یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤاْ أَوۡفُواْ بِٱلۡعُقُودِۚ أُحِلَّتۡ لَكُم بَهِیمَةُ ٱلۡأَنۡعَـٰمِ إِلَّا مَا یُتۡلَىٰ عَلَیۡكُمۡ غَیۡرَ مُحِلِّی ٱلصَّیۡدِ وَأَنتُمۡ حُرُمٌۗ إِنَّ ٱللَّهَ یَحۡكُمُ مَا یُرِیدُ ﴿١﴾
হে মুমিনগণ [১] ! তোমরা অঙ্গীকারসমূহ [২] পূর্ণ করবে [৩]। যা তোমাদের নিকট বর্ণিত হচ্ছে [৪] তা ছাড়া গৃহপালিত [৫] চতুষ্পদ জন্তু [৬] তোমাদের জন্য হালাল করা হল, তবে ইহরাম অবস্থায় শিকার করাকে বৈধ মনে করবে না [৭]। নিশ্চয়ই আল্লাহ যা ইচ্ছে আদেশ করেন [৮]।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ لَا تُحِلُّواْ شَعَـٰۤىِٕرَ ٱللَّهِ وَلَا ٱلشَّهۡرَ ٱلۡحَرَامَ وَلَا ٱلۡهَدۡیَ وَلَا ٱلۡقَلَـٰۤىِٕدَ وَلَاۤ ءَاۤمِّینَ ٱلۡبَیۡتَ ٱلۡحَرَامَ یَبۡتَغُونَ فَضۡلࣰا مِّن رَّبِّهِمۡ وَرِضۡوَ ٰنࣰاۚ وَإِذَا حَلَلۡتُمۡ فَٱصۡطَادُواْۚ وَلَا یَجۡرِمَنَّكُمۡ شَنَـَٔانُ قَوۡمٍ أَن صَدُّوكُمۡ عَنِ ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِ أَن تَعۡتَدُواْۘ وَتَعَاوَنُواْ عَلَى ٱلۡبِرِّ وَٱلتَّقۡوَىٰۖ وَلَا تَعَاوَنُواْ عَلَى ٱلۡإِثۡمِ وَٱلۡعُدۡوَ ٰنِۚ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۖ إِنَّ ٱللَّهَ شَدِیدُ ٱلۡعِقَابِ ﴿٢﴾
হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর নিদর্শনসমূহ [১], পবিত্র মাস, কুরবানীর জন্য কা’বায় পাঠানো পশু, গলায় পরান চিহ্নবিশিষ্ট পশু এবং নিজ রবের অনুগ্রহ ও সন্তোষলাভের আশায় পবিত্র ঘর অভিমুখে যাত্রীদেরকে বৈধ মনে করবে না [২]। আর যখন তোমরা ইহরামমুক্ত হবে তখন শিকার করতে পার [৩]। তোমাদেরকে মস্জিদুল হালামে প্রবেশে বাঁধা দেয়ার কারণে কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ তোমাদেরকে যেন কখনই সীমালঙ্ঘনে প্ররোচিত না করে [৪]। নেককাজ ও তাকওয়ায় তোমরা পরস্পর সাহায্য করবে [৫] এবং পাপ ও সীমালংঘনে একে অন্যের সাহায্য করবে না। আর আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর। নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তিদানে কঠোর।
حُرِّمَتۡ عَلَیۡكُمُ ٱلۡمَیۡتَةُ وَٱلدَّمُ وَلَحۡمُ ٱلۡخِنزِیرِ وَمَاۤ أُهِلَّ لِغَیۡرِ ٱللَّهِ بِهِۦ وَٱلۡمُنۡخَنِقَةُ وَٱلۡمَوۡقُوذَةُ وَٱلۡمُتَرَدِّیَةُ وَٱلنَّطِیحَةُ وَمَاۤ أَكَلَ ٱلسَّبُعُ إِلَّا مَا ذَكَّیۡتُمۡ وَمَا ذُبِحَ عَلَى ٱلنُّصُبِ وَأَن تَسۡتَقۡسِمُواْ بِٱلۡأَزۡلَـٰمِۚ ذَ ٰلِكُمۡ فِسۡقٌۗ ٱلۡیَوۡمَ یَىِٕسَ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ مِن دِینِكُمۡ فَلَا تَخۡشَوۡهُمۡ وَٱخۡشَوۡنِۚ ٱلۡیَوۡمَ أَكۡمَلۡتُ لَكُمۡ دِینَكُمۡ وَأَتۡمَمۡتُ عَلَیۡكُمۡ نِعۡمَتِی وَرَضِیتُ لَكُمُ ٱلۡإِسۡلَـٰمَ دِینࣰاۚ فَمَنِ ٱضۡطُرَّ فِی مَخۡمَصَةٍ غَیۡرَ مُتَجَانِفࣲ لِّإِثۡمࣲ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿٣﴾
তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত জন্তু [১], রক্ত [২], শূকরের গোস্ত [৩], আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে যবেহ করা পশু [৪], গলা চিপে মারা যাওয়া জন্তু [৫], প্রহারে মারা যাওয়া জন্তু [৬], উপর থেকে পড়ে মারা যাওয়া জন্তু [৭], অন্য প্রাণীর শিং এর আঘাতে মারা যাওয়া জন্তু [৮] এবং হিংস্র পশুতে খাওয়া জন্তু [৯]; তবে যা তোমরা যবেহ করতে পেরেছ তা ছাড়া [১০], আর যা মূর্তি পূজার বেদীর উপর বলী দেয়া হয় তা [১১] এবং জুয়ার তীর দিয়ে ভাগ্য নির্ণয় করা [১২], এসব পাপ কাজ। আজ কাফেররা তোমাদের দীনের বিরুদ্ধাচরণে হতাশ হয়েছে [১৩]; কাজেই তাদেরকে ভয় করো না এবং আমাকেই ভয় কর। আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পরিপূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নেয়ামত সম্পূর্ণ করলাম [১৪], আর তোমাদের জন্য ইসলামকে দীন হিসেবে পছন্দ করলাম [১৫]। অতঃপর কেউ পাপের দিকে না ঝুঁকে ক্ষুধার তাড়নায় বাধ্য হলে তবে নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
یَسۡـَٔلُونَكَ مَاذَاۤ أُحِلَّ لَهُمۡۖ قُلۡ أُحِلَّ لَكُمُ ٱلطَّیِّبَـٰتُ وَمَا عَلَّمۡتُم مِّنَ ٱلۡجَوَارِحِ مُكَلِّبِینَ تُعَلِّمُونَهُنَّ مِمَّا عَلَّمَكُمُ ٱللَّهُۖ فَكُلُواْ مِمَّاۤ أَمۡسَكۡنَ عَلَیۡكُمۡ وَٱذۡكُرُواْ ٱسۡمَ ٱللَّهِ عَلَیۡهِۖ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ سَرِیعُ ٱلۡحِسَابِ ﴿٤﴾
মানুষ আপনাকে প্রশ্ন করে, তাদের জন্য কী কী হালাল করা হয়েছে? বলুন, ‘তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে সমস্ত পবিত্র জিনিস [১]। আর শিকারী পশু-পাখি, যাদেরকে তোমরা শিকার শিখিয়েছ – আল্লাহ তোমাদেরকে যা শিখিয়েছেন তা থেকে সেগুলোকে তোমরা শিখিয়ে থাক –সুতরাং এই (শিকারী পশুপাখি)-গুলো যা কিছু তোমাদের জন্য ধরে আনে তা থেকে খাও। আর এতে আল্লাহর নাম স্মরণ কর [২] এবং আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ দ্রুত হিসেব গ্রহণকারী।’
ٱلۡیَوۡمَ أُحِلَّ لَكُمُ ٱلطَّیِّبَـٰتُۖ وَطَعَامُ ٱلَّذِینَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَـٰبَ حِلࣱّ لَّكُمۡ وَطَعَامُكُمۡ حِلࣱّ لَّهُمۡۖ وَٱلۡمُحۡصَنَـٰتُ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنَـٰتِ وَٱلۡمُحۡصَنَـٰتُ مِنَ ٱلَّذِینَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَـٰبَ مِن قَبۡلِكُمۡ إِذَاۤ ءَاتَیۡتُمُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ مُحۡصِنِینَ غَیۡرَ مُسَـٰفِحِینَ وَلَا مُتَّخِذِیۤ أَخۡدَانࣲۗ وَمَن یَكۡفُرۡ بِٱلۡإِیمَـٰنِ فَقَدۡ حَبِطَ عَمَلُهُۥ وَهُوَ فِی ٱلۡـَٔاخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَـٰسِرِینَ ﴿٥﴾
