یَـٰۤأَیُّهَا ٱلنَّاسُ ٱتَّقُواْ رَبَّكُمُ ٱلَّذِی خَلَقَكُم مِّن نَّفۡسࣲ وَ ٰحِدَةࣲ وَخَلَقَ مِنۡهَا زَوۡجَهَا وَبَثَّ مِنۡهُمَا رِجَالࣰا كَثِیرࣰا وَنِسَاۤءࣰۚ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ ٱلَّذِی تَسَاۤءَلُونَ بِهِۦ وَٱلۡأَرۡحَامَۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلَیۡكُمۡ رَقِیبࣰا ﴿١﴾
হে মানুষ! তোমরা তোমাদের রবের তাকওয়া অবলম্বন কর [১] যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন ও তার থেকে তার স্ত্রী সৃষ্টি করেছেন [২] এবং তাদের দুজন থেকে বহু নর-নারী ছড়িয়ে দেন; আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর যাঁর নামে তোমরা একে অপরের কাছে নিজ নিজ হক্ দাবী কর [৩] এবং তাকওয়া অবলম্বন কর রক্ত-সম্পর্কিত আত্মীয়ের ব্যাপারেও [৪]। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর পর্যবেক্ষক [৫]।
وَءَاتُواْ ٱلۡیَتَـٰمَىٰۤ أَمۡوَ ٰلَهُمۡۖ وَلَا تَتَبَدَّلُواْ ٱلۡخَبِیثَ بِٱلطَّیِّبِۖ وَلَا تَأۡكُلُوۤاْ أَمۡوَ ٰلَهُمۡ إِلَىٰۤ أَمۡوَ ٰلِكُمۡۚ إِنَّهُۥ كَانَ حُوبࣰا كَبِیرࣰا ﴿٢﴾
আর ইয়াতীমদেরকে তোমরা তাদের ধন-সম্পদ সমর্পণ করো [১] এবং ভালোর সাথে মন্দ বদল করো না [২]। আর তোমাদের সম্পদের সাথে তাদের সম্পদ মিশিয়ে গ্রাস করো না; নিশ্চয় এটা মহাপাপ [৩]।
وَإِنۡ خِفۡتُمۡ أَلَّا تُقۡسِطُواْ فِی ٱلۡیَتَـٰمَىٰ فَٱنكِحُواْ مَا طَابَ لَكُم مِّنَ ٱلنِّسَاۤءِ مَثۡنَىٰ وَثُلَـٰثَ وَرُبَـٰعَۖ فَإِنۡ خِفۡتُمۡ أَلَّا تَعۡدِلُواْ فَوَ ٰحِدَةً أَوۡ مَا مَلَكَتۡ أَیۡمَـٰنُكُمۡۚ ذَ ٰلِكَ أَدۡنَىٰۤ أَلَّا تَعُولُواْ ﴿٣﴾
আর যদি তোমরা আশংকা কর যে, ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি [১] সুবিচার করতে পারবে না [২], তবে বিয়ে করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভালো লাগে, দুই, তিন বা চার [৩]; আর যদি আশংকা কর যে সুবিচার করতে পারবে না [৪] তবে একজনকেই বা তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীকেই গ্রহণ কর। এতে পক্ষপাতিত্ব [৫] না করার সম্ভাবনা বেশী।
وَءَاتُواْ ٱلنِّسَاۤءَ صَدُقَـٰتِهِنَّ نِحۡلَةࣰۚ فَإِن طِبۡنَ لَكُمۡ عَن شَیۡءࣲ مِّنۡهُ نَفۡسࣰا فَكُلُوهُ هَنِیۤـࣰٔا مَّرِیۤـࣰٔا ﴿٤﴾
আর তোমরা নারীদেরকে তাদের মাহ্র [১] মনের সন্তোষের সাথে [২] প্রদান কর; অতঃপর সন্তুষ্ট চিত্তে তারা মাহ্রের কিছু অংশ ছেড়ে দিলে তোমরা তা স্বাচ্ছন্দ্যে [৩] ভোগ কর।
وَلَا تُؤۡتُواْ ٱلسُّفَهَاۤءَ أَمۡوَ ٰلَكُمُ ٱلَّتِی جَعَلَ ٱللَّهُ لَكُمۡ قِیَـٰمࣰا وَٱرۡزُقُوهُمۡ فِیهَا وَٱكۡسُوهُمۡ وَقُولُواْ لَهُمۡ قَوۡلࣰا مَّعۡرُوفࣰا ﴿٥﴾
আর তোমরা অল্প বুদ্ধিমানদেরকে তাদের ধন-সম্পদ অর্পণ করো না [১]; যা দ্বারা আল্লাহ তোমাদের জীবন চালানোর ব্যবস্থা করেছেন এবং তা থেকে তাদের আহার-বিহার ও ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা কর। আর তোমরা তাদের সাথে সদালাপ কর।
وَٱبۡتَلُواْ ٱلۡیَتَـٰمَىٰ حَتَّىٰۤ إِذَا بَلَغُواْ ٱلنِّكَاحَ فَإِنۡ ءَانَسۡتُم مِّنۡهُمۡ رُشۡدࣰا فَٱدۡفَعُوۤاْ إِلَیۡهِمۡ أَمۡوَ ٰلَهُمۡۖ وَلَا تَأۡكُلُوهَاۤ إِسۡرَافࣰا وَبِدَارًا أَن یَكۡبَرُواْۚ وَمَن كَانَ غَنِیࣰّا فَلۡیَسۡتَعۡفِفۡۖ وَمَن كَانَ فَقِیرࣰا فَلۡیَأۡكُلۡ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ فَإِذَا دَفَعۡتُمۡ إِلَیۡهِمۡ أَمۡوَ ٰلَهُمۡ فَأَشۡهِدُواْ عَلَیۡهِمۡۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ حَسِیبࣰا ﴿٦﴾
আর ইয়াতিমদেরকে যাচাই করবে [১] যে পর্যন্ত না তারা বিয়ের যোগ্য হয়; অতঃপর তাদের মধ্যে ভালো-মন্দ বিচারের জ্ঞান দেখতে পেলে [২] তাদের সম্পদ তাদেরকে ফিরিয়ে দাও [৩]। তারা বড় হয়ে যাবে বলে অপচয় করে তাড়াতাড়ি খেয়ে ফেলো না। যে অভাবমুক্ত সে যেন নিবৃত্ত থাকে এবং যে বিত্তহীন সে যেন সংযত পরিমাণে ভোগ করে [৪]। অতঃপর তোমরা যখন তাদেরকে তাদের সম্পদ ফিরিয়ে দিবে তখন সাক্ষী রেখো। আর হিসেব গ্রহণে আল্লাহই যথেষ্ট।
لِّلرِّجَالِ نَصِیبࣱ مِّمَّا تَرَكَ ٱلۡوَ ٰلِدَانِ وَٱلۡأَقۡرَبُونَ وَلِلنِّسَاۤءِ نَصِیبࣱ مِّمَّا تَرَكَ ٱلۡوَ ٰلِدَانِ وَٱلۡأَقۡرَبُونَ مِمَّا قَلَّ مِنۡهُ أَوۡ كَثُرَۚ نَصِیبࣰا مَّفۡرُوضࣰا ﴿٧﴾
পিতা-মাতা এবং আত্মীয়-স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে পুরুষের অংশ আছে এবং পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে নারীরও অংশ আছে, সেটা অল্পই হোক বা বেশীই হোক, এক নির্ধারিত অংশ [১]।
وَإِذَا حَضَرَ ٱلۡقِسۡمَةَ أُوْلُواْ ٱلۡقُرۡبَىٰ وَٱلۡیَتَـٰمَىٰ وَٱلۡمَسَـٰكِینُ فَٱرۡزُقُوهُم مِّنۡهُ وَقُولُواْ لَهُمۡ قَوۡلࣰا مَّعۡرُوفࣰا ﴿٨﴾
আর সম্পত্তি বন্টনকালে আত্মীয়, ইয়াতীম এবং অভাবগ্রস্ত লোক উপস্থিত থাকলে তাদেরকে তা থেকে কিছু দিবে এবং তাদের সাথে সদালাপ করবে [১]।
وَلۡیَخۡشَ ٱلَّذِینَ لَوۡ تَرَكُواْ مِنۡ خَلۡفِهِمۡ ذُرِّیَّةࣰ ضِعَـٰفًا خَافُواْ عَلَیۡهِمۡ فَلۡیَتَّقُواْ ٱللَّهَ وَلۡیَقُولُواْ قَوۡلࣰا سَدِیدًا ﴿٩﴾
আর তারা যেন ভয় করে যে, অসহায় সন্তান পিছনে ছেড়ে গেলে তারাও তাদের সম্বন্ধে উদ্বিগ্ন হত। কাজেই তারা যেন আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে এবং সঙ্গত কথা বলে।
إِنَّ ٱلَّذِینَ یَأۡكُلُونَ أَمۡوَ ٰلَ ٱلۡیَتَـٰمَىٰ ظُلۡمًا إِنَّمَا یَأۡكُلُونَ فِی بُطُونِهِمۡ نَارࣰاۖ وَسَیَصۡلَوۡنَ سَعِیرࣰا ﴿١٠﴾
নিশ্চয় যারা ইয়াতীমদের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করে তারা তো তাদের পেটে আগুনই খাচ্ছে; তারা অচিরেই জ্বলন্ত আগুনে জ্বলবে [১]।
یُوصِیكُمُ ٱللَّهُ فِیۤ أَوۡلَـٰدِكُمۡۖ لِلذَّكَرِ مِثۡلُ حَظِّ ٱلۡأُنثَیَیۡنِۚ فَإِن كُنَّ نِسَاۤءࣰ فَوۡقَ ٱثۡنَتَیۡنِ فَلَهُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَكَۖ وَإِن كَانَتۡ وَ ٰحِدَةࣰ فَلَهَا ٱلنِّصۡفُۚ وَلِأَبَوَیۡهِ لِكُلِّ وَ ٰحِدࣲ مِّنۡهُمَا ٱلسُّدُسُ مِمَّا تَرَكَ إِن كَانَ لَهُۥ وَلَدࣱۚ فَإِن لَّمۡ یَكُن لَّهُۥ وَلَدࣱ وَوَرِثَهُۥۤ أَبَوَاهُ فَلِأُمِّهِ ٱلثُّلُثُۚ فَإِن كَانَ لَهُۥۤ إِخۡوَةࣱ فَلِأُمِّهِ ٱلسُّدُسُۚ مِنۢ بَعۡدِ وَصِیَّةࣲ یُوصِی بِهَاۤ أَوۡ دَیۡنٍۗ ءَابَاۤؤُكُمۡ وَأَبۡنَاۤؤُكُمۡ لَا تَدۡرُونَ أَیُّهُمۡ أَقۡرَبُ لَكُمۡ نَفۡعࣰاۚ فَرِیضَةࣰ مِّنَ ٱللَّهِۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلِیمًا حَكِیمࣰا ﴿١١﴾
আল্লাহ তোমাদের সন্তান সম্বন্ধে নির্দেশ দিচ্ছেন [১]: এক পুত্রের [২] অংশ দুই কন্যার অংশের সমান; কিন্তু শুধু কন্যা দুইয়ের বেশি থাকলে তাদের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির তিন ভাগের দু’ভাগ, আর মাত্র এক কন্যা থাকলে তার জন্য অর্ধেক [৩]। তার সন্তান থাকলে তার পিতা-মাতা প্রত্যেকের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ; সে নিঃসন্তান হলে এবং পিতা-মাতাই উত্তরাধিকারী হলে তার মাতার জন্য তিন ভাগের এক ভাগ; তার ভাই-বোন থাকলে মাতার জন্য ছয় ভাগের এক ভাগ [৪]; এ সবই সে যা ওসিয়ত করে তা দেয়ার এবং ঋণ পরিশোধের পর [৫]। তোমাদের পিতা ও সন্তানদের মধ্যে উপকারে কে তোমাদের নিকটতর তা তোমরা জান না [৬]। এ বিধান আল্লাহর; নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
۞ وَلَكُمۡ نِصۡفُ مَا تَرَكَ أَزۡوَ ٰجُكُمۡ إِن لَّمۡ یَكُن لَّهُنَّ وَلَدࣱۚ فَإِن كَانَ لَهُنَّ وَلَدࣱ فَلَكُمُ ٱلرُّبُعُ مِمَّا تَرَكۡنَۚ مِنۢ بَعۡدِ وَصِیَّةࣲ یُوصِینَ بِهَاۤ أَوۡ دَیۡنࣲۚ وَلَهُنَّ ٱلرُّبُعُ مِمَّا تَرَكۡتُمۡ إِن لَّمۡ یَكُن لَّكُمۡ وَلَدࣱۚ فَإِن كَانَ لَكُمۡ وَلَدࣱ فَلَهُنَّ ٱلثُّمُنُ مِمَّا تَرَكۡتُمۚ مِّنۢ بَعۡدِ وَصِیَّةࣲ تُوصُونَ بِهَاۤ أَوۡ دَیۡنࣲۗ وَإِن كَانَ رَجُلࣱ یُورَثُ كَلَـٰلَةً أَوِ ٱمۡرَأَةࣱ وَلَهُۥۤ أَخٌ أَوۡ أُخۡتࣱ فَلِكُلِّ وَ ٰحِدࣲ مِّنۡهُمَا ٱلسُّدُسُۚ فَإِن كَانُوۤاْ أَكۡثَرَ مِن ذَ ٰلِكَ فَهُمۡ شُرَكَاۤءُ فِی ٱلثُّلُثِۚ مِنۢ بَعۡدِ وَصِیَّةࣲ یُوصَىٰ بِهَاۤ أَوۡ دَیۡنٍ غَیۡرَ مُضَاۤرࣲّۚ وَصِیَّةࣰ مِّنَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ عَلِیمٌ حَلِیمࣱ ﴿١٢﴾
তোমাদের স্ত্রীদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির অর্ধেক তোমাদের জন্য, যদি তাদের কোনো সন্তান না থাকে এবং তাদের সন্তান থাকলে তোমাদের জন্য তাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির চার ভাগের এক ভাগ; ওসিয়াত পালন এবং ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের সন্তান না থাকলে তাদের জন্য তোমাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির চার ভাগের এক ভাগ, আর তোমাদের সন্তান থাকলে তাদের জন্য তোমাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির আট ভাগের এক ভাগ; তোমরা যা ওসিয়াত করবে তা দেয়ার পর এবং ঋণ পরিশোধের পর [১]। আর যদি কোনো পুরুষ অথবা নারীর ‘কালালাহ [২]’ বা পিতা-মাতা ও সন্তানহীন উত্তরাধিকারী হয়, আর থাকে তার এক বৈপিত্রেয় ভাই বা বোন, তবে প্রত্যেকের জন্য ছয় ভাগের এক ভাগ। তারা এর বেশি হলে সবাই সমান অংশীদার হবে তিন ভাগের এক ভাগে; এটা যা ওসিয়াত করা হয় তা দেয়ার পর এবং ঋণ পরিশোধের পর, কারো ক্ষতি না করে [৩]। এ হচ্ছে আল্লাহর নির্দেশ। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সহনশীল।
تِلۡكَ حُدُودُ ٱللَّهِۚ وَمَن یُطِعِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ یُدۡخِلۡهُ جَنَّـٰتࣲ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَاۚ وَذَ ٰلِكَ ٱلۡفَوۡزُ ٱلۡعَظِیمُ ﴿١٣﴾
এসব আল্লাহ্র নির্ধারিত সীমা। কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করলে আল্লাহ তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত; তারা সেখানে স্থায়ী হবে আর এটাই হলো মহাসাফল্য।
وَمَن یَعۡصِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَیَتَعَدَّ حُدُودَهُۥ یُدۡخِلۡهُ نَارًا خَـٰلِدࣰا فِیهَا وَلَهُۥ عَذَابࣱ مُّهِینࣱ ﴿١٤﴾
আর কেউ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্য হলে এবং তাঁর নির্ধারিত সীমা লংঘন করলে তিনি তাকে আগুনে নিক্ষেপ করবেন; সেখানে সে স্থায়ী হবে এবং তার জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি রয়েছে [১]।
وَٱلَّـٰتِی یَأۡتِینَ ٱلۡفَـٰحِشَةَ مِن نِّسَاۤىِٕكُمۡ فَٱسۡتَشۡهِدُواْ عَلَیۡهِنَّ أَرۡبَعَةࣰ مِّنكُمۡۖ فَإِن شَهِدُواْ فَأَمۡسِكُوهُنَّ فِی ٱلۡبُیُوتِ حَتَّىٰ یَتَوَفَّىٰهُنَّ ٱلۡمَوۡتُ أَوۡ یَجۡعَلَ ٱللَّهُ لَهُنَّ سَبِیلࣰا ﴿١٥﴾
আর তোমাদের নারীদের মধ্যে যারা ব্যভিচার করে তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্য থেকে চারজন সাক্ষী তলব করবে [১]। যদি তারা সাক্ষ্য দেয় তবে তাদেরকে ঘরে অবরুদ্ধ করবে, যে পর্যন্ত না তাদের মৃত্যু হয় বা আল্লাহ্ তাদের জন্য অন্য কোনো ব্যবস্থা করেন [২]।
وَٱلَّذَانِ یَأۡتِیَـٰنِهَا مِنكُمۡ فَـَٔاذُوهُمَاۖ فَإِن تَابَا وَأَصۡلَحَا فَأَعۡرِضُواْ عَنۡهُمَاۤۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ تَوَّابࣰا رَّحِیمًا ﴿١٦﴾
আর তোমাদের মধ্যে যে দুজন এতে লিপ্ত হবে তাদেরকে শাস্তি দেবে। যদি তারা তাওবাহ্ করে এবং নিজেদেরকে সংশোধণ করে নেয় তবে তাদের থেকে বিরত থাকবে [১]। নিশ্চয় আল্লাহ পরম তাওবাহ্ কবুলকারী, পরম দয়ালু।
إِنَّمَا ٱلتَّوۡبَةُ عَلَى ٱللَّهِ لِلَّذِینَ یَعۡمَلُونَ ٱلسُّوۤءَ بِجَهَـٰلَةࣲ ثُمَّ یَتُوبُونَ مِن قَرِیبࣲ فَأُوْلَـٰۤىِٕكَ یَتُوبُ ٱللَّهُ عَلَیۡهِمۡۗ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلِیمًا حَكِیمࣰا ﴿١٧﴾
আল্লাহ অবশ্যই সেসব লোকের তাওবাহ্ কবুল করবেন যারা অজ্ঞতাবশতঃ [১] মন্দ কাজ করে এবং তাড়াতাড়ি তাওবাহ্ করে, এরাই তারা, যাদের তাওবাহ্ আল্লাহ কবুল করেন [২]। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
وَلَیۡسَتِ ٱلتَّوۡبَةُ لِلَّذِینَ یَعۡمَلُونَ ٱلسَّیِّـَٔاتِ حَتَّىٰۤ إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ ٱلۡمَوۡتُ قَالَ إِنِّی تُبۡتُ ٱلۡـَٔـٰنَ وَلَا ٱلَّذِینَ یَمُوتُونَ وَهُمۡ كُفَّارٌۚ أُوْلَـٰۤىِٕكَ أَعۡتَدۡنَا لَهُمۡ عَذَابًا أَلِیمࣰا ﴿١٨﴾
তাওবাহ্ তাদের জন্য নয় যারা আজীবন মন্দ কাজ করে, অবশেষে তাদের কারো মৃত্যু উপস্থিত হলে সে বলে, ‘আমি এখন তাওবাহ্ করছি’ এবং তাদের জন্যও নয়, যাদের মৃত্যু হয় কাফির অবস্থায়। এরাই তারা যাদের জন্য আমরা কষ্টদায়ক শাস্তির ব্যবস্থা করেছি [১]।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ لَا یَحِلُّ لَكُمۡ أَن تَرِثُواْ ٱلنِّسَاۤءَ كَرۡهࣰاۖ وَلَا تَعۡضُلُوهُنَّ لِتَذۡهَبُواْ بِبَعۡضِ مَاۤ ءَاتَیۡتُمُوهُنَّ إِلَّاۤ أَن یَأۡتِینَ بِفَـٰحِشَةࣲ مُّبَیِّنَةࣲۚ وَعَاشِرُوهُنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ فَإِن كَرِهۡتُمُوهُنَّ فَعَسَىٰۤ أَن تَكۡرَهُواْ شَیۡـࣰٔا وَیَجۡعَلَ ٱللَّهُ فِیهِ خَیۡرࣰا كَثِیرࣰا ﴿١٩﴾
হে ঈমানদারগণ! যবরদস্তি করে [১] নারীদের উত্তরাধিকার হওয়া তোমাদের জন্য বৈধ নয়। তোমরা তাদেরকে যা দিয়েছ তা থেকে কিছু আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রেখো না, যদি না তারা স্পষ্ট খারাপ আচরণ করে [২]। আর তোমরা তাদের সাথে সৎভাবে জীবন যাপন করবে [৩]; তোমরা যদি তাদেরকে অপছন্দ কর তবে এমন হতে পারে যে, আল্লাহ্ যাতে প্রভূত কল্যাণ রেখেছেন তোমরা তাকেই অপছন্দ করছ [৪]।
وَإِنۡ أَرَدتُّمُ ٱسۡتِبۡدَالَ زَوۡجࣲ مَّكَانَ زَوۡجࣲ وَءَاتَیۡتُمۡ إِحۡدَىٰهُنَّ قِنطَارࣰا فَلَا تَأۡخُذُواْ مِنۡهُ شَیۡـًٔاۚ أَتَأۡخُذُونَهُۥ بُهۡتَـٰنࣰا وَإِثۡمࣰا مُّبِینࣰا ﴿٢٠﴾
আর তোমরা যদি এক স্ত্রীর জায়গায় অন্য স্ত্রী গ্রহণ করা স্থির কর এবং তাদের একজনকে অনেক অর্থও [১] দিয়ে থাক, তবুও তা থেকে কিছুই ফেরত নিও না। তোমরা কি মিথ্যা অপবাদ এবং প্রকাশ্য পাপাচরণ দ্বারা তা গ্রহণ করবে?
