ ٱلۡغَمِّ أَمَنَةࣰ نُّعَاسࣰا یَغۡشَىٰ طَاۤىِٕفَةࣰ مِّنكُمۡۖ وَطَاۤىِٕفَةࣱ قَدۡ أَهَمَّتۡهُمۡ أَنفُسُهُمۡ یَظُنُّونَ بِٱللَّهِ غَیۡرَ ٱلۡحَقِّ ظَنَّ ٱلۡجَـٰهِلِیَّةِۖ یَقُولُونَ هَل لَّنَا مِنَ ٱلۡأَمۡرِ مِن شَیۡءࣲۗ قُلۡ إِنَّ ٱلۡأَمۡرَ كُلَّهُۥ لِلَّهِۗ یُخۡفُونَ فِیۤ أَنفُسِهِم مَّا لَا یُبۡدُونَ لَكَۖ یَقُولُونَ لَوۡ كَانَ لَنَا مِنَ ٱلۡأَمۡرِ شَیۡءࣱ مَّا قُتِلۡنَا هَـٰهُنَاۗ قُل لَّوۡ كُنتُمۡ فِی بُیُوتِكُمۡ لَبَرَزَ ٱلَّذِینَ كُتِبَ عَلَیۡهِمُ ٱلۡقَتۡلُ إِلَىٰ مَضَاجِعِهِمۡۖ وَلِیَبۡتَلِیَ ٱللَّهُ مَا فِی صُدُورِكُمۡ وَلِیُمَحِّصَ مَا فِی قُلُوبِكُمۡۚ وَٱللَّهُ عَلِیمُۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ ﴿١٥٤﴾
তারপর দুঃখের পর তিনি তোমাদেরকে প্রদান করলেন তন্দ্রারূপে প্রশান্তি, যা তোমাদের একদলকে আচ্ছন্ন করেছিল [১] এবং একদল জাহিলী যুগের অজ্ঞের ন্যায় আল্লাহ সম্বন্ধে অবাস্তব ধারণা করে নিজেরাই নিজেদেরকে উদ্বিগ্ন করেছিল এ বলে যে, ‘আমাদের কি কোন কিছু করার আছে?’ বলুন, ‘সব বিষয় আল্লাহ্রই ইখতিয়ারে’। যা তারা আপনার কাছে প্রকাশ করে না, তারা তাদের অন্তরে সেগুলো গোপন রাখে। তারা বলে, ‘এ ব্যাপারে আমাদের কোনো কিছু করার থাকলে আমরা এখানে নিহত হতাম না [২]।’ বলুন, ‘যদি তোমরা তোমাদের ঘরে অবস্থান করতে তবুও নিহত হওয়া যাদের জন্য অবধারিত ছিল তারা নিজেদের মৃত্যুস্থানে বের হত। এটা এজন্যে যে, আল্লাহ তোমাদের অন্তরে যা আছে তা পরীক্ষা করেন এবং তোমাদের মনে যা আছে তা পরিশোধন করেন। আর অন্তরে যা আছে সে সম্পর্কে আল্লাহ বিশেষভাবে অবগত।
إِنَّ ٱلَّذِینَ تَوَلَّوۡاْ مِنكُمۡ یَوۡمَ ٱلۡتَقَى ٱلۡجَمۡعَانِ إِنَّمَا ٱسۡتَزَلَّهُمُ ٱلشَّیۡطَـٰنُ بِبَعۡضِ مَا كَسَبُواْۖ وَلَقَدۡ عَفَا ٱللَّهُ عَنۡهُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌ حَلِیمࣱ ﴿١٥٥﴾
যেদিন দু’দল পরস্পরের সম্মুখীন হয়েছিল সেদিন তোমাদের মধ্য থেকে যারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছিল, তাদের কোনো কৃতকর্মের ফলে শয়তানই তাদের পদস্খলন ঘটিয়েছিল। অবশ্য আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করেছেন [১]। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাপরায়ণ ও পরম সহনশীল।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ لَا تَكُونُواْ كَٱلَّذِینَ كَفَرُواْ وَقَالُواْ لِإِخۡوَ ٰنِهِمۡ إِذَا ضَرَبُواْ فِی ٱلۡأَرۡضِ أَوۡ كَانُواْ غُزࣰّى لَّوۡ كَانُواْ عِندَنَا مَا مَاتُواْ وَمَا قُتِلُواْ لِیَجۡعَلَ ٱللَّهُ ذَ ٰلِكَ حَسۡرَةࣰ فِی قُلُوبِهِمۡۗ وَٱللَّهُ یُحۡیِۦ وَیُمِیتُۗ وَٱللَّهُ بِمَا تَعۡمَلُونَ بَصِیرࣱ ﴿١٥٦﴾
হে মুমিনগণ! তোমরা তাদের মত হয়ো না যারা কুফরী করে এবং তাদের ভাইয়েরা যখন দেশে দেশে সফর করে [১] বা যুদ্ধে লিপ্ত হয় তখন তাদের সম্পর্কে বলে, ‘তারা যদি আমাদের কাছে থাকত তবে তারা মরতো না এবং নিহত হত না।’ ফলে আল্লাহ এটাকেই তাদের মনে দুঃখ ও চিন্তা সৃষ্টির কারণে পরিণত করেন; প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান, আর তোমরা যা কর আল্লাহ সেসবের সম্যক দ্রষ্টা।