আজ [১] তোমাদের জন্য সমস্ত ভালো জিনিস হালাল করা হল [২] ও যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে [৩] তাদের খাদ্যদ্রব্য তোমাদের জন্য হালাল এবং তোমাদের খাদ্যদ্রব্য তাদের জন্য বৈধ। আর মুমিন সচ্চরিত্রা নারী ও তোমাদের আগে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের সচ্চরিত্রা [৪] নারীদেরকে তোমাদের জন্য বৈধ করা হল [৫] যদি তোমরা তাদের মাহর প্রদান কর বিয়ের জন্য, প্রকাশ্য ব্যভিচার বা গোপন প্রণয়িনী গ্রহণকারী হিসেবে নয়। আর কেউ ঈমানের সাথে কুফরী করলে তার কর্ম অবশ্যই নিস্ফল হবে এবং সে আখেরাতে ক্ষীতগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে [৬]।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤاْ إِذَا قُمۡتُمۡ إِلَى ٱلصَّلَوٰةِ فَٱغۡسِلُواْ وُجُوهَكُمۡ وَأَیۡدِیَكُمۡ إِلَى ٱلۡمَرَافِقِ وَٱمۡسَحُواْ بِرُءُوسِكُمۡ وَأَرۡجُلَكُمۡ إِلَى ٱلۡكَعۡبَیۡنِۚ وَإِن كُنتُمۡ جُنُبࣰا فَٱطَّهَّرُواْۚ وَإِن كُنتُم مَّرۡضَىٰۤ أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٍ أَوۡ جَاۤءَ أَحَدࣱ مِّنكُم مِّنَ ٱلۡغَاۤىِٕطِ أَوۡ لَـٰمَسۡتُمُ ٱلنِّسَاۤءَ فَلَمۡ تَجِدُواْ مَاۤءࣰ فَتَیَمَّمُواْ صَعِیدࣰا طَیِّبࣰا فَٱمۡسَحُواْ بِوُجُوهِكُمۡ وَأَیۡدِیكُم مِّنۡهُۚ مَا یُرِیدُ ٱللَّهُ لِیَجۡعَلَ عَلَیۡكُم مِّنۡ حَرَجࣲ وَلَـٰكِن یُرِیدُ لِیُطَهِّرَكُمۡ وَلِیُتِمَّ نِعۡمَتَهُۥ عَلَیۡكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ﴿٦﴾
হে মুমিনগণ! যখন তোমরা সালাতের জন্য দাঁড়াতে চাও তখন তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাতগুলো কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও, তোমাদের মাথায় মাসেহ কর [১] এবং পায়ের টাখনু পর্যন্ত ধুয়ে নাও [২] আর যদি তোমরা অপবিত্র থাক, তবে বিশেষভাবে পবিত্র হবে। আর যদি তোমরা অসুস্থ হও বা সফরে থাক বা তোমাদের কেউ পায়খানা থেকে আসে বা তোমরা স্ত্রীর সাথে সংগত হও [৩] এবং পানি না পাও তবে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করবে। সুতরাং তা দ্বারা মুখমণ্ডলে ও হাতে মাসেহ করবে। আল্লাহ তোমাদের উপর কোনো সংকীর্ণতা করতে চান না; বরং তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে চান এবং তোমাদের প্রতি তাঁর নেয়ামত সম্পূর্ণ করতে চান, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর।
وَٱذۡكُرُواْ نِعۡمَةَ ٱللَّهِ عَلَیۡكُمۡ وَمِیثَـٰقَهُ ٱلَّذِی وَاثَقَكُم بِهِۦۤ إِذۡ قُلۡتُمۡ سَمِعۡنَا وَأَطَعۡنَاۖ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِیمُۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ ﴿٧﴾
আর স্মরণ কর, তোমাদের উপর আল্লাহর নেয়ামত এবং যে অঙ্গীকারে তিনি তোমাদেরকে আবদ্ধ করেছিলেন তা; যখন তোমরা বলেছিলে, ‘শুনলাম এবং মেনে নিলাম’ [১]। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর; নিশ্চয় আল্লাহ অন্তরে যা আছে সে সম্পর্কে সবিশেষ অবগত।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ كُونُواْ قَوَّ ٰمِینَ لِلَّهِ شُهَدَاۤءَ بِٱلۡقِسۡطِۖ وَلَا یَجۡرِمَنَّكُمۡ شَنَـَٔانُ قَوۡمٍ عَلَىٰۤ أَلَّا تَعۡدِلُواْۚ ٱعۡدِلُواْ هُوَ أَقۡرَبُ لِلتَّقۡوَىٰۖ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ خَبِیرُۢ بِمَا تَعۡمَلُونَ ﴿٨﴾
হে মুমিনগণ! আল্লাহর উদ্দেশ্যে ন্যায় সাক্ষ্যদানে তোমরা অবিচল থাকবে; কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি শত্রুতা তোমাদেরকে যেন সুবিচার বর্জনে প্ররোচিত না করে। তোমরা সুবিচার করবে [১], এটা তাকওয়ার অধিকতর নিকটবর্তী। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর। নিশ্চয় তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত [২]।
وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ لَهُم مَّغۡفِرَةࣱ وَأَجۡرٌ عَظِیمࣱ ﴿٩﴾
যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।
وَٱلَّذِینَ كَفَرُواْ وَكَذَّبُواْ بِـَٔایَـٰتِنَاۤ أُوْلَـٰۤىِٕكَ أَصۡحَـٰبُ ٱلۡجَحِیمِ ﴿١٠﴾
আর যারা কুফরী করে এবং আমাদের আয়াতসমূহে মিথ্যারোপ করে তারা প্রজ্বলিত আগুনের অধিবাসী।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ ٱذۡكُرُواْ نِعۡمَتَ ٱللَّهِ عَلَیۡكُمۡ إِذۡ هَمَّ قَوۡمٌ أَن یَبۡسُطُوۤاْ إِلَیۡكُمۡ أَیۡدِیَهُمۡ فَكَفَّ أَیۡدِیَهُمۡ عَنكُمۡۖ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۚ وَعَلَى ٱللَّهِ فَلۡیَتَوَكَّلِ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ﴿١١﴾
হে মুমিনগণ! তোমাদের প্রতি আল্লাহর নেয়ামত স্মরণ কর যখন এক সম্প্রদায় তোমাদের বিরুদ্ধে তাদের হাত প্রসারিত করতে চেয়েছিল, অতঃপর আল্লাহ তাদের হাত তোমাদের থেকে নিবৃত রাখলেন। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর। আল্লাহর উপরই যেন মুমিনগণ তাওয়াক্কুল করে [১]।
۞ وَلَقَدۡ أَخَذَ ٱللَّهُ مِیثَـٰقَ بَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ وَبَعَثۡنَا مِنۡهُمُ ٱثۡنَیۡ عَشَرَ نَقِیبࣰاۖ وَقَالَ ٱللَّهُ إِنِّی مَعَكُمۡۖ لَىِٕنۡ أَقَمۡتُمُ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَیۡتُمُ ٱلزَّكَوٰةَ وَءَامَنتُم بِرُسُلِی وَعَزَّرۡتُمُوهُمۡ وَأَقۡرَضۡتُمُ ٱللَّهَ قَرۡضًا حَسَنࣰا لَّأُكَفِّرَنَّ عَنكُمۡ سَیِّـَٔاتِكُمۡ وَلَأُدۡخِلَنَّكُمۡ جَنَّـٰتࣲ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُۚ فَمَن كَفَرَ بَعۡدَ ذَ ٰلِكَ مِنكُمۡ فَقَدۡ ضَلَّ سَوَاۤءَ ٱلسَّبِیلِ ﴿١٢﴾
আর অবশ্যই আল্লাহ বনী ইসরাঈলের অংগীকার গ্রহণ করেছিলেন এবং আমরা তাদের মধ্য থেকে বারজন দলনেতা পাঠিয়েছিলাম। আর আল্লাহ বলেছিলেন, ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের সংগে আছি; তোমরা যদি সালাত কায়েম কর, যাকাত দাও, আমার রাসূলগণের প্রতি ঈমান আন, তাঁদেরকে সম্মান-সহযোগিতা কর এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ প্রদান কর, তবে আমি তোমাদের পাপ অবশ্যই মোচন করব এবং অবশ্যই তোমাদেরকে প্রবেশ করাব জান্নাতসমূহে, যার পাদদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত’। এর পরও কেউ কুফরী করলে সে অবশ্যই সরল পথ হারাবে।
فَبِمَا نَقۡضِهِم مِّیثَـٰقَهُمۡ لَعَنَّـٰهُمۡ وَجَعَلۡنَا قُلُوبَهُمۡ قَـٰسِیَةࣰۖ یُحَرِّفُونَ ٱلۡكَلِمَ عَن مَّوَاضِعِهِۦ وَنَسُواْ حَظࣰّا مِّمَّا ذُكِّرُواْ بِهِۦۚ وَلَا تَزَالُ تَطَّلِعُ عَلَىٰ خَاۤىِٕنَةࣲ مِّنۡهُمۡ إِلَّا قَلِیلࣰا مِّنۡهُمۡۖ فَٱعۡفُ عَنۡهُمۡ وَٱصۡفَحۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ یُحِبُّ ٱلۡمُحۡسِنِینَ ﴿١٣﴾
অতঃপর তাদের [১] অঙ্গীকার ভঙ্গের জন্য আমরা তাদেরকে লা’নত করেছি ও তাদের হৃদয় কঠিন করেছি; তারা শব্দগুলোকে আপন স্থান থেকৈ বিকৃত করে এবং তাদেরকে যে উপদেশ দেয়া হয়েছিল তার একাংশ তারা ভুলে গেছে। আর আপনি সবসময় তাদের অল্প সংখ্যক ছাড়া সকলকেই বিশ্বাসঘাতকতা করতে দেখতে পাবেন [২], কাজেই তাদেরকে ক্ষমা করুন এবং উপেক্ষা করুন। নিশ্চয়ই আল্লাহ মুহসিনদেরকে ভালোবাসেন।
