ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ فَاطِرِ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ جَاعِلِ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةِ رُسُلًا أُوْلِیۤ أَجۡنِحَةࣲ مَّثۡنَىٰ وَثُلَـٰثَ وَرُبَـٰعَۚ یَزِیدُ فِی ٱلۡخَلۡقِ مَا یَشَاۤءُۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرࣱ ﴿١﴾
সকল প্রশংসা আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহরই [১]--- যিনি রাসূল করেন ফিরিশতাদেরকে যারা দুই দুই, তিন তিন অথবা চার চার পক্ষবিশিষ্ট [২]। তিনি সৃষ্টিতে যা ইচ্ছে বৃদ্ধি করেন। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।
مَّا یَفۡتَحِ ٱللَّهُ لِلنَّاسِ مِن رَّحۡمَةࣲ فَلَا مُمۡسِكَ لَهَاۖ وَمَا یُمۡسِكۡ فَلَا مُرۡسِلَ لَهُۥ مِنۢ بَعۡدِهِۦۚ وَهُوَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلۡحَكِیمُ ﴿٢﴾
আল্লাহ্ মানুষের প্রতি কোনো অনুগ্রহ অবারিত করলে কেউ তা নিবারণকারী নেই এবং তিনি কিছু নিরুদ্ধ করতে চাইলে পরে কেউ তার উন্মুক্তকারী নেই [১]। আর তিনি পরাক্রমশালী, হিকমতওয়ালা [২]।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلنَّاسُ ٱذۡكُرُواْ نِعۡمَتَ ٱللَّهِ عَلَیۡكُمۡۚ هَلۡ مِنۡ خَـٰلِقٍ غَیۡرُ ٱللَّهِ یَرۡزُقُكُم مِّنَ ٱلسَّمَاۤءِ وَٱلۡأَرۡضِۚ لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَۖ فَأَنَّىٰ تُؤۡفَكُونَ ﴿٣﴾
হে মানুষ! তোমরা তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্বরণ কর। আল্লাহ্ ছাড়া কি কোনো স্রষ্টা আছে, যে তোমাদেরকে আসমানসমূহ ও যমীন থেকে রিযিক দান করে? আল্লাহ্ ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ্ নেই। কাজেই তোমাদেরকে কোথায় ফিরানো হচ্ছে [১]?
وَإِن یُكَذِّبُوكَ فَقَدۡ كُذِّبَتۡ رُسُلࣱ مِّن قَبۡلِكَۚ وَإِلَى ٱللَّهِ تُرۡجَعُ ٱلۡأُمُورُ ﴿٤﴾
আর যদি এরা আপনার প্রতি মিথ্যা আরোপ করে তবে আপনার আগেও রাসূলগণের প্রতি মিথ্যা আরোপ করা হয়েছিল [১]। আর আল্লাহর দিকেই সকল বিষয় প্রত্যাবর্তিত হবে।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلنَّاسُ إِنَّ وَعۡدَ ٱللَّهِ حَقࣱّۖ فَلَا تَغُرَّنَّكُمُ ٱلۡحَیَوٰةُ ٱلدُّنۡیَا وَلَا یَغُرَّنَّكُم بِٱللَّهِ ٱلۡغَرُورُ ﴿٥﴾
হে মানুষ! নিশ্চয় আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য; কাজেই দুনিয়ার জীবন যেন তোমাদেরকে কিছুতেই প্রতারিত না করে এবং সে প্রবঞ্চক (শয়তান) যেন কিছুতেই তোমাদেরকে আল্লাহর ব্যাপারে প্রবঞ্চিত না করে [১]।