وَكَیۡفَ تَأۡخُذُونَهُۥ وَقَدۡ أَفۡضَىٰ بَعۡضُكُمۡ إِلَىٰ بَعۡضࣲ وَأَخَذۡنَ مِنكُم مِّیثَـٰقًا غَلِیظࣰا ﴿٢١﴾
আর কিভাবে তোমরা তা গ্রহণ করবে, যখন তোমরা একে অপরের সাথে সংগত হয়েছ এবং তারা তোমাদের কাছ থেকে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি [১] নিয়েছে?
وَلَا تَنكِحُواْ مَا نَكَحَ ءَابَاۤؤُكُم مِّنَ ٱلنِّسَاۤءِ إِلَّا مَا قَدۡ سَلَفَۚ إِنَّهُۥ كَانَ فَـٰحِشَةࣰ وَمَقۡتࣰا وَسَاۤءَ سَبِیلًا ﴿٢٢﴾
নারীদের মধ্যে তোমাদের পিতৃ পুরুষ যাদেরকে বিয়ে করেছে, তোমরা তাদেরকে বিয়ে করো না [১]; তবে পূর্বে যা সংঘটিত হয়েছে (সেটা ক্ষমা করা হলো) নিশ্চয় তা ছিল অশ্লীল, মারাত্মক ঘৃণ্য [২] ও নিকৃষ্ট পন্থা।
حُرِّمَتۡ عَلَیۡكُمۡ أُمَّهَـٰتُكُمۡ وَبَنَاتُكُمۡ وَأَخَوَ ٰتُكُمۡ وَعَمَّـٰتُكُمۡ وَخَـٰلَـٰتُكُمۡ وَبَنَاتُ ٱلۡأَخِ وَبَنَاتُ ٱلۡأُخۡتِ وَأُمَّهَـٰتُكُمُ ٱلَّـٰتِیۤ أَرۡضَعۡنَكُمۡ وَأَخَوَ ٰتُكُم مِّنَ ٱلرَّضَـٰعَةِ وَأُمَّهَـٰتُ نِسَاۤىِٕكُمۡ وَرَبَـٰۤىِٕبُكُمُ ٱلَّـٰتِی فِی حُجُورِكُم مِّن نِّسَاۤىِٕكُمُ ٱلَّـٰتِی دَخَلۡتُم بِهِنَّ فَإِن لَّمۡ تَكُونُواْ دَخَلۡتُم بِهِنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡكُمۡ وَحَلَـٰۤىِٕلُ أَبۡنَاۤىِٕكُمُ ٱلَّذِینَ مِنۡ أَصۡلَـٰبِكُمۡ وَأَن تَجۡمَعُواْ بَیۡنَ ٱلۡأُخۡتَیۡنِ إِلَّا مَا قَدۡ سَلَفَۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ غَفُورࣰا رَّحِیمࣰا ﴿٢٣﴾
তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে [১] তোমাদের মা [২], মেয়ে [৩], বোন [৪], ফুফু [৫], খালা [৬], ভাইয়ের মেয়ে [৭], বোনের মেয়ে [৮], দুধমা [৯], দুধবোন [১০], শাশুড়ি ও তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যার সাথে সংগত হয়েছ তার আগের স্বামীর ঔরসে তার গর্ভজাত মেয়ে, যারা তোমাদের অভিভাবকত্বে আছে [১১], তবে যদি তাদের সাথে সংগত না হয়ে থাক তাতে তোমাদের কোনো অপরাধ নেই। আর তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ তোমাদের ঔরসজাত ছেলের স্ত্রী [১২] ও দুই বোনকে একত্র করা, আগে যা হয়েছে তা ছাড়া[১৩]। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
۞ وَٱلۡمُحۡصَنَـٰتُ مِنَ ٱلنِّسَاۤءِ إِلَّا مَا مَلَكَتۡ أَیۡمَـٰنُكُمۡۖ كِتَـٰبَ ٱللَّهِ عَلَیۡكُمۡۚ وَأُحِلَّ لَكُم مَّا وَرَاۤءَ ذَ ٰلِكُمۡ أَن تَبۡتَغُواْ بِأَمۡوَ ٰلِكُم مُّحۡصِنِینَ غَیۡرَ مُسَـٰفِحِینَۚ فَمَا ٱسۡتَمۡتَعۡتُم بِهِۦ مِنۡهُنَّ فَـَٔاتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ فَرِیضَةࣰۚ وَلَا جُنَاحَ عَلَیۡكُمۡ فِیمَا تَرَ ٰضَیۡتُم بِهِۦ مِنۢ بَعۡدِ ٱلۡفَرِیضَةِۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلِیمًا حَكِیمࣰا ﴿٢٤﴾
আর নারীদের মধ্যে তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসী [১] ছাড়া সব সধবা তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ, তোমাদের জন্য এগুলো আল্লাহর বিধান। উল্লেখিত নারীগণ ছাড়া অন্য নারীকে অর্থব্যয়ে বিয়ে করতে চাওয়া তোমাদের জন্য বৈধ করা হল, অবৈধ যৌন সম্পর্কের জন্য নয়। তাদের মধ্যে যাদেরকে তোমরা সম্ভোগ করেছ তাদের নির্ধারিত মাহ্র অর্পণ করবে [২]। মাহ্র নির্ধারণের পর কোনো বিষয়ে পরস্পর রাযী হলে তাতে তোমাদের কোনো দোষ নেই [৩]। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
وَمَن لَّمۡ یَسۡتَطِعۡ مِنكُمۡ طَوۡلًا أَن یَنكِحَ ٱلۡمُحۡصَنَـٰتِ ٱلۡمُؤۡمِنَـٰتِ فَمِن مَّا مَلَكَتۡ أَیۡمَـٰنُكُم مِّن فَتَیَـٰتِكُمُ ٱلۡمُؤۡمِنَـٰتِۚ وَٱللَّهُ أَعۡلَمُ بِإِیمَـٰنِكُمۚ بَعۡضُكُم مِّنۢ بَعۡضࣲۚ فَٱنكِحُوهُنَّ بِإِذۡنِ أَهۡلِهِنَّ وَءَاتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِ مُحۡصَنَـٰتٍ غَیۡرَ مُسَـٰفِحَـٰتࣲ وَلَا مُتَّخِذَ ٰتِ أَخۡدَانࣲۚ فَإِذَاۤ أُحۡصِنَّ فَإِنۡ أَتَیۡنَ بِفَـٰحِشَةࣲ فَعَلَیۡهِنَّ نِصۡفُ مَا عَلَى ٱلۡمُحۡصَنَـٰتِ مِنَ ٱلۡعَذَابِۚ ذَ ٰلِكَ لِمَنۡ خَشِیَ ٱلۡعَنَتَ مِنكُمۡۚ وَأَن تَصۡبِرُواْ خَیۡرࣱ لَّكُمۡۗ وَٱللَّهُ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿٢٥﴾
আর তোমাদের মধ্যে কারো মুক্ত ঈমানদার নারী বিয়ের সামর্থ্য [১] না থাকলে তোমরা তোমাদের অধিকারভুক্ত ঈমানদার দাসী বিয়ে করবে [২]; আল্লাহ তোমাদের ঈমান সম্পর্কে পরিজ্ঞাত। তোমরা একে অপরের সমান; কাজেই তোমরা তাদেরকে বিয়ে করবে তাদের মালিকের অনুমতিক্রমে [৩] এবং তাদেরকে তাদের মাহ্র ন্যায়সংগতভাবে দিবে। তারা হবে সচ্চরিত্রা, ব্যভিচারিণী নয় ও উপপতি গ্রহণকারিণীও নয়। অতঃপর বিবাহিতা হওয়ার পর যদি তারা ব্যভিচার করে তবে তাদের শাস্তি মুক্ত নারীর অর্ধেক [৪]; তোমাদের মধ্যে যারা ব্যভিচারকে ভয় করে এগুলো তাদের জন্য; আর ধৈর্য ধারণ করা তোমাদের জন্য মঙ্গল [৫]। আল্লাহ ক্ষমাপরায়ণ, পরম দয়ালু।
یُرِیدُ ٱللَّهُ لِیُبَیِّنَ لَكُمۡ وَیَهۡدِیَكُمۡ سُنَنَ ٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِكُمۡ وَیَتُوبَ عَلَیۡكُمۡۗ وَٱللَّهُ عَلِیمٌ حَكِیمࣱ ﴿٢٦﴾
আল্লাহ ইচ্ছে করেন তোমাদের কাছে বিশদভাবে বিবৃত করতে, তোমাদের পূর্ববর্তীদের রীতি-নীতি তোমাদেরকে অবহিত করতে এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করতে [১]। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
وَٱللَّهُ یُرِیدُ أَن یَتُوبَ عَلَیۡكُمۡ وَیُرِیدُ ٱلَّذِینَ یَتَّبِعُونَ ٱلشَّهَوَ ٰتِ أَن تَمِیلُواْ مَیۡلًا عَظِیمࣰا ﴿٢٧﴾
আর আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করতে চান। আর যারা কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করে তারা চায় যে, তোমরা ভীষণভাবে পথচ্যুত হও [১]।
یُرِیدُ ٱللَّهُ أَن یُخَفِّفَ عَنكُمۡۚ وَخُلِقَ ٱلۡإِنسَـٰنُ ضَعِیفࣰا ﴿٢٨﴾
আল্লাহ তোমাদের ভার কমাতে চান [১]; আর মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে দুর্বলরূপে [২]।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ لَا تَأۡكُلُوۤاْ أَمۡوَ ٰلَكُم بَیۡنَكُم بِٱلۡبَـٰطِلِ إِلَّاۤ أَن تَكُونَ تِجَـٰرَةً عَن تَرَاضࣲ مِّنكُمۡۚ وَلَا تَقۡتُلُوۤاْ أَنفُسَكُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِكُمۡ رَحِیمࣰا ﴿٢٩﴾
হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি [১] অন্যায়ভাবে [২] গ্রাস করো না; কিন্তু তোমরা পরস্পর রাযী হয়ে [৩] ব্যবসা করা বৈধ [৪]; এবং নিজেদেরকে হত্যা করো না [৫]; নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু।
وَمَن یَفۡعَلۡ ذَ ٰلِكَ عُدۡوَ ٰنࣰا وَظُلۡمࣰا فَسَوۡفَ نُصۡلِیهِ نَارࣰاۚ وَكَانَ ذَ ٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ یَسِیرًا ﴿٣٠﴾
আর যে কেউ সীমালংঘন করে অন্যায়ভাবে তা করবে, অবশ্যই আমরা তাকে আগুনে পোড়াবো; এসব আল্লাহর পক্ষে সহজ।
إِن تَجۡتَنِبُواْ كَبَاۤىِٕرَ مَا تُنۡهَوۡنَ عَنۡهُ نُكَفِّرۡ عَنكُمۡ سَیِّـَٔاتِكُمۡ وَنُدۡخِلۡكُم مُّدۡخَلࣰا كَرِیمࣰا ﴿٣١﴾
তোমদেরকে যা নিষেধ করা হয়েছে তার মধ্যে যা কবীরা গোনাহ্ [১] তা থেকে বিরত থাকলে আমরা তোমাদের ছোট পাপগুলো [২] ক্ষমা করব এবং তোমাদেরকে সম্মানজনক স্থানে প্রবেশ করাব।
وَلَا تَتَمَنَّوۡاْ مَا فَضَّلَ ٱللَّهُ بِهِۦ بَعۡضَكُمۡ عَلَىٰ بَعۡضࣲۚ لِّلرِّجَالِ نَصِیبࣱ مِّمَّا ٱكۡتَسَبُواْۖ وَلِلنِّسَاۤءِ نَصِیبࣱ مِّمَّا ٱكۡتَسَبۡنَۚ وَسۡـَٔلُواْ ٱللَّهَ مِن فَضۡلِهِۦۤۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِكُلِّ شَیۡءٍ عَلِیمࣰا ﴿٣٢﴾
আর যা দ্বারা আল্লাহ তোমাদের কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন তোমরা তার লালসা করো না। পুরুষ যা অর্জন করে তা তার প্রাপ্য অংশ এবং নারী যা অর্জন করে তা তার প্রাপ্য অংশ [১]। আর আল্লাহর কাছে তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা কর, নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু সম্পর্কে সর্বজ্ঞ।
وَلِكُلࣲّ جَعَلۡنَا مَوَ ٰلِیَ مِمَّا تَرَكَ ٱلۡوَ ٰلِدَانِ وَٱلۡأَقۡرَبُونَۚ وَٱلَّذِینَ عَقَدَتۡ أَیۡمَـٰنُكُمۡ فَـَٔاتُوهُمۡ نَصِیبَهُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ شَهِیدًا ﴿٣٣﴾
পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পত্তির প্রত্যেকটির জন্য আমরা উত্তরাধিকারী করেছি [১] এবং যাদের সাথে তোমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ তাদেরকে তাদের অংশ দেবে [২]। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বকিছুর সম্যক দ্রষ্টা।
ٱلرِّجَالُ قَوَّ ٰمُونَ عَلَى ٱلنِّسَاۤءِ بِمَا فَضَّلَ ٱللَّهُ بَعۡضَهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضࣲ وَبِمَاۤ أَنفَقُواْ مِنۡ أَمۡوَ ٰلِهِمۡۚ فَٱلصَّـٰلِحَـٰتُ قَـٰنِتَـٰتٌ حَـٰفِظَـٰتࣱ لِّلۡغَیۡبِ بِمَا حَفِظَ ٱللَّهُۚ وَٱلَّـٰتِی تَخَافُونَ نُشُوزَهُنَّ فَعِظُوهُنَّ وَٱهۡجُرُوهُنَّ فِی ٱلۡمَضَاجِعِ وَٱضۡرِبُوهُنَّۖ فَإِنۡ أَطَعۡنَكُمۡ فَلَا تَبۡغُواْ عَلَیۡهِنَّ سَبِیلًاۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلِیࣰّا كَبِیرࣰا ﴿٣٤﴾
পুরুষরা নারীদের কর্তা [১], কারণ আল্লাহ তাদের এককে অপরের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং এজন্যে যে, পুরুষ তাদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে [২]। কাজেই পূণ্যশীলা স্ত্রীরা অনুগতা [৩] এবং লোকচক্ষুর আড়ালে আল্লাহর হেফাযতে তারা হেফাযত করে [৪]। আর স্ত্রীদের মধ্যে যাদের অবাধ্যতার আশংকা কর তাদেরকে সদুপদেশ দাও, তারপর তাদের শয্যা বর্জন কর এবং তাদেরকে প্রহার কর [৫]। যদি তারা তোমাদের অনুগত হয় তবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো পথ অন্বেষণ করো না [৬]। নিশ্চয় আল্লাহ শ্রেষ্ঠ, মহান।
وَإِنۡ خِفۡتُمۡ شِقَاقَ بَیۡنِهِمَا فَٱبۡعَثُواْ حَكَمࣰا مِّنۡ أَهۡلِهِۦ وَحَكَمࣰا مِّنۡ أَهۡلِهَاۤ إِن یُرِیدَاۤ إِصۡلَـٰحࣰا یُوَفِّقِ ٱللَّهُ بَیۡنَهُمَاۤۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلِیمًا خَبِیرࣰا ﴿٣٥﴾
আর তাদের উভয়ের মধ্যে বিরোধ আশংকা করলে তোমরা স্বামীর পরিবার থেকে একজন এবং স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন সালিশ নিযুক্ত কর; তারা উভয়ে নিস্পত্তি চাইলে আল্লাহ তাদের মধ্যে মীমাংসার অনুকূল অবস্থা সৃষ্টি করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবিশেষ অবহিত [১]।
۞ وَٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ وَلَا تُشۡرِكُواْ بِهِۦ شَیۡـࣰٔاۖ وَبِٱلۡوَ ٰلِدَیۡنِ إِحۡسَـٰنࣰا وَبِذِی ٱلۡقُرۡبَىٰ وَٱلۡیَتَـٰمَىٰ وَٱلۡمَسَـٰكِینِ وَٱلۡجَارِ ذِی ٱلۡقُرۡبَىٰ وَٱلۡجَارِ ٱلۡجُنُبِ وَٱلصَّاحِبِ بِٱلۡجَنۢبِ وَٱبۡنِ ٱلسَّبِیلِ وَمَا مَلَكَتۡ أَیۡمَـٰنُكُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا یُحِبُّ مَن كَانَ مُخۡتَالࣰا فَخُورًا ﴿٣٦﴾
আর তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর ও কোনো কিছুকে তাঁর শরীক করো না [১]; এবং পিতা-মাতা [২]; আত্মীয়-স্বজন [৩], ইয়াতীম, অভাবগ্রস্ত [৪], নিকট প্রতিবেশী [৫], দূর-প্রতিবেশী [৬], সঙ্গী-সাথী [৭], মুসাফির [৮] ও তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের [৯] প্রতি সদ্ব্যবহার করো। নিশ্চয় আল্লাহ পছন্দ করেন না দাম্ভিক, অহংকারীকে [১০]।
ٱلَّذِینَ یَبۡخَلُونَ وَیَأۡمُرُونَ ٱلنَّاسَ بِٱلۡبُخۡلِ وَیَكۡتُمُونَ مَاۤ ءَاتَىٰهُمُ ٱللَّهُ مِن فَضۡلِهِۦۗ وَأَعۡتَدۡنَا لِلۡكَـٰفِرِینَ عَذَابࣰا مُّهِینࣰا ﴿٣٧﴾
যারা কৃপণতা করে [১] এবং মানুষকে কৃপণতার নির্দেশ দেয় এবং আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে যা দিয়েছেন তা গোপন করে। আর আমরা কাফেরদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি [২]।
وَٱلَّذِینَ یُنفِقُونَ أَمۡوَ ٰلَهُمۡ رِئَاۤءَ ٱلنَّاسِ وَلَا یُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَلَا بِٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِۗ وَمَن یَكُنِ ٱلشَّیۡطَـٰنُ لَهُۥ قَرِینࣰا فَسَاۤءَ قَرِینࣰا ﴿٣٨﴾
আর যারা মানুষকে দেখানোর জন্য [১] তাদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে এবং আল্লাহ ও শেষ দিবসে ঈমান আনে না। আর শয়তান কারো সঙ্গী হলে সে সঙ্গী কত মন্দ [২]!