وَمِنَ ٱلَّذِینَ قَالُوۤاْ إِنَّا نَصَـٰرَىٰۤ أَخَذۡنَا مِیثَـٰقَهُمۡ فَنَسُواْ حَظࣰّا مِّمَّا ذُكِّرُواْ بِهِۦ فَأَغۡرَیۡنَا بَیۡنَهُمُ ٱلۡعَدَاوَةَ وَٱلۡبَغۡضَاۤءَ إِلَىٰ یَوۡمِ ٱلۡقِیَـٰمَةِۚ وَسَوۡفَ یُنَبِّئُهُمُ ٱللَّهُ بِمَا كَانُواْ یَصۡنَعُونَ ﴿١٤﴾
আর যারা বলে, ‘আমরা নাসারা’, তাদেরও অঙ্গীকার আমরা গ্রহণ করেছিলাম; অতঃপর তাদেরকে যে উপদেশ দেয়া হয়েছিল তার একাংশ তারা ভুলে গিয়েছে। ফলে আমরা তাদের মধ্যে কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী শত্রুতা ও বিদ্বেষ জাগরুক রেখেছি [১]। আর তারা যা করত আল্লাহ অচিরেই তাদেরকে তা জানিয়ে দেবেন।
یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ قَدۡ جَاۤءَكُمۡ رَسُولُنَا یُبَیِّنُ لَكُمۡ كَثِیرࣰا مِّمَّا كُنتُمۡ تُخۡفُونَ مِنَ ٱلۡكِتَـٰبِ وَیَعۡفُواْ عَن كَثِیرࣲۚ قَدۡ جَاۤءَكُم مِّنَ ٱللَّهِ نُورࣱ وَكِتَـٰبࣱ مُّبِینࣱ ﴿١٥﴾
হে কিতাবীরা! আমাদের রাসূল তোমাদের নিকট এসেছেন [১], তোমরা কিতাবের যা গোপন করতে তিনি সে সবের অনেক কিছু তোমাদের নিকট প্রকাশ করছেন এবং অনেক কিছু ছেড়ে দিচ্ছেন। অবশ্যই আল্লাহর নিকট থেকে এক জ্যোতি ও স্পষ্ট কিতাব তোমাদের কাছে এসেছে [২]।
یَهۡدِی بِهِ ٱللَّهُ مَنِ ٱتَّبَعَ رِضۡوَ ٰنَهُۥ سُبُلَ ٱلسَّلَـٰمِ وَیُخۡرِجُهُم مِّنَ ٱلظُّلُمَـٰتِ إِلَى ٱلنُّورِ بِإِذۡنِهِۦ وَیَهۡدِیهِمۡ إِلَىٰ صِرَ ٰطࣲ مُّسۡتَقِیمࣲ ﴿١٦﴾
যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির অনুসরণ করে, এ দ্বারা তিনি তাদেরকে শান্তির পথে পারিচালিত করেন [১] এবং তাদেরকে নিজ অনুমতিক্রমে অন্ধকার হতে বের করে আলোর দিকে নিয়ে যান। আর তাদেরকে সরল পথের দিশা দেন।
لَّقَدۡ كَفَرَ ٱلَّذِینَ قَالُوۤاْ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلۡمَسِیحُ ٱبۡنُ مَرۡیَمَۚ قُلۡ فَمَن یَمۡلِكُ مِنَ ٱللَّهِ شَیۡـًٔا إِنۡ أَرَادَ أَن یُهۡلِكَ ٱلۡمَسِیحَ ٱبۡنَ مَرۡیَمَ وَأُمَّهُۥ وَمَن فِی ٱلۡأَرۡضِ جَمِیعࣰاۗ وَلِلَّهِ مُلۡكُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا بَیۡنَهُمَاۚ یَخۡلُقُ مَا یَشَاۤءُۚ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرࣱ ﴿١٧﴾
যারা বলে, ‘নিশ্চয় মারইয়াম-তনয় মসীহই আল্লাহ’, তারা অবশ্যই কুফরী করেছে [১]। বলুন, ‘আল্লাহ যদি মারইয়াম-তনয় মসীহ, তাঁর মাতা এবং দুনিয়ার সকলকে ধ্বংস করতে ইচ্ছে করেন তবে তাঁকে বাঁধা দেবার শক্তি কার আছে?’ আর আসমানসমূহ ও যমীন এবং এ দুয়ের মধ্যে যা কিছু আছে তার সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই। তিনি যা ইচ্ছে সৃষ্টি করেন [২] এবং আল্লাহ সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।
وَقَالَتِ ٱلۡیَهُودُ وَٱلنَّصَـٰرَىٰ نَحۡنُ أَبۡنَـٰۤؤُاْ ٱللَّهِ وَأَحِبَّـٰۤؤُهُۥۚ قُلۡ فَلِمَ یُعَذِّبُكُم بِذُنُوبِكُمۖ بَلۡ أَنتُم بَشَرࣱ مِّمَّنۡ خَلَقَۚ یَغۡفِرُ لِمَن یَشَاۤءُ وَیُعَذِّبُ مَن یَشَاۤءُۚ وَلِلَّهِ مُلۡكُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا بَیۡنَهُمَاۖ وَإِلَیۡهِ ٱلۡمَصِیرُ ﴿١٨﴾
আর ইয়াহুদী ও নাসারারা বলে, ‘আমরা আল্লাহর পুত্র ও তাঁর প্রিয়জন।’ বলুন, ‘তবে কেন তিনি তোমাদের পাপের জন্য তোমাদেরকে শাস্তি দিবেন [১] ? বরং তোমরা তাদেরই অন্তর্গত মানুষ যাদেরকে তিনি সৃষ্টি করেছেন।’ যাকে ইচ্ছে তিনি ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছে তিনি শাস্তি দেন [২]। আর আসমানসমূহ ও যমীন এবং এ দুয়ের মধ্যে যা কিছু আছে তার সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই, এবং প্রত্যাবর্তন তাঁরই দিকে।
یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ قَدۡ جَاۤءَكُمۡ رَسُولُنَا یُبَیِّنُ لَكُمۡ عَلَىٰ فَتۡرَةࣲ مِّنَ ٱلرُّسُلِ أَن تَقُولُواْ مَا جَاۤءَنَا مِنۢ بَشِیرࣲ وَلَا نَذِیرࣲۖ فَقَدۡ جَاۤءَكُم بَشِیرࣱ وَنَذِیرࣱۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرࣱ ﴿١٩﴾
হে কিতাবীরা! রাসূল পাঠানোতে বিরতির পর [১] আমাদের রাসূল তোমাদের কাছে এসেছেন। তিনি তোমাদের কাছে স্পষ্ট ব্যাখ্যা করছেন, যাতে তোমরা না বল যে, ‘কোনো সুসংবাদবাহী ও সাবধানকারী আমাদের কাছে আসেনি। অবশ্যই তোমাদের কাছে সুসংবাদদাতা ও সাবধানকারী এসেছেন [২]। আর আল্লাহ সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।
وَإِذۡ قَالَ مُوسَىٰ لِقَوۡمِهِۦ یَـٰقَوۡمِ ٱذۡكُرُواْ نِعۡمَةَ ٱللَّهِ عَلَیۡكُمۡ إِذۡ جَعَلَ فِیكُمۡ أَنۢبِیَاۤءَ وَجَعَلَكُم مُّلُوكࣰا وَءَاتَىٰكُم مَّا لَمۡ یُؤۡتِ أَحَدࣰا مِّنَ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿٢٠﴾
আর স্মরণ করুন [১], যখন মূসা তার সম্প্রদায়কে বলেছিলেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর যখন তিনি তোমাদের মধ্যে নবী করেছিলেন ও তোমাদেরকে রাজা-বাদশাহ করেছিলেন এবং সৃষ্টিকুলের কাউকেও তিনি যা দেননি তা তোমাদেরকে দিয়েছিলেন [২]।
یَـٰقَوۡمِ ٱدۡخُلُواْ ٱلۡأَرۡضَ ٱلۡمُقَدَّسَةَ ٱلَّتِی كَتَبَ ٱللَّهُ لَكُمۡ وَلَا تَرۡتَدُّواْ عَلَىٰۤ أَدۡبَارِكُمۡ فَتَنقَلِبُواْ خَـٰسِرِینَ ﴿٢١﴾
‘হে আমার সম্প্রদায়! আল্লাহ তোমাদের জন্য যে পবিত্র ভূমি লিখে দিয়েছেন তাতে তোমরা প্রবেশ কর [১] এবং পশ্চাদপসরণ করো না, করলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে প্রত্যাবর্তন করবে।’
قَالُواْ یَـٰمُوسَىٰۤ إِنَّ فِیهَا قَوۡمࣰا جَبَّارِینَ وَإِنَّا لَن نَّدۡخُلَهَا حَتَّىٰ یَخۡرُجُواْ مِنۡهَا فَإِن یَخۡرُجُواْ مِنۡهَا فَإِنَّا دَ ٰخِلُونَ ﴿٢٢﴾
তারা বলল, ‘হে মূসা! নিশ্চয় সেখানে এক দুর্দান্ত সম্প্রদায় রয়েছে এবং তারা সে স্থান থেকে বের না হওয়া পর্যন্ত আমরা কখনোই সেখানে কিছুতেই প্রবেশ করব না। অতঃপর তারা সেখান থেকে বের হয়ে গেলে তবে নিশ্চয় আমরা সেখানে প্রবেশ করব।’
قَالَ رَجُلَانِ مِنَ ٱلَّذِینَ یَخَافُونَ أَنۡعَمَ ٱللَّهُ عَلَیۡهِمَا ٱدۡخُلُواْ عَلَیۡهِمُ ٱلۡبَابَ فَإِذَا دَخَلۡتُمُوهُ فَإِنَّكُمۡ غَـٰلِبُونَۚ وَعَلَى ٱللَّهِ فَتَوَكَّلُوۤاْ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿٢٣﴾
যারা ভয় করত তাদের মধ্যে দুজন, যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছিলেন, তারা বলল, ‘তোমরা তাদের মুকাবিলা করে দরজায় প্রবেশ কর, প্রবেশ করলেই তোমরা জয়ী হবে এবং আল্লাহর উপরই তোমরা নির্ভর কর যদি তোমরা মুমিন হও।’