وَلَىِٕن قُتِلۡتُمۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ أَوۡ مُتُّمۡ لَمَغۡفِرَةࣱ مِّنَ ٱللَّهِ وَرَحۡمَةٌ خَیۡرࣱ مِّمَّا یَجۡمَعُونَ ﴿١٥٧﴾
তোমরা আল্লাহ্র পথে নিহত হলে অথবা তোমাদের মৃত্যু হলে, যা তারা জমা করে, আল্লাহ্র ক্ষমা এবং দয়া অবশ্যই তার চেয়ে উত্তম।
وَلَىِٕن مُّتُّمۡ أَوۡ قُتِلۡتُمۡ لَإِلَى ٱللَّهِ تُحۡشَرُونَ ﴿١٥٨﴾
আর তোমাদের মৃত্যু হলে অথবা তোমরা নিহত হলে আল্লাহ্রই কাছে তোমাদেরকে একত্র করা হবে।
فَبِمَا رَحۡمَةࣲ مِّنَ ٱللَّهِ لِنتَ لَهُمۡۖ وَلَوۡ كُنتَ فَظًّا غَلِیظَ ٱلۡقَلۡبِ لَٱنفَضُّواْ مِنۡ حَوۡلِكَۖ فَٱعۡفُ عَنۡهُمۡ وَٱسۡتَغۡفِرۡ لَهُمۡ وَشَاوِرۡهُمۡ فِی ٱلۡأَمۡرِۖ فَإِذَا عَزَمۡتَ فَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ یُحِبُّ ٱلۡمُتَوَكِّلِینَ ﴿١٥٩﴾
আল্লাহ্র দয়ায় আপনি তাদের প্রতি কোমল-হৃদয় হয়েছিলেন [১]; যদি আপনি রূঢ় ও কঠোরচিত্ত হতেন তবে তারা আপনার আশপাশ থেকে সরে পড়ত। কাজেই আপনি তাদেরকে ক্ষমা করে দিন এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন এবং কাজে কর্মে তাদের সাথে পরামর্শ করুন [২], তারপর আপনি কোনো সংকল্প করলে আল্লাহ্র উপর নির্ভর করবেন [৩]; নিশ্চয় আল্লাহ (তার উপর) নির্ভরকারীদের ভালবাসেন।
إِن یَنصُرۡكُمُ ٱللَّهُ فَلَا غَالِبَ لَكُمۡۖ وَإِن یَخۡذُلۡكُمۡ فَمَن ذَا ٱلَّذِی یَنصُرُكُم مِّنۢ بَعۡدِهِۦۗ وَعَلَى ٱللَّهِ فَلۡیَتَوَكَّلِ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ﴿١٦٠﴾
আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করলে তোমাদের উপর জয়ী হবার কেউ থাকবে না। আর তিনি তোমাদেরকে সাহায্য না করলে, তিনি ছাড়া কে এমন আছে যে তোমাদেরকে সাহায্য করবে? সুতরাং মুমিনগণ আল্লাহ্র উপরই নির্ভর করুক।
وَمَا كَانَ لِنَبِیٍّ أَن یَغُلَّۚ وَمَن یَغۡلُلۡ یَأۡتِ بِمَا غَلَّ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِۚ ثُمَّ تُوَفَّىٰ كُلُّ نَفۡسࣲ مَّا كَسَبَتۡ وَهُمۡ لَا یُظۡلَمُونَ ﴿١٦١﴾
আর কোনো নবী ‘গলুল’ [১] (অন্যায়ভাবে কোনো বস্তু গোপন) করবে, এটা অসম্ভব। এবং কেউ অন্যায়ভাবে কিছু গোপন করলে, যা সে অন্যায়ভাবে গোপন করবে কেয়ামতের দিন সে তা সাথে নিয়ে আসবে [২]। তারপর প্রত্যেককে যা সে অর্জন করেছে তা পূর্ণ মাত্রায় দেয়া হবে। তাদের প্রতি কোন যুলুম করা হবে না [৩]।
أَفَمَنِ ٱتَّبَعَ رِضۡوَ ٰنَ ٱللَّهِ كَمَنۢ بَاۤءَ بِسَخَطࣲ مِّنَ ٱللَّهِ وَمَأۡوَىٰهُ جَهَنَّمُۖ وَبِئۡسَ ٱلۡمَصِیرُ ﴿١٦٢﴾
আল্লাহ যেটাতে সন্তুষ্ট, যে তারই অনুসরণ করে, সে কি ওর মত যে আল্লাহ্র ক্রোধের পাত্র হয়েছে এবং জাহান্নামই যার আবাস? আর সেটা কত নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল!
