یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ لَا تُقَدِّمُواْ بَیۡنَ یَدَیِ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦۖ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ سَمِیعٌ عَلِیمࣱ ﴿١﴾
হে ঈমানদারগণ [১]! আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সমক্ষে তোমরা কোনো বিষয়ে অগ্রণী হয়ো না আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর; নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ لَا تَرۡفَعُوۤاْ أَصۡوَ ٰتَكُمۡ فَوۡقَ صَوۡتِ ٱلنَّبِیِّ وَلَا تَجۡهَرُواْ لَهُۥ بِٱلۡقَوۡلِ كَجَهۡرِ بَعۡضِكُمۡ لِبَعۡضٍ أَن تَحۡبَطَ أَعۡمَـٰلُكُمۡ وَأَنتُمۡ لَا تَشۡعُرُونَ ﴿٢﴾
[২] হে ঈমানদারগণ! তোমরা নবীর কণ্ঠস্বরের উপর নিজেদের কণ্ঠস্বর উঁচু করো না [১] এবং নিজেদের মধ্যে যেভাবে উচ্চস্বরে কথা বল তার সাথে সেরূপ উচ্চস্বরে কথা বলো না; এ আশঙ্কায় যে, তোমাদের সকল কাজ বিনষ্ট হয়ে যাবে অথচ তোমরা উপলব্ধিও করতে পারবে না।
إِنَّ ٱلَّذِینَ یَغُضُّونَ أَصۡوَ ٰتَهُمۡ عِندَ رَسُولِ ٱللَّهِ أُوْلَـٰۤىِٕكَ ٱلَّذِینَ ٱمۡتَحَنَ ٱللَّهُ قُلُوبَهُمۡ لِلتَّقۡوَىٰۚ لَهُم مَّغۡفِرَةࣱ وَأَجۡرٌ عَظِیمٌ ﴿٣﴾
নিশ্চয় যারা আল্লাহর রাসূলের সামনে নিজেদের কন্ঠস্বর নিচু করে, আল্লাহ্ তাদের অন্তরকে তাকওয়ার জন্য পরীক্ষা করে নিয়েছেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।
إِنَّ ٱلَّذِینَ یُنَادُونَكَ مِن وَرَاۤءِ ٱلۡحُجُرَ ٰتِ أَكۡثَرُهُمۡ لَا یَعۡقِلُونَ ﴿٤﴾
নিশ্চয় যারা হুজরাসমূহের পিছন থেকে আপনাকে উচ্চস্বরে ডাকে, তাদের অধিকাংশই বুঝে না।
وَلَوۡ أَنَّهُمۡ صَبَرُواْ حَتَّىٰ تَخۡرُجَ إِلَیۡهِمۡ لَكَانَ خَیۡرࣰا لَّهُمۡۚ وَٱللَّهُ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿٥﴾
আর আপনি বের হয়ে তাদের কাছে আসা পর্যন্ত যদি তারা ধৈর্য ধারণ করত, তবে তা-ই তাদের জন্য উত্তম হত [১]। আর আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤاْ إِن جَاۤءَكُمۡ فَاسِقُۢ بِنَبَإࣲ فَتَبَیَّنُوۤاْ أَن تُصِیبُواْ قَوۡمَۢا بِجَهَـٰلَةࣲ فَتُصۡبِحُواْ عَلَىٰ مَا فَعَلۡتُمۡ نَـٰدِمِینَ ﴿٦﴾
হে ঈমানদারগণ! [১] যদি কোনো ফাসিক তোমাদের কাছে কোনো বার্তা নিয়ে আসে, তাহলে তোমরা তা পরীক্ষা করে দেখ, এ আশঙ্কায় যে, অজ্ঞতাবশত তোমরা কোনো সম্প্রদায়কে আক্রমণ করে বসবে, ফলে তোমাদের কৃতকর্মের জন্য তোমাদেরকে অনুতপ্ত হতে হবে।
وَٱعۡلَمُوۤاْ أَنَّ فِیكُمۡ رَسُولَ ٱللَّهِۚ لَوۡ یُطِیعُكُمۡ فِی كَثِیرࣲ مِّنَ ٱلۡأَمۡرِ لَعَنِتُّمۡ وَلَـٰكِنَّ ٱللَّهَ حَبَّبَ إِلَیۡكُمُ ٱلۡإِیمَـٰنَ وَزَیَّنَهُۥ فِی قُلُوبِكُمۡ وَكَرَّهَ إِلَیۡكُمُ ٱلۡكُفۡرَ وَٱلۡفُسُوقَ وَٱلۡعِصۡیَانَۚ أُوْلَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلرَّ ٰشِدُونَ ﴿٧﴾
আর তোমরা জেনে রাখা যে, তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল রয়েছেন; তিনি বহু বিষয়ে তোমাদের কথা শুনলে তোমরাই কষ্ট পেতে। কিন্তু আল্লাহ তোমাদের কাছে ঈমানকে প্রিয় করেছেন এবং সেটাকে তোমাদের হৃদয়গ্রাহী করেছেন। আর কুফরী, পাপাচার ও অবাধ্যতাকে করেছেন তোমাদের কাছে অপ্ৰিয়। তারাই তো সত্য পথপ্ৰাপ্ত।