قَالُواْ یَـٰمُوسَىٰۤ إِنَّا لَن نَّدۡخُلَهَاۤ أَبَدࣰا مَّا دَامُواْ فِیهَا فَٱذۡهَبۡ أَنتَ وَرَبُّكَ فَقَـٰتِلَاۤ إِنَّا هَـٰهُنَا قَـٰعِدُونَ ﴿٢٤﴾
তারা বলল, ‘হে মূসা! তারা যতক্ষণ সেখানে থাকবে ততক্ষণ আমরা সেখানে কখনো প্রবেশ করব না; কাজেই তুমি আর তোমার রব গিয়ে যুদ্ধ কর। নিশ্চয় আমরা এখানেই বসে থাকব।’
قَالَ رَبِّ إِنِّی لَاۤ أَمۡلِكُ إِلَّا نَفۡسِی وَأَخِیۖ فَٱفۡرُقۡ بَیۡنَنَا وَبَیۡنَ ٱلۡقَوۡمِ ٱلۡفَـٰسِقِینَ ﴿٢٥﴾
তিনি বললেন, ‘হে আমার রব! আমি ও আমার ভাই ছাড়া আর কারো উপর আমার অধিকার নেই, সুতরাং আপনি আমাদের ও ফাসিক সম্প্রদায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ করে দিন।’
قَالَ فَإِنَّهَا مُحَرَّمَةٌ عَلَیۡهِمۡۛ أَرۡبَعِینَ سَنَةࣰۛ یَتِیهُونَ فِی ٱلۡأَرۡضِۚ فَلَا تَأۡسَ عَلَى ٱلۡقَوۡمِ ٱلۡفَـٰسِقِینَ ﴿٢٦﴾
আল্লাহ বললেন, ‘তবে তা [১] চল্লিশ বছর তাদের জন্য নিষিদ্ধ করা হল, তারা যমীনে উদ্ভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়াবে, কাজেই আপনি ফাসিক সম্প্রদায়ের জন্য দুঃখ করবেন না [২] ।’
۞ وَٱتۡلُ عَلَیۡهِمۡ نَبَأَ ٱبۡنَیۡ ءَادَمَ بِٱلۡحَقِّ إِذۡ قَرَّبَا قُرۡبَانࣰا فَتُقُبِّلَ مِنۡ أَحَدِهِمَا وَلَمۡ یُتَقَبَّلۡ مِنَ ٱلۡـَٔاخَرِ قَالَ لَأَقۡتُلَنَّكَۖ قَالَ إِنَّمَا یَتَقَبَّلُ ٱللَّهُ مِنَ ٱلۡمُتَّقِینَ ﴿٢٧﴾
আর আদমের দু’ছেলের কাহিনী আপনি তাদেরকে যথাযথভাবে শুনান [১]। যখন তারা উভয়ে কুরবানী করেছিল অতঃপর একজন থেকে কবুল করা হল এবং অন্যজনের কবুল করা হল না। সে বলল, ‘অবশ্যই আমি তোমাকে হত্যা করব’ [২]। অন্যজন বলল, ‘আল্লাহ তো কেবল মুত্তাকীদের পক্ষ হতে কবুল করেন’।
لَىِٕنۢ بَسَطتَ إِلَیَّ یَدَكَ لِتَقۡتُلَنِی مَاۤ أَنَا۠ بِبَاسِطࣲ یَدِیَ إِلَیۡكَ لِأَقۡتُلَكَۖ إِنِّیۤ أَخَافُ ٱللَّهَ رَبَّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿٢٨﴾
‘আমাকে হত্যা করার জন্য তুমি তোমার হাত প্রসারিত করলেও তোমাকে হত্যা করার জন্য আমি তোমার প্রতি আমার হাত প্রসারিত করব না; নিশ্চয় আমি সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহকে ভয় করি’ [১]।
إِنِّیۤ أُرِیدُ أَن تَبُوۤأَ بِإِثۡمِی وَإِثۡمِكَ فَتَكُونَ مِنۡ أَصۡحَـٰبِ ٱلنَّارِۚ وَذَ ٰلِكَ جَزَ ٰۤؤُاْ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿٢٩﴾
‘নিশ্চয় আমি চাই তুমি আমার ও তোমার পাপ নিয়ে ফিরে যাও [১] ফলে তুমি আগুনের অধিবাসী হও এবং এটা যালিমদের প্রতিদান’।
فَطَوَّعَتۡ لَهُۥ نَفۡسُهُۥ قَتۡلَ أَخِیهِ فَقَتَلَهُۥ فَأَصۡبَحَ مِنَ ٱلۡخَـٰسِرِینَ ﴿٣٠﴾
অতঃপর তার নফ্স তাকে তার ভাই হত্যায় বশ করল। ফলে সে তাকে হত্যা করল; এভাবে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হল।
فَبَعَثَ ٱللَّهُ غُرَابࣰا یَبۡحَثُ فِی ٱلۡأَرۡضِ لِیُرِیَهُۥ كَیۡفَ یُوَ ٰرِی سَوۡءَةَ أَخِیهِۚ قَالَ یَـٰوَیۡلَتَىٰۤ أَعَجَزۡتُ أَنۡ أَكُونَ مِثۡلَ هَـٰذَا ٱلۡغُرَابِ فَأُوَ ٰرِیَ سَوۡءَةَ أَخِیۖ فَأَصۡبَحَ مِنَ ٱلنَّـٰدِمِینَ ﴿٣١﴾
অতঃপর আল্লাহ এক কাক পাঠালেন, যে তার ভাইয়ের মৃতদেহ কীভাবে গোপন করা যায় তা দেখানোর জন্য মাটি খুঁড়তে লাগল [১]। সে বলল, ‘হায়! আমি কি এ কাকের মতও হতে পারলাম না, যাতে আমার ভাইয়ের মৃতদেহ গোপন করতে পারি?’ অতঃপর সে লজ্জিত হল।
مِنۡ أَجۡلِ ذَ ٰلِكَ كَتَبۡنَا عَلَىٰ بَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ أَنَّهُۥ مَن قَتَلَ نَفۡسَۢا بِغَیۡرِ نَفۡسٍ أَوۡ فَسَادࣲ فِی ٱلۡأَرۡضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ ٱلنَّاسَ جَمِیعࣰا وَمَنۡ أَحۡیَاهَا فَكَأَنَّمَاۤ أَحۡیَا ٱلنَّاسَ جَمِیعࣰاۚ وَلَقَدۡ جَاۤءَتۡهُمۡ رُسُلُنَا بِٱلۡبَیِّنَـٰتِ ثُمَّ إِنَّ كَثِیرࣰا مِّنۡهُم بَعۡدَ ذَ ٰلِكَ فِی ٱلۡأَرۡضِ لَمُسۡرِفُونَ ﴿٣٢﴾
এ কারণেই বনী ইসরাঈলের উপর এ বিধান দিলাম যে, নরহত্যা বা যমীনে ধ্বংসাত্মক কাজ করার কারণ ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে [১] সে যেন সকল মানুষকেই হত্যা করল [২], আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে সে যেন সকল মানুষের প্রাণ রক্ষা করল [৩]। আর অবশ্যই তাদের কাছে আমার রাসূলগণ স্পষ্ট প্রমাণাদি নিয়ে এসেছিলেন, তারপর এদের অনেকে এরপরও যমীনে অবশ্যই সীমালংঘনকারী।
إِنَّمَا جَزَ ٰۤؤُاْ ٱلَّذِینَ یُحَارِبُونَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَیَسۡعَوۡنَ فِی ٱلۡأَرۡضِ فَسَادًا أَن یُقَتَّلُوۤاْ أَوۡ یُصَلَّبُوۤاْ أَوۡ تُقَطَّعَ أَیۡدِیهِمۡ وَأَرۡجُلُهُم مِّنۡ خِلَـٰفٍ أَوۡ یُنفَوۡاْ مِنَ ٱلۡأَرۡضِۚ ذَ ٰلِكَ لَهُمۡ خِزۡیࣱ فِی ٱلدُّنۡیَاۖ وَلَهُمۡ فِی ٱلۡـَٔاخِرَةِ عَذَابٌ عَظِیمٌ ﴿٣٣﴾
যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং দুনিয়ায় ধ্বংসাত্মক কাজ করে বেড়ায় তাদের শাস্তি কেবল এটাই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে বা ক্রুশবিদ্ধ করা হবে বা বিপরীত দিক থেকে তাদের হাত ও পা কেটে ফেলা হবে বা তাদেরকে দেশ থেকে নির্বাসিত করা হবে [১]। দুনিয়ায় এটাই তাদের লাঞ্ছনা ও আখেরাতে তাদের জন্য মহাশাস্তি রয়েছে [২]।
إِلَّا ٱلَّذِینَ تَابُواْ مِن قَبۡلِ أَن تَقۡدِرُواْ عَلَیۡهِمۡۖ فَٱعۡلَمُوۤاْ أَنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿٣٤﴾
তবে তারা ছাড়া, যারা তোমাদের আয়ত্তে আসার আগেই তওবা করবে [১]। সুতরাং জেনে রাখ যে, আল্লাহ অবশ্যই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَٱبۡتَغُوۤاْ إِلَیۡهِ ٱلۡوَسِیلَةَ وَجَـٰهِدُواْ فِی سَبِیلِهِۦ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ﴿٣٥﴾
হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং তাঁর নৈকট্য অন্বেষণ কর[১]। আর তাঁর পথে জিহাদ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।
إِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ لَوۡ أَنَّ لَهُم مَّا فِی ٱلۡأَرۡضِ جَمِیعࣰا وَمِثۡلَهُۥ مَعَهُۥ لِیَفۡتَدُواْ بِهِۦ مِنۡ عَذَابِ یَوۡمِ ٱلۡقِیَـٰمَةِ مَا تُقُبِّلَ مِنۡهُمۡۖ وَلَهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمࣱ ﴿٣٦﴾
নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে, কিয়ামতের দিন শাস্তি থেকে মুক্তির জন্য পণস্বরূপ যমীনে যা কিছু আছে যদি সেগুলোর সবটাই তাদের থাকে এবং তার সাথে সমপরিমাণও থাকে, তবুও তাদের কাছ থেকে সেসব গৃহীত হবে না এবং তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি [১]।