هُمۡ دَرَجَـٰتٌ عِندَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ بَصِیرُۢ بِمَا یَعۡمَلُونَ ﴿١٦٣﴾
আল্লাহ্র কাছে তারা বিভিন্ন স্তরের; তারা যা করে আল্লাহ সেসব ভালোভাবে দেখেন।
لَقَدۡ مَنَّ ٱللَّهُ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِینَ إِذۡ بَعَثَ فِیهِمۡ رَسُولࣰا مِّنۡ أَنفُسِهِمۡ یَتۡلُواْ عَلَیۡهِمۡ ءَایَـٰتِهِۦ وَیُزَكِّیهِمۡ وَیُعَلِّمُهُمُ ٱلۡكِتَـٰبَ وَٱلۡحِكۡمَةَ وَإِن كَانُواْ مِن قَبۡلُ لَفِی ضَلَـٰلࣲ مُّبِینٍ ﴿١٦٤﴾
আল্লাহ মুমিনদের প্রতি অবশ্যই অনুগ্রহ করেছেন যে, তিনি তাদের নিজেদের মধ্য থেকে তাদের কাছে রাসূল পাঠিয়েছেন, যিনি তাঁর আয়াতসমূহ তাদের কাছে তেলাওয়াত করেন, তাদেরকে পরিশোধন করেন এবং কিতাব ও হেকমত শিক্ষা দেন, যদিও তারা আগে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতেই ছিল [১]।
أَوَلَمَّاۤ أَصَـٰبَتۡكُم مُّصِیبَةࣱ قَدۡ أَصَبۡتُم مِّثۡلَیۡهَا قُلۡتُمۡ أَنَّىٰ هَـٰذَاۖ قُلۡ هُوَ مِنۡ عِندِ أَنفُسِكُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرࣱ ﴿١٦٥﴾
কী ব্যাপার! যখন তোমাদের উপর মুসীবত আসলো (ওহুদের যুদ্ধে) তখন তোমরা বললে, ‘এটা কোত্থেকে আসলো?’ অথচ তোমরা তো দ্বিগুণ বিপদ ঘটিয়েছিলে (বদরের যুদ্ধে)। বলুন, ‘এটা তোমাদের নিজেদেরই [১] কাছ থেকে’ [২]; নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছুর উপর পূর্ণ ক্ষমতাবান।
وَمَاۤ أَصَـٰبَكُمۡ یَوۡمَ ٱلۡتَقَى ٱلۡجَمۡعَانِ فَبِإِذۡنِ ٱللَّهِ وَلِیَعۡلَمَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿١٦٦﴾
আর যেদিন দু’দল পরস্পরের সম্মুখীন হয়েছিল, সেদিন তোমাদের উপর যে বিপর্যয় ঘটেছিল তা আল্লাহ্রই হুকুমে [১]; আর যাতে তিনি প্রকাশ করেন, কে তোমাদের মধ্যে প্রকৃত মুমিন।
وَلِیَعۡلَمَ ٱلَّذِینَ نَافَقُواْۚ وَقِیلَ لَهُمۡ تَعَالَوۡاْ قَـٰتِلُواْ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ أَوِ ٱدۡفَعُواْۖ قَالُواْ لَوۡ نَعۡلَمُ قِتَالࣰا لَّٱتَّبَعۡنَـٰكُمۡۗ هُمۡ لِلۡكُفۡرِ یَوۡمَىِٕذٍ أَقۡرَبُ مِنۡهُمۡ لِلۡإِیمَـٰنِۚ یَقُولُونَ بِأَفۡوَ ٰهِهِم مَّا لَیۡسَ فِی قُلُوبِهِمۡۚ وَٱللَّهُ أَعۡلَمُ بِمَا یَكۡتُمُونَ ﴿١٦٧﴾
আর যাতে তিনি জেনে নেন মুনাফিকদেরকে। আর তাদেরকে বলা হয়েছিল, ‘এস, তোমরা আল্লাহ্র পথে যুদ্ধ কর অথবা প্রতিরোধ কর।’ তারা বলেছিল, ‘যদি যুদ্ধ জানতাম তবে নিশ্চিতভাবে তোমাদের অনুসরণ করতাম’। সেদিন তারা ঈমানের চেয়ে কুফরীর কাছাকাছি ছিল। যা তাদের অন্তরে নেই তারা তা মুখে বলে এবং তারা যা গোপন রাখে আল্লাহ তা অধিক অবগত।
ٱلَّذِینَ قَالُواْ لِإِخۡوَ ٰنِهِمۡ وَقَعَدُواْ لَوۡ أَطَاعُونَا مَا قُتِلُواْۗ قُلۡ فَٱدۡرَءُواْ عَنۡ أَنفُسِكُمُ ٱلۡمَوۡتَ إِن كُنتُمۡ صَـٰدِقِینَ ﴿١٦٨﴾
যারা ঘরে বসে রইল এবং তাদের ভাইদের প্রতি বলল যে, তারা তাদের কথামত চললে নিহত হত না। তাদেরকে বলুন, ‘যদি তোমরা সত্যবাদী হও তবে নিজেদেরকে মৃত্যু থেকে রক্ষা কর।’
وَلَا تَحۡسَبَنَّ ٱلَّذِینَ قُتِلُواْ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ أَمۡوَ ٰتَۢاۚ بَلۡ أَحۡیَاۤءٌ عِندَ رَبِّهِمۡ یُرۡزَقُونَ ﴿١٦٩﴾