إِنَّ ٱلشَّیۡطَـٰنَ لَكُمۡ عَدُوࣱّ فَٱتَّخِذُوهُ عَدُوًّاۚ إِنَّمَا یَدۡعُواْ حِزۡبَهُۥ لِیَكُونُواْ مِنۡ أَصۡحَـٰبِ ٱلسَّعِیرِ ﴿٦﴾
নিশ্চয় শয়তান তোমাদের শত্রু; কাজেই তাকে শত্রু হিসাবেই গ্রহণ কর। সে তো তার দলবলকে ডাকে শুধু এজন্য যে, তারা যেন প্রজ্জলিত আগুনের অধিবাসী হয়।
ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ لَهُمۡ عَذَابࣱ شَدِیدࣱۖ وَٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ لَهُم مَّغۡفِرَةࣱ وَأَجۡرࣱ كَبِیرٌ ﴿٧﴾
যারা কুফরী করে তাদের জন্য আছে কঠিন শাস্তি। আর যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তাদের জন্য আছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।
أَفَمَن زُیِّنَ لَهُۥ سُوۤءُ عَمَلِهِۦ فَرَءَاهُ حَسَنࣰاۖ فَإِنَّ ٱللَّهَ یُضِلُّ مَن یَشَاۤءُ وَیَهۡدِی مَن یَشَاۤءُۖ فَلَا تَذۡهَبۡ نَفۡسُكَ عَلَیۡهِمۡ حَسَرَ ٰتٍۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِیمُۢ بِمَا یَصۡنَعُونَ ﴿٨﴾
কাউকে যদি তার মন্দকাজ শোভন করে দেখানো হয় ফলে সে এটাকে উত্তম মনে করে, (সে ব্যক্তি কি তার সমান যে সৎকাজ করে?) তবে আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছে বিভ্রান্ত করেন এবং যাকে ইচ্ছে হিদায়াত করেন [১]। অতএব তাদের জন্য আক্ষেপ করে আপনার প্রাণ যেন ধ্বংস না হয়। তারা যা করে নিশ্চয় আল্লাহ্ সে সম্পর্কে সম্যক পরিজ্ঞাত।
وَٱللَّهُ ٱلَّذِیۤ أَرۡسَلَ ٱلرِّیَـٰحَ فَتُثِیرُ سَحَابࣰا فَسُقۡنَـٰهُ إِلَىٰ بَلَدࣲ مَّیِّتࣲ فَأَحۡیَیۡنَا بِهِ ٱلۡأَرۡضَ بَعۡدَ مَوۡتِهَاۚ كَذَ ٰلِكَ ٱلنُّشُورُ ﴿٩﴾
আর আল্লাহ্, যিনি বায়ু পাঠিয়ে তা দ্বারা মেঘমালা সঞ্চারিত করেন। তারপর আমরা সেটাকে নির্জীব ভুখণ্ডের দিকে পরিচালিত করি, এরপর আমরা তা দ্বারা যমীনকে তার মৃত্যুর পর আবার জীবিত করি। এভাবেই হবে মৃত্যুর পর আবার জীবিত হয়ে উঠা [১]।
مَن كَانَ یُرِیدُ ٱلۡعِزَّةَ فَلِلَّهِ ٱلۡعِزَّةُ جَمِیعًاۚ إِلَیۡهِ یَصۡعَدُ ٱلۡكَلِمُ ٱلطَّیِّبُ وَٱلۡعَمَلُ ٱلصَّـٰلِحُ یَرۡفَعُهُۥۚ وَٱلَّذِینَ یَمۡكُرُونَ ٱلسَّیِّـَٔاتِ لَهُمۡ عَذَابࣱ شَدِیدࣱۖ وَمَكۡرُ أُوْلَـٰۤىِٕكَ هُوَ یَبُورُ ﴿١٠﴾
যে কেউ সম্মান-প্রতিপত্তি চায়, তবে সকল সম্মান-প্রতিপত্তির মালিক তো আল্লাহ্ই [১]। তাঁরই দিকে পবিত্র বাণিসমূহ হয় সমুত্থিত এবং সৎকাজ, তিনি তা করেন উন্নীত [২]। আর যারা মন্দকাজের ফন্দি আঁটে তাদের জন্য আছে কঠিন শাস্তি। আর তাদের ষড়যন্ত্র, তা ব্যর্থ হবেই।