وَمَاذَا عَلَیۡهِمۡ لَوۡ ءَامَنُواْ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ وَأَنفَقُواْ مِمَّا رَزَقَهُمُ ٱللَّهُۚ وَكَانَ ٱللَّهُ بِهِمۡ عَلِیمًا ﴿٣٩﴾
তারা আল্লাহ ও শেষ দিবসে ঈমান আনলে এবং আল্লাহ তাদেরকে যা কিছু দিয়েছেন তা থেকে ব্যয় করলে তাদের কী ক্ষতি হত? আর আল্লাহ তাদের সম্পর্কে সম্যক অবগত।
إِنَّ ٱللَّهَ لَا یَظۡلِمُ مِثۡقَالَ ذَرَّةࣲۖ وَإِن تَكُ حَسَنَةࣰ یُضَـٰعِفۡهَا وَیُؤۡتِ مِن لَّدُنۡهُ أَجۡرًا عَظِیمࣰا ﴿٤٠﴾
নিশ্চয় আল্লাহ অণু পরিমাণও যুলুম করেন না [১]। আর কোনো পূণ্য কাজ হলে আল্লাহ সেটাকে বহুগুণ বর্ধিত করেন [২] এবং আল্লাহ তাঁর কাছ থেকে মহাপুরস্কার প্রদান করেন [৩]।
فَكَیۡفَ إِذَا جِئۡنَا مِن كُلِّ أُمَّةِۭ بِشَهِیدࣲ وَجِئۡنَا بِكَ عَلَىٰ هَـٰۤؤُلَاۤءِ شَهِیدࣰا ﴿٤١﴾
অতঃপর যখন আমরা প্রত্যেক উম্মত হতে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব [১] এবং আপনাকে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষীরূপে উপস্থিত করব তখন কী অবস্থা হবে [২]?
یَوۡمَىِٕذࣲ یَوَدُّ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ وَعَصَوُاْ ٱلرَّسُولَ لَوۡ تُسَوَّىٰ بِهِمُ ٱلۡأَرۡضُ وَلَا یَكۡتُمُونَ ٱللَّهَ حَدِیثࣰا ﴿٤٢﴾
যারা কুফরী করেছে এবং রাসূলের অবাধ্য হয়েছে তারা সেদিন কামনা করবে, যদি তারা মাটির সাথে মিশে যেত [১]! আর তারা আল্লাহ হতে কোনো কথাই গোপন করতে পারবে না [২]।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ لَا تَقۡرَبُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَأَنتُمۡ سُكَـٰرَىٰ حَتَّىٰ تَعۡلَمُواْ مَا تَقُولُونَ وَلَا جُنُبًا إِلَّا عَابِرِی سَبِیلٍ حَتَّىٰ تَغۡتَسِلُواْۚ وَإِن كُنتُم مَّرۡضَىٰۤ أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٍ أَوۡ جَاۤءَ أَحَدࣱ مِّنكُم مِّنَ ٱلۡغَاۤىِٕطِ أَوۡ لَـٰمَسۡتُمُ ٱلنِّسَاۤءَ فَلَمۡ تَجِدُواْ مَاۤءࣰ فَتَیَمَّمُواْ صَعِیدࣰا طَیِّبࣰا فَٱمۡسَحُواْ بِوُجُوهِكُمۡ وَأَیۡدِیكُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَفُوًّا غَفُورًا ﴿٤٣﴾
হে মুমিনগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় [১] তোমরা সালাতের নিকটবর্তী হয়ো না, যতক্ষণ না তোমরা যা বল তা বুঝতে পার [২] এবং যদি তোমরা মুসাফির না হও তবে অপবিত্র অবস্থাতেও নয়, যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা গোসল কর [৩]। আর যদি তোমরা পীড়িত হও অথবা সফরে থাক বা তোমাদের কেউ শৌচস্থান থেকে আসে অথবা তোমরা নারী সম্ভোগ কর এবং পানি না পাও তবে পবিত্র মাটির দ্বারা তায়াম্মুম কর [৪]। সুতরাং মাসেহ কর তোমরা তোমাদের চেহারা ও হাত, নিশ্চয় আল্লাহ পাপ মোচনকারী, ক্ষমাশীল।
أَلَمۡ تَرَ إِلَى ٱلَّذِینَ أُوتُواْ نَصِیبࣰا مِّنَ ٱلۡكِتَـٰبِ یَشۡتَرُونَ ٱلضَّلَـٰلَةَ وَیُرِیدُونَ أَن تَضِلُّواْ ٱلسَّبِیلَ ﴿٤٤﴾
আপনি কি তাদেরকে দেখেননি যাদেরকে কিতাবের এক অংশ দেয়া হয়েছিল? তারা ভ্রান্ত পথ ক্রয় করে এবং তোমরাও পথভ্রষ্ট হও –এটাই তারা চায় [১]।
وَٱللَّهُ أَعۡلَمُ بِأَعۡدَاۤىِٕكُمۡۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ وَلِیࣰّا وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ نَصِیرࣰا ﴿٤٥﴾
আল্লাহ তোমাদের শত্রুদেরকে ভালোভাবে জানেন। আর অভিভাকত্বে আল্লাহই যথেষ্ট এবং সাহায্যেও আল্লাহই যথেষ্ট।
مِّنَ ٱلَّذِینَ هَادُواْ یُحَرِّفُونَ ٱلۡكَلِمَ عَن مَّوَاضِعِهِۦ وَیَقُولُونَ سَمِعۡنَا وَعَصَیۡنَا وَٱسۡمَعۡ غَیۡرَ مُسۡمَعࣲ وَرَ ٰعِنَا لَیَّۢا بِأَلۡسِنَتِهِمۡ وَطَعۡنࣰا فِی ٱلدِّینِۚ وَلَوۡ أَنَّهُمۡ قَالُواْ سَمِعۡنَا وَأَطَعۡنَا وَٱسۡمَعۡ وَٱنظُرۡنَا لَكَانَ خَیۡرࣰا لَّهُمۡ وَأَقۡوَمَ وَلَـٰكِن لَّعَنَهُمُ ٱللَّهُ بِكُفۡرِهِمۡ فَلَا یُؤۡمِنُونَ إِلَّا قَلِیلࣰا ﴿٤٦﴾
ইয়াহুদীদের মধ্যে কিছু লোক কথাগুলো স্থানচ্যুত করে বিকৃত করে [১] এবং বলে, ‘শুনলাম ও অমান্য করলাম’ এবং শোনে না শোনার মত; আর নিজেদের জিহবা কুঞ্চিত করে এবং দীনের প্রতি তাচ্ছিল্য করে বলে, ‘রাইনা’ [২]। কিন্তু তারা যদি বলত, ‘শুনলাম ও মান্য করলাম এবং শুনুন ও আমাদের প্রতি লক্ষ্য করুন’, তবে তা তাদের জন্য ভালো ও সঙ্গত হত। কিন্তু তাদের কুফরীর জন্য আল্লাহ তাদেরকে লা’নত করেছেন। ফলে তাদের অল্প সংখ্যকই ঈমান আনে।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَـٰبَ ءَامِنُواْ بِمَا نَزَّلۡنَا مُصَدِّقࣰا لِّمَا مَعَكُم مِّن قَبۡلِ أَن نَّطۡمِسَ وُجُوهࣰا فَنَرُدَّهَا عَلَىٰۤ أَدۡبَارِهَاۤ أَوۡ نَلۡعَنَهُمۡ كَمَا لَعَنَّاۤ أَصۡحَـٰبَ ٱلسَّبۡتِۚ وَكَانَ أَمۡرُ ٱللَّهِ مَفۡعُولًا ﴿٤٧﴾
হে কিতাবপ্রাপ্তগণ, তোমাদের কাছে যা আছে তার সমর্থকরূপে আমরা যা নাযিল করেছি তাতে তোমরা ঈমান আন [১], আমরা মুখমণ্ডলগুলোকে বিকৃত করে তারপর সেগুলোকে পিছনের দিকে ফিরিয়ে দেয়ার আগে [২] অথবা আস্হাবুস্ সাব্তকে যেরূপ লা’নত করেছিলাম [৩] সেরূপ তাদেরকে লা’নত করার আগে। আর আল্লাহ্র আদেশ কার্যকরী হয়েই থাকে।
إِنَّ ٱللَّهَ لَا یَغۡفِرُ أَن یُشۡرَكَ بِهِۦ وَیَغۡفِرُ مَا دُونَ ذَ ٰلِكَ لِمَن یَشَاۤءُۚ وَمَن یُشۡرِكۡ بِٱللَّهِ فَقَدِ ٱفۡتَرَىٰۤ إِثۡمًا عَظِیمًا ﴿٤٨﴾
নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক [১] করাকে ক্ষমা করেন না। এছাড়া অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছে ক্ষমা করেন [২]। আর যে-ই আল্লাহর সাথে শরীক করে, সে এক মহাপাপ রটনা করে।
أَلَمۡ تَرَ إِلَى ٱلَّذِینَ یُزَكُّونَ أَنفُسَهُمۚ بَلِ ٱللَّهُ یُزَكِّی مَن یَشَاۤءُ وَلَا یُظۡلَمُونَ فَتِیلًا ﴿٤٩﴾
আপনি কি তাদেরকে দেখেননি, যারা নিজেদেরকে পবিত্র মনে করে? বরং আল্লাহ যাকে ইচ্ছে পবিত্র করেন [১]। আর তাদের উপর সূতা পরিমাণও যুলুম করা হবে না।
ٱنظُرۡ كَیۡفَ یَفۡتَرُونَ عَلَى ٱللَّهِ ٱلۡكَذِبَۖ وَكَفَىٰ بِهِۦۤ إِثۡمࣰا مُّبِینًا ﴿٥٠﴾
দেখুন! তারা আল্লাহ সম্বন্ধে কিরূপ মিথ্যা উদ্ভাবন করে; আর প্রকাশ্য পাপ হিসেবে এটাই যথেষ্ট।
أَلَمۡ تَرَ إِلَى ٱلَّذِینَ أُوتُواْ نَصِیبࣰا مِّنَ ٱلۡكِتَـٰبِ یُؤۡمِنُونَ بِٱلۡجِبۡتِ وَٱلطَّـٰغُوتِ وَیَقُولُونَ لِلَّذِینَ كَفَرُواْ هَـٰۤؤُلَاۤءِ أَهۡدَىٰ مِنَ ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ سَبِیلًا ﴿٥١﴾
আপনি কি তাদেরকে দেখেননি যাদেরকে কিতাবের এক অংশ দেয়া হয়েছিল, তারা জিব্ত ও তাগূতে বিশ্বাস করে [১]? তারা কাফেরদের সম্বন্ধে বলে, ‘এদের পথই মুমিনদের চেয়ে প্রকৃষ্টতর [২]।
أُوْلَـٰۤىِٕكَ ٱلَّذِینَ لَعَنَهُمُ ٱللَّهُۖ وَمَن یَلۡعَنِ ٱللَّهُ فَلَن تَجِدَ لَهُۥ نَصِیرًا ﴿٥٢﴾
এরাই তারা, যাদেরকে আল্লাহ লা’নত করেছেন [১] এবং আল্লাহ যাকে লা’নত করেন আপনি কখনো তার কোনো সাহায্যকারী পাবেন না [২]।
أَمۡ لَهُمۡ نَصِیبࣱ مِّنَ ٱلۡمُلۡكِ فَإِذࣰا لَّا یُؤۡتُونَ ٱلنَّاسَ نَقِیرًا ﴿٥٣﴾
তবে কি রাজশক্তিতে তাদের কোনো অংশ আছে? সে ক্ষেত্রেও তো তারা কাউকে এক কপর্দকও দেবে না [১]।
أَمۡ یَحۡسُدُونَ ٱلنَّاسَ عَلَىٰ مَاۤ ءَاتَىٰهُمُ ٱللَّهُ مِن فَضۡلِهِۦۖ فَقَدۡ ءَاتَیۡنَاۤ ءَالَ إِبۡرَ ٰهِیمَ ٱلۡكِتَـٰبَ وَٱلۡحِكۡمَةَ وَءَاتَیۡنَـٰهُم مُّلۡكًا عَظِیمࣰا ﴿٥٤﴾
অথবা আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে মানুষকে যা দিয়েছেন সে জন্য কি তারা তাদেরকে ঈর্ষা করে [১]? তবে আমরা তো ইবরাহীমের বংশধরকেও কিতাব ও হিকমত দিয়েছিলাম এবং আমরা তাদেরকে বিশাল রাজ্য দান করেছিলাম।
فَمِنۡهُم مَّنۡ ءَامَنَ بِهِۦ وَمِنۡهُم مَّن صَدَّ عَنۡهُۚ وَكَفَىٰ بِجَهَنَّمَ سَعِیرًا ﴿٥٥﴾
অতঃপর তাদের কিছু সংখ্যক তাতে ঈমান এনেছিল এবং কিছু সংখ্যক তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল [১]; আর দগ্ধ করার জন্য জাহান্নামই যথেষ্ট।
إِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ بِـَٔایَـٰتِنَا سَوۡفَ نُصۡلِیهِمۡ نَارࣰا كُلَّمَا نَضِجَتۡ جُلُودُهُم بَدَّلۡنَـٰهُمۡ جُلُودًا غَیۡرَهَا لِیَذُوقُواْ ٱلۡعَذَابَۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَزِیزًا حَكِیمࣰا ﴿٥٦﴾
নিশ্চয় যারা আমাদের আয়াতকে প্রত্যাখ্যান করে অবশ্যই তাদেরকে আমরা আগুনে পোড়াব; যখনই তাদের চামড়া পুড়ে পাকা দগ্ধ হবে তখনই তার স্থলে নতুন চামড়া বদলে দেব, যাতে তারা শাস্তি ভোগ করে [১]। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
وَٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ سَنُدۡخِلُهُمۡ جَنَّـٰتࣲ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَاۤ أَبَدࣰاۖ لَّهُمۡ فِیهَاۤ أَزۡوَ ٰجࣱ مُّطَهَّرَةࣱۖ وَنُدۡخِلُهُمۡ ظِلࣰّا ظَلِیلًا ﴿٥٧﴾
আর যারা ঈমান আনে এবং ভালো কাজ করে, অচিরেই আমরা তাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাব, যার পাদদেশে নদী-নালাসমূহ প্রবাহিত; যেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে, সেখানে তাদের জন্য পবিত্র স্ত্রী থাকবে এবং তাদেরকে আমরা চিরস্নিগ্ধ ছায়ায় প্রবেশ করাব [১]।
۞ إِنَّ ٱللَّهَ یَأۡمُرُكُمۡ أَن تُؤَدُّواْ ٱلۡأَمَـٰنَـٰتِ إِلَىٰۤ أَهۡلِهَا وَإِذَا حَكَمۡتُم بَیۡنَ ٱلنَّاسِ أَن تَحۡكُمُواْ بِٱلۡعَدۡلِۚ إِنَّ ٱللَّهَ نِعِمَّا یَعِظُكُم بِهِۦۤۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ سَمِیعَۢا بَصِیرࣰا ﴿٥٨﴾
নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন আমানত [১] তার হকদারকে ফিরিয়ে দিতে [২]। তোমরা যখন মানুষের মধ্যে বিচারকার্য পরিচালনা করবে তখন ন্যায়পরায়ণতার সাথে বিচার করবে [৩]। আল্লাহ তোমাদেরকে যে উপদেশ দেন তা কত উৎকৃষ্ট[৪]! নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা [৫]।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤاْ أَطِیعُواْ ٱللَّهَ وَأَطِیعُواْ ٱلرَّسُولَ وَأُوْلِی ٱلۡأَمۡرِ مِنكُمۡۖ فَإِن تَنَـٰزَعۡتُمۡ فِی شَیۡءࣲ فَرُدُّوهُ إِلَى ٱللَّهِ وَٱلرَّسُولِ إِن كُنتُمۡ تُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِۚ ذَ ٰلِكَ خَیۡرࣱ وَأَحۡسَنُ تَأۡوِیلًا ﴿٥٩﴾
হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর, রাসূলের আনুগত্য কর, আরও আনুগত্য কর তোমাদের মধ্যকার ক্ষমতাশীলদের [১], অতঃপর কোনো বিষয়ে তোমাদের মধ্যে মতভেদ ঘটলে তা উপস্থাপিত কর আল্লাহ ও রাসূলের নিকট, যদি তোমরা আল্লাহ ও আখেরাতে ঈমান এনে থাক। এ পন্থায় উত্তম এবং পরিণামে প্রকৃষ্টতর।
أَلَمۡ تَرَ إِلَى ٱلَّذِینَ یَزۡعُمُونَ أَنَّهُمۡ ءَامَنُواْ بِمَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡكَ وَمَاۤ أُنزِلَ مِن قَبۡلِكَ یُرِیدُونَ أَن یَتَحَاكَمُوۤاْ إِلَى ٱلطَّـٰغُوتِ وَقَدۡ أُمِرُوۤاْ أَن یَكۡفُرُواْ بِهِۦۖ وَیُرِیدُ ٱلشَّیۡطَـٰنُ أَن یُضِلَّهُمۡ ضَلَـٰلَۢا بَعِیدࣰا ﴿٦٠﴾
আপনি কি তাদেরকে দেখেননি যারা দাবি করে যে, আপনার প্রতি যা নাযিল হয়েছে এবং আপনার পূর্বে যা নাযিল হয়েছে তাতে তারা ঈমান এনেছে, অথচ তারা তাগূতের কাছে বিচারপ্রার্থী হতে চায়, যদিও সেটাকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর শয়তান তাদেরকে ভীষণভাবে পথভ্রষ্ট করতে চায়?