আর যারা আল্লাহ্র পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে কখনোই মৃত মনে করো না; বরং তারা জীবিত এবং তাদের রবের কাছ থেকে তারা জীবিকাপ্রাপ্ত [১]।
فَرِحِینَ بِمَاۤ ءَاتَىٰهُمُ ٱللَّهُ مِن فَضۡلِهِۦ وَیَسۡتَبۡشِرُونَ بِٱلَّذِینَ لَمۡ یَلۡحَقُواْ بِهِم مِّنۡ خَلۡفِهِمۡ أَلَّا خَوۡفٌ عَلَیۡهِمۡ وَلَا هُمۡ یَحۡزَنُونَ ﴿١٧٠﴾
আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে যা দিয়েছেন তাতে তারা আনন্দিত এবং তাদের পিছনে যারা এখনো তাদের সাথে মিলিত হয়নি তাদের জন্য আনন্দ প্রকাশ করে যে, তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।
۞ یَسۡتَبۡشِرُونَ بِنِعۡمَةࣲ مِّنَ ٱللَّهِ وَفَضۡلࣲ وَأَنَّ ٱللَّهَ لَا یُضِیعُ أَجۡرَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿١٧١﴾
তারা আনন্দ প্রকাশ করে আল্লাহ্র নেয়ামত ও অনুগ্রহের জন্য এবং এজন্য যে আল্লাহ মুমিনদের শ্রমফল নষ্ট করেন না [১]।
ٱلَّذِینَ ٱسۡتَجَابُواْ لِلَّهِ وَٱلرَّسُولِ مِنۢ بَعۡدِ مَاۤ أَصَابَهُمُ ٱلۡقَرۡحُۚ لِلَّذِینَ أَحۡسَنُواْ مِنۡهُمۡ وَٱتَّقَوۡاْ أَجۡرٌ عَظِیمٌ ﴿١٧٢﴾
যখম হওয়ার পর যারা আল্লাহ্ ও রাসূলের ডাকে সাড়া দিয়েছে [১]। তাদের মধ্যে যারা সৎকাজ করে এবং তাক্ওয়া অবলম্বন করে চলে তাদের জন্য মহাপুরস্কার রয়েছে [২]।
ٱلَّذِینَ قَالَ لَهُمُ ٱلنَّاسُ إِنَّ ٱلنَّاسَ قَدۡ جَمَعُواْ لَكُمۡ فَٱخۡشَوۡهُمۡ فَزَادَهُمۡ إِیمَـٰنࣰا وَقَالُواْ حَسۡبُنَا ٱللَّهُ وَنِعۡمَ ٱلۡوَكِیلُ ﴿١٧٣﴾
এদেরকে লোকেরা বলেছিল, তোমাদের বিরুদ্ধে লোক জড়ো হয়েছে, কাজেই তোমরা তাদেরকে ভয় কর; কিন্তু এ কথা তাদের ঈমানকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছিল এবং তারা বলেছিল, ‘আল্লাহ্ই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনি কত উত্তম কর্মবিধায়ক’ [১]!
فَٱنقَلَبُواْ بِنِعۡمَةࣲ مِّنَ ٱللَّهِ وَفَضۡلࣲ لَّمۡ یَمۡسَسۡهُمۡ سُوۤءࣱ وَٱتَّبَعُواْ رِضۡوَ ٰنَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ ذُو فَضۡلٍ عَظِیمٍ ﴿١٧٤﴾
তারপর তারা আল্লাহ্র নেয়ামত ও অনুগ্রহসহ ফিরে এসেছিল, কোনো অনিষ্ট তাদেরকে স্পর্শ করেনি এবং আল্লাহ যাতে সন্তুষ্ট তারা তারই অনুসরণ করেছিল এবং আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল [১]।
إِنَّمَا ذَ ٰلِكُمُ ٱلشَّیۡطَـٰنُ یُخَوِّفُ أَوۡلِیَاۤءَهُۥ فَلَا تَخَافُوهُمۡ وَخَافُونِ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿١٧٥﴾
সে [১] তো শয়তান। সে তোমাদেরকে তার বন্ধুদের ভয় দেখায়; কাজেই যদি তোমরা মুমিন হও তবে তাদেরকে ভয় করো না, আমাকেই ভয় কর।
وَلَا یَحۡزُنكَ ٱلَّذِینَ یُسَـٰرِعُونَ فِی ٱلۡكُفۡرِۚ إِنَّهُمۡ لَن یَضُرُّواْ ٱللَّهَ شَیۡـࣰٔاۗ یُرِیدُ ٱللَّهُ أَلَّا یَجۡعَلَ لَهُمۡ حَظࣰّا فِی ٱلۡـَٔاخِرَةِۖ وَلَهُمۡ عَذَابٌ عَظِیمٌ ﴿١٧٦﴾
যারা কুফরীতে দ্রুতগামী, তাদের আচরণ যেন আপনাকে দুঃখ না দেয়। তারা কখনো আল্লাহ্র কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। আল্লাহ আখেরাতে তাদেরকে কোনো অংশ দেবার ইচ্ছা করেন না। আর তাদের জন্য মহাশাস্তি রয়েছে [১]।
إِنَّ ٱلَّذِینَ ٱشۡتَرَوُاْ ٱلۡكُفۡرَ بِٱلۡإِیمَـٰنِ لَن یَضُرُّواْ ٱللَّهَ شَیۡـࣰٔاۖ وَلَهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمࣱ ﴿١٧٧﴾