وَٱللَّهُ خَلَقَكُم مِّن تُرَابࣲ ثُمَّ مِن نُّطۡفَةࣲ ثُمَّ جَعَلَكُمۡ أَزۡوَ ٰجࣰاۚ وَمَا تَحۡمِلُ مِنۡ أُنثَىٰ وَلَا تَضَعُ إِلَّا بِعِلۡمِهِۦۚ وَمَا یُعَمَّرُ مِن مُّعَمَّرࣲ وَلَا یُنقَصُ مِنۡ عُمُرِهِۦۤ إِلَّا فِی كِتَـٰبٍۚ إِنَّ ذَ ٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ یَسِیرࣱ ﴿١١﴾
আর আল্লাহ্ তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে; তারপর শুক্রবিন্দু থেকে, তারপর তোমাদেরকে করেছেন যুগল! আল্লাহর অজ্ঞাতে কোনো নারী গর্ভ ধারণ করে না এবং প্রসবও করে না। আর কোনো দীর্ঘায়ু ব্যক্তির আয়ু বৃদ্ধি করা হয় না এবং তার আয়ু হ্রাস করা হয় না, কিন্তু তা রয়েছে 'কিতাবে' [১]। এটা আল্লাহর জন্য সহজ [২]।
وَمَا یَسۡتَوِی ٱلۡبَحۡرَانِ هَـٰذَا عَذۡبࣱ فُرَاتࣱ سَاۤىِٕغࣱ شَرَابُهُۥ وَهَـٰذَا مِلۡحٌ أُجَاجࣱۖ وَمِن كُلࣲّ تَأۡكُلُونَ لَحۡمࣰا طَرِیࣰّا وَتَسۡتَخۡرِجُونَ حِلۡیَةࣰ تَلۡبَسُونَهَاۖ وَتَرَى ٱلۡفُلۡكَ فِیهِ مَوَاخِرَ لِتَبۡتَغُواْ مِن فَضۡلِهِۦ وَلَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ﴿١٢﴾
আর সাগর দুটি একরূপ নয়: একটির পানি সুমিষ্ট ও সুপেয়, অন্যটির পানি লোনা, খর। আর প্রত্যেকটি থেকে তোমরা তাজা গোশত খাও এবং আহরণ কর অলংকার, যা তোমরা পরিধান কর। আর তোমরা দেখ তার বুক চিরে নৌযান চলাচল করে, যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পার এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।
یُولِجُ ٱلَّیۡلَ فِی ٱلنَّهَارِ وَیُولِجُ ٱلنَّهَارَ فِی ٱلَّیۡلِ وَسَخَّرَ ٱلشَّمۡسَ وَٱلۡقَمَرَۖ كُلࣱّ یَجۡرِی لِأَجَلࣲ مُّسَمࣰّىۚ ذَ ٰلِكُمُ ٱللَّهُ رَبُّكُمۡ لَهُ ٱلۡمُلۡكُۚ وَٱلَّذِینَ تَدۡعُونَ مِن دُونِهِۦ مَا یَمۡلِكُونَ مِن قِطۡمِیرٍ ﴿١٣﴾
তিনি রাতকে দিনে প্রবেশ করান এবং দিনকে প্রবেশ করান রাতে, তিনি সূর্য ও চাঁদকে করেছেন নিয়মাধীন; প্রত্যেকে পরিভ্রমণ করে এক নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। তিনিই আল্লাহ্ তোমাদের রব। আধিপত্য তাঁরই। আর তোমরা তাঁর পরিবর্তে যাদেরকে ডাক তারা তো খেজুর আঁটির আবরণেরও অধিকারী নয় [১]।
إِن تَدۡعُوهُمۡ لَا یَسۡمَعُواْ دُعَاۤءَكُمۡ وَلَوۡ سَمِعُواْ مَا ٱسۡتَجَابُواْ لَكُمۡۖ وَیَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِ یَكۡفُرُونَ بِشِرۡكِكُمۡۚ وَلَا یُنَبِّئُكَ مِثۡلُ خَبِیرࣲ ﴿١٤﴾
তোমরা তাদেরকে ডাকলে তারা তোমাদের ডাক শুনবে না এবং শুনলেও তোমাদের ডাকে সাড়া দেবে না। আর তোমরা তাদেরকে যে শরীক করেছ তা তারা কিয়ামতের দিন অস্বীকার করবে [১]। সর্বজ্ঞ আল্লাহর মত কেউই আপনাকে অবহিত করতে পারে না [২]।