یُرِیدُونَ أَن یَخۡرُجُواْ مِنَ ٱلنَّارِ وَمَا هُم بِخَـٰرِجِینَ مِنۡهَاۖ وَلَهُمۡ عَذَابࣱ مُّقِیمࣱ ﴿٣٧﴾
তারা আগুন থেকে বের হতে চাইবে; কিন্তু তারা সেখান থেকে বের হবার নয় এবং তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী শাস্তি।
وَٱلسَّارِقُ وَٱلسَّارِقَةُ فَٱقۡطَعُوۤاْ أَیۡدِیَهُمَا جَزَاۤءَۢ بِمَا كَسَبَا نَكَـٰلࣰا مِّنَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ عَزِیزٌ حَكِیمࣱ ﴿٣٨﴾
আর পুরুষ চোর ও নারী চোর, তাদের উভয়ের হাত কেটে দাও; তাদের কৃতকর্মের ফল ও আল্লাহর পক্ষ থেকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসেবে [১]। আর আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
فَمَن تَابَ مِنۢ بَعۡدِ ظُلۡمِهِۦ وَأَصۡلَحَ فَإِنَّ ٱللَّهَ یَتُوبُ عَلَیۡهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمٌ ﴿٣٩﴾
অতঃপর সীমালংঘন করার পর কেউ তওবা করলে ও নিজেকে সংশোধন করলে নিশ্চয় আল্লাহ তার তওবা কবুল করবেন; নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু [১]।
أَلَمۡ تَعۡلَمۡ أَنَّ ٱللَّهَ لَهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ یُعَذِّبُ مَن یَشَاۤءُ وَیَغۡفِرُ لِمَن یَشَاۤءُۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرࣱ ﴿٤٠﴾
আপনি কি জানেন না যে, আসমানসমূহ ও যমীনের সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই? যাকে ইচ্ছে তিনি শাস্তি দেন আর যাকে ইচ্ছে তিনি ক্ষমা করেন এবং আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
۞ یَـٰۤأَیُّهَا ٱلرَّسُولُ لَا یَحۡزُنكَ ٱلَّذِینَ یُسَـٰرِعُونَ فِی ٱلۡكُفۡرِ مِنَ ٱلَّذِینَ قَالُوۤاْ ءَامَنَّا بِأَفۡوَ ٰهِهِمۡ وَلَمۡ تُؤۡمِن قُلُوبُهُمۡۛ وَمِنَ ٱلَّذِینَ هَادُواْۛ سَمَّـٰعُونَ لِلۡكَذِبِ سَمَّـٰعُونَ لِقَوۡمٍ ءَاخَرِینَ لَمۡ یَأۡتُوكَۖ یُحَرِّفُونَ ٱلۡكَلِمَ مِنۢ بَعۡدِ مَوَاضِعِهِۦۖ یَقُولُونَ إِنۡ أُوتِیتُمۡ هَـٰذَا فَخُذُوهُ وَإِن لَّمۡ تُؤۡتَوۡهُ فَٱحۡذَرُواْۚ وَمَن یُرِدِ ٱللَّهُ فِتۡنَتَهُۥ فَلَن تَمۡلِكَ لَهُۥ مِنَ ٱللَّهِ شَیۡـًٔاۚ أُوْلَـٰۤىِٕكَ ٱلَّذِینَ لَمۡ یُرِدِ ٱللَّهُ أَن یُطَهِّرَ قُلُوبَهُمۡۚ لَهُمۡ فِی ٱلدُّنۡیَا خِزۡیࣱۖ وَلَهُمۡ فِی ٱلۡـَٔاخِرَةِ عَذَابٌ عَظِیمࣱ ﴿٤١﴾
হে রাসূল! আপনাকে যেন তারা চিন্তিত না করে যারা কুফরীর দিকে দ্রুত এগিয়ে যায় –যারা মুখে বলে, ‘ঈমান এনেছি’ অথচ তাদের অন্তর ঈমান আনেনি [১] –এবং যারা ইয়াহুদী[২] তারা (সকলেই) মিথ্যা শুনতে অধিক তৎপর [৩], আপনার কাছে আসে নি এমন এক ভিন্ন দলের পক্ষে যারা কান পেতে থাকে [৪]। শব্দগুলো যথাযথ সুবিন্যস্ত থাকার পরও তারা সেগুলোর অর্থ বিকৃত করে [৫]। তারা বলে, ‘এরূপ বিধান দিলে গ্রহণ করো এবং সেরূপ না দিলে বর্জন করো’ [৬]। আর আল্লাহ যাকে ফিতনায় ফেলতে চান তার জন্য আল্লাহর কাছে আপনার কিছুই করার নেই। এরাই হচ্ছে তারা যাদের হৃদয়কে আল্লাহ বিশুদ্ধ করতে চান না; তাদের জন্য আছে দুনিয়ায় লাঞ্ছনা, আর তাদের জন্য রয়েছে আখেরাতে মহাশাস্তি।
سَمَّـٰعُونَ لِلۡكَذِبِ أَكَّـٰلُونَ لِلسُّحۡتِۚ فَإِن جَاۤءُوكَ فَٱحۡكُم بَیۡنَهُمۡ أَوۡ أَعۡرِضۡ عَنۡهُمۡۖ وَإِن تُعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ فَلَن یَضُرُّوكَ شَیۡـࣰٔاۖ وَإِنۡ حَكَمۡتَ فَٱحۡكُم بَیۡنَهُم بِٱلۡقِسۡطِۚ إِنَّ ٱللَّهَ یُحِبُّ ٱلۡمُقۡسِطِینَ ﴿٤٢﴾
তারা মিথ্যা শুনতে খুবই আগ্রহশীল এবং অবৈধ সম্পদ খাওয়াতে অত্যন্ত আসক্ত [১]; সুতরাং তারা যদি আপনার কাছে আসে তবে তাদের বিচার নিষ্পত্তি করবেন বা তাদেরকে উপেক্ষা করবেন [২]। আপনি যদি তাদেরকে উপেক্ষা করেন তবে তারা আপনার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। আর যদি বিচার নিষ্পত্তি করেন তবে তাদের মধ্যে ন্যায় বিচার করবেন [৩]; নিশ্চয়ই আল্লাহ ন্যায়পরায়ণদেরকে ভালোবাসেন।
وَكَیۡفَ یُحَكِّمُونَكَ وَعِندَهُمُ ٱلتَّوۡرَىٰةُ فِیهَا حُكۡمُ ٱللَّهِ ثُمَّ یَتَوَلَّوۡنَ مِنۢ بَعۡدِ ذَ ٰلِكَۚ وَمَاۤ أُوْلَـٰۤىِٕكَ بِٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿٤٣﴾
আর তারা আপনার উপর কিভাবে বিচার ভার ন্যস্ত করবে অথচ তাদের কাছে রয়েছে তাওরাত যাতে রয়েছে আল্লাহর বিধান? তা সত্ত্বেও তারা এরপর মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং তারা মুমিন নয়।
إِنَّاۤ أَنزَلۡنَا ٱلتَّوۡرَىٰةَ فِیهَا هُدࣰى وَنُورࣱۚ یَحۡكُمُ بِهَا ٱلنَّبِیُّونَ ٱلَّذِینَ أَسۡلَمُواْ لِلَّذِینَ هَادُواْ وَٱلرَّبَّـٰنِیُّونَ وَٱلۡأَحۡبَارُ بِمَا ٱسۡتُحۡفِظُواْ مِن كِتَـٰبِ ٱللَّهِ وَكَانُواْ عَلَیۡهِ شُهَدَاۤءَۚ فَلَا تَخۡشَوُاْ ٱلنَّاسَ وَٱخۡشَوۡنِ وَلَا تَشۡتَرُواْ بِـَٔایَـٰتِی ثَمَنࣰا قَلِیلࣰاۚ وَمَن لَّمۡ یَحۡكُم بِمَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأُوْلَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡكَـٰفِرُونَ ﴿٤٤﴾
নিশ্চয় আমরা তাওরাত নাযিল করেছিলাম; এতে ছিল হেদায়াত ও আলো; নবীগণ, যারা ছিলেন অনুগত, তারা ইয়াহুদীদেরকে তদনুসারে হুকুম দিতেন [১]। আর রব্বানী ও বিদ্বানগণও (তদনুসারে হুকুম দিতেন), কারণ তাদেরকে আল্লাহর কিতাবের রক্ষক করা হয়েছিল। আর তারা ছিল এর উপর সাক্ষী [২]। কাজেই তোমরা মানুষকে ভয় করো না এবং আমাকেই ভয় কর। আর আমার আয়াতসমূহের বিনিময়ে তুচ্ছ মূল্য ক্রয় করো না। আর আল্লাহ যা নাযিল করেছেন সে অনুযায়ী যারা বিধান দেয় না, তারাই কাফের [৩]।
وَكَتَبۡنَا عَلَیۡهِمۡ فِیهَاۤ أَنَّ ٱلنَّفۡسَ بِٱلنَّفۡسِ وَٱلۡعَیۡنَ بِٱلۡعَیۡنِ وَٱلۡأَنفَ بِٱلۡأَنفِ وَٱلۡأُذُنَ بِٱلۡأُذُنِ وَٱلسِّنَّ بِٱلسِّنِّ وَٱلۡجُرُوحَ قِصَاصࣱۚ فَمَن تَصَدَّقَ بِهِۦ فَهُوَ كَفَّارَةࣱ لَّهُۥۚ وَمَن لَّمۡ یَحۡكُم بِمَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأُوْلَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلظَّـٰلِمُونَ ﴿٤٥﴾
আর আমরা তাদের উপর তাতে অত্যাবশ্যক করে দিয়েছিলাম যে, প্রাণের বদলে প্রাণ, চোখের বদলে চোখ, নাকের বদলে নাক, কানের বদলে কান, দাঁতের বদলে দাঁত এবং যখমের বদলে অনুরূপ যখম। তারপর কেউ তা ক্ষমা করলে তা তার জন্য কাফফারা হবে [১]। আর আল্লাহ যা নাযিল করেছেন সে অনুযায়ী যারা বিধান দেয় না, তারাই যালিম।