নিশ্চয় যারা ঈমানের বিনিময়ে কুফরী ক্রয় করেছে তারা কখনো আল্লাহ্র কোনো ক্ষতি করতে পারবে না এবং তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে।
وَلَا یَحۡسَبَنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُوۤاْ أَنَّمَا نُمۡلِی لَهُمۡ خَیۡرࣱ لِّأَنفُسِهِمۡۚ إِنَّمَا نُمۡلِی لَهُمۡ لِیَزۡدَادُوۤاْ إِثۡمࣰاۖ وَلَهُمۡ عَذَابࣱ مُّهِینࣱ ﴿١٧٨﴾
কাফেরগণ যেন কিছুতেই মনে না করে যে, আমরা অবকাশ দেই তাদের মঙ্গলের জন্য; আমরা অবকাশ দিয়ে থাকি যাতে তাদের পাপ বৃদ্ধি পায় [১]। আর তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।
مَّا كَانَ ٱللَّهُ لِیَذَرَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ عَلَىٰ مَاۤ أَنتُمۡ عَلَیۡهِ حَتَّىٰ یَمِیزَ ٱلۡخَبِیثَ مِنَ ٱلطَّیِّبِۗ وَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِیُطۡلِعَكُمۡ عَلَى ٱلۡغَیۡبِ وَلَـٰكِنَّ ٱللَّهَ یَجۡتَبِی مِن رُّسُلِهِۦ مَن یَشَاۤءُۖ فَـَٔامِنُواْ بِٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦۚ وَإِن تُؤۡمِنُواْ وَتَتَّقُواْ فَلَكُمۡ أَجۡرٌ عَظِیمࣱ ﴿١٧٩﴾
অসৎকে সৎ থেকে পৃথক না করা পর্যন্ত তোমরা যে অবস্থায় রয়েছ আল্লাহ মুমিনগণকে সে অবস্থায় ছেড়ে দিতে পারেন না। অনুরূপভাবে গায়েব সম্পর্কে তোমাদেরকে অবহিত করা আল্লাহ্র নিয়ম নয়; তবে আল্লাহ তাঁর রাসূলগণেল মধ্যে যাকে ইচ্ছা মনোনীত করেন [১]। কাজেই তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের উপর ঈমান আন। তোমরা ঈমান আনলে ও তাক্ওয়া অবলম্বন করে চললে তোমাদের জন্য মহাপুরস্কার রয়েছে।
وَلَا یَحۡسَبَنَّ ٱلَّذِینَ یَبۡخَلُونَ بِمَاۤ ءَاتَىٰهُمُ ٱللَّهُ مِن فَضۡلِهِۦ هُوَ خَیۡرࣰا لَّهُمۖ بَلۡ هُوَ شَرࣱّ لَّهُمۡۖ سَیُطَوَّقُونَ مَا بَخِلُواْ بِهِۦ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِۗ وَلِلَّهِ مِیرَ ٰثُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۗ وَٱللَّهُ بِمَا تَعۡمَلُونَ خَبِیرࣱ ﴿١٨٠﴾
আর আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে যা দিয়েছেন তাতে যারা কৃপণতা করে তাদের জন্য তা মঙ্গল, এমনটি যেন তারা কিছুতেই মনে না করে। বরং তা তাদের জন্য অমঙ্গল। যেটাতে তারা কৃপণতা করবে কেয়ামতের দিন সেটাই তাদের গলায় বেড়ী হবে [১]। আসমান ও যমীনের সত্ত্বাধিকার একমাত্র আল্লাহ্রই। তোমরা যা কর আল্লাহ তা বিশেষভাবে অবহিত।
لَّقَدۡ سَمِعَ ٱللَّهُ قَوۡلَ ٱلَّذِینَ قَالُوۤاْ إِنَّ ٱللَّهَ فَقِیرࣱ وَنَحۡنُ أَغۡنِیَاۤءُۘ سَنَكۡتُبُ مَا قَالُواْ وَقَتۡلَهُمُ ٱلۡأَنۢبِیَاۤءَ بِغَیۡرِ حَقࣲّ وَنَقُولُ ذُوقُواْ عَذَابَ ٱلۡحَرِیقِ ﴿١٨١﴾
আল্লাহ শুনেছেন তাদের কথা যারা বলে, ‘আল্লাহ অবশ্যই অভাবগ্রস্ত এবং আমরা অভাবমুক্ত’ [১]। তারা যা বলেছে তা এবং নবীগণকে অন্যায়ভাবে হত্যা করার বিষয় আমরা লিখে রাখব এবং বলব, ‘তোমরা দহন যন্ত্রণা ভোগ কর [২]।’
ذَ ٰلِكَ بِمَا قَدَّمَتۡ أَیۡدِیكُمۡ وَأَنَّ ٱللَّهَ لَیۡسَ بِظَلَّامࣲ لِّلۡعَبِیدِ ﴿١٨٢﴾
এ হচ্ছে তোমাদের কৃতকর্মের ফল এবং এটা এ কারণে যে, আল্লাহ বান্দাদের প্রতি মোটেই যালেম নন।