۞ یَـٰۤأَیُّهَا ٱلنَّاسُ أَنتُمُ ٱلۡفُقَرَاۤءُ إِلَى ٱللَّهِۖ وَٱللَّهُ هُوَ ٱلۡغَنِیُّ ٱلۡحَمِیدُ ﴿١٥﴾
হে মানুষ! তোমরা আল্লাহর মুখাপেক্ষী; আর আল্লাহ্, তিনিই অভাবমুক্ত, প্রশংসিত।
إِن یَشَأۡ یُذۡهِبۡكُمۡ وَیَأۡتِ بِخَلۡقࣲ جَدِیدࣲ ﴿١٦﴾
তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদেরকে অপসৃত করতে পারেন এবং এক নতুন সৃষ্টি নিয়ে আসতে পারেন।
وَلَا تَزِرُ وَازِرَةࣱ وِزۡرَ أُخۡرَىٰۚ وَإِن تَدۡعُ مُثۡقَلَةٌ إِلَىٰ حِمۡلِهَا لَا یُحۡمَلۡ مِنۡهُ شَیۡءࣱ وَلَوۡ كَانَ ذَا قُرۡبَىٰۤۗ إِنَّمَا تُنذِرُ ٱلَّذِینَ یَخۡشَوۡنَ رَبَّهُم بِٱلۡغَیۡبِ وَأَقَامُواْ ٱلصَّلَوٰةَۚ وَمَن تَزَكَّىٰ فَإِنَّمَا یَتَزَكَّىٰ لِنَفۡسِهِۦۚ وَإِلَى ٱللَّهِ ٱلۡمَصِیرُ ﴿١٨﴾
আর কোনো বহনকারী অন্যের বোঝা বহন করবে না [১] এবং কোনো ভারাক্রান্ত ব্যক্তি যদি কাউকেও তা বহন করতে ডাকে তবে তার থেকে কিছুই বহন করা হবে না--- এমনকি নিকট আত্মীয় হলেও [২]। আপনি শুধু তাদেরকেই সতর্ক করতে পারেন যারা তাদের রবকে না দেখে ভয় করে এবং সালাত কায়েম করে। আর যে কেউ নিজেকে পরিশোধন করে, সে তো পরিশোধন করে নিজেরই কল্যাণের জন্য। আর আল্লাহরই দিকে প্রত্যাবর্তন।
وَمَا یَسۡتَوِی ٱلۡأَحۡیَاۤءُ وَلَا ٱلۡأَمۡوَ ٰتُۚ إِنَّ ٱللَّهَ یُسۡمِعُ مَن یَشَاۤءُۖ وَمَاۤ أَنتَ بِمُسۡمِعࣲ مَّن فِی ٱلۡقُبُورِ ﴿٢٢﴾
এবং সমান নয় জীবিত ও মৃত। নিশ্চয় আল্লাহু যাকে ইচ্ছে শোনান; আর আপনি শোনাতে পারবেন না যারা কবরে রয়েছে তাদেরকে।
إِنَّاۤ أَرۡسَلۡنَـٰكَ بِٱلۡحَقِّ بَشِیرࣰا وَنَذِیرࣰاۚ وَإِن مِّنۡ أُمَّةٍ إِلَّا خَلَا فِیهَا نَذِیرࣱ ﴿٢٤﴾
নিশ্চয় আমরা আপনাকে সত্যসহ পাঠিয়েছি সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে; আর এমন কোনো উম্মত নেই যার কাছে গত হয়নি সতর্ককারী [১]।
وَإِن یُكَذِّبُوكَ فَقَدۡ كَذَّبَ ٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِهِمۡ جَاۤءَتۡهُمۡ رُسُلُهُم بِٱلۡبَیِّنَـٰتِ وَبِٱلزُّبُرِ وَبِٱلۡكِتَـٰبِ ٱلۡمُنِیرِ ﴿٢٥﴾
আর তারা যদি আপনার প্রতি মিথ্যারোপ করে তবে এদের পূর্ববর্তীরাও তো মিথ্যারোপ করেছিল---তাদের কাছে এসেছিল তাদের রাসূলগণ সুস্পষ্ট প্রমাণাদি, গ্রন্থাদি ও দীপ্তিমান কিতাবসহ।
ثُمَّ أَخَذۡتُ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْۖ فَكَیۡفَ كَانَ نَكِیرِ ﴿٢٦﴾
তারপর যারা কুফরি করেছিল আমি তাদেরকে শাস্তি দিয়েছিলাম। সুতরাং (দেখে নিন) কেমন ছিল আমার প্রত্যাখ্যান (শাস্তি)!