وَإِذَا قِیلَ لَهُمۡ تَعَالَوۡاْ إِلَىٰ مَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ وَإِلَى ٱلرَّسُولِ رَأَیۡتَ ٱلۡمُنَـٰفِقِینَ یَصُدُّونَ عَنكَ صُدُودࣰا ﴿٦١﴾
তাদেরকে যখন বলা হয় আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার দিকে এবং রাসূলের দিকে আস, তখন মুনাফিকদেরকে আপনি আপনার কাছ থেকে একেবারে মুখ ফিরিয়ে নিতে দেখবেন [১]।
فَكَیۡفَ إِذَاۤ أَصَـٰبَتۡهُم مُّصِیبَةُۢ بِمَا قَدَّمَتۡ أَیۡدِیهِمۡ ثُمَّ جَاۤءُوكَ یَحۡلِفُونَ بِٱللَّهِ إِنۡ أَرَدۡنَاۤ إِلَّاۤ إِحۡسَـٰنࣰا وَتَوۡفِیقًا ﴿٦٢﴾
অতঃপর কী অবস্থঅ হবে, যখন তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদের কোন মুসীবত হবে? তারপর তারা আল্লাহর নামে শপথ করে আপনার কাছে এসে বলবে, ‘আমরা কল্যাণ এবং সম্প্রীতি ছাড়া অন্য কিছুই চাইনি।’
أُوْلَـٰۤىِٕكَ ٱلَّذِینَ یَعۡلَمُ ٱللَّهُ مَا فِی قُلُوبِهِمۡ فَأَعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ وَعِظۡهُمۡ وَقُل لَّهُمۡ فِیۤ أَنفُسِهِمۡ قَوۡلَۢا بَلِیغࣰا ﴿٦٣﴾
এরাই তারা, যাদের অন্তরে কী আছে আল্লাহ তা জানেন। কাজেই আপনি তাদেরকে উপেক্ষা করুন, তাদেরকে সদুপদেশ দিন এবং তাদেরকে তাদের মর্ম স্পর্শ করে– এমন কথা বলুন।
وَمَاۤ أَرۡسَلۡنَا مِن رَّسُولٍ إِلَّا لِیُطَاعَ بِإِذۡنِ ٱللَّهِۚ وَلَوۡ أَنَّهُمۡ إِذ ظَّلَمُوۤاْ أَنفُسَهُمۡ جَاۤءُوكَ فَٱسۡتَغۡفَرُواْ ٱللَّهَ وَٱسۡتَغۡفَرَ لَهُمُ ٱلرَّسُولُ لَوَجَدُواْ ٱللَّهَ تَوَّابࣰا رَّحِیمࣰا ﴿٦٤﴾
আল্লাহর অনুমতিক্রমে কেবল আনুগত্য করার জন্যই আমরা রাসূলেদের প্রেরণ করেছি। যখন তারা নিজেদের প্রতি যুলুম করে তখন তারা আপনার কাছে আসলে ও আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করলে এবং রাসূলও তাদের জন্য ক্ষমা চাইলে তারা অবশ্যই আল্লাহকে পরম ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালুরূপে পাবে [১]।
فَلَا وَرَبِّكَ لَا یُؤۡمِنُونَ حَتَّىٰ یُحَكِّمُوكَ فِیمَا شَجَرَ بَیۡنَهُمۡ ثُمَّ لَا یَجِدُواْ فِیۤ أَنفُسِهِمۡ حَرَجࣰا مِّمَّا قَضَیۡتَ وَیُسَلِّمُواْ تَسۡلِیمࣰا ﴿٦٥﴾
কিন্তু না, আপনার রবের শপথ! তারা মুমিন হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা নিজেদের বিবাদ-বিসম্বাদের [১] বিচার ভার আপনার উপর অর্পণ না করে; অতঃপর আপনার মীমাংসা সম্পর্কে তাদের মনে কোনো দ্বিধা না থাকে [২] এবং সর্বান্তকরণে তা মেনে নেয় [৩]।
وَلَوۡ أَنَّا كَتَبۡنَا عَلَیۡهِمۡ أَنِ ٱقۡتُلُوۤاْ أَنفُسَكُمۡ أَوِ ٱخۡرُجُواْ مِن دِیَـٰرِكُم مَّا فَعَلُوهُ إِلَّا قَلِیلࣱ مِّنۡهُمۡۖ وَلَوۡ أَنَّهُمۡ فَعَلُواْ مَا یُوعَظُونَ بِهِۦ لَكَانَ خَیۡرࣰا لَّهُمۡ وَأَشَدَّ تَثۡبِیتࣰا ﴿٦٦﴾
আর যদি আমরা তাদেরকে আদেশ দিতাম যে, তোমরা নিজেদেরকে হত্যা কর বা আপন গৃহ ত্যাগ কর তবে তাদের অল্প সংখ্যকই তা করত [১]। যা করতে তাদেরকে উপদেশ দেয়া হয়েছিল তারা তা করলে তাদের ভালো হত এবং চিত্তস্থিরতায় তারা দৃঢ়তর হত।
وَإِذࣰا لَّـَٔاتَیۡنَـٰهُم مِّن لَّدُنَّاۤ أَجۡرًا عَظِیمࣰا ﴿٦٧﴾
আর অবশ্যই তখন আমরা তাদেরকে আমাদের কাছ থেকে মহাপুরস্কার প্রদান করতাম।
وَمَن یُطِعِ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَ فَأُوْلَـٰۤىِٕكَ مَعَ ٱلَّذِینَ أَنۡعَمَ ٱللَّهُ عَلَیۡهِم مِّنَ ٱلنَّبِیِّـۧنَ وَٱلصِّدِّیقِینَ وَٱلشُّهَدَاۤءِ وَٱلصَّـٰلِحِینَۚ وَحَسُنَ أُوْلَـٰۤىِٕكَ رَفِیقࣰا ﴿٦٩﴾
আর কেউ আল্লাহ এবং রাসূলের আনুগত্য করলে সে নবী, সিদ্দীক [১] (সত্যনিষ্ঠ), শহীদ ও সৎকর্মপরায়ণ [২] –যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন –তাদের সঙ্গী হবে এবং তারা কত উত্তম সঙ্গী [৩] !
ذَ ٰلِكَ ٱلۡفَضۡلُ مِنَ ٱللَّهِۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ عَلِیمࣰا ﴿٧٠﴾
এগুলো আল্লাহর অনুগ্রহ। সর্বজ্ঞ হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ خُذُواْ حِذۡرَكُمۡ فَٱنفِرُواْ ثُبَاتٍ أَوِ ٱنفِرُواْ جَمِیعࣰا ﴿٧١﴾
হে মুমিনগণ! তোমরা তোমাদের সতর্কতা অবলম্বন কর; তারপর হয় দলে দলে বিভক্ত হয়ে অগ্রসর হও অথবা একসঙ্গে অগ্রসর হও [১]।
وَإِنَّ مِنكُمۡ لَمَن لَّیُبَطِّئَنَّ فَإِنۡ أَصَـٰبَتۡكُم مُّصِیبَةࣱ قَالَ قَدۡ أَنۡعَمَ ٱللَّهُ عَلَیَّ إِذۡ لَمۡ أَكُن مَّعَهُمۡ شَهِیدࣰا ﴿٧٢﴾
আর নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে এমন লোক আছে, যে গড়িমসি করবেই। অতঃপর তোমাদের কোনো মুসীবত হলে সে বলবে, ‘তাদের সঙ্গে না থঅকাই আল্লাহ আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন।’
وَلَىِٕنۡ أَصَـٰبَكُمۡ فَضۡلࣱ مِّنَ ٱللَّهِ لَیَقُولَنَّ كَأَن لَّمۡ تَكُنۢ بَیۡنَكُمۡ وَبَیۡنَهُۥ مَوَدَّةࣱ یَـٰلَیۡتَنِی كُنتُ مَعَهُمۡ فَأَفُوزَ فَوۡزًا عَظِیمࣰا ﴿٧٣﴾
আর তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ হলে, যেন তোমাদের ও তার মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই এমনভাবে বলবেই, ‘হায়! যদি তাদের সাথে থাকতাম তবে আমিও বিরাট সাফল্য লাভ করতাম [১]।’
۞ فَلۡیُقَـٰتِلۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ ٱلَّذِینَ یَشۡرُونَ ٱلۡحَیَوٰةَ ٱلدُّنۡیَا بِٱلۡـَٔاخِرَةِۚ وَمَن یُقَـٰتِلۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ فَیُقۡتَلۡ أَوۡ یَغۡلِبۡ فَسَوۡفَ نُؤۡتِیهِ أَجۡرًا عَظِیمࣰا ﴿٧٤﴾
কাজেই যারা আখেরাতের বিনিময়ে পার্থিব জীবন বিক্রয় করে তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করুক। আর কেউ আল্লাহর পথে যুদ্ধ করলে সে নিহত হোক বা বিজয়ী হোক আমরা তো তাকে মহাপুরস্কার প্রদান করব।
وَمَا لَكُمۡ لَا تُقَـٰتِلُونَ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ وَٱلۡمُسۡتَضۡعَفِینَ مِنَ ٱلرِّجَالِ وَٱلنِّسَاۤءِ وَٱلۡوِلۡدَ ٰنِ ٱلَّذِینَ یَقُولُونَ رَبَّنَاۤ أَخۡرِجۡنَا مِنۡ هَـٰذِهِ ٱلۡقَرۡیَةِ ٱلظَّالِمِ أَهۡلُهَا وَٱجۡعَل لَّنَا مِن لَّدُنكَ وَلِیࣰّا وَٱجۡعَل لَّنَا مِن لَّدُنكَ نَصِیرًا ﴿٧٥﴾
আর তোমাদের কি হল যে, তোমরা যুদ্ধ করবে না আল্লাহর পথে এবং অসহায় নরনারী [১] এবং শিশুদের জন্য, যারা বলে, ‘হে আমাদের রব! এ জনপদ... যার অধিবাসী যালিম তা... থেকে আমাদেরকে বের করুন; আর আমাদের জন্য আপনার পক্ষ থেকে কাউকে অভিভাবক করুন এবং আপনার পক্ষ থেকে কাউকে আমাদের সহায় করুন।’
ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ یُقَـٰتِلُونَ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِۖ وَٱلَّذِینَ كَفَرُواْ یُقَـٰتِلُونَ فِی سَبِیلِ ٱلطَّـٰغُوتِ فَقَـٰتِلُوۤاْ أَوۡلِیَاۤءَ ٱلشَّیۡطَـٰنِۖ إِنَّ كَیۡدَ ٱلشَّیۡطَـٰنِ كَانَ ضَعِیفًا ﴿٧٦﴾
যারা মুমিন তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে, আর যারা কফের তারা তাগূতের পথে যুদ্ধ করে [১]। কাজেই তোমরা শয়তানের বন্ধুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর; শয়তানের কৌশল অবশ্যই দুর্বল [২]।
أَلَمۡ تَرَ إِلَى ٱلَّذِینَ قِیلَ لَهُمۡ كُفُّوۤاْ أَیۡدِیَكُمۡ وَأَقِیمُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتُواْ ٱلزَّكَوٰةَ فَلَمَّا كُتِبَ عَلَیۡهِمُ ٱلۡقِتَالُ إِذَا فَرِیقࣱ مِّنۡهُمۡ یَخۡشَوۡنَ ٱلنَّاسَ كَخَشۡیَةِ ٱللَّهِ أَوۡ أَشَدَّ خَشۡیَةࣰۚ وَقَالُواْ رَبَّنَا لِمَ كَتَبۡتَ عَلَیۡنَا ٱلۡقِتَالَ لَوۡلَاۤ أَخَّرۡتَنَاۤ إِلَىٰۤ أَجَلࣲ قَرِیبࣲۗ قُلۡ مَتَـٰعُ ٱلدُّنۡیَا قَلِیلࣱ وَٱلۡـَٔاخِرَةُ خَیۡرࣱ لِّمَنِ ٱتَّقَىٰ وَلَا تُظۡلَمُونَ فَتِیلًا ﴿٧٧﴾
আপনি তাদেরকে দেখেননি যাদেরকে বলা হয়েছিল, ‘তোমরা তোমাদের হস্ত সংবরণ কর, সালাত কায়েম কর [১] এবং যাকাত দাও [২] ?’ অতঃপর যখন তাদেরকে যুদ্ধের বিধান দেয়া হল তখন তাদের একদল মানুষকে ভয় করছিল আল্লাহকে ভয় করার মত অথবা তার চেয়েও বেশী এবং বলল, ‘হে আমাদের রব! আমাদের জন্য যুদ্ধের বিধান কেন দিলেন? আমাদেরকে কিছু দিনের অবকাশ কেন দিলেন না[ ৩]?’ বলুন, ‘পার্থিব ভোগ সামান্য [৪] এবং যে তাকওয়া অবলম্বন করে তার জন্য আখেরাতই উত্তম [৫]। আর তোমাদের প্রতি সামান্য পরিমাণও যুলুম করা হবে না।’
أَیۡنَمَا تَكُونُواْ یُدۡرِككُّمُ ٱلۡمَوۡتُ وَلَوۡ كُنتُمۡ فِی بُرُوجࣲ مُّشَیَّدَةࣲۗ وَإِن تُصِبۡهُمۡ حَسَنَةࣱ یَقُولُواْ هَـٰذِهِۦ مِنۡ عِندِ ٱللَّهِۖ وَإِن تُصِبۡهُمۡ سَیِّئَةࣱ یَقُولُواْ هَـٰذِهِۦ مِنۡ عِندِكَۚ قُلۡ كُلࣱّ مِّنۡ عِندِ ٱللَّهِۖ فَمَالِ هَـٰۤؤُلَاۤءِ ٱلۡقَوۡمِ لَا یَكَادُونَ یَفۡقَهُونَ حَدِیثࣰا ﴿٧٨﴾
তোমরা যেখানেই থাক না কেন মৃত্যু তোমাদের নাগাল পাবেই, এমনকি সুউচ্চ সুদৃঢ় দুর্গে অবস্থান করলেও [১]। যদি তাদের কোনো কল্যাণ হয় তবে তারা বলে, ‘এটা আল্লাহর কাছ থেকে।’ আর যদি তাদের কোনো অকল্যাণ হয় তবে তারা বলে, ‘এটা আপনার কাছ থেকে’ [২]। বলুন, ‘সবকিছুই আল্লাহর কাছ থেকে’ [৩]। এ সম্প্রদায়ের কী হল যে, এরা একেবারেই কোনো কথা বুঝে না!
مَّاۤ أَصَابَكَ مِنۡ حَسَنَةࣲ فَمِنَ ٱللَّهِۖ وَمَاۤ أَصَابَكَ مِن سَیِّئَةࣲ فَمِن نَّفۡسِكَۚ وَأَرۡسَلۡنَـٰكَ لِلنَّاسِ رَسُولࣰاۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ شَهِیدࣰا ﴿٧٩﴾
যা কিছু কল্যাণ আপনার হয় তা আল্লাহর কাছ থেকে [১] এবং যা কিছু অকল্যাণ আপনার হয় তা আপনার নিজের কারণে [২] এবং আপনাকে আমরা মানুষের জন্য রাসূলরূপে পাঠিয়েছি [৩]; আর সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট।
مَّن یُطِعِ ٱلرَّسُولَ فَقَدۡ أَطَاعَ ٱللَّهَۖ وَمَن تَوَلَّىٰ فَمَاۤ أَرۡسَلۡنَـٰكَ عَلَیۡهِمۡ حَفِیظࣰا ﴿٨٠﴾
কেউ রাসূলের আনুগত্য করলে সে তো আল্লাহরই আনুগত্য করল [১], আর কেউ মুখ ফিরিয়ে নিলে আপনাকে তো আমরা তাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক করে পাঠাই নি।
وَیَقُولُونَ طَاعَةࣱ فَإِذَا بَرَزُواْ مِنۡ عِندِكَ بَیَّتَ طَاۤىِٕفَةࣱ مِّنۡهُمۡ غَیۡرَ ٱلَّذِی تَقُولُۖ وَٱللَّهُ یَكۡتُبُ مَا یُبَیِّتُونَۖ فَأَعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ وَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱللَّهِۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ وَكِیلًا ﴿٨١﴾
আর তারা বলে, ‘আনুগত্য করি’; তারপর যখন তারা আপনার কাছ থেকে চলে যায় তখন রাতে তাদের একদল যা বলে তার বিপরীত পরামর্শ করে। তারা যা রাতে পরামর্শ করে আল্লাহ তা লিপিবদ্ধ করে রাখেন। কাজেই আপনি তাদেরকে উপেক্ষা করুন এবং আল্লাহর প্রতি ভরসা করুন; আর কাজ উদ্ধারের জন্যে আল্লাহই যথেষ্ট [১]।
أَفَلَا یَتَدَبَّرُونَ ٱلۡقُرۡءَانَۚ وَلَوۡ كَانَ مِنۡ عِندِ غَیۡرِ ٱللَّهِ لَوَجَدُواْ فِیهِ ٱخۡتِلَـٰفࣰا كَثِیرࣰا ﴿٨٢﴾
তবে কি তারা কুরআনকে গভীরভাবে অনুধাবন করে না? যদি তা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নিকট হতে আসত, তবে তারা এতে অনেক অসঙ্গতি পেত [১]।
وَإِذَا جَاۤءَهُمۡ أَمۡرࣱ مِّنَ ٱلۡأَمۡنِ أَوِ ٱلۡخَوۡفِ أَذَاعُواْ بِهِۦۖ وَلَوۡ رَدُّوهُ إِلَى ٱلرَّسُولِ وَإِلَىٰۤ أُوْلِی ٱلۡأَمۡرِ مِنۡهُمۡ لَعَلِمَهُ ٱلَّذِینَ یَسۡتَنۢبِطُونَهُۥ مِنۡهُمۡۗ وَلَوۡلَا فَضۡلُ ٱللَّهِ عَلَیۡكُمۡ وَرَحۡمَتُهُۥ لَٱتَّبَعۡتُمُ ٱلشَّیۡطَـٰنَ إِلَّا قَلِیلࣰا ﴿٨٣﴾
যখন শান্তি বা শংকার কোনো সংবাদ তাদের কাছে আসে তখন তারা তা প্রচার করে থাকে [১]। যদি তারা তা রাসূল [২] এবং তাদের মধ্যে যারা নির্দেশ প্রদানের অধিকারী তাদেরকে জানাত, তবে তাদের মধ্যে যারা তথ্য অনুসন্ধান করে তারা সেটার যথার্থতা নির্ণয় করতে পারত [৩]। তোমাদের প্রতি যদি আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত না থাকত তবে তোমাদের অল্প সংখ্যক ছাড়া সকলে শয়তানের অনুসরণ করত।
فَقَـٰتِلۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ لَا تُكَلَّفُ إِلَّا نَفۡسَكَۚ وَحَرِّضِ ٱلۡمُؤۡمِنِینَۖ عَسَى ٱللَّهُ أَن یَكُفَّ بَأۡسَ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْۚ وَٱللَّهُ أَشَدُّ بَأۡسࣰا وَأَشَدُّ تَنكِیلࣰا ﴿٨٤﴾
কাজেই আল্লাহর পথে যুদ্ধ করুন; আপনি আপনার নিজের সত্তা ব্যতীত অন্য কিছুর যিম্মাদার নন [১] এবং মুমিনগণকে উদ্বুদ্ধ করুন [২], হয়ত আল্লাহ কাফেরদের শক্তি সংযত করবেন। আর আল্লাহ শক্তিতে প্রবলতর ও শাস্তিদানে কঠোরতর।
مَّن یَشۡفَعۡ شَفَـٰعَةً حَسَنَةࣰ یَكُن لَّهُۥ نَصِیبࣱ مِّنۡهَاۖ وَمَن یَشۡفَعۡ شَفَـٰعَةࣰ سَیِّئَةࣰ یَكُن لَّهُۥ كِفۡلࣱ مِّنۡهَاۗ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ مُّقِیتࣰا ﴿٨٥﴾
কেউ কোনো ভালো কাজের সুপারিশ করলে তাতে তার অংশ থাকবে এবং কেউ কোনো মন্দ কাজের সুপারিশ করলে তাতে তার অংশ থাকবে [১]। আর আল্লাহ সব কিছুর উপর নজর রাখেন [২]।
وَإِذَا حُیِّیتُم بِتَحِیَّةࣲ فَحَیُّواْ بِأَحۡسَنَ مِنۡهَاۤ أَوۡ رُدُّوهَاۤۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءٍ حَسِیبًا ﴿٨٦﴾
আর তোমাদেরকে যখন অভিবাদন করা হয় তখন তোমরাও তার চেয়ে উত্তম প্রত্যাভিবাদন করবে অথবা সেটারই অনুরূপ করবে [১]; নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছুর হিসেব গ্রহণকারী [২]।
ٱللَّهُ لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَۚ لَیَجۡمَعَنَّكُمۡ إِلَىٰ یَوۡمِ ٱلۡقِیَـٰمَةِ لَا رَیۡبَ فِیهِۗ وَمَنۡ أَصۡدَقُ مِنَ ٱللَّهِ حَدِیثࣰا ﴿٨٧﴾
আল্লাহ, তিনি ছাড়া অন্য কোনো প্রকৃত ইলাহ্ নেই; অবশ্যই তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্র করবেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই [১]। আর আল্লাহর চেয়ে বেশী সত্যবাদী কে[২] ?