ٱلَّذِینَ قَالُوۤاْ إِنَّ ٱللَّهَ عَهِدَ إِلَیۡنَاۤ أَلَّا نُؤۡمِنَ لِرَسُولٍ حَتَّىٰ یَأۡتِیَنَا بِقُرۡبَانࣲ تَأۡكُلُهُ ٱلنَّارُۗ قُلۡ قَدۡ جَاۤءَكُمۡ رُسُلࣱ مِّن قَبۡلِی بِٱلۡبَیِّنَـٰتِ وَبِٱلَّذِی قُلۡتُمۡ فَلِمَ قَتَلۡتُمُوهُمۡ إِن كُنتُمۡ صَـٰدِقِینَ ﴿١٨٣﴾
যারা বলে, ‘আল্লাহ আমাদেরকে আদেশ দিয়েছেন যে, আমরা যেন কোনো রাসূলের প্রতি ঈমান না আনি যতক্ষণ পর্যন্ত সে আমাদের কাছে এমন কুরবানী উপস্থিত না করবে যা আগুন খেয়ে ফেলবে। তাদেরকে বলুন, ‘আমার আগে অনেক রাসূল স্পষ্ট নিদর্শনসহ এবং তোমরা যা বলছ তা সহ তোমাদের কাছে এসেছিলেন, যদি তোমরা সত্যবাদী হও তবে কেন তাদেরকে হত্যা করেছিলে?’
فَإِن كَذَّبُوكَ فَقَدۡ كُذِّبَ رُسُلࣱ مِّن قَبۡلِكَ جَاۤءُو بِٱلۡبَیِّنَـٰتِ وَٱلزُّبُرِ وَٱلۡكِتَـٰبِ ٱلۡمُنِیرِ ﴿١٨٤﴾
তারা যদি আপনার প্রতি মিথ্যারোপ করে, আপনার আগে যে সব রাসূল স্পষ্ট নিদর্শন, আসমানী সহীফা এবং দীপ্তিমান কিতাবসহ এসেছিলেন তাদের প্রতিও তো মিথ্যারোপ করা হয়েছিল।
كُلُّ نَفۡسࣲ ذَاۤىِٕقَةُ ٱلۡمَوۡتِۗ وَإِنَّمَا تُوَفَّوۡنَ أُجُورَكُمۡ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِۖ فَمَن زُحۡزِحَ عَنِ ٱلنَّارِ وَأُدۡخِلَ ٱلۡجَنَّةَ فَقَدۡ فَازَۗ وَمَا ٱلۡحَیَوٰةُ ٱلدُّنۡیَاۤ إِلَّا مَتَـٰعُ ٱلۡغُرُورِ ﴿١٨٥﴾
জীবমাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। কেবল কেয়ামতের দিনই তোমাদেরকে তোমাদের কর্মফল পূর্ণ মাত্রায় দেয়া হবে। অতঃপর যাকে আগুন থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে সে-ই সফলকাম [১]। আর পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ছাড়া আর কিছু নয় [২]।
۞ لَتُبۡلَوُنَّ فِیۤ أَمۡوَ ٰلِكُمۡ وَأَنفُسِكُمۡ وَلَتَسۡمَعُنَّ مِنَ ٱلَّذِینَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَـٰبَ مِن قَبۡلِكُمۡ وَمِنَ ٱلَّذِینَ أَشۡرَكُوۤاْ أَذࣰى كَثِیرࣰاۚ وَإِن تَصۡبِرُواْ وَتَتَّقُواْ فَإِنَّ ذَ ٰلِكَ مِنۡ عَزۡمِ ٱلۡأُمُورِ ﴿١٨٦﴾
তোমাদেরকে অবশ্যই তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবনে পরীক্ষা করা হবে। তোমাদের আগে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিল তাদের এবং মুশরিকদের কাছ থেকে তোমরা অনেক কষ্টদায়ক কথা শুনবে। যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর এবং তাক্ওয়া অবলম্বন কর তবে নিশ্চয়ই তা হবে দৃঢ় সংকল্পের কাজ [১]।
وَإِذۡ أَخَذَ ٱللَّهُ مِیثَـٰقَ ٱلَّذِینَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَـٰبَ لَتُبَیِّنُنَّهُۥ لِلنَّاسِ وَلَا تَكۡتُمُونَهُۥ فَنَبَذُوهُ وَرَاۤءَ ظُهُورِهِمۡ وَٱشۡتَرَوۡاْ بِهِۦ ثَمَنࣰا قَلِیلࣰاۖ فَبِئۡسَ مَا یَشۡتَرُونَ ﴿١٨٧﴾
স্মরণ করুন, যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিল আল্লাহ তাদের প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন: ‘অবশ্যই তোমরা তা মানুষের কাছে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করবে এবং তা গোপন করবে না।’ এরপরও তারা তা তাদের পেছনে ফেলে রাখে (অগ্রাহ্য করে) ও তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করে; কাজেই তারা যা ক্রয় করে তা কত নিকৃষ্ট!