وَقَفَّیۡنَا عَلَىٰۤ ءَاثَـٰرِهِم بِعِیسَى ٱبۡنِ مَرۡیَمَ مُصَدِّقࣰا لِّمَا بَیۡنَ یَدَیۡهِ مِنَ ٱلتَّوۡرَىٰةِۖ وَءَاتَیۡنَـٰهُ ٱلۡإِنجِیلَ فِیهِ هُدࣰى وَنُورࣱ وَمُصَدِّقࣰا لِّمَا بَیۡنَ یَدَیۡهِ مِنَ ٱلتَّوۡرَىٰةِ وَهُدࣰى وَمَوۡعِظَةࣰ لِّلۡمُتَّقِینَ ﴿٤٦﴾
আর আমরা তাদের পশ্চাতে মারইয়াম-পুত্র ‘ঈসাকে [১] পাঠিয়েছিলাম, তার সামনে তাওরাত থেকে যা বিদ্যমান রয়েছে তার সত্যতা প্রতিপন্নকারীরূপে। আর আমরা তাকে ইঞ্জীল দিয়েছিলাম, এতে রয়েছে হেদায়াত ও আলো; আর তা ছিল তার সামনে অবশিষ্ট তাওরাতের সত্যতা প্রতিপন্নকারী এবং মুত্তাকীদের জন্য হেদায়াত ও উপদেশস্বরূপ।
وَلۡیَحۡكُمۡ أَهۡلُ ٱلۡإِنجِیلِ بِمَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ فِیهِۚ وَمَن لَّمۡ یَحۡكُم بِمَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأُوْلَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡفَـٰسِقُونَ ﴿٤٧﴾
আর ইঞ্জীল অনুসারীগণ যেন আল্লাহ তাতে যা নাযিল করেছেন তদনুসারে হুকুম দেয় [১]। আর আল্লাহ যা নাযিল করেছেন সে অনুযায়ী যারা বিধান দেয় না, তারাই ফাসেক [২]।
وَأَنزَلۡنَاۤ إِلَیۡكَ ٱلۡكِتَـٰبَ بِٱلۡحَقِّ مُصَدِّقࣰا لِّمَا بَیۡنَ یَدَیۡهِ مِنَ ٱلۡكِتَـٰبِ وَمُهَیۡمِنًا عَلَیۡهِۖ فَٱحۡكُم بَیۡنَهُم بِمَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُۖ وَلَا تَتَّبِعۡ أَهۡوَاۤءَهُمۡ عَمَّا جَاۤءَكَ مِنَ ٱلۡحَقِّۚ لِكُلࣲّ جَعَلۡنَا مِنكُمۡ شِرۡعَةࣰ وَمِنۡهَاجࣰاۚ وَلَوۡ شَاۤءَ ٱللَّهُ لَجَعَلَكُمۡ أُمَّةࣰ وَ ٰحِدَةࣰ وَلَـٰكِن لِّیَبۡلُوَكُمۡ فِی مَاۤ ءَاتَىٰكُمۡۖ فَٱسۡتَبِقُواْ ٱلۡخَیۡرَ ٰتِۚ إِلَى ٱللَّهِ مَرۡجِعُكُمۡ جَمِیعࣰا فَیُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمۡ فِیهِ تَخۡتَلِفُونَ ﴿٤٨﴾
আর আমরা আপনার প্রতি সত্যসহ কিতাব নাযিল করেছি ইতোপূর্বেকার কিতাবসমূহের সত্যতা প্রতিপন্নকারী ও সেগুলোর তদারককারীরূপে [১]। সুতরাং আল্লাহ যা নাযিল করেছেন সে অনুযায়ী তাদের বিচার নিষ্পত্তি করুন এবং যে সত্য আপনার নিকট এসেছে তা ছেড়ে তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করবেন না [২]। তোমাদের প্রত্যেকের জন্যই আমরা একটা করে শরীয়ত ও স্পষ্টপথ নির্ধারণ করে দিয়েছি [৩]। আর আল্লাহ ইচ্ছে করলে তোমাদেরকে এক উম্মত করতে পারতেন, কিন্তু তিনি তোমাদেরকে যা দিয়েছেন তা দিয়ে তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে চান। কাজেই সৎকাজে তোমরা প্রতিযোগিতা কর। আল্লাহর দিকেই তোমাদের সবার প্রত্যাবর্তনস্থল। অতঃপর তোমরা যে বিষয়ে মতভেদ করছিলে, সে সম্বন্ধে তিনি তোমাদেরকে অবহিত করবেন।
وَأَنِ ٱحۡكُم بَیۡنَهُم بِمَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ وَلَا تَتَّبِعۡ أَهۡوَاۤءَهُمۡ وَٱحۡذَرۡهُمۡ أَن یَفۡتِنُوكَ عَنۢ بَعۡضِ مَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ إِلَیۡكَۖ فَإِن تَوَلَّوۡاْ فَٱعۡلَمۡ أَنَّمَا یُرِیدُ ٱللَّهُ أَن یُصِیبَهُم بِبَعۡضِ ذُنُوبِهِمۡۗ وَإِنَّ كَثِیرࣰا مِّنَ ٱلنَّاسِ لَفَـٰسِقُونَ ﴿٤٩﴾
আর আল্লাহ যা নাযিল করেছেন আপনি সে অনুযায়ী বিচার নিষ্পত্তি করুন ও তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করবেন না এবং তাদের ব্যাপারে সতর্ক হোন, যাতে আল্লাহ আপনার প্রতি যা নাযিল করেছেন তারা এর কোনো কিছু হতে আপনাকে বিচ্যুত না করে। অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে জেনে রাখুন যে, আল্লাহ তাদেরকে কেবল তাদের কোনো কোনো পাপের জন্য শাস্তি দিতে চান। আর নিশ্চয় মানুষের মধ্যে অনেকেই তো ফাসেক।
أَفَحُكۡمَ ٱلۡجَـٰهِلِیَّةِ یَبۡغُونَۚ وَمَنۡ أَحۡسَنُ مِنَ ٱللَّهِ حُكۡمࣰا لِّقَوۡمࣲ یُوقِنُونَ ﴿٥٠﴾
তবে কি তারা জাহেলিয়াতের বিধি-বিধান কামনা করে [১]? আর দৃঢ় বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য বিধান প্রদানে আল্লাহর চেয়ে আর কে শ্রেষ্ঠতর?
۞ یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ لَا تَتَّخِذُواْ ٱلۡیَهُودَ وَٱلنَّصَـٰرَىٰۤ أَوۡلِیَاۤءَۘ بَعۡضُهُمۡ أَوۡلِیَاۤءُ بَعۡضࣲۚ وَمَن یَتَوَلَّهُم مِّنكُمۡ فَإِنَّهُۥ مِنۡهُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿٥١﴾
হে মুমিনগণ! তোমরা ইয়াহুদী ও নাসারাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু। আর তোমাদের মধ্যে কেউ তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করলে সে নিশ্চয় তাদেরই একজন [১]। নিশ্চয় আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে হেদায়াত দেন না।
فَتَرَى ٱلَّذِینَ فِی قُلُوبِهِم مَّرَضࣱ یُسَـٰرِعُونَ فِیهِمۡ یَقُولُونَ نَخۡشَىٰۤ أَن تُصِیبَنَا دَاۤىِٕرَةࣱۚ فَعَسَى ٱللَّهُ أَن یَأۡتِیَ بِٱلۡفَتۡحِ أَوۡ أَمۡرࣲ مِّنۡ عِندِهِۦ فَیُصۡبِحُواْ عَلَىٰ مَاۤ أَسَرُّواْ فِیۤ أَنفُسِهِمۡ نَـٰدِمِینَ ﴿٥٢﴾
সুতরাং যাদের অন্তরে অসুখ রয়েছে আপনি তাদেরকে খুব তাড়াতাড়ি তাদের সাথে মিলিত হতে দেখবেন এ বলে, ‘আমরা আশংকা করছি যে, কোনো বিপদ আমাদের আক্রান্ত করবে’ [১]। অতঃপর হয়ত আল্লাহ বিজয় বা তাঁর কাছ থেকে এমন কিছু দেবেন যাতে তারা তাদের অন্তরে যা গোপন রেখেছিল সে জন্য লজ্জিত হবে [২]।
وَیَقُولُ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤاْ أَهَـٰۤؤُلَاۤءِ ٱلَّذِینَ أَقۡسَمُواْ بِٱللَّهِ جَهۡدَ أَیۡمَـٰنِهِمۡ إِنَّهُمۡ لَمَعَكُمۡۚ حَبِطَتۡ أَعۡمَـٰلُهُمۡ فَأَصۡبَحُواْ خَـٰسِرِینَ ﴿٥٣﴾
আর মুমিনগণ বলবে, ‘এরাই কি তারা, যারা আল্লাহর নামে দৃঢ়ভাবে শপথ করেছিল যে, নিশ্চয় তারা তোমাদের সঙ্গেই আছে?’ তাদের আমলসমূহ নিস্ফল হয়েছে; ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে [১]।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ مَن یَرۡتَدَّ مِنكُمۡ عَن دِینِهِۦ فَسَوۡفَ یَأۡتِی ٱللَّهُ بِقَوۡمࣲ یُحِبُّهُمۡ وَیُحِبُّونَهُۥۤ أَذِلَّةٍ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِینَ أَعِزَّةٍ عَلَى ٱلۡكَـٰفِرِینَ یُجَـٰهِدُونَ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ وَلَا یَخَافُونَ لَوۡمَةَ لَاۤىِٕمࣲۚ ذَ ٰلِكَ فَضۡلُ ٱللَّهِ یُؤۡتِیهِ مَن یَشَاۤءُۚ وَٱللَّهُ وَ ٰسِعٌ عَلِیمٌ ﴿٥٤﴾
হে মুমিনগণ! তোমাদের মধ্যে কেউ দীন থেকে ফিরে গেলে নিশ্চয়ই আল্লাহ এমন এক সম্প্রদায় [১] আনবেন যাদেরকে তিনি ভালোবাসবেন এবং যারা তাঁকে ভালোবাসবে; তারা মুমিনদের প্রতি কোমল ও কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে; তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে এবং কোনো নিন্দুকের নিন্দার ভয় করবে না [২]; এটা আল্লাহর অনুগ্রহ, যাকে ইচ্ছে তাকে তিনি তা দান করেন এবং আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ [৩]।
إِنَّمَا وَلِیُّكُمُ ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥ وَٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ ٱلَّذِینَ یُقِیمُونَ ٱلصَّلَوٰةَ وَیُؤۡتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَهُمۡ رَ ٰكِعُونَ ﴿٥٥﴾
তোমাদের বন্ধু [১] তো কেবল আল্লাহ, তাঁর রাসূল [২] ও মুমিনগণ –যারা সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং তারা বিনীত [৩]।
وَمَن یَتَوَلَّ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ فَإِنَّ حِزۡبَ ٱللَّهِ هُمُ ٱلۡغَـٰلِبُونَ ﴿٥٦﴾
আর যে আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মুমিনগণকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে তবে নিশ্চয় আল্লাহর দলই বিজয়ী [১]।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ لَا تَتَّخِذُواْ ٱلَّذِینَ ٱتَّخَذُواْ دِینَكُمۡ هُزُوࣰا وَلَعِبࣰا مِّنَ ٱلَّذِینَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَـٰبَ مِن قَبۡلِكُمۡ وَٱلۡكُفَّارَ أَوۡلِیَاۤءَۚ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿٥٧﴾
হে মুমিনগণ! তোমাদের আগে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে যারা তোমাদের দীনকে হাসি-তামাশা ও খেলার বস্তুরূপে গ্রহণ করে তাদেরকে ও কাফেরদেরকে তোমরা বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না এবং তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাক [১]।
وَإِذَا نَادَیۡتُمۡ إِلَى ٱلصَّلَوٰةِ ٱتَّخَذُوهَا هُزُوࣰا وَلَعِبࣰاۚ ذَ ٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ قَوۡمࣱ لَّا یَعۡقِلُونَ ﴿٥٨﴾
আর যখন তোমরা সালাতের প্রতি আহবান কর তখন তারা সেটাকে হাসি-তামাশা ও খেলার বস্তুরূপে গ্রহণ করে –এটা এ জন্য যে, তারা এমন এক সম্প্রদায় যারা বোঝে না।
قُلۡ یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ هَلۡ تَنقِمُونَ مِنَّاۤ إِلَّاۤ أَنۡ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ وَمَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡنَا وَمَاۤ أُنزِلَ مِن قَبۡلُ وَأَنَّ أَكۡثَرَكُمۡ فَـٰسِقُونَ ﴿٥٩﴾
বলুন, ‘হে কিতাবীরা! একমাত্র এ কারণেই তো তোমরা আমাদের প্রতি শত্রুতা পোষণ কর যে, আমরা আল্লাহ ও আমাদের প্রতি যা নাযিল হয়েছে এবং যা আগে নাযিল হয়েছে তাতে ঈমান এনেছি। আর নিশ্চয় তোমাদের অধিকাংশ ফাসেক’ [১]।
قُلۡ هَلۡ أُنَبِّئُكُم بِشَرࣲّ مِّن ذَ ٰلِكَ مَثُوبَةً عِندَ ٱللَّهِۚ مَن لَّعَنَهُ ٱللَّهُ وَغَضِبَ عَلَیۡهِ وَجَعَلَ مِنۡهُمُ ٱلۡقِرَدَةَ وَٱلۡخَنَازِیرَ وَعَبَدَ ٱلطَّـٰغُوتَۚ أُوْلَـٰۤىِٕكَ شَرࣱّ مَّكَانࣰا وَأَضَلُّ عَن سَوَاۤءِ ٱلسَّبِیلِ ﴿٦٠﴾
বলুন, ‘আমি কি তোমাদেরকে এর চেয়ে নিকৃষ্ট পরিণামের সংবাদ দেব যা আল্লাহর কাছে আছে? যাকে আল্লাহ লা’নত করেছেন এবং যার উপর তিনি ক্রোধান্বিত হয়েছেন। আর যাদের কাউকে তিনি বানর ও কাউকে শূকর করেছেন [১] এবং (তাদের কেউ) তাগূতের ইবাদাত করেছে। তারাই অবস্থানের দিক থেকে নিকৃষ্ট এবং সরল পথ থেকে সবচেয়ে বেশি বিচ্যুত’।
وَإِذَا جَاۤءُوكُمۡ قَالُوۤاْ ءَامَنَّا وَقَد دَّخَلُواْ بِٱلۡكُفۡرِ وَهُمۡ قَدۡ خَرَجُواْ بِهِۦۚ وَٱللَّهُ أَعۡلَمُ بِمَا كَانُواْ یَكۡتُمُونَ ﴿٦١﴾
আর তারা যখন তোমাদের কাছে আসে তখন বলে, ‘আমরা ঈমান এনেছি’, অথচ তারা কুফর নিয়েই প্রবেশ করেছে এবং তারা তা নিয়েই বেরিয়ে গেছে। আর তারা যা গোপন করে, আল্লাহ তা ভালোভাবেই জানেন।
وَتَرَىٰ كَثِیرࣰا مِّنۡهُمۡ یُسَـٰرِعُونَ فِی ٱلۡإِثۡمِ وَٱلۡعُدۡوَ ٰنِ وَأَكۡلِهِمُ ٱلسُّحۡتَۚ لَبِئۡسَ مَا كَانُواْ یَعۡمَلُونَ ﴿٦٢﴾
আর তাদের অনেককেই আপনি দেখবেন পাপে, সীমালঙ্ঘনে ও অবৈধ খাওয়াতে তৎপর [১]; তারা যা করে তা কতই না নিকৃষ্ট।
لَوۡلَا یَنۡهَىٰهُمُ ٱلرَّبَّـٰنِیُّونَ وَٱلۡأَحۡبَارُ عَن قَوۡلِهِمُ ٱلۡإِثۡمَ وَأَكۡلِهِمُ ٱلسُّحۡتَۚ لَبِئۡسَ مَا كَانُواْ یَصۡنَعُونَ ﴿٦٣﴾
রাব্বানীগণ ও পণ্ডিতগণ [১] কেন তাদেরকে পাপ কথা বলা ও অবৈধ খাওয়া থেকে নিষেধ করে না? এরা যা করছে নিশ্চয়ই তা কতই না নিকৃষ্ট [২]।
وَقَالَتِ ٱلۡیَهُودُ یَدُ ٱللَّهِ مَغۡلُولَةٌۚ غُلَّتۡ أَیۡدِیهِمۡ وَلُعِنُواْ بِمَا قَالُواْۘ بَلۡ یَدَاهُ مَبۡسُوطَتَانِ یُنفِقُ كَیۡفَ یَشَاۤءُۚ وَلَیَزِیدَنَّ كَثِیرࣰا مِّنۡهُم مَّاۤ أُنزِلَ إِلَیۡكَ مِن رَّبِّكَ طُغۡیَـٰنࣰا وَكُفۡرࣰاۚ وَأَلۡقَیۡنَا بَیۡنَهُمُ ٱلۡعَدَ ٰوَةَ وَٱلۡبَغۡضَاۤءَ إِلَىٰ یَوۡمِ ٱلۡقِیَـٰمَةِۚ كُلَّمَاۤ أَوۡقَدُواْ نَارࣰا لِّلۡحَرۡبِ أَطۡفَأَهَا ٱللَّهُۚ وَیَسۡعَوۡنَ فِی ٱلۡأَرۡضِ فَسَادࣰاۚ وَٱللَّهُ لَا یُحِبُّ ٱلۡمُفۡسِدِینَ ﴿٦٤﴾
আর ইয়াহুদীরা বলে, ‘আল্লাহর হাত [১] রুদ্ধ’ [২]। তাদের হাতই রুদ্ধ করা হয়েছে এবং তারা যা বলে সে জন্য তারা অভিশপ্ত [৩], বরং আল্লাহর উভয় হাতই প্রসারিত [৪]; যেভাবে ইচ্ছা তিনি দান করেন। আর আপনার রবের কাছ থেকে যা আপনার প্রতি নাযিল করা হয়েছে, তা অবশ্যই তাদের অনেকের অবাধ্যতা ও কুফরী বৃদ্ধি করবে। আর আমরা তাদের মধ্যে কেয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী শত্রুতা ও বিদ্বেষ ঢেলে দিয়েছি [৫]। যখনই তারা যুদ্ধের আগুন জ্বালায় তখনই আল্লাহ তা নিভিয়ে দেন এবং তারা দুনিয়ায় ফাসাদ করে বেড়ায়; আর আল্লাহ ফাসাদকারীদেরকে ভালোবাসেন না।
وَلَوۡ أَنَّ أَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ ءَامَنُواْ وَٱتَّقَوۡاْ لَكَفَّرۡنَا عَنۡهُمۡ سَیِّـَٔاتِهِمۡ وَلَأَدۡخَلۡنَـٰهُمۡ جَنَّـٰتِ ٱلنَّعِیمِ ﴿٦٥﴾
আর যদি কিতাবীরা ঈমান আনত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত তাহলে আমরা তাদের পাসমূহ অবশ্যই মুছে ফেলতাম এবং তাদেরকে সুখময় জান্নাতে প্রবেশ করাতাম।
وَلَوۡ أَنَّهُمۡ أَقَامُواْ ٱلتَّوۡرَىٰةَ وَٱلۡإِنجِیلَ وَمَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡهِم مِّن رَّبِّهِمۡ لَأَكَلُواْ مِن فَوۡقِهِمۡ وَمِن تَحۡتِ أَرۡجُلِهِمۚ مِّنۡهُمۡ أُمَّةࣱ مُّقۡتَصِدَةࣱۖ وَكَثِیرࣱ مِّنۡهُمۡ سَاۤءَ مَا یَعۡمَلُونَ ﴿٦٦﴾
আর তারা যদি তাওরাত, ইঞ্জীল ও তাদের রবের কাছ থেকে তাদের প্রতি যা নাযিল হয়েছে তা প্রতিষ্ঠিত করত [১], তাহলে তারা অবশ্যই তাদের উপর থেকে ও পায়ের নীচ থেকে আহারাদী লাভ করত [২]। তাদের মধ্যে একদল রয়েছে যারা মধ্যপন্থী এবং তাদের অধিকাংশ যা করে তা কতই না নিকৃষ্ট [৩]।
۞ یَـٰۤأَیُّهَا ٱلرَّسُولُ بَلِّغۡ مَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡكَ مِن رَّبِّكَۖ وَإِن لَّمۡ تَفۡعَلۡ فَمَا بَلَّغۡتَ رِسَالَتَهُۥۚ وَٱللَّهُ یَعۡصِمُكَ مِنَ ٱلنَّاسِۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿٦٧﴾
হে রাসূল! আপনার রবের কাছ থেকে আপনার প্রতি যা নাযিল হয়েছে তা প্রচার করুন; যদি না করেন তবে তো আপনি তাঁর বার্তা প্রচার করলেন না [১]। আর আল্লাহ আপনাকে মানুষ থেকে রক্ষা করবেন [২]। নিশ্চয় আল্লাহ কাফের সম্প্রদায়কে হেদায়াত করেন না।
قُلۡ یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ لَسۡتُمۡ عَلَىٰ شَیۡءٍ حَتَّىٰ تُقِیمُواْ ٱلتَّوۡرَىٰةَ وَٱلۡإِنجِیلَ وَمَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡكُم مِّن رَّبِّكُمۡۗ وَلَیَزِیدَنَّ كَثِیرࣰا مِّنۡهُم مَّاۤ أُنزِلَ إِلَیۡكَ مِن رَّبِّكَ طُغۡیَـٰنࣰا وَكُفۡرࣰاۖ فَلَا تَأۡسَ عَلَى ٱلۡقَوۡمِ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿٦٨﴾
বলুন, ‘হে কিতাবীরা! তাওরাত, ইঞ্জীল ও যা তোমাদের রবের কাছ থেকে তোমাদের প্রতি নাযিল হয়েছে তা [১] প্রতিষ্ঠা না করা পর্যন্ত তোমরা কোনো ভিত্তির উপর নও [২]।’ আর আপনার রবের কাছ থেকে আপনার প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে তা তাদের অনেকের অবাধ্যতা ও কুফরীই বৃদ্ধি করবে। সুতরাং আপনি কাফের সম্প্রদায়ের জন্য আফসোস করবেন না।
إِنَّ ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ وَٱلَّذِینَ هَادُواْ وَٱلصَّـٰبِـُٔونَ وَٱلنَّصَـٰرَىٰ مَنۡ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ وَعَمِلَ صَـٰلِحࣰا فَلَا خَوۡفٌ عَلَیۡهِمۡ وَلَا هُمۡ یَحۡزَنُونَ ﴿٦٩﴾
নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে এবং যারা ইয়াহুদী হয়েছে, আর সাবেয়ী [১] ও নাসারাগণের মধ্যে যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের উপর ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না [২]।
لَقَدۡ أَخَذۡنَا مِیثَـٰقَ بَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ وَأَرۡسَلۡنَاۤ إِلَیۡهِمۡ رُسُلࣰاۖ كُلَّمَا جَاۤءَهُمۡ رَسُولُۢ بِمَا لَا تَهۡوَىٰۤ أَنفُسُهُمۡ فَرِیقࣰا كَذَّبُواْ وَفَرِیقࣰا یَقۡتُلُونَ ﴿٧٠﴾
অবশ্যই আমরা বনী ইসরাঈলের কাছ থেকে অংগীকার নিয়েছিলাম ও তাদের কাছে অনেক রাসূল পাঠিয়েছিলাম। যখনি কোনো রাসূল তাদের কাছে এমন কিছু আনে যা তাদের মনঃপূত নয়, তখনি তারা রাসূলগণের কারও উপর মিথ্যারোপ করেছে এবং অপর কাউকে হত্যা করেছে।
وَحَسِبُوۤاْ أَلَّا تَكُونَ فِتۡنَةࣱ فَعَمُواْ وَصَمُّواْ ثُمَّ تَابَ ٱللَّهُ عَلَیۡهِمۡ ثُمَّ عَمُواْ وَصَمُّواْ كَثِیرࣱ مِّنۡهُمۡۚ وَٱللَّهُ بَصِیرُۢ بِمَا یَعۡمَلُونَ ﴿٧١﴾
আর তারা মনে করেছিল যে, তাদের কোনো বিপর্যয় হবে না [১]; ফলে তারা অন্ধ ও বধির হয়ে গিয়েছিল। তারপর আল্লাহ তাদের তাওবাহ কবুল করেছিলেন। তারপর তাদের অনেকেই অন্ধ ও বধির হয়েছিল [২]। আর তারা যা আমল করে আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা।
لَقَدۡ كَفَرَ ٱلَّذِینَ قَالُوۤاْ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلۡمَسِیحُ ٱبۡنُ مَرۡیَمَۖ وَقَالَ ٱلۡمَسِیحُ یَـٰبَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ ٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ رَبِّی وَرَبَّكُمۡۖ إِنَّهُۥ مَن یُشۡرِكۡ بِٱللَّهِ فَقَدۡ حَرَّمَ ٱللَّهُ عَلَیۡهِ ٱلۡجَنَّةَ وَمَأۡوَىٰهُ ٱلنَّارُۖ وَمَا لِلظَّـٰلِمِینَ مِنۡ أَنصَارࣲ ﴿٧٢﴾
যারা বলে, নিশ্চয় আল্লাহ্ তিনি তো মার্ইয়াম-তনয় মসীহ’, অবশ্যই তারা কুফরী করেছে [১]। অথচ মসীহ বলেছিলেন, ‘হে ইসরাঈল-সন্তানগণ! তোমরা আমার রব ও তোমাদের রব আল্লাহর ইবাদত কর।’ নিশ্চয় কেউ আল্লাহর সাথে শরীক করলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত অবশ্যই হারাম করে দিয়েছেন [২] এবং তার আবাস হবে জাহান্নাম। আর যালেমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই।
لَّقَدۡ كَفَرَ ٱلَّذِینَ قَالُوۤاْ إِنَّ ٱللَّهَ ثَالِثُ ثَلَـٰثَةࣲۘ وَمَا مِنۡ إِلَـٰهٍ إِلَّاۤ إِلَـٰهࣱ وَ ٰحِدࣱۚ وَإِن لَّمۡ یَنتَهُواْ عَمَّا یَقُولُونَ لَیَمَسَّنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ مِنۡهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمٌ ﴿٧٣﴾
তারা অবশ্যই কুফরী করেছে –যারা বলে, ‘আল্লাহ তো তিনের মধ্যে তৃতীয় [১], অথচ এক ইলাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই। আর তারা যা বলে তা থেকে বিরত না হলে তাদের মধ্যে যারা কুফরী করেছে, তাদের উপর অবশ্যই কষ্টদায়ক শাস্তি আপতিত হবে।
أَفَلَا یَتُوبُونَ إِلَى ٱللَّهِ وَیَسۡتَغۡفِرُونَهُۥۚ وَٱللَّهُ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿٧٤﴾
তবে কি তারা আল্লাহর দিকে ফিরে আসবে না ও তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে না? আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু [১]।
مَّا ٱلۡمَسِیحُ ٱبۡنُ مَرۡیَمَ إِلَّا رَسُولࣱ قَدۡ خَلَتۡ مِن قَبۡلِهِ ٱلرُّسُلُ وَأُمُّهُۥ صِدِّیقَةࣱۖ كَانَا یَأۡكُلَانِ ٱلطَّعَامَۗ ٱنظُرۡ كَیۡفَ نُبَیِّنُ لَهُمُ ٱلۡـَٔایَـٰتِ ثُمَّ ٱنظُرۡ أَنَّىٰ یُؤۡفَكُونَ ﴿٧٥﴾
মারইয়াম-তনয় মসীহ শুধু একজন রাসূল। তার আগে বহু রাসূল গত হয়েছেন [১] এবং তাঁর মা অত্যন্ত সত্য নিষ্ঠা ছিলেন। তারা দুজনেই খাওয়া-দাওয়া করতেন [২]। দেখনু আমরা তাদের জন্য আয়াতগুলোকে কেমন বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করি; তারপরও দেখুন, তারা কিভাবে সত্যবিমুখ হয়!
قُلۡ أَتَعۡبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ مَا لَا یَمۡلِكُ لَكُمۡ ضَرࣰّا وَلَا نَفۡعࣰاۚ وَٱللَّهُ هُوَ ٱلسَّمِیعُ ٱلۡعَلِیمُ ﴿٧٦﴾
বলুন, ‘তোমরা কি আল্লাহ ছাড়া এমন কিছুর ‘ইবাদাত কর যার কোনো ক্ষমতা নেই তোমাদের ক্ষতি বা উপকার করার? আর আল্লাহ তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ’।
قُلۡ یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ لَا تَغۡلُواْ فِی دِینِكُمۡ غَیۡرَ ٱلۡحَقِّ وَلَا تَتَّبِعُوۤاْ أَهۡوَاۤءَ قَوۡمࣲ قَدۡ ضَلُّواْ مِن قَبۡلُ