۞ فَمَا لَكُمۡ فِی ٱلۡمُنَـٰفِقِینَ فِئَتَیۡنِ وَٱللَّهُ أَرۡكَسَهُم بِمَا كَسَبُوۤاْۚ أَتُرِیدُونَ أَن تَهۡدُواْ مَنۡ أَضَلَّ ٱللَّهُۖ وَمَن یُضۡلِلِ ٱللَّهُ فَلَن تَجِدَ لَهُۥ سَبِیلࣰا ﴿٨٨﴾
অতঃপর তোমাদের কী হল যে, তোমরা মুনাফেকদের ব্যাপারে দু’দল হয়ে গেলে? যখন আল্লাহ তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের জন্য পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দিয়েছেন [১]। আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তোমরা কি তাকে সৎপথে পরিচালিত করতে চাও? আর আল্লাহ কাউকেও পথভ্রষ্ট করলে আপনি তার জন্য কখনো কোনো পথ পাবেন না [২]।
وَدُّواْ لَوۡ تَكۡفُرُونَ كَمَا كَفَرُواْ فَتَكُونُونَ سَوَاۤءࣰۖ فَلَا تَتَّخِذُواْ مِنۡهُمۡ أَوۡلِیَاۤءَ حَتَّىٰ یُهَاجِرُواْ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِۚ فَإِن تَوَلَّوۡاْ فَخُذُوهُمۡ وَٱقۡتُلُوهُمۡ حَیۡثُ وَجَدتُّمُوهُمۡۖ وَلَا تَتَّخِذُواْ مِنۡهُمۡ وَلِیࣰّا وَلَا نَصِیرًا ﴿٨٩﴾
তারা এটাই কামনা করে যে, তারা যেরূপ কুফরী করেছে তোমরাও সেরূপ কুফরী কর, যাতে তোমরা তাদের সমান হয়ে যাও। কাজেই আল্লাহর পথে হিজরত [১] না করা পর্যন্ত তাদের মধ্য থেকে কাউকেও বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে না। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তাদেরকে যেখানে পাবে গ্রেফতার করবে এবং হত্যা করবে আর তাদের মধ্য থেকে কাউকেও বন্ধু ও সহায়রূপে গ্রহণ করবে না।
إِلَّا ٱلَّذِینَ یَصِلُونَ إِلَىٰ قَوۡمِۭ بَیۡنَكُمۡ وَبَیۡنَهُم مِّیثَـٰقٌ أَوۡ جَاۤءُوكُمۡ حَصِرَتۡ صُدُورُهُمۡ أَن یُقَـٰتِلُوكُمۡ أَوۡ یُقَـٰتِلُواْ قَوۡمَهُمۡۚ وَلَوۡ شَاۤءَ ٱللَّهُ لَسَلَّطَهُمۡ عَلَیۡكُمۡ فَلَقَـٰتَلُوكُمۡۚ فَإِنِ ٱعۡتَزَلُوكُمۡ فَلَمۡ یُقَـٰتِلُوكُمۡ وَأَلۡقَوۡاْ إِلَیۡكُمُ ٱلسَّلَمَ فَمَا جَعَلَ ٱللَّهُ لَكُمۡ عَلَیۡهِمۡ سَبِیلࣰا ﴿٩٠﴾
কিন্তু তাদেরকে নয় যারা এমন এক সম্প্রদায়ের সাথে মিলিত হয় যাদের সাথে তোমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ অথবা যারা তোমাদের কাছে এমন অবস্থায় আগমন করে যখন তাদের মন তোমাদের সাথে বা তাদের সম্প্রদায়ের সাথে যুদ্ধ করতে সংকুচিত হয়। আল্লাহ্ যদি ইচ্ছে করতেন তবে তাদেরকে তোমাদের উপর ক্ষমতা দিতেন ফলে তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করত। কাজেই তারা যদি তোমাদের কাছ থেকে সরে দাঁড়ায়, তোমাদের সাথে যুদ্ধ না করে এবং তোমাদের নিকট শান্তি প্রস্তাব করে তবে আল্লাহ্ তোমাদের জন্য তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা অবলম্বনের পথ রাখেন নি।
سَتَجِدُونَ ءَاخَرِینَ یُرِیدُونَ أَن یَأۡمَنُوكُمۡ وَیَأۡمَنُواْ قَوۡمَهُمۡ كُلَّ مَا رُدُّوۤاْ إِلَى ٱلۡفِتۡنَةِ أُرۡكِسُواْ فِیهَاۚ فَإِن لَّمۡ یَعۡتَزِلُوكُمۡ وَیُلۡقُوۤاْ إِلَیۡكُمُ ٱلسَّلَمَ وَیَكُفُّوۤاْ أَیۡدِیَهُمۡ فَخُذُوهُمۡ وَٱقۡتُلُوهُمۡ حَیۡثُ ثَقِفۡتُمُوهُمۡۚ وَأُوْلَـٰۤىِٕكُمۡ جَعَلۡنَا لَكُمۡ عَلَیۡهِمۡ سُلۡطَـٰنࣰا مُّبِینࣰا ﴿٩١﴾
তোমরা আরো কিছু লোক অবশ্যই পাবে যারা তোমাদের সাথে ও তাদের সম্প্রদায়ের সাথে শান্তি চাইবে। যখনই তাদেরকে ফিত্নার দিকে মনোনিবেশ করানো হয় তখনই এ ব্যাপারে তারা তাদের আগের অবস্থায় ফিরে যায়। যদি তারা তোমাদের কাছ থেকে চলে না যায়, তোমাদের কাছে শান্তি প্রস্তাব না করে এবং তাদের হস্ত সংবরণ না করে তবে তাদেরকে যেখানেই পাবে গ্রেফতার করবে ও হত্যা করবে। আর আমরা তোমাদেরকে এদের বিরুদ্ধাচারণের স্পষ্ট অধিকার দিয়েছি [১]।
وَمَا كَانَ لِمُؤۡمِنٍ أَن یَقۡتُلَ مُؤۡمِنًا إِلَّا خَطَـࣰٔاۚ وَمَن قَتَلَ مُؤۡمِنًا خَطَـࣰٔا فَتَحۡرِیرُ رَقَبَةࣲ مُّؤۡمِنَةࣲ وَدِیَةࣱ مُّسَلَّمَةٌ إِلَىٰۤ أَهۡلِهِۦۤ إِلَّاۤ أَن یَصَّدَّقُواْۚ فَإِن كَانَ مِن قَوۡمٍ عَدُوࣲّ لَّكُمۡ وَهُوَ مُؤۡمِنࣱ فَتَحۡرِیرُ رَقَبَةࣲ مُّؤۡمِنَةࣲۖ وَإِن كَانَ مِن قَوۡمِۭ بَیۡنَكُمۡ وَبَیۡنَهُم مِّیثَـٰقࣱ فَدِیَةࣱ مُّسَلَّمَةٌ إِلَىٰۤ أَهۡلِهِۦ وَتَحۡرِیرُ رَقَبَةࣲ مُّؤۡمِنَةࣲۖ فَمَن لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ شَهۡرَیۡنِ مُتَتَابِعَیۡنِ تَوۡبَةࣰ مِّنَ ٱللَّهِۗ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلِیمًا حَكِیمࣰا ﴿٩٢﴾
কোন মুমিনকে হত্যা করা যেন মুমিনের কাজ নয় [১], তবে ভুলবশতঃ করলে সেটা স্বতন্ত্র; এবং কেউ কোনো মুমিনকে ভুলবশতঃ হত্যা করলে এক মুমিন দাস মুক্ত করা এবং তার পরিজনবর্গকে রক্তপণ আদায় করা কর্তব্য, যদি না তারা ক্ষমা করে। যদি সে তোমাদের শত্রু পক্ষের লোক হয় এবং মুমিন হয় তবে এক মুমিন দাস মুক্ত করা কর্তব্য। আর যদি সে এমন সম্প্রদায়ভুক্ত হয় যাদের সাথে তোমরা অংগীকারাবদ্ধ তবে তার পরিজনবর্গকে রক্তপণ আদায় এবং মুমিন দাস মুক্ত করা কর্তব্য। আর যে সঙ্গতিহীন সে একাদিক্রমে দু মাস সিয়াম পালন করবে [২]। তাওবাহ্র জন্য এগুলো আল্লাহর ব্যবস্থা এবং আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
وَمَن یَقۡتُلۡ مُؤۡمِنࣰا مُّتَعَمِّدࣰا فَجَزَاۤؤُهُۥ جَهَنَّمُ خَـٰلِدࣰا فِیهَا وَغَضِبَ ٱللَّهُ عَلَیۡهِ وَلَعَنَهُۥ وَأَعَدَّ لَهُۥ عَذَابًا عَظِیمࣰا ﴿٩٣﴾
আর কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো মুমিনককে হত্যা করলে তার শাস্তি জাহান্নাম; সেখানে সে স্থায়ী হবে এবং আল্লাহ তার প্রতি রুষ্ট হবেন, তাকে লা’নত করবেন এবং তার জন্য মহাশাস্তি প্রস্তুত রাখবেন [১]।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤاْ إِذَا ضَرَبۡتُمۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ فَتَبَیَّنُواْ وَلَا تَقُولُواْ لِمَنۡ أَلۡقَىٰۤ إِلَیۡكُمُ ٱلسَّلَـٰمَ لَسۡتَ مُؤۡمِنࣰا تَبۡتَغُونَ عَرَضَ ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَا فَعِندَ ٱللَّهِ مَغَانِمُ كَثِیرَةࣱۚ كَذَ ٰلِكَ كُنتُم مِّن قَبۡلُ فَمَنَّ ٱللَّهُ عَلَیۡكُمۡ فَتَبَیَّنُوۤاْۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِمَا تَعۡمَلُونَ خَبِیرࣰا ﴿٩٤﴾
হে মুমিনগণ! তোমরা যখন আল্লাহর পথে যাত্রা করবে তখন যাচাই-বাছাই করে নেবে [১] এবং কেউ তোমাদেরকে সালাম করলে ইহ জীবনের সম্পদের আশায় তাকে বলো না, ‘তুমি মুমিন নও [২]’, কারণ আল্লাহর কাছে অনায়াসলভ্য সম্পদ প্রচুর রয়েছে। তোমরা তো আগে এরূপই ছিলে [৩], তারপর আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন; কাজেই তোমরা যাচাই-বাছাই করে নেবে। নিশ্চয় তোমরা যা কর আল্লাহ সে বিষয়ে সবিশেষ অবহিত।
لَّا یَسۡتَوِی ٱلۡقَـٰعِدُونَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ غَیۡرُ أُوْلِی ٱلضَّرَرِ وَٱلۡمُجَـٰهِدُونَ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ بِأَمۡوَ ٰلِهِمۡ وَأَنفُسِهِمۡۚ فَضَّلَ ٱللَّهُ ٱلۡمُجَـٰهِدِینَ بِأَمۡوَ ٰلِهِمۡ وَأَنفُسِهِمۡ عَلَى ٱلۡقَـٰعِدِینَ دَرَجَةࣰۚ وَكُلࣰّا وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلۡحُسۡنَىٰۚ وَفَضَّلَ ٱللَّهُ ٱلۡمُجَـٰهِدِینَ عَلَى ٱلۡقَـٰعِدِینَ أَجۡرًا عَظِیمࣰا ﴿٩٥﴾
মুমিনদের মধ্যে যারা অক্ষম নয় অথচ ঘরে বসে থাকে ও যারা আল্লাহর পথে স্বীয় ধন-প্রাণ দ্বারা জিহাদ করে তারা সমান নয় [১]। যারা স্বীয় ধন-প্রাণ দ্বারা জিহাদ করে আল্লাহ তাদেরকে, যারা ঘরে বসে থাকে তাদের উপর মর্যাদা দিয়েছেন [২]; তাদের প্রত্যেকের জন্য আল্লাহ জান্নাতের ওয়াদা করেছেন। যারা ঘরে বসে থাকে তাদের উপর যারা জিহাদ করে তাদেরকে আল্লাহ মাহপুরস্কারের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন।
دَرَجَـٰتࣲ مِّنۡهُ وَمَغۡفِرَةࣰ وَرَحۡمَةࣰۚ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورࣰا رَّحِیمًا ﴿٩٦﴾
এসব তাঁর কাছ থেকে মর্যাদা, ক্ষমা ও দয়া; আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
إِنَّ ٱلَّذِینَ تَوَفَّىٰهُمُ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُ ظَالِمِیۤ أَنفُسِهِمۡ قَالُواْ فِیمَ كُنتُمۡۖ قَالُواْ كُنَّا مُسۡتَضۡعَفِینَ فِی ٱلۡأَرۡضِۚ قَالُوۤاْ أَلَمۡ تَكُنۡ أَرۡضُ ٱللَّهِ وَ ٰسِعَةࣰ فَتُهَاجِرُواْ فِیهَاۚ فَأُوْلَـٰۤىِٕكَ مَأۡوَىٰهُمۡ جَهَنَّمُۖ وَسَاۤءَتۡ مَصِیرًا ﴿٩٧﴾
যারা নিজেদের উপর যুলুম করে তাদের প্রাণ গ্রহণের সময় ফিরিশতাগণ বলে, ‘তোমরা কী অবস্থায় ছিলে?’ তারা বলে, ‘দুনিয়ায় আমরা অসহায় ছিলাম;’ তারা বলে, ‘আল্লাহর যমীন কি এমন প্রশস্ত ছিল না যেখানে তোমরা হিজরত করতে [১] ?’ এদেরই আবাসস্থল জাহান্নাম, আর তা কত মন্দ আবাস [২]!