أَلَمۡ تَرَ أَنَّ ٱللَّهَ أَنزَلَ مِنَ ٱلسَّمَاۤءِ مَاۤءࣰ فَأَخۡرَجۡنَا بِهِۦ ثَمَرَ ٰتࣲ مُّخۡتَلِفًا أَلۡوَ ٰنُهَاۚ وَمِنَ ٱلۡجِبَالِ جُدَدُۢ بِیضࣱ وَحُمۡرࣱ مُّخۡتَلِفٌ أَلۡوَ ٰنُهَا وَغَرَابِیبُ سُودࣱ ﴿٢٧﴾
আপনি কি দেখেন না, আল্লাহ্ আকাশ হতে বৃষ্টিপাত করেন, তারপর আমরা তা দ্বারা বিচিত্র বর্ণের ফলমূল উদগত করি। আর পাহাড়ের মধ্যে আছে বিচিত্র বর্ণের পথ---শুভ্র, লাল ও নিকষ কালো [১]।
وَمِنَ ٱلنَّاسِ وَٱلدَّوَاۤبِّ وَٱلۡأَنۡعَـٰمِ مُخۡتَلِفٌ أَلۡوَ ٰنُهُۥ كَذَ ٰلِكَۗ إِنَّمَا یَخۡشَى ٱللَّهَ مِنۡ عِبَادِهِ ٱلۡعُلَمَـٰۤؤُاْۗ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِیزٌ غَفُورٌ ﴿٢٨﴾
আর মানুষের মাঝে, জন্তু ও গৃহপালিত জানোয়ারের মাঝেও বিচিত্র বর্ণ রয়েছে অনুরূপ। আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে যারা জ্ঞানী তারাই কেবল তাঁকে ভয় করে [১]; নিশ্চয় আল্লাহ্ প্রবল পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।
إِنَّ ٱلَّذِینَ یَتۡلُونَ كِتَـٰبَ ٱللَّهِ وَأَقَامُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَأَنفَقُواْ مِمَّا رَزَقۡنَـٰهُمۡ سِرࣰّا وَعَلَانِیَةࣰ یَرۡجُونَ تِجَـٰرَةࣰ لَّن تَبُورَ ﴿٢٩﴾
নিশ্চয় যারা আল্লাহর কিতাব তিলাওয়াত করে এবং সালাত কায়েম করে, আর আমরা তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারাই আশা করে এমন ব্যবসায়ের, যার ক্ষয় নেই।
لِیُوَفِّیَهُمۡ أُجُورَهُمۡ وَیَزِیدَهُم مِّن فَضۡلِهِۦۤۚ إِنَّهُۥ غَفُورࣱ شَكُورࣱ ﴿٣٠﴾
যাতে আল্লাহ্ তাদের কাজের প্রতিফল পরিপূর্ণ দেন এবং তিনি নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে আরো বেশী দেন। নিশ্চয় তিনি পরম ক্ষমাশীল, অসীম গুণগ্রাহী।
وَٱلَّذِیۤ أَوۡحَیۡنَاۤ إِلَیۡكَ مِنَ ٱلۡكِتَـٰبِ هُوَ ٱلۡحَقُّ مُصَدِّقࣰا لِّمَا بَیۡنَ یَدَیۡهِۗ إِنَّ ٱللَّهَ بِعِبَادِهِۦ لَخَبِیرُۢ بَصِیرࣱ ﴿٣١﴾
আর আমরা কিতাব হতে আপনার প্রতি যে ওহী করেছি তা সত্য, এর আগে যা রয়েছে তার প্রত্যয়নকারী। নিশ্চয় আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের সম্পরকে সম্যক অবহিত, সর্বদ্রষ্টা।
ثُمَّ أَوۡرَثۡنَا ٱلۡكِتَـٰبَ ٱلَّذِینَ ٱصۡطَفَیۡنَا مِنۡ عِبَادِنَاۖ فَمِنۡهُمۡ ظَالِمࣱ لِّنَفۡسِهِۦ وَمِنۡهُم مُّقۡتَصِدࣱ وَمِنۡهُمۡ سَابِقُۢ بِٱلۡخَیۡرَ ٰتِ بِإِذۡنِ ٱللَّهِۚ ذَ ٰلِكَ هُوَ ٱلۡفَضۡلُ ٱلۡكَبِیرُ ﴿٣٢﴾