لَا تَحۡسَبَنَّ ٱلَّذِینَ یَفۡرَحُونَ بِمَاۤ أَتَواْ وَّیُحِبُّونَ أَن یُحۡمَدُواْ بِمَا لَمۡ یَفۡعَلُواْ فَلَا تَحۡسَبَنَّهُم بِمَفَازَةࣲ مِّنَ ٱلۡعَذَابِۖ وَلَهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمࣱ ﴿١٨٨﴾
যারা নিজেরা যা করেছে তাতে আনন্দ প্রকাশ করে এবং নিজেরা যা করেনি এমন কাজের জন্য প্রশংসিত হতে ভালোবাসে [১], তারা শাস্তি থেকে মুক্তি পাবে –এরূপ আপনি কখনো মনে করবেন না। আর তাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে।
وَلِلَّهِ مُلۡكُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرٌ ﴿١٨٩﴾
আর আসমান ও যমীনের সার্বভৌম মালিকানা একমাত্র আল্লাহ্রই; আর আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
إِنَّ فِی خَلۡقِ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَٱخۡتِلَـٰفِ ٱلَّیۡلِ وَٱلنَّهَارِ لَـَٔایَـٰتࣲ لِّأُوْلِی ٱلۡأَلۡبَـٰبِ ﴿١٩٠﴾
আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টিতে [১], রাত ও দিনের পরিবর্তনে [২] নিদর্শনাবলী রয়েছে [৩] বোধশক্তি সম্পন্ন লোকদের জন্য।
ٱلَّذِینَ یَذۡكُرُونَ ٱللَّهَ قِیَـٰمࣰا وَقُعُودࣰا وَعَلَىٰ جُنُوبِهِمۡ وَیَتَفَكَّرُونَ فِی خَلۡقِ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ رَبَّنَا مَا خَلَقۡتَ هَـٰذَا بَـٰطِلࣰا سُبۡحَـٰنَكَ فَقِنَا عَذَابَ ٱلنَّارِ ﴿١٩١﴾
যারা দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে আল্লাহ্র স্মরণ করে এবং আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টি সম্বন্ধে চিন্তা করে, আর বলে, ‘হে আমাদের রব! আপনি এগুলো অনর্থক সৃষ্টি করেননি [১], আপনি অত্যন্ত পবিত্র, অতএব আপনি আমাদেরকে আগুনের শাস্তি হতে রক্ষা করুন।’
رَبَّنَاۤ إِنَّكَ مَن تُدۡخِلِ ٱلنَّارَ فَقَدۡ أَخۡزَیۡتَهُۥۖ وَمَا لِلظَّـٰلِمِینَ مِنۡ أَنصَارࣲ ﴿١٩٢﴾
‘হে আমাদের রব! আপনি কাউকেও আগুনে নিক্ষেপ করলে তাকে তো আপনি নিশ্চয়ই হেয় করলেন এবং যালেমদের কোনো সাহায্যকারী নেই।’
رَّبَّنَاۤ إِنَّنَا سَمِعۡنَا مُنَادِیࣰا یُنَادِی لِلۡإِیمَـٰنِ أَنۡ ءَامِنُواْ بِرَبِّكُمۡ فَـَٔامَنَّاۚ رَبَّنَا فَٱغۡفِرۡ لَنَا ذُنُوبَنَا وَكَفِّرۡ عَنَّا سَیِّـَٔاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ ٱلۡأَبۡرَارِ ﴿١٩٣﴾
‘হে আমাদের রব, আমরা এক আহ্বায়ককে ঈমানের দিকে আহ্বান করতে শুনেছি, ‘তোমরা তোমাদের রবের উপর ঈমান আন।’ কাজেই আমরা ঈমান এনেছি। হে আমাদের রব! আপনি আমাদের পাপরাশি ক্ষমা করুন, আমাদের মন্দ কাজগুলো দূরীভূত করুন এবং আমাদেরকে সৎকর্মপরায়ণদের সহগামী করে মৃত্যু দিন [১]।
رَبَّنَا وَءَاتِنَا مَا وَعَدتَّنَا عَلَىٰ رُسُلِكَ وَلَا تُخۡزِنَا یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِۖ إِنَّكَ لَا تُخۡلِفُ ٱلۡمِیعَادَ ﴿١٩٤﴾
‘হে আমাদের রব! আপনার রাসূলগণের মাধ্যমে আমাদেরকে যা দিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা আমাদেরকে দান করুন এবং কেয়ামতের দিন আমাদেরকে হেয় করবেন না। নিশ্চয় আপনি প্রতিশ্রুতির ব্যতিক্রম করেন না।’