إِلَّا ٱلۡمُسۡتَضۡعَفِینَ مِنَ ٱلرِّجَالِ وَٱلنِّسَاۤءِ وَٱلۡوِلۡدَ ٰنِ لَا یَسۡتَطِیعُونَ حِیلَةࣰ وَلَا یَهۡتَدُونَ سَبِیلࣰا ﴿٩٨﴾
তবে যেসব অহসায় পুরুষ, নারী ও শিশু কোনো উপায় অবলম্বন করতে পারে না এবং কোনো পথও পায় না।
فَأُوْلَـٰۤىِٕكَ عَسَى ٱللَّهُ أَن یَعۡفُوَ عَنۡهُمۡۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَفُوًّا غَفُورࣰا ﴿٩٩﴾
আল্লাহ অচিরেই তাদের পাপ মোচন করবেন, কারণ আল্লাহ পাপ মোচনকারী, ক্ষমাশীল।
۞ وَمَن یُهَاجِرۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ یَجِدۡ فِی ٱلۡأَرۡضِ مُرَ ٰغَمࣰا كَثِیرࣰا وَسَعَةࣰۚ وَمَن یَخۡرُجۡ مِنۢ بَیۡتِهِۦ مُهَاجِرًا إِلَى ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ ثُمَّ یُدۡرِكۡهُ ٱلۡمَوۡتُ فَقَدۡ وَقَعَ أَجۡرُهُۥ عَلَى ٱللَّهِۗ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورࣰا رَّحِیمࣰا ﴿١٠٠﴾
আর কেউ আল্লাহর পথে হিজরত করলে সে দুনিয়ায় বহু আশ্রয়স্থল এবং প্রাচুর্য লাভ করবে। আর কেউ আল্লাহ ও রাসূলের উদ্দেশ্যে নিজ ঘর থেকে মুহাজির হয়ে বের হবার পর তার মৃত্যু ঘটলে তার পুরস্কারের ভার আল্লাহর উপর; আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু [১]।
وَإِذَا ضَرَبۡتُمۡ فِی ٱلۡأَرۡضِ فَلَیۡسَ عَلَیۡكُمۡ جُنَاحٌ أَن تَقۡصُرُواْ مِنَ ٱلصَّلَوٰةِ إِنۡ خِفۡتُمۡ أَن یَفۡتِنَكُمُ ٱلَّذِینَ كَفَرُوۤاْۚ إِنَّ ٱلۡكَـٰفِرِینَ كَانُواْ لَكُمۡ عَدُوࣰّا مُّبِینࣰا ﴿١٠١﴾
তোমরা যখন দেশ-বিদেশে সফর করবে তখন যদি তোমাদের আশংকা হয় যে, কাফেররা তোমাদের জন্য ফিত্না সৃষ্টি করবে, তবে সালাত ‘কসর [১]’ করলে তোমাদের কোনো দোষ নেই। নিশ্চয়ই কাফেররা তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
وَإِذَا كُنتَ فِیهِمۡ فَأَقَمۡتَ لَهُمُ ٱلصَّلَوٰةَ فَلۡتَقُمۡ طَاۤىِٕفَةࣱ مِّنۡهُم مَّعَكَ وَلۡیَأۡخُذُوۤاْ أَسۡلِحَتَهُمۡۖ فَإِذَا سَجَدُواْ فَلۡیَكُونُواْ مِن وَرَاۤىِٕكُمۡ وَلۡتَأۡتِ طَاۤىِٕفَةٌ أُخۡرَىٰ لَمۡ یُصَلُّواْ فَلۡیُصَلُّواْ مَعَكَ وَلۡیَأۡخُذُواْ حِذۡرَهُمۡ وَأَسۡلِحَتَهُمۡۗ وَدَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ لَوۡ تَغۡفُلُونَ عَنۡ أَسۡلِحَتِكُمۡ وَأَمۡتِعَتِكُمۡ فَیَمِیلُونَ عَلَیۡكُم مَّیۡلَةࣰ وَ ٰحِدَةࣰۚ وَلَا جُنَاحَ عَلَیۡكُمۡ إِن كَانَ بِكُمۡ أَذࣰى مِّن مَّطَرٍ أَوۡ كُنتُم مَّرۡضَىٰۤ أَن تَضَعُوۤاْ أَسۡلِحَتَكُمۡۖ وَخُذُواْ حِذۡرَكُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ أَعَدَّ لِلۡكَـٰفِرِینَ عَذَابࣰا مُّهِینࣰا ﴿١٠٢﴾
আর আপনি যখন তাদের মধ্যে অবস্থান করবেন তারপর তাদের সাথে সালাত কায়েম করবেন [১] তখন তাদের একদল আপনার সাথে যেন দাঁড়ায় এবং তারা যেন সশস্ত্র থাকে। তাদের সাজদা করা হলে তারা যেন তোমাদের পিছনে অবস্থান করে; আর অপর একদল যারা সালাতে শরীক হয়নি তারা আপনার সাথে যেন সালাতে শরীক হয় এবং তারা যেন সতর্ক ও সশস্ত্র থাকে [২]। কাফেররা কামনা করে যেন তোমরা তোমাদের অস্ত্রশস্ত্র ও আসবাবপত্র সম্বন্ধে অসতর্ক হও যাতে তারা তোমাদের উপর একেবারে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে। যদি তোমরা বৃষ্টির জন্য কষ্ট পাও বা পীড়িত থাক তবে তোমরা অস্ত্র রেখে দিলে তোমাদের কোনো দোষ নেই; কিন্তু তোমরা সতর্কতা অবলম্বন করবে। আল্লাহ কাফেরদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন।
فَإِذَا قَضَیۡتُمُ ٱلصَّلَوٰةَ فَٱذۡكُرُواْ ٱللَّهَ قِیَـٰمࣰا وَقُعُودࣰا وَعَلَىٰ جُنُوبِكُمۡۚ فَإِذَا ٱطۡمَأۡنَنتُمۡ فَأَقِیمُواْ ٱلصَّلَوٰةَۚ إِنَّ ٱلصَّلَوٰةَ كَانَتۡ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِینَ كِتَـٰبࣰا مَّوۡقُوتࣰا ﴿١٠٣﴾
অতঃপর যখন তোমরা সালাত সমাপ্ত করবে তখন দাঁড়িয়ে, বসে এবং শুয়ে আল্লাহকে স্মরণ করবে [১], অতঃপর যখন তোমরা নিরাপদ হবে তখন যথাযথ সালাত কায়েম করবে [২]; নির্ধারিত সময়ে সালাত কায়েম করা মুমিনদের জন্য অবশ্য কর্তব্য [৩]।
وَلَا تَهِنُواْ فِی ٱبۡتِغَاۤءِ ٱلۡقَوۡمِۖ إِن تَكُونُواْ تَأۡلَمُونَ فَإِنَّهُمۡ یَأۡلَمُونَ كَمَا تَأۡلَمُونَۖ وَتَرۡجُونَ مِنَ ٱللَّهِ مَا لَا یَرۡجُونَۗ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلِیمًا حَكِیمًا ﴿١٠٤﴾
আর শত্রু সম্প্রদায়ের সন্ধানে তোমরা হতোদ্যম হয়ো না। যদি তোমরা যন্ত্রণা পাও তবে তারাও তো তোমাদের মতই যন্ত্রণা পায় এবং আল্লাহর কাছে তোমরা যা আশা কর ওরা তা আশা করে না [১]। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
إِنَّاۤ أَنزَلۡنَاۤ إِلَیۡكَ ٱلۡكِتَـٰبَ بِٱلۡحَقِّ لِتَحۡكُمَ بَیۡنَ ٱلنَّاسِ بِمَاۤ أَرَىٰكَ ٱللَّهُۚ وَلَا تَكُن لِّلۡخَاۤىِٕنِینَ خَصِیمࣰا ﴿١٠٥﴾
আমরা [১] তো আপনার প্রতি সত্যসহ কিতাব নাযিল করেছি যাতে আপনি আল্লাহ আপনাকে যা জানিয়েছেন সে অনুযায়ী মানুষের মধ্যে বিচার মীমাংসা করতে পারেন। আর আপনি বিশ্বাসভঙ্গকারীদের সমর্থনে তর্ক করবেন না [২]
وَٱسۡتَغۡفِرِ ٱللَّهَۖ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ غَفُورࣰا رَّحِیمࣰا ﴿١٠٦﴾
আর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন; নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
وَلَا تُجَـٰدِلۡ عَنِ ٱلَّذِینَ یَخۡتَانُونَ أَنفُسَهُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا یُحِبُّ مَن كَانَ خَوَّانًا أَثِیمࣰا ﴿١٠٧﴾
আর যারা নিজেদেরকে প্রতারিত করে তাদের পক্ষে বিবাদ-বিসম্বাদ করবেন না, নিশ্চয় আল্লাহ বিশ্বাসভঙ্গকারী পাপীকে পছন্দ করেন না।
یَسۡتَخۡفُونَ مِنَ ٱلنَّاسِ وَلَا یَسۡتَخۡفُونَ مِنَ ٱللَّهِ وَهُوَ مَعَهُمۡ إِذۡ یُبَیِّتُونَ مَا لَا یَرۡضَىٰ مِنَ ٱلۡقَوۡلِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ بِمَا یَعۡمَلُونَ مُحِیطًا ﴿١٠٨﴾
তারা মানুষ থেকে গোপন করতে চায় কিন্তু আল্লাহর থেকে গোপন করে না, অথচ তিনি তাদের সংগেই আছেন রাতে যখন তারা, তিনি যা পছন্দ করেন না– এমন বিষয়ে পরামর্শ করে এবং তারা যা করে আল্লাহ তা পরিবেষ্টন করে আছেন।
هَـٰۤأَنتُمۡ هَـٰۤؤُلَاۤءِ جَـٰدَلۡتُمۡ عَنۡهُمۡ فِی ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَا فَمَن یُجَـٰدِلُ ٱللَّهَ عَنۡهُمۡ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِ أَم مَّن یَكُونُ عَلَیۡهِمۡ وَكِیلࣰا ﴿١٠٩﴾
দেখ, তোমরাই ইহ জীবনে তারে পক্ষে বিতর্ক করছ; কিন্তু কিয়ামতের দিন আল্লাহর সম্মুখে কে তাদের পক্ষে বিতর্ক করবে অথবা কে তাদের উকিল হবে?
وَمَن یَعۡمَلۡ سُوۤءًا أَوۡ یَظۡلِمۡ نَفۡسَهُۥ ثُمَّ یَسۡتَغۡفِرِ ٱللَّهَ یَجِدِ ٱللَّهَ غَفُورࣰا رَّحِیمࣰا ﴿١١٠﴾
আর কেউ কোন মন্দ কাজ করে অথবা নিজের প্রতি যুলুম করে পরে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহকে সে ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু পাবে [১]।
وَمَن یَكۡسِبۡ إِثۡمࣰا فَإِنَّمَا یَكۡسِبُهُۥ عَلَىٰ نَفۡسِهِۦۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلِیمًا حَكِیمࣰا ﴿١١١﴾
আর কেউ পাপ কাজ করলে সে ওটা তার নিজের ক্ষতির জন্যই করে। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
وَمَن یَكۡسِبۡ خَطِیۤـَٔةً أَوۡ إِثۡمࣰا ثُمَّ یَرۡمِ بِهِۦ بَرِیۤـࣰٔا فَقَدِ ٱحۡتَمَلَ بُهۡتَـٰنࣰا وَإِثۡمࣰا مُّبِینࣰا ﴿١١٢﴾
আর কেউ কোনো দোষ বা পাপ করে পরে সেটা কোনো নির্দোষ ব্যক্তির প্রতি আরোপ করলে সে তো মিথ্যা অপবাদ ও স্পষ্ট পাপের বোঝা বহন করে [১]।
وَلَوۡلَا فَضۡلُ ٱللَّهِ عَلَیۡكَ وَرَحۡمَتُهُۥ لَهَمَّت طَّاۤىِٕفَةࣱ مِّنۡهُمۡ أَن یُضِلُّوكَ وَمَا یُضِلُّونَ إِلَّاۤ أَنفُسَهُمۡۖ وَمَا یَضُرُّونَكَ مِن شَیۡءࣲۚ وَأَنزَلَ ٱللَّهُ عَلَیۡكَ ٱلۡكِتَـٰبَ وَٱلۡحِكۡمَةَ وَعَلَّمَكَ مَا لَمۡ تَكُن تَعۡلَمُۚ وَكَانَ فَضۡلُ ٱللَّهِ عَلَیۡكَ عَظِیمࣰا ﴿١١٣﴾
আর আপনার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে তাদের একদল আপনাকে পথভ্রষ্ট করতে বদ্ধপরিকর ছিল। কিন্তু তারা নিজেদের ছাড়া আর কাউকেও পথভ্রষ্ট করে না এবং আপনার কোনোই ক্ষতি করতে পারে না। আল্লাহ আপনার প্রতি কিতাব ও হিকমত নাযিল করেছেন [১] এবং আপনি যা জানতেন না তা আপনাকে শিক্ষা দিয়েছেন, আপনার প্রতি আল্লাহর মহা অনুগ্রহ রয়েছে।
۞ لَّا خَیۡرَ فِی كَثِیرࣲ مِّن نَّجۡوَىٰهُمۡ إِلَّا مَنۡ أَمَرَ بِصَدَقَةٍ أَوۡ مَعۡرُوفٍ أَوۡ إِصۡلَـٰحِۭ بَیۡنَ ٱلنَّاسِۚ وَمَن یَفۡعَلۡ ذَ ٰلِكَ ٱبۡتِغَاۤءَ مَرۡضَاتِ ٱللَّهِ فَسَوۡفَ نُؤۡتِیهِ أَجۡرًا عَظِیمࣰا ﴿١١٤﴾
তাদের অধিকাংশ গোপন পরামর্শে কোনো কল্যাণ নেই, তবে কল্যাণ আছে যে নির্দেশ দেয় সাদকাহ, সৎকাজ ও মানুষের মধ্যে শান্তি স্থাপনের [১]; আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় কেউ তা করলে তাকে অবশ্যই আমরা মহা পুরস্কার দেব।
وَمَن یُشَاقِقِ ٱلرَّسُولَ مِنۢ بَعۡدِ مَا تَبَیَّنَ لَهُ ٱلۡهُدَىٰ وَیَتَّبِعۡ غَیۡرَ سَبِیلِ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ نُوَلِّهِۦ مَا تَوَلَّىٰ وَنُصۡلِهِۦ جَهَنَّمَۖ وَسَاۤءَتۡ مَصِیرًا ﴿١١٥﴾
আর কারো নিকট সৎপথ প্রকাশ হওয়ার পর সে যদি রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মুমিনদের পথ ছাড়া অন্য পথ অনুসরণ করে, তবে যেদিকে সে ফিরে যায় সে দিকেই তাকে আমরা ফিরিয়ে দেব এবং তাকে জাহান্নামে দগ্ধ করাব, আর তা কতই না মন্দ আবাস [১]!
إِنَّ ٱللَّهَ لَا یَغۡفِرُ أَن یُشۡرَكَ بِهِۦ وَیَغۡفِرُ مَا دُونَ ذَ ٰلِكَ لِمَن یَشَاۤءُۚ وَمَن یُشۡرِكۡ بِٱللَّهِ فَقَدۡ ضَلَّ ضَلَـٰلَۢا بَعِیدًا ﴿١١٦﴾
নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শির্ক করাকে ক্ষমা করেন না; আর তার থেকে ছোট যাবতীয় গোনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দেবেন, আর যে কেউ আল্লাহর সাথে শির্ক করে সে ভীষণভাবে পথ ভ্রষ্ট হয়।
إِن یَدۡعُونَ مِن دُونِهِۦۤ إِلَّاۤ إِنَـٰثࣰا وَإِن یَدۡعُونَ إِلَّا شَیۡطَـٰنࣰا مَّرِیدࣰا ﴿١١٧﴾
তাঁর পরিবর্তে তারা দেবীরই পূজা করে এবং বিদ্রোহী শয়তানেরই পূজা করে [১]।
لَّعَنَهُ ٱللَّهُۘ وَقَالَ لَأَتَّخِذَنَّ مِنۡ عِبَادِكَ نَصِیبࣰا مَّفۡرُوضࣰا ﴿١١٨﴾
আল্লাহ তাকে লা’নত করেন এবং সে বলে, ‘আমি অবশ্যই আপনার বান্দাদের এক নির্দিষ্ট অংশকে আমার অনুসারী করে নেব’।
وَلَأُضِلَّنَّهُمۡ وَلَأُمَنِّیَنَّهُمۡ وَلَـَٔامُرَنَّهُمۡ فَلَیُبَتِّكُنَّ ءَاذَانَ ٱلۡأَنۡعَـٰمِ وَلَـَٔامُرَنَّهُمۡ فَلَیُغَیِّرُنَّ خَلۡقَ ٱللَّهِۚ وَمَن یَتَّخِذِ ٱلشَّیۡطَـٰنَ وَلِیࣰّا مِّن دُونِ ٱللَّهِ فَقَدۡ خَسِرَ خُسۡرَانࣰا مُّبِینࣰا ﴿١١٩﴾
আমি অবশ্যই তাদেরকে পথভ্রষ্ট করব; অবশ্যই তাদের হৃদয়ে মিথ্যা বাসনার সৃষ্টি করব, আর অবশ্যই আমি তাদেরকে নির্দেশ দেব, ফলে তারা পশুর কান ছিদ্র করবে। আর অবশ্যই তাদেরকে নির্দেশ দেব, ফলে তারা আল্লাহর সৃষ্টি বিকৃত করবে’ [১]।’ আর আল্লাহর পরিবর্তে কেউ শয়তানকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করলে সে স্পষ্টতঃই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
یَعِدُهُمۡ وَیُمَنِّیهِمۡۖ وَمَا یَعِدُهُمُ ٱلشَّیۡطَـٰنُ إِلَّا غُرُورًا ﴿١٢٠﴾
সে তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেয় এবং তাদের হৃদয়ে মিথ্যা বাসনার সৃষ্টি করে। আর শয়তান তাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয় তা ছলনামাত্র।
أُوْلَـٰۤىِٕكَ مَأۡوَىٰهُمۡ جَهَنَّمُ وَلَا یَجِدُونَ عَنۡهَا مَحِیصࣰا ﴿١٢١﴾
এদেরই আশ্রয়স্থল জাহান্নাম, তা থেকে তারা নিস্কৃতির উপায় পাবে না।
وَٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ سَنُدۡخِلُهُمۡ جَنَّـٰتࣲ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَاۤ أَبَدࣰاۖ وَعۡدَ ٱللَّهِ حَقࣰّاۚ وَمَنۡ أَصۡدَقُ مِنَ ٱللَّهِ قِیلࣰا ﴿١٢٢﴾
আর যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে, আমরা তাদেরকে প্রবেশ করাব জান্নাতে যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে; আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য। আর কে আল্লাহর চেয়ে কথায় সত্যবাদী [১]?