তারপর আমরা কিতাবের অধিকারী করলাম তাদেরকে, যাদেরকে আমাদের বান্দাদের মধ্য থেকে আমরা মনোনিত করেছি [১]; তবে তাদের কেউ নিজের প্রতি অত্যাচারী, কেউ মধ্যপন্থী এবং কেউ আল্লাহর ইচ্ছায় কল্যাণের কাজে অগ্রগামী [২]। এটাই তো মহাঅনুগ্রহ--- [৩]
جَنَّـٰتُ عَدۡنࣲ یَدۡخُلُونَهَا یُحَلَّوۡنَ فِیهَا مِنۡ أَسَاوِرَ مِن ذَهَبࣲ وَلُؤۡلُؤࣰاۖ وَلِبَاسُهُمۡ فِیهَا حَرِیرࣱ ﴿٣٣﴾
স্থায়ী জান্নাত, যাতে তারা প্রবেশ করবে [১], সেখানে তাদেরকে স্বর্ণ নির্মিত কংকন ও মুক্তা দ্বারা অলংকৃত করা হবে এবং সেখানে তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ হবে রেশমের।
وَقَالُواْ ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ ٱلَّذِیۤ أَذۡهَبَ عَنَّا ٱلۡحَزَنَۖ إِنَّ رَبَّنَا لَغَفُورࣱ شَكُورٌ ﴿٣٤﴾
এবং তারা বলবে, 'প্রশংসা আল্লাহর যিনি আমাদের দুঃখ-দুর্দশা দূরিভূত করেছেন; নিশ্চয় আমাদের রব তো পরম ক্ষমাশীল, অসীম গুণগ্রাহী;
ٱلَّذِیۤ أَحَلَّنَا دَارَ ٱلۡمُقَامَةِ مِن فَضۡلِهِۦ لَا یَمَسُّنَا فِیهَا نَصَبࣱ وَلَا یَمَسُّنَا فِیهَا لُغُوبࣱ ﴿٣٥﴾
'যিনি নিজ অনুগ্রহে আমাদেরকে স্থায়ী আবাসে প্রবেশ করিয়েছেন সেখানে কোনো ক্লেশ আমাদেরকে স্পর্শ করে না এবং কোনো ক্লান্তিও স্পর্শ করে না।'
وَٱلَّذِینَ كَفَرُواْ لَهُمۡ نَارُ جَهَنَّمَ لَا یُقۡضَىٰ عَلَیۡهِمۡ فَیَمُوتُواْ وَلَا یُخَفَّفُ عَنۡهُم مِّنۡ عَذَابِهَاۚ كَذَ ٰلِكَ نَجۡزِی كُلَّ كَفُورࣲ ﴿٣٦﴾
আর যারা কুফরী করেছে তাদের জন্য আছে জাহান্নামের আগুন। তাদের উপর ফায়সালা দেয়া হবে না যে, তারা মরবে এবং তাদের থেকে জাহান্নামের শাস্তিও লাঘব করা হবে না। এভাবেই আমরা প্রত্যেক অকৃতজ্ঞকে শাস্তি দিয়ে থাকি।
وَهُمۡ یَصۡطَرِخُونَ فِیهَا رَبَّنَاۤ أَخۡرِجۡنَا نَعۡمَلۡ صَـٰلِحًا غَیۡرَ ٱلَّذِی كُنَّا نَعۡمَلُۚ أَوَلَمۡ نُعَمِّرۡكُم مَّا یَتَذَكَّرُ فِیهِ مَن تَذَكَّرَ وَجَاۤءَكُمُ ٱلنَّذِیرُۖ فَذُوقُواْ فَمَا لِلظَّـٰلِمِینَ مِن نَّصِیرٍ ﴿٣٧﴾
আর সেখানে তার আর্তনাদ করে বলবে, 'হে আমাদের রব! আমাদেরকে বের করুন, আমরা যা করতাম তার পরিবর্তে সৎকাজ করব।' আল্লাহ বলবেন, 'আমরা কি তোমাদেরকে এতো দীর্ঘ জীবন দান করিনি যে, তখন কেউ উপদেশ গ্রহণ করতে চাইলে উপদেশ গ্রহণ করতে পারতো [১]? আর তোমাদের কাছে সতর্ককারীও এসেছিল [২]। কাজেই তোমরা শাস্তি আস্বাদন কর; আর যালিমদের কোনো সাহায্যকারী নেই।'