فَضۡلࣰا مِّنَ ٱللَّهِ وَنِعۡمَةࣰۚ وَٱللَّهُ عَلِیمٌ حَكِیمࣱ ﴿٨﴾
আল্লাহর দান ও অনুগ্রহস্বরূপ; আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, হিকমতওয়ালা।
وَإِن طَاۤىِٕفَتَانِ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ٱقۡتَتَلُواْ فَأَصۡلِحُواْ بَیۡنَهُمَاۖ فَإِنۢ بَغَتۡ إِحۡدَىٰهُمَا عَلَى ٱلۡأُخۡرَىٰ فَقَـٰتِلُواْ ٱلَّتِی تَبۡغِی حَتَّىٰ تَفِیۤءَ إِلَىٰۤ أَمۡرِ ٱللَّهِۚ فَإِن فَاۤءَتۡ فَأَصۡلِحُواْ بَیۡنَهُمَا بِٱلۡعَدۡلِ وَأَقۡسِطُوۤاْۖ إِنَّ ٱللَّهَ یُحِبُّ ٱلۡمُقۡسِطِینَ ﴿٩﴾
আর মুমিনদের দু’দল দ্বন্দ্বে লিপ্ত হলে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দাও। অতঃপর তাদের একদল অন্য দলের বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ি করলে, যারা বাড়াবাড়ি করে তাদের বিরুদ্ধে তোমরা যুদ্ধ কর, যতক্ষণ না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। তারপর যদি তারা ফিরে আসে, তবে তাদের মধ্যে ইনসাফের সাথে আপোষ-মীমাংসা করে দাও এবং ন্যায়বিচার কর। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়বিচারকদেরকে ভালবাসেন।
إِنَّمَا ٱلۡمُؤۡمِنُونَ إِخۡوَةࣱ فَأَصۡلِحُواْ بَیۡنَ أَخَوَیۡكُمۡۚ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ لَعَلَّكُمۡ تُرۡحَمُونَ ﴿١٠﴾
মুমিনগণ তো পরস্পর ভাই ভাই [১]; কাজেই তোমরা তোমাদের ভাইদের মধ্যে আপোষ-মীমাংসা করে দাও। আর আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ لَا یَسۡخَرۡ قَوۡمࣱ مِّن قَوۡمٍ عَسَىٰۤ أَن یَكُونُواْ خَیۡرࣰا مِّنۡهُمۡ وَلَا نِسَاۤءࣱ مِّن نِّسَاۤءٍ عَسَىٰۤ أَن یَكُنَّ خَیۡرࣰا مِّنۡهُنَّۖ وَلَا تَلۡمِزُوۤاْ أَنفُسَكُمۡ وَلَا تَنَابَزُواْ بِٱلۡأَلۡقَـٰبِۖ بِئۡسَ ٱلِٱسۡمُ ٱلۡفُسُوقُ بَعۡدَ ٱلۡإِیمَـٰنِۚ وَمَن لَّمۡ یَتُبۡ فَأُوْلَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلظَّـٰلِمُونَ ﴿١١﴾
হে ঈমানদারগণ! কোনো মুমিন সম্প্রদায় যেন অপর কোনো মুমিন সম্প্রদায়কে উপহাস না করে; কেননা যাদেরকে উপহাস করা হচ্ছে তারা উপহাসকারীদের চেয়ে উত্তম হতে পারে এবং নারীরা যেন অন্য নারীদেরকে উপহাস না করে; কেননা যাদেরকে উপহাস করা হচ্ছে তারা উপহাসকারিণীদের চেয়ে উত্তম হতে পারে। আর তোমরা একে অন্যের প্ৰতি দোষারোপ করো না এবং তোমরা একে অন্যকে মন্দ নামে ডেকো না [১]; ঈমানের পর মন্দ নাম অতি নিকৃষ্ট। আর যারা তওবা করে না তারাই তো যালিম।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ ٱجۡتَنِبُواْ كَثِیرࣰا مِّنَ ٱلظَّنِّ إِنَّ بَعۡضَ ٱلظَّنِّ إِثۡمࣱۖ وَلَا تَجَسَّسُواْ وَلَا یَغۡتَب بَّعۡضُكُم بَعۡضًاۚ أَیُحِبُّ أَحَدُكُمۡ أَن یَأۡكُلَ لَحۡمَ أَخِیهِ مَیۡتࣰا فَكَرِهۡتُمُوهُۚ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ تَوَّابࣱ رَّحِیمࣱ ﴿١٢﴾
হে ঈমানদারগণ! তোমরা অধিকাংশ অনুমান হতে দূরে থাক; কারণ কোনো কোনো অনুমান পাপ এবং তোমরা একে অন্যের গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না এবং একে অন্যের গীবত করো না [১]। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে চাইবে [২]? বস্তুত তোমরা তো একে ঘৃণ্যই মনে কর। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর; নিশ্চয় আল্লাহ্ তওবা গ্রহণকারী, পরম দয়ালু।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلنَّاسُ إِنَّا خَلَقۡنَـٰكُم مِّن ذَكَرࣲ وَأُنثَىٰ وَجَعَلۡنَـٰكُمۡ شُعُوبࣰا وَقَبَاۤىِٕلَ لِتَعَارَفُوۤاْۚ إِنَّ أَكۡرَمَكُمۡ عِندَ ٱللَّهِ أَتۡقَىٰكُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِیمٌ خَبِیرࣱ ﴿١٣﴾
হে মানুষ! আমরা তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে [১], আর তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অন্যের সাথে পরিচিত হতে পার [২]। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সে ব্যক্তিই বেশী মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে বেশী তাকওয়াসম্পন্ন। নিশ্চয় আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, সম্যক অবহিত।
۞ قَالَتِ ٱلۡأَعۡرَابُ ءَامَنَّاۖ قُل لَّمۡ تُؤۡمِنُواْ وَلَـٰكِن قُولُوۤاْ أَسۡلَمۡنَا وَلَمَّا یَدۡخُلِ ٱلۡإِیمَـٰنُ فِی قُلُوبِكُمۡۖ وَإِن تُطِیعُواْ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ لَا یَلِتۡكُم مِّنۡ أَعۡمَـٰلِكُمۡ شَیۡـًٔاۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمٌ ﴿١٤﴾
বেদুঈনরা বলে, ‘আমরা ঈমান আনলাম’। বলুন, ‘তোমরা ঈমান আননি, বরং তোমরা বল, ‘আমরা আত্নসমর্পণ করেছি’, কারণ ঈমান এখনো তোমাদের অন্তরে প্রবেশ করেনি। আর যদি তোমরা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর তবে তিনি তোমাদের আমলসমূহের সওয়াব সামান্য পরিমাণও লাঘব করবেন না। নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’
إِنَّمَا ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ ثُمَّ لَمۡ یَرۡتَابُواْ وَجَـٰهَدُواْ بِأَمۡوَ ٰلِهِمۡ وَأَنفُسِهِمۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِۚ أُوْلَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلصَّـٰدِقُونَ ﴿١٥﴾
তারাই তো মুমিন, যারা আল্লাহ্ ও তঁর রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছে, তারপর সন্দেহ পোষণ করেনি এবং তাদের জীবন ও সম্পদ দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে, তারাই সত্যনিষ্ঠ।
قُلۡ أَتُعَلِّمُونَ ٱللَّهَ بِدِینِكُمۡ وَٱللَّهُ یَعۡلَمُ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۚ وَٱللَّهُ بِكُلِّ شَیۡءٍ عَلِیمࣱ ﴿١٦﴾
বলুন, ‘তোমারা কি তোমাদের দীন সম্পর্কে আল্লাহকে অবগত করাচ্ছ? অথচ আল্লাহ জানেন যা কিছু আছে আসমানসমূহে এবং যা কিছু আছে যমীনে। আর আল্লাহ সবকিছু সম্পর্কে সম্যক অবগত।
یَمُنُّونَ عَلَیۡكَ أَنۡ أَسۡلَمُواْۖ قُل لَّا تَمُنُّواْ عَلَیَّ إِسۡلَـٰمَكُمۖ بَلِ ٱللَّهُ یَمُنُّ عَلَیۡكُمۡ أَنۡ هَدَىٰكُمۡ لِلۡإِیمَـٰنِ إِن كُنتُمۡ صَـٰدِقِینَ ﴿١٧﴾
তারা ইসলাম গ্ৰহণ করে আপনাকে ধন্য করেছে মনে করে। বলুন, ‘তোমরা ইসলাম গ্ৰহণ করে আমাকে ধন্য করেছ মনে করো না, বরং আল্লাহ্ ঈমানের দিকে পরিচালিত করে তোমাদেরকে ধন্য করেছেন, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’