لَّیۡسَ بِأَمَانِیِّكُمۡ وَلَاۤ أَمَانِیِّ أَهۡلِ ٱلۡكِتَـٰبِۗ مَن یَعۡمَلۡ سُوۤءࣰا یُجۡزَ بِهِۦ وَلَا یَجِدۡ لَهُۥ مِن دُونِ ٱللَّهِ وَلِیࣰّا وَلَا نَصِیرࣰا ﴿١٢٣﴾
তোমাদের খেয়াল-খুশী ও কিতাবীদের খেয়াল-খুশী অনুসারে কাজ হবে না [১]; কেউ মন্দ কাজ করলে তার প্রতিফল সে পাবে [২] এবং আল্লাহ ছাড়া তার জন্য সে কোনো অভিভাবক ও সহায় পাবে না।
وَمَن یَعۡمَلۡ مِنَ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ مِن ذَكَرٍ أَوۡ أُنثَىٰ وَهُوَ مُؤۡمِنࣱ فَأُوْلَـٰۤىِٕكَ یَدۡخُلُونَ ٱلۡجَنَّةَ وَلَا یُظۡلَمُونَ نَقِیرࣰا ﴿١٢٤﴾
আর পুরুষ বা নারীর মধ্যে কেউ মুমিন অবস্থায় সৎ কাজ করলে, তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রতি অণু পরিমাণও যুলুম করা হবে না।
وَمَنۡ أَحۡسَنُ دِینࣰا مِّمَّنۡ أَسۡلَمَ وَجۡهَهُۥ لِلَّهِ وَهُوَ مُحۡسِنࣱ وَٱتَّبَعَ مِلَّةَ إِبۡرَ ٰهِیمَ حَنِیفࣰاۗ وَٱتَّخَذَ ٱللَّهُ إِبۡرَ ٰهِیمَ خَلِیلࣰا ﴿١٢٥﴾
তার চেয়ে দীনে আর কে উত্তম যে সৎকর্মপরায়ণ হয়ে আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করে এবং একনিষ্ঠভাবে ইবরাহীমের মিল্লাতকে অনুসরণ করে? আর আল্লাহ ইবরাহীমকে অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন [১]।
وَلِلَّهِ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ بِكُلِّ شَیۡءࣲ مُّحِیطࣰا ﴿١٢٦﴾
আর আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে সব আল্লাহরই এবং সবকিছুকে আল্লাহ পরিবেষ্টন করে রয়েছেন।
وَیَسۡتَفۡتُونَكَ فِی ٱلنِّسَاۤءِۖ قُلِ ٱللَّهُ یُفۡتِیكُمۡ فِیهِنَّ وَمَا یُتۡلَىٰ عَلَیۡكُمۡ فِی ٱلۡكِتَـٰبِ فِی یَتَـٰمَى ٱلنِّسَاۤءِ ٱلَّـٰتِی لَا تُؤۡتُونَهُنَّ مَا كُتِبَ لَهُنَّ وَتَرۡغَبُونَ أَن تَنكِحُوهُنَّ وَٱلۡمُسۡتَضۡعَفِینَ مِنَ ٱلۡوِلۡدَ ٰنِ وَأَن تَقُومُواْ لِلۡیَتَـٰمَىٰ بِٱلۡقِسۡطِۚ وَمَا تَفۡعَلُواْ مِنۡ خَیۡرࣲ فَإِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِهِۦ عَلِیمࣰا ﴿١٢٧﴾
আর লোকে আপনার কাছে নারীদের বিষয়ে ব্যবস্থা জানতে চায়। বলুন, ‘আল্লাহ তোমাদেরকে তাদের সম্বন্ধে ব্যবস্থা জানাচ্ছেন এবং ইয়াতীম নারী সম্পর্কে যাদের প্রাপ্য তোমরা প্রদান কর না, অথচ তোমরা তাদেরকে বিয়ে করতে চাও [১] এবং অসহায় শিশুদের সম্বন্ধে ও ইয়াতীমদের প্রতি তোমাদের ন্যায় বিচার সম্পর্কে যা কিতাবে তোমাদেরকে শুনান হয়, তাও পরিস্কারভাবে জানিয়ে দেন’। আর যে কোনো সৎকাজ তোমরা কর, নিশ্চয় আল্লাহ তা সম্পর্কে সবিশেষ জ্ঞানী।
وَإِنِ ٱمۡرَأَةٌ خَافَتۡ مِنۢ بَعۡلِهَا نُشُوزًا أَوۡ إِعۡرَاضࣰا فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡهِمَاۤ أَن یُصۡلِحَا بَیۡنَهُمَا صُلۡحࣰاۚ وَٱلصُّلۡحُ خَیۡرࣱۗ وَأُحۡضِرَتِ ٱلۡأَنفُسُ ٱلشُّحَّۚ وَإِن تُحۡسِنُواْ وَتَتَّقُواْ فَإِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِمَا تَعۡمَلُونَ خَبِیرࣰا ﴿١٢٨﴾
আর কোনো স্ত্রী যদি তার স্বামীর দুর্ব্যবহার কিংবা উপেক্ষার আশংকা করে তবে তারা আপোস-নিষ্পত্তি করতে চাইলে তাদের কোনো গোনাহ নেই এবং আপোস-নিষ্পত্তিই শ্রেয়। মানুষের অন্তরসমূহে লোভজনিত কৃপণতা বিদ্যমান। আর যদি তোমরা সৎকর্মপরায়ণ হও ও মুত্তাকী হও, তবে তোমরা যা কর আল্লাহ তো তার খবর রাখেন [১]।
وَلَن تَسۡتَطِیعُوۤاْ أَن تَعۡدِلُواْ بَیۡنَ ٱلنِّسَاۤءِ وَلَوۡ حَرَصۡتُمۡۖ فَلَا تَمِیلُواْ كُلَّ ٱلۡمَیۡلِ فَتَذَرُوهَا كَٱلۡمُعَلَّقَةِۚ وَإِن تُصۡلِحُواْ وَتَتَّقُواْ فَإِنَّ ٱللَّهَ كَانَ غَفُورࣰا رَّحِیمࣰا ﴿١٢٩﴾
আর তোমরা যতই ইচ্ছে কর না কেন তোমাদের স্ত্রীদের প্রতি সমান ব্যবহার করতে কখনই পারবে না, তবে তোমরা কোনো একজনের দিকে সম্পূর্ণভাবে ঝুঁকে পড়ো না [১] ও অপরকে ঝুলানো অবস্থায় রেখো না; যদি তোমরা নিজেদেরকে সংশোধন কর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর তবে নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
وَإِن یَتَفَرَّقَا یُغۡنِ ٱللَّهُ كُلࣰّا مِّن سَعَتِهِۦۚ وَكَانَ ٱللَّهُ وَ ٰسِعًا حَكِیمࣰا ﴿١٣٠﴾
আর যদি তারা পরস্পর পৃথক হয়ে যায় তবে আল্লাহ তাঁর প্রাচুর্য দ্বারা প্রত্যেককে অভাবমুক্ত করবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, প্রজ্ঞাময় [১]।
وَلِلَّهِ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۗ وَلَقَدۡ وَصَّیۡنَا ٱلَّذِینَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَـٰبَ مِن قَبۡلِكُمۡ وَإِیَّاكُمۡ أَنِ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَۚ وَإِن تَكۡفُرُواْ فَإِنَّ لِلَّهِ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ غَنِیًّا حَمِیدࣰا ﴿١٣١﴾
আস্মানে যা আছে ও যমীনে যা আছে সব আল্লাহরই [১]; তোমাদের আগে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদেরকে এবং তোমাদেরকেও নির্দেশ দিয়েছি যে, তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর [২]। আর তোমরা কুফরী করলেও আস্মানে যা আছে ও যমীনে যা আছে তা সবই আল্লাহর এবং আল্লাহ অভাবমুক্ত, প্রশংসাভাজন।
وَلِلَّهِ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ وَكِیلًا ﴿١٣٢﴾
আস্মানে যা আছে ও যমীনে যা আছে সব আল্লাহরই এবং কার্যোদ্ধারে আল্লাহই যথেষ্ট।
إِن یَشَأۡ یُذۡهِبۡكُمۡ أَیُّهَا ٱلنَّاسُ وَیَأۡتِ بِـَٔاخَرِینَۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلَىٰ ذَ ٰلِكَ قَدِیرࣰا ﴿١٣٣﴾
হে মানুষ! তিনি ইচ্ছে করলে তোমাদেরকে অপসারিত করতে ও অপরকে আনতে পারেন [১]; আর আল্লাহ তা করতে সম্পূর্ণ সক্ষম।
مَّن كَانَ یُرِیدُ ثَوَابَ ٱلدُّنۡیَا فَعِندَ ٱللَّهِ ثَوَابُ ٱلدُّنۡیَا وَٱلۡـَٔاخِرَةِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ سَمِیعَۢا بَصِیرࣰا ﴿١٣٤﴾
কেউ দুনিয়ার পুরস্কার চাইলে তবে (সে যেন জেনে নেয় যে) দুনিয়া ও আখেরাতের পুরস্কার আল্লাহর কাছেই রয়েছে [১]। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।
۞ یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ كُونُواْ قَوَّ ٰمِینَ بِٱلۡقِسۡطِ شُهَدَاۤءَ لِلَّهِ وَلَوۡ عَلَىٰۤ أَنفُسِكُمۡ أَوِ ٱلۡوَ ٰلِدَیۡنِ وَٱلۡأَقۡرَبِینَۚ إِن یَكُنۡ غَنِیًّا أَوۡ فَقِیرࣰا فَٱللَّهُ أَوۡلَىٰ بِهِمَاۖ فَلَا تَتَّبِعُواْ ٱلۡهَوَىٰۤ أَن تَعۡدِلُواْۚ وَإِن تَلۡوُۥۤاْ أَوۡ تُعۡرِضُواْ فَإِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِمَا تَعۡمَلُونَ خَبِیرࣰا ﴿١٣٥﴾
হে মুমিনগণ! তোমরা ন্যায়বিচারে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত থাকবে আল্লাহর সাক্ষীস্বরূপ; যদিও তা তোমাদের নিজেদের বা পিতা-মাতা এবং আত্মীয়-স্বজনের বিরুদ্ধে হয়; সে বিত্তবান হোক বা বিত্তহীন হোক আল্লাহ উভয়েরই ঘনিষ্টতর। কাজেই তোমরা ন্যায়বিচার করতে প্রবৃত্তির অনুগামী হয়ো না। যদি তোমরা পেঁচালো কথা বল বা পাশ কাটিয়ে যাও তবে তোমরা যা কর আল্লাহ তো তার সম্যক খবর রাখেন।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤاْ ءَامِنُواْ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَٱلۡكِتَـٰبِ ٱلَّذِی نَزَّلَ عَلَىٰ رَسُولِهِۦ وَٱلۡكِتَـٰبِ ٱلَّذِیۤ أَنزَلَ مِن قَبۡلُۚ وَمَن یَكۡفُرۡ بِٱللَّهِ وَمَلَـٰۤىِٕكَتِهِۦ وَكُتُبِهِۦ وَرُسُلِهِۦ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ فَقَدۡ ضَلَّ ضَلَـٰلَۢا بَعِیدًا ﴿١٣٦﴾
হে মুমিনগণ! তোমরা ঈমান আন আল্লাহর প্রতি, তাঁর রাসূলের প্রতি, এবং সে কিতাবের প্রতি যা আল্লাহ তাঁর রাসূলের উপর নাযিল করেছেন। আর সে গ্রন্থের প্রতিও যা তার পূর্বে তিনি নাযিল করেছেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ, তাঁর ফিরিশতাগণ, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রাসূলগণ ও শেষ দিবসের প্রতি কুফরী করে [১] সে সুদূর বিভ্রান্তিতে পতিত হলো।
إِنَّ ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ ثُمَّ كَفَرُواْ ثُمَّ ءَامَنُواْ ثُمَّ كَفَرُواْ ثُمَّ ٱزۡدَادُواْ كُفۡرࣰا لَّمۡ یَكُنِ ٱللَّهُ لِیَغۡفِرَ لَهُمۡ وَلَا لِیَهۡدِیَهُمۡ سَبِیلَۢا ﴿١٣٧﴾
নিশ্চয় যারা ঈমান আনে ও পরে কুফরী করে এবং আবার ঈমান আনে, আবার কুফরী করে, তারপর তাদের কুফরী প্রবৃত্তি বৃদ্ধি পায়, আল্লাহ তাদেরকে কিছুতেই ক্ষমা করবেন না এবং তাদেরকে কোনো পথ দেখাবেন না [১]।
بَشِّرِ ٱلۡمُنَـٰفِقِینَ بِأَنَّ لَهُمۡ عَذَابًا أَلِیمًا ﴿١٣٨﴾
মুনাফিকদেরকে শুভ সংবাদ দিন যে, তাদের জন্য কষ্টদায়ক শাস্তি রয়েছে।
ٱلَّذِینَ یَتَّخِذُونَ ٱلۡكَـٰفِرِینَ أَوۡلِیَاۤءَ مِن دُونِ ٱلۡمُؤۡمِنِینَۚ أَیَبۡتَغُونَ عِندَهُمُ ٱلۡعِزَّةَ فَإِنَّ ٱلۡعِزَّةَ لِلَّهِ جَمِیعࣰا ﴿١٣٩﴾
মুমিনগণের পরিবর্তে যারা কাফেরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে তারা কি ওদের কাছে ইযযত চায়? সমস্ত ইযযত তো আল্লাহরই [১]।
وَقَدۡ نَزَّلَ عَلَیۡكُمۡ فِی ٱلۡكِتَـٰبِ أَنۡ إِذَا سَمِعۡتُمۡ ءَایَـٰتِ ٱللَّهِ یُكۡفَرُ بِهَا وَیُسۡتَهۡزَأُ بِهَا فَلَا تَقۡعُدُواْ مَعَهُمۡ حَتَّىٰ یَخُوضُواْ فِی حَدِیثٍ غَیۡرِهِۦۤ إِنَّكُمۡ إِذࣰا مِّثۡلُهُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ جَامِعُ ٱلۡمُنَـٰفِقِینَ وَٱلۡكَـٰفِرِینَ فِی جَهَنَّمَ جَمِیعًا ﴿١٤٠﴾
কিতাবে তোমাদের প্রতি তিনি তো নাযিল করেছেন যে, যখন তোমরা শুনবে, আল্লাহর আয়াত প্রত্যাখ্যাত হচ্ছে এবং তা নিয়ে বিদ্রূপ করা হচ্ছে, তখন যে পর্যন্ত তারা অন্য প্রসঙ্গে লিপ্ত না হবে তোমরা তাদের সাথে বসো না [১], নয়তো তোমরাও তাদের মত হবে [২]। মুনাফিক এবং কাফের সবাইকে আল্লাহ তো জাহান্নামে একত্র করবেন।
ٱلَّذِینَ یَتَرَبَّصُونَ بِكُمۡ فَإِن كَانَ لَكُمۡ فَتۡحࣱ مِّنَ ٱللَّهِ قَالُوۤاْ أَلَمۡ نَكُن مَّعَكُمۡ وَإِن كَانَ لِلۡكَـٰفِرِینَ نَصِیبࣱ قَالُوۤاْ أَلَمۡ نَسۡتَحۡوِذۡ عَلَیۡكُمۡ وَنَمۡنَعۡكُم مِّنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَۚ فَٱللَّهُ یَحۡكُمُ بَیۡنَكُمۡ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِۗ وَلَن یَجۡعَلَ ٱللَّهُ لِلۡكَـٰفِرِینَ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِینَ سَبِیلًا ﴿١٤١﴾
যারা তোমাদের অমঙ্গলের প্রতীক্ষায় থাকে, তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের জয় হলে বলে, ‘আমরা কি তোমাদের সাথে ছিলাম না’। আর যদি কাফেরদের কিছু বিজয় হয়, তবে তারা বলে, ‘আমরা কি তোমাদের বিরুদ্ধে প্রবল ছিলাম না এবং আমরা কি তোমাদেরকে মুমিনদের হাত থেকে রক্ষা করিনি[১]?’ আল্লাহ কেয়ামতের দিন তোমাদের মধ্যে বিচার মীমাংসা করবেন এবং আল্লাহ কখনই মুমিনদের বিরুদ্ধে কাফেরদের জন্য কোনো পথ রাখবেন না। [২]
إِنَّ ٱلۡمُنَـٰفِقِینَ یُخَـٰدِعُونَ ٱللَّهَ وَهُوَ خَـٰدِعُهُمۡ وَإِذَا قَامُوۤاْ إِلَى ٱلصَّلَوٰةِ قَامُواْ كُسَالَىٰ یُرَاۤءُونَ ٱلنَّاسَ وَلَا یَذۡكُرُونَ ٱللَّهَ إِلَّا قَلِیلࣰا ﴿١٤٢﴾
নিশ্চয় মুনাফিকরা আল্লাহর সাথে ধোঁকাবাজি করে; বস্তুতঃ তিনি তাদেরকে ধোঁকায় ফেলেন [১]। আর যখন তারা সালাতে দাঁড়ায় তখন শৈথিল্যের সাথে দাঁড়ায়, শুধু লোক দেখানোর জন্য এবং আল্লাহকে তারা অল্পই স্মরণ করে [২]।
مُّذَبۡذَبِینَ بَیۡنَ ذَ ٰلِكَ لَاۤ إِلَىٰ هَـٰۤؤُلَاۤءِ وَلَاۤ إِلَىٰ هَـٰۤؤُلَاۤءِۚ وَمَن یُضۡلِلِ ٱللَّهُ فَلَن تَجِدَ لَهُۥ سَبِیلࣰا ﴿١٤٣﴾
দোটানায় দোদুল্যমান, না এদের দিকে, না ওদের দিকে [১] ! আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন আপনি তার জন্য কখনো কোনো পথ পাবেন না।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ لَا تَتَّخِذُواْ ٱلۡكَـٰفِرِینَ أَوۡلِیَاۤءَ مِن دُونِ ٱلۡمُؤۡمِنِینَۚ أَتُرِیدُونَ أَن تَجۡعَلُواْ لِلَّهِ عَلَیۡكُمۡ سُلۡطَـٰنࣰا مُّبِینًا ﴿١٤٤﴾
হে মুমিনগণ! মুমিনগণ ছাড়া কাফেরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা কি নিজেদের উপর আল্লাহর প্রকাশ্য অভিযোগ কায়েম করতে চাও [১]?
إِنَّ ٱلۡمُنَـٰفِقِینَ فِی ٱلدَّرۡكِ ٱلۡأَسۡفَلِ مِنَ ٱلنَّارِ وَلَن تَجِدَ لَهُمۡ نَصِیرًا ﴿١٤٥﴾
মুনাফিকরা তো জাহান্নামের নিম্নতম স্তরে থাকবে [১] এবং তাদের জন্য আপনি কখনো কোনো সহায় পাবেন না।
إِلَّا ٱلَّذِینَ تَابُواْ وَأَصۡلَحُواْ وَٱعۡتَصَمُواْ بِٱللَّهِ وَأَخۡلَصُواْ دِینَهُمۡ لِلَّهِ فَأُوْلَـٰۤىِٕكَ مَعَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَۖ وَسَوۡفَ یُؤۡتِ ٱللَّهُ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ أَجۡرًا عَظِیمࣰا ﴿١٤٦﴾
কিন্তু যারা তাওবাহ্ করে, নিজেদেরকে সংশোধন করে [১], আল্লাহকে দৃঢ়ভাবে অবলম্বন করে এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে তাদের দীনকে একনিষ্ট করে [২], তারা মুমিনদের সঙ্গে থাকবে এবং মুমিনদেরকে আল্লাহ অবশ্যই মহাপুরস্কার দেবেন।
مَّا یَفۡعَلُ ٱللَّهُ بِعَذَابِكُمۡ إِن شَكَرۡتُمۡ وَءَامَنتُمۡۚ وَكَانَ ٱللَّهُ شَاكِرًا عَلِیمࣰا ﴿١٤٧﴾
তোমরা যদি শোকর-গুজার হও [১] এবং ঈমান আন, তবে তোমাদের শাস্তি দিয়ে আল্লাহ কী করবেন? আর আল্লাহ (শোকরের) পুরস্কার দাতা, সর্বজ্ঞ।
۞ لَّا یُحِبُّ ٱللَّهُ ٱلۡجَهۡرَ بِٱلسُّوۤءِ مِنَ ٱلۡقَوۡلِ إِلَّا مَن ظُلِمَۚ وَكَانَ ٱللَّهُ سَمِیعًا عَلِیمًا ﴿١٤٨﴾
মন্দ কথার প্রচারণা আল্লাহ পছন্দ করেন না; তবে যার উপর যুলুম করা হয়েছে [১]। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
إِن تُبۡدُواْ خَیۡرًا أَوۡ تُخۡفُوهُ أَوۡ تَعۡفُواْ عَن سُوۤءࣲ فَإِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَفُوࣰّا قَدِیرًا ﴿١٤٩﴾
তোমরা সৎকাজ প্রকাশ্যে করলে বা গোপনে করলে কিংবা দোষ ক্ষমা করলে তবে আল্লাহও দোষ মোচনকারী, ক্ষমতাবান [১]।
إِنَّ ٱلَّذِینَ یَكۡفُرُونَ بِٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦ وَیُرِیدُونَ أَن یُفَرِّقُواْ بَیۡنَ ٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦ وَیَقُولُونَ نُؤۡمِنُ بِبَعۡضࣲ وَنَكۡفُرُ بِبَعۡضࣲ وَیُرِیدُونَ أَن یَتَّخِذُواْ بَیۡنَ ذَ ٰلِكَ سَبِیلًا ﴿١٥٠﴾
নিশ্চয় যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের সাথে কুফরী করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের মধ্যে (ঈমানের ব্যাপারে) তারতম্য করতে চায় এবং বলে, ‘আমরা কতক-এর উপর ঈমান আনি এবং কতকের সাথে কুফরী করি’ [১]। আর তারা মাঝামাঝি একটা পথ অবলম্বন করতে চায়,
أُوْلَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡكَـٰفِرُونَ حَقࣰّاۚ وَأَعۡتَدۡنَا لِلۡكَـٰفِرِینَ عَذَابࣰا مُّهِینࣰا ﴿١٥١﴾
তারাই প্রকৃত কাফির। আর আমরা প্রস্তুত রেখেছি কাফিরদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি [১]।
وَٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ بِٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦ وَلَمۡ یُفَرِّقُواْ بَیۡنَ أَحَدࣲ مِّنۡهُمۡ أُوْلَـٰۤىِٕكَ سَوۡفَ یُؤۡتِیهِمۡ أُجُورَهُمۡۚ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورࣰا رَّحِیمࣰا ﴿١٥٢﴾
আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান এনেছে এবং তাদের একের সাথে অপরের পার্থক্য করেনি, অচিরেই তাদেরকে তিনি তাদের প্রতিদান দেবেন। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
یَسۡـَٔلُكَ أَهۡلُ ٱلۡكِتَـٰبِ أَن تُنَزِّلَ عَلَیۡهِمۡ كِتَـٰبࣰا مِّنَ ٱلسَّمَاۤءِۚ فَقَدۡ سَأَلُواْ مُوسَىٰۤ أَكۡبَرَ مِن ذَ ٰلِكَ فَقَالُوۤاْ أَرِنَا ٱللَّهَ جَهۡرَةࣰ فَأَخَذَتۡهُمُ ٱلصَّـٰعِقَةُ بِظُلۡمِهِمۡۚ ثُمَّ ٱتَّخَذُواْ ٱلۡعِجۡلَ مِنۢ بَعۡدِ مَا جَاۤءَتۡهُمُ ٱلۡبَیِّنَـٰتُ فَعَفَوۡنَا عَن ذَ ٰلِكَۚ وَءَاتَیۡنَا مُوسَىٰ سُلۡطَـٰنࣰا مُّبِینࣰا ﴿١٥٣﴾
কিতাবীগণ আপনার কাছে তাদের জন্য আসমান হতে একটি কিতাব নাযিল করতে বলে; তারা মূসার কাছে এর চেয়েও বড় দাবী করেছিল। তারা বলেছিল, ‘আমাদেরকে প্রকাশ্যে আল্লাহকে দেখাও।’ ফলে তাদের সীমালংঘনের কারণে তাদেরকে বজ্র পাকড়াও করেছিল; তারপর স্পষ্ট প্রমাণ তাদের কাছে আসার পরও তারা বাছুরকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছিল; অতঃপর আমরা তা ক্ষমা করেছিলাম এবং আমরা মূসাকে স্পষ্ট প্রমাণ প্রদান করেছিলাম।
وَرَفَعۡنَا فَوۡقَهُمُ ٱلطُّورَ بِمِیثَـٰقِهِمۡ وَقُلۡنَا لَهُمُ ٱدۡخُلُواْ ٱلۡبَابَ سُجَّدࣰا وَقُلۡنَا لَهُمۡ لَا تَعۡدُواْ فِی ٱلسَّبۡتِ وَأَخَذۡنَا مِنۡهُم مِّیثَـٰقًا غَلِیظࣰا ﴿١٥٤﴾
আর তাদের অঙ্গীকার গ্রহণের জন্য ‘তূর’ পর্বতকে আমরা তাদের উপর উত্তোলন করেছিলাম এবং তাদেরকে বলেছিলাম, ‘নত শিরে দরজা দিয়ে প্রবেশ কর [১]।’ আর আমরা তাদেরকে আরও বলেছিলাম, ‘শনিবারে সীমালংঘন করো না’; এবং আমরা তাদের কাছ থেকৈ দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়েছিলাম।
فَبِمَا نَقۡضِهِم مِّیثَـٰقَهُمۡ وَكُفۡرِهِم بِـَٔایَـٰتِ ٱللَّهِ وَقَتۡلِهِمُ ٱلۡأَنۢبِیَاۤءَ بِغَیۡرِ حَقࣲّ وَقَوۡلِهِمۡ قُلُوبُنَا غُلۡفُۢۚ بَلۡ طَبَعَ ٱللَّهُ عَلَیۡهَا بِكُفۡرِهِمۡ فَلَا یُؤۡمِنُونَ إِلَّا قَلِیلࣰا ﴿١٥٥﴾
অতঃপর (তারা অভিসম্পাত পেয়েছিল [১]) তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের জন্য, আল্লাহর আয়াতসমূহের সাথে কুফরী করার জন্য, নবীগণকে অন্যায়ভাবে হত্যা করার জন্য এবং ‘আমাদের হৃদয় আচ্ছাদিত’ তাদের এ উক্তির জন্য। বরং তাদের কুফরীর কারণে আল্লাহ তার উপর মোহর মেরে দিয়েছেন। সুতরাং কেবল অল্প সংখ্যক লোকই ঈমান আনবে।
وَبِكُفۡرِهِمۡ وَقَوۡلِهِمۡ عَلَىٰ مَرۡیَمَ بُهۡتَـٰنًا عَظِیمࣰا ﴿١٥٦﴾
আর তাদের কুফরীর জন্য এবং মারইয়ামের বিরুদ্ধে গুরুতর অপবাদের জন্য [১]।
وَقَوۡلِهِمۡ إِنَّا قَتَلۡنَا ٱلۡمَسِیحَ عِیسَى ٱبۡنَ مَرۡیَمَ رَسُولَ ٱللَّهِ وَمَا قَتَلُوهُ وَمَا صَلَبُوهُ وَلَـٰكِن شُبِّهَ لَهُمۡۚ وَإِنَّ ٱلَّذِینَ ٱخۡتَلَفُواْ فِیهِ لَفِی شَكࣲّ مِّنۡهُۚ مَا لَهُم بِهِۦ مِنۡ عِلۡمٍ إِلَّا ٱتِّبَاعَ ٱلظَّنِّۚ وَمَا قَتَلُوهُ یَقِینَۢا ﴿١٥٧﴾
আর ‘আমরা আল্লাহর রাসূল মারঈয়াম তনয় ‘ঈসা মসীহকে হত্যা করেছি’ তাদের এ উক্তির জন্য। অথচ তারা তাকে হত্যা করেনি এবং ক্রুশবিদ্ধও করেনি; বরং তাদের জন্য (এক লোককে) তার সদৃশ করা হয়েছিল [১]। আর নিশ্চয় যারা তার সম্বন্ধে মতভেদ করেছিল, তারা অবশ্যই এ সম্বন্ধে সংশয়যুক্ত ছিল; এ সম্পর্কে অনুমানের অনুসরণ ছাড়া তাদের কোনো জ্ঞানই ছিল না। আর এটা নিশ্চিত যে, তারা তাঁকে হত্যা করেনি,
بَل رَّفَعَهُ ٱللَّهُ إِلَیۡهِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَزِیزًا حَكِیمࣰا ﴿١٥٨﴾
বরং আল্লাহ তাকে তাঁর নিকট তুলে নিয়েছেন এবং আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় [১]।
وَإِن مِّنۡ أَهۡلِ ٱلۡكِتَـٰبِ إِلَّا لَیُؤۡمِنَنَّ بِهِۦ قَبۡلَ مَوۡتِهِۦۖ وَیَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِ یَكُونُ عَلَیۡهِمۡ شَهِیدࣰا ﴿١٥٩﴾
কিতাবীদের মধ্য থেকে প্রত্যেকে তার মৃত্যুর পূর্বে [১] তার উপর ঈমান আনবেই। আর কেয়ামতের দিন তিনি তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী হবেন [২]।
فَبِظُلۡمࣲ مِّنَ ٱلَّذِینَ هَادُواْ حَرَّمۡنَا عَلَیۡهِمۡ طَیِّبَـٰتٍ أُحِلَّتۡ لَهُمۡ وَبِصَدِّهِمۡ عَن سَبِیلِ ٱللَّهِ كَثِیرࣰا ﴿١٦٠﴾
সুতরাং ভালো ভালো যা ইয়াহুদীদের জন্য হালাল ছিল আমরা তা তাদের জন্য হারাম করেছিলাম তাদের যুলুমের জন্য [১] এবং আল্লাহর পথ থেকে অনেককে বাঁধা দেয়ার জন্য।
وَأَخۡذِهِمُ ٱلرِّبَوٰاْ وَقَدۡ نُهُواْ عَنۡهُ وَأَكۡلِهِمۡ أَمۡوَ ٰلَ ٱلنَّاسِ بِٱلۡبَـٰطِلِۚ وَأَعۡتَدۡنَا لِلۡكَـٰفِرِینَ مِنۡهُمۡ عَذَابًا أَلِیمࣰا ﴿١٦١﴾
আর তাদের সূদ গ্রহণের কারণে, অথচ তা থেকে তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছিল; এবং অন্যায়ভাবে মানুষের ধন-সম্পদ গ্রাস করার কারণে। আর আমরা তাদের মধ্য হতে কাফিরদের জন্য কষ্টদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করেছি।
لَّـٰكِنِ ٱلرَّ ٰسِخُونَ فِی ٱلۡعِلۡمِ مِنۡهُمۡ وَٱلۡمُؤۡمِنُونَ یُؤۡمِنُونَ بِمَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡكَ وَمَاۤ أُنزِلَ مِن قَبۡلِكَۚ وَٱلۡمُقِیمِینَ ٱلصَّلَوٰةَۚ وَٱلۡمُؤۡتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَٱلۡمُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ أُوْلَـٰۤىِٕكَ سَنُؤۡتِیهِمۡ أَجۡرًا عَظِیمًا ﴿١٦٢﴾
কিন্তু তাদের মধ্যে যারা জ্ঞানে মজবুত তারা ও মুমিনগণ আপনার প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে এবং আপনার আগে যা নাযিল করা হয়েছে তাতে ঈমান আনে। আর সালাত প্রতিষ্ঠাকারী, যাকাত প্রদানকারী এবং আল্লাহ ও শেষ দিবসে ঈমান আনয়নকারী, তাদেরকে অচিরেই আমরা মহা পুরস্কার দেব। [১]
۞ إِنَّاۤ أَوۡحَیۡنَاۤ إِلَیۡكَ كَمَاۤ أَوۡحَیۡنَاۤ إِلَىٰ نُوحࣲ وَٱلنَّبِیِّـۧنَ مِنۢ بَعۡدِهِۦۚ وَأَوۡحَیۡنَاۤ إِلَىٰۤ إِبۡرَ ٰهِیمَ وَإِسۡمَـٰعِیلَ وَإِسۡحَـٰقَ وَیَعۡقُوبَ وَٱلۡأَسۡبَاطِ وَعِیسَىٰ وَأَیُّوبَ وَیُونُسَ وَهَـٰرُونَ وَسُلَیۡمَـٰنَۚ وَءَاتَیۡنَا دَاوُۥدَ زَبُورࣰا ﴿١٦٣﴾
নিশ্চয় আমরা আপনার নিকট ওহী প্রেরণ করেছিলাম [১], যেমন নূহ ও তার পরবর্তী নবীগণের প্রতি ওহী প্রেরণ করেছিলাম [২], আর ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়া’কূব ও তার বংশধরগণ, ঈসা, আইউব, ইউনুস, হারূন ও সুলাইমানের নিকটও ওহী প্রেরণ করেছিলাম এবং দাউদকে প্রদান করেছিলাম যাবূর।
وَرُسُلࣰا قَدۡ قَصَصۡنَـٰهُمۡ عَلَیۡكَ مِن قَبۡلُ وَرُسُلࣰا لَّمۡ نَقۡصُصۡهُمۡ عَلَیۡكَۚ وَكَلَّمَ ٱللَّهُ مُوسَىٰ تَكۡلِیمࣰا ﴿١٦٤﴾
আর অনেক রাসূল, যাদের বর্ণনা আমরা আপনাকে পূর্বে দিয়েছি এবং অনেক রাসূল, যাদের বর্ণনা আমরা আপনাকে দেইনি [১]। আর অবশ্যই আল্লাহ মূসার সাথে কথা বলেছেন।
رُّسُلࣰا مُّبَشِّرِینَ وَمُنذِرِینَ لِئَلَّا یَكُونَ لِلنَّاسِ عَلَى ٱللَّهِ حُجَّةُۢ بَعۡدَ ٱلرُّسُلِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَزِیزًا حَكِیمࣰا ﴿١٦٥﴾
সুসংবাদদাতা ও সাবধানকারী রাসূল প্রেরণ করেছি [১], যাতে রাসূলগণ আসার পর আল্লাহর বিরুদ্ধে মানুষের কোনো অভিযোগ না থাকে। আর আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
لَّـٰكِنِ ٱللَّهُ یَشۡهَدُ بِمَاۤ أَنزَلَ إِلَیۡكَۖ أَنزَلَهُۥ بِعِلۡمِهِۦۖ وَٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُ یَشۡهَدُونَۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ شَهِیدًا ﴿١٦٦﴾
কিন্তু আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন আপনার প্রতি যা তিনি নাযিল করেছেন তার মাধ্যমে। তিনি তা নাযিল করেছেন নিজ জ্ঞানে। আর ফেরেশতাগণও সাক্ষী দিচ্ছেন। আর সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট [১]।
إِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ وَصَدُّواْ عَن سَبِیلِ ٱللَّهِ قَدۡ ضَلُّواْ ضَلَـٰلَۢا بَعِیدًا ﴿١٦٧﴾
নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে এবং আল্লাহর পথ থেকে বাঁধা দিয়েছে তারা অবশ্যই ভীষণভাবে পথভ্রষ্ট হয়েছে।
إِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ وَظَلَمُواْ لَمۡ یَكُنِ ٱللَّهُ لِیَغۡفِرَ لَهُمۡ وَلَا لِیَهۡدِیَهُمۡ طَرِیقًا ﴿١٦٨﴾
নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে ও যুলুম করেছে আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করবেন না এবং তাদেরকে কোনো পথও দেখাবেন না,
إِلَّا طَرِیقَ جَهَنَّمَ خَـٰلِدِینَ فِیهَاۤ أَبَدࣰاۚ وَكَانَ ذَ ٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ یَسِیرࣰا ﴿١٦٩﴾
জাহান্নামের পথ ছাড়া; সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে এবং এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلنَّاسُ قَدۡ جَاۤءَكُمُ ٱلرَّسُولُ بِٱلۡحَقِّ مِن رَّبِّكُمۡ فَـَٔامِنُواْ خَیۡرࣰا لَّكُمۡۚ وَإِن تَكۡفُرُواْ فَإِنَّ لِلَّهِ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلِیمًا حَكِیمࣰا ﴿١٧٠﴾
হে লোকসকল! অবশ্যই রাসূল তোমাদের রবের কাছ থেকে সত্য নিয়ে এসেছেন; সুতরাং তোমরা ঈমান আন, এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর হবে [১] আর যদি তোমরা কুফরী কর তবে আসমানসমূহ ও যমীনে যা আছে সব আল্লাহরই এবং আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ لَا تَغۡلُواْ فِی دِینِكُمۡ وَلَا تَقُولُواْ عَلَى ٱللَّهِ إِلَّا ٱلۡحَقَّۚ إِنَّمَا ٱلۡمَسِیحُ عِیسَى ٱبۡنُ مَرۡیَمَ رَسُولُ ٱللَّهِ وَكَلِمَتُهُۥۤ أَلۡقَىٰهَاۤ إِلَىٰ مَرۡیَمَ وَرُوحࣱ مِّنۡهُۖ فَـَٔامِنُواْ بِٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦۖ وَلَا تَقُولُواْ ثَلَـٰثَةٌۚ ٱنتَهُواْ خَیۡرࣰا لَّكُمۡۚ إِنَّمَا ٱللَّهُ إِلَـٰهࣱ وَ ٰحِدࣱۖ سُبۡحَـٰنَهُۥۤ أَن یَكُونَ لَهُۥ وَلَدࣱۘ لَّهُۥ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۗ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ وَكِیلࣰا ﴿١٧١﴾
হে কিতাবীরা! স্বীয় দীনের মধ্যে তোমরা বাড়াবাড়ি করো না [১] এবং আল্লাহর উপর সত্য ব্যতীত কিছু বলো না। মারইয়াম-তনয় ঈসা মসীহ কেবল আল্লাহর রাসূল এবং তাঁর বাণী [২], যা তিনি মারইয়ামের কাছে পাঠিয়েছিলেন ও তাঁর পক্ষ থেকে রূহ। কাজেই তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলদের উপর ঈমান আন এবং বলো না, ‘তিন [৩] !’ নিবৃত্ত হও, এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর হবে। আল্লাহই তো এক ইলাহ; তাঁর সন্তান হবে... তিনি এটা থেকে পবিত্র-মহান। আসমানসমূহে যা কিছু আছে ও যমীনে যা কিছু আছে সব আল্লাহরই; আর কর্মবিধায়করূপে আল্লাহই যথেষ্ট [৪]।
لَّن یَسۡتَنكِفَ ٱلۡمَسِیحُ أَن یَكُونَ عَبۡدࣰا لِّلَّهِ وَلَا ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُ ٱلۡمُقَرَّبُونَۚ وَمَن یَسۡتَنكِفۡ عَنۡ عِبَادَتِهِۦ وَیَسۡتَكۡبِرۡ فَسَیَحۡشُرُهُمۡ إِلَیۡهِ جَمِیعࣰا ﴿١٧٢﴾
মসীহ আল্লাহর বান্দা হওয়াকে কখনো হেয় মনে করেন না এবং ঘনিষ্ঠ ফেরেশ্তাগণও করে না। আর কেউ তাঁর ইবাদাতকে হেয় জ্ঞান করলে এবং অহংকার করলে তিনি অচিরেই তাদের সবাইকে তাঁর কাছে একত্র করবেন [১]।
فَأَمَّا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ فَیُوَفِّیهِمۡ أُجُورَهُمۡ وَیَزِیدُهُم مِّن فَضۡلِهِۦۖ وَأَمَّا ٱلَّذِینَ ٱسۡتَنكَفُواْ وَٱسۡتَكۡبَرُواْ فَیُعَذِّبُهُمۡ عَذَابًا أَلِیمࣰا وَلَا یَجِدُونَ لَهُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ وَلِیࣰّا وَلَا نَصِیرࣰا ﴿١٧٣﴾
অতঃপর যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তিনি তাদেরকে পূর্ণ করে দিবেন তাদের পুরস্কার এবং নিজ অনুগ্রহে আরো বেশী দেবেন। আর যারা (আল্লাহর ইবাদাত করা) হেয় জ্ঞান করেছে এবং অহংকার করেছে, তাদেরকে তিনি কষ্টদায়ক শাস্তি দেবেন। আর আল্লাহ ছাড়া তাদের জন্য তারা কোন অভিভাবক ও সহায় পাবে না।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلنَّاسُ قَدۡ جَاۤءَكُم بُرۡهَـٰنࣱ مِّن رَّبِّكُمۡ وَأَنزَلۡنَاۤ إِلَیۡكُمۡ نُورࣰا مُّبِینࣰا ﴿١٧٤﴾
হে লোকসকল! তোমাদের রবের কাছ থেকে তোমাদের কাছে প্রমাণ এসেছে [১] এবং আমরা তোমাদের প্রতি স্পষ্ট জ্যোতি [২] নাযিল করেছি।
فَأَمَّا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ بِٱللَّهِ وَٱعۡتَصَمُواْ بِهِۦ فَسَیُدۡخِلُهُمۡ فِی رَحۡمَةࣲ مِّنۡهُ وَفَضۡلࣲ وَیَهۡدِیهِمۡ إِلَیۡهِ صِرَ ٰطࣰا مُّسۡتَقِیمࣰا ﴿١٧٥﴾
সুতরাং যারা আল্লাহতে ঈমান এনেছে এবং তাঁকে দৃঢ়ভাবে অবলম্বন করেছে তাদেরকে তিনি অবশ্যই তাঁর দয়া ও অণুগ্রহের মধ্যে দাখিল করবেন এবং তাদেরকে সরল পথে তাঁর দিকে পরিচালিত করবেন।
یَسۡتَفۡتُونَكَ قُلِ ٱللَّهُ یُفۡتِیكُمۡ فِی ٱلۡكَلَـٰلَةِۚ إِنِ ٱمۡرُؤٌاْ هَلَكَ لَیۡسَ لَهُۥ وَلَدࣱ وَلَهُۥۤ أُخۡتࣱ فَلَهَا نِصۡفُ مَا تَرَكَۚ وَهُوَ یَرِثُهَاۤ إِن لَّمۡ یَكُن لَّهَا وَلَدࣱۚ فَإِن كَانَتَا ٱثۡنَتَیۡنِ فَلَهُمَا ٱلثُّلُثَانِ مِمَّا تَرَكَۚ وَإِن كَانُوۤاْ إِخۡوَةࣰ رِّجَالࣰا وَنِسَاۤءࣰ فَلِلذَّكَرِ مِثۡلُ حَظِّ ٱلۡأُنثَیَیۡنِۗ یُبَیِّنُ ٱللَّهُ لَكُمۡ أَن تَضِلُّواْۗ وَٱللَّهُ بِكُلِّ شَیۡءٍ عَلِیمُۢ ﴿١٧٦﴾
লোকেরা আপনার কাছে ব্যবস্থা জানতে চায় [১]। বলুন, ‘পিতা-মাতাহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি সম্বন্ধে তোমাদেরকে আল্লাহ ব্যবস্থা জানাচ্ছেন, কোনো পুরুষ মারা গেলে সে যদি সন্তানহীন হয় এবং তার এক বোন থাকে [২] তবে তার জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির অর্ধেক। আর সে (মহিলা) যদি সন্তানহীনা হয় তবে তার ভাই তার উত্তরাধিকারী হবে। অতঃপর যদি দুই বোন থাকে তবে তাদের জন্য তার পরিত্যখ্ত সম্পত্তির তিন ভাগের দু’ভাগ। আর যদি ভাই-বোন উভয়ে থাকে তবে এক পুরুষের অংশ দুই নারীর অংশের সমান। তোমরা পথভ্রষ্ট হবে –এ আশংকায় আল্লাহ তোমাদেরকে পরিস্কারভাবে জানাচ্ছেন এবং আল্লাহ সবকিছু সম্পর্কে সবিশেষ অবগত [৩]।