فَٱسۡتَجَابَ لَهُمۡ رَبُّهُمۡ أَنِّی لَاۤ أُضِیعُ عَمَلَ عَـٰمِلࣲ مِّنكُم مِّن ذَكَرٍ أَوۡ أُنثَىٰۖ بَعۡضُكُم مِّنۢ بَعۡضࣲۖ فَٱلَّذِینَ هَاجَرُواْ وَأُخۡرِجُواْ مِن دِیَـٰرِهِمۡ وَأُوذُواْ فِی سَبِیلِی وَقَـٰتَلُواْ وَقُتِلُواْ لَأُكَفِّرَنَّ عَنۡهُمۡ سَیِّـَٔاتِهِمۡ وَلَأُدۡخِلَنَّهُمۡ جَنَّـٰتࣲ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ ثَوَابࣰا مِّنۡ عِندِ ٱللَّهِۚ وَٱللَّهُ عِندَهُۥ حُسۡنُ ٱلثَّوَابِ ﴿١٩٥﴾
তারপর তাদের রব তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে বলেন, ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের মধ্যে আমলকারী কোনো নর বা নারীর আমল বিফল করি না [১]; তোমরা একে অপরের অংশ। কাজেই যারা হিজরত করেছে, নিজ ঘর থেকে উৎখাত হয়েছে, আমার পথে নির্যাতিত হয়েছে এবং যুদ্ধ করেছে ও নিহত হয়েছে আমি তাদের পাপ কাজগুলো অবশ্যই দূর করব [২] এবং অবশ্যই তাদেরকে প্রবেশ করাব জান্নাতে যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত। এটা আল্লাহ্র কাছ থেকে পুরস্কার; আর উত্তম পুরস্কার আল্লাহ্রই কাছে রয়েছে।
لَا یَغُرَّنَّكَ تَقَلُّبُ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ فِی ٱلۡبِلَـٰدِ ﴿١٩٦﴾
যারা কুফরী করেছে, দেশে দেশে তাদের অবাধ বিচরণ যেন কিছুতেই আপনাকে বিভ্রান্ত না করে।
مَتَـٰعࣱ قَلِیلࣱ ثُمَّ مَأۡوَىٰهُمۡ جَهَنَّمُۖ وَبِئۡسَ ٱلۡمِهَادُ ﴿١٩٧﴾
এ তো স্বল্পকালীন ভোগ মাত্র; তারপর জাহান্নাম তাদের আবাস; আর এটা কত নিকৃষ্ট বিশ্রামস্থল!
لَـٰكِنِ ٱلَّذِینَ ٱتَّقَوۡاْ رَبَّهُمۡ لَهُمۡ جَنَّـٰتࣱ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَا نُزُلࣰا مِّنۡ عِندِ ٱللَّهِۗ وَمَا عِندَ ٱللَّهِ خَیۡرࣱ لِّلۡأَبۡرَارِ ﴿١٩٨﴾
কিন্তু যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা স্থায়ী হবে। এ হচ্ছে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে আতিথেয়তা; আর আল্লাহ্র কাছে যা আছে তা সৎকর্মপরায়ণদের জন্য উত্তম।
وَإِنَّ مِنۡ أَهۡلِ ٱلۡكِتَـٰبِ لَمَن یُؤۡمِنُ بِٱللَّهِ وَمَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡكُمۡ وَمَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡهِمۡ خَـٰشِعِینَ لِلَّهِ لَا یَشۡتَرُونَ بِـَٔایَـٰتِ ٱللَّهِ ثَمَنࣰا قَلِیلًاۚ أُوْلَـٰۤىِٕكَ لَهُمۡ أَجۡرُهُمۡ عِندَ رَبِّهِمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ سَرِیعُ ٱلۡحِسَابِ ﴿١٩٩﴾
আর নিশ্চয় কিতাবীদের মধ্যে এমন লোকও আছে যারা আল্লাহ্র প্রতি বিনয়াবনত হয়ে তাঁর প্রতি এবং তিনি যা তোমাদের ও তাদের প্রতি নাযিল করেছেন তাতে ঈমান আনে। তারা আল্লাহ্র আয়াত তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করে না। তারাই, যাদের জন্য আল্লাহ্র কাছে পুরস্কার রয়েছে। নিশ্চয়ই আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী [১]।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ ٱصۡبِرُواْ وَصَابِرُواْ وَرَابِطُواْ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ﴿٢٠٠﴾
হে ঈমানদারগণ! তোমরা ধৈর্য ধারণ কর [১], ধৈর্যে প্রতিযোগিতা কর [২] এবং সবসময় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাক [৩], আর আল্লাহ্র তাকওয়া অবলম্বন কর যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।