إِنَّ ٱللَّهَ عَـٰلِمُ غَیۡبِ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۚ إِنَّهُۥ عَلِیمُۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ ﴿٣٨﴾
নিশ্চয় আল্লাহ্ আসমানসমূহ ও যমীনের গায়েবী বিষয় অবগত। নিশ্চয় অন্তরে যা রয়েছে সে সম্বন্ধে তিনি সম্যক জ্ঞাত।
هُوَ ٱلَّذِی جَعَلَكُمۡ خَلَـٰۤىِٕفَ فِی ٱلۡأَرۡضِۚ فَمَن كَفَرَ فَعَلَیۡهِ كُفۡرُهُۥۖ وَلَا یَزِیدُ ٱلۡكَـٰفِرِینَ كُفۡرُهُمۡ عِندَ رَبِّهِمۡ إِلَّا مَقۡتࣰاۖ وَلَا یَزِیدُ ٱلۡكَـٰفِرِینَ كُفۡرُهُمۡ إِلَّا خَسَارࣰا ﴿٣٩﴾
তিনিই তোমাদেরকে যমীনে স্থলাভিষিক্ত করেছেন [১]। কাজেই কেউ কুফরী করলে তার কুফরীর জন্য সে নিজেই দায়ী হবে। কাফিরদের কুফরী শুধু তাদের রবের ক্রোধই বৃদ্ধি করে এবং কাফিরদের কুফরী শুধু তাদের ক্ষতিই বৃদ্ধি করে।
قُلۡ أَرَءَیۡتُمۡ شُرَكَاۤءَكُمُ ٱلَّذِینَ تَدۡعُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ أَرُونِی مَاذَا خَلَقُواْ مِنَ ٱلۡأَرۡضِ أَمۡ لَهُمۡ شِرۡكࣱ فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ أَمۡ ءَاتَیۡنَـٰهُمۡ كِتَـٰبࣰا فَهُمۡ عَلَىٰ بَیِّنَتࣲ مِّنۡهُۚ بَلۡ إِن یَعِدُ ٱلظَّـٰلِمُونَ بَعۡضُهُم بَعۡضًا إِلَّا غُرُورًا ﴿٤٠﴾
বলুন, 'তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে তোমাদের যেসব শরীকদের ডাক, তাদের কথা ভেবে দেখেছ কি? তারা যমীনে কিছু সৃষ্টি করে থাকলে আমাকে দেখাও অথবা আসমানের সৃষ্টিতে তাদের কোনো অংশ আছে কি? না কি আমরা তাদেরকে এমন কোনো কিতাব দিয়েছি যার প্রমানের উপর তারা নির্ভর করে [১]?' বরং যালিমরা একে অন্যকে প্রতারণা ছাড়া আর কিছুরই প্রতিশ্রুতি দেয় না।
۞ إِنَّ ٱللَّهَ یُمۡسِكُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ أَن تَزُولَاۚ وَلَىِٕن زَالَتَاۤ إِنۡ أَمۡسَكَهُمَا مِنۡ أَحَدࣲ مِّنۢ بَعۡدِهِۦۤۚ إِنَّهُۥ كَانَ حَلِیمًا غَفُورࣰا ﴿٤١﴾
নিশ্চয় আল্লাহ্ আসমানসমূহ ও যমীনকে ধারণ করেন, যাতে তারা স্থানচ্যুত না হয়, আর যদি তারা স্থানচ্যুত হয়, তবে তিনি ছাড়া কেউ নেই যে, তাদেরকে ধরে রাখতে পারে [১]। নিশ্চয় তিনি অতি সহনশীল, অসীম ক্ষমাপরায়ণ।
وَأَقۡسَمُواْ بِٱللَّهِ جَهۡدَ أَیۡمَـٰنِهِمۡ لَىِٕن جَاۤءَهُمۡ نَذِیرࣱ لَّیَكُونُنَّ أَهۡدَىٰ مِنۡ إِحۡدَى ٱلۡأُمَمِۖ فَلَمَّا جَاۤءَهُمۡ نَذِیرࣱ مَّا زَادَهُمۡ إِلَّا نُفُورًا ﴿٤٢﴾
আর তারা দৃঢ়তার সাথে আল্লাহর শপথ করে বলত যে, তাদের কাছে কোনো সতর্কাকারী আসলে এরা অন্য সকল জাতির চেয়ে সৎপথের অধিকতর অনুসারী হবে; অতঃপর যখন এদের কাছে সতর্ককারী আসল [১], তখন তা শুধু তাদের বিমুখতা ও দূরত্বই বৃদ্ধি করল---
ٱسۡتِكۡبَارࣰا فِی ٱلۡأَرۡضِ وَمَكۡرَ ٱلسَّیِّىِٕۚ وَلَا یَحِیقُ ٱلۡمَكۡرُ ٱلسَّیِّئُ إِلَّا بِأَهۡلِهِۦۚ فَهَلۡ یَنظُرُونَ إِلَّا سُنَّتَ ٱلۡأَوَّلِینَۚ فَلَن تَجِدَ لِسُنَّتِ ٱللَّهِ تَبۡدِیلࣰاۖ وَلَن تَجِدَ لِسُنَّتِ ٱللَّهِ تَحۡوِیلًا ﴿٤٣﴾
যমীনে ঔদ্ধ্যত প্রকাশ এবং কুট ষড়যন্ত্রের কারণে [১]। আর কুট ষড়যন্ত্র তার উদ্যোক্তাদেরকেই পরিবেষ্টন করবে। তবে কি এরা প্রতিক্ষা করছে পূর্ববর্তীদের প্রতি প্রযুক্ত পদ্ধতির [২]? কিন্তু আপনি আল্লাহর পদ্ধতিতে কখনো কোনো পরিবর্তন পাবেন না এবং আল্লাহর পদ্ধতির কোনো ব্যতিক্রমও লক্ষ্য করবেন না।
أَوَلَمۡ یَسِیرُواْ فِی ٱلۡأَرۡضِ فَیَنظُرُواْ كَیۡفَ كَانَ عَـٰقِبَةُ ٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِهِمۡ وَكَانُوۤاْ أَشَدَّ مِنۡهُمۡ قُوَّةࣰۚ وَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِیُعۡجِزَهُۥ مِن شَیۡءࣲ فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَلَا فِی ٱلۡأَرۡضِۚ إِنَّهُۥ كَانَ عَلِیمࣰا قَدِیرࣰا ﴿٤٤﴾
আর এরা কি যমীনে পরিভ্রমণ করেনি? তাহলে তাদের পূর্ববর্তীদের পরিণাম কি হয়েছিল তা তারা দেখতে পেত। আর তারা ছিল এদের চেয়ে অধিক শক্তিশালী [১]। আর আল্লাহ্ এমন নন যে, তাঁকে অক্ষম করতে পারে কোনো কিছু আসমানসমূহে আর না যমীনে। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাবান।
وَلَوۡ یُؤَاخِذُ ٱللَّهُ ٱلنَّاسَ بِمَا كَسَبُواْ مَا تَرَكَ عَلَىٰ ظَهۡرِهَا مِن دَاۤبَّةࣲ وَلَـٰكِن یُؤَخِّرُهُمۡ إِلَىٰۤ أَجَلࣲ مُّسَمࣰّىۖ فَإِذَا جَاۤءَ أَجَلُهُمۡ فَإِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِعِبَادِهِۦ بَصِیرَۢا ﴿٤٥﴾
আর আল্লাহ্ মানুষদেরকে তাদের কৃতকর্মের জন্য পাকড়াও করলে, ভূ-পৃষ্ঠে কোনো প্রাণীকেই তিনি রেহাই দিতেন না, কিন্তু তিনি এক নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাদেরকে অবকাশ দিয়ে থাকেন। অতঃপর যখন তাদের নির্দিষ্ট সময় এসে যাবে, তখন তো আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের ব্যাপারে সম্যক দ্রষ্টা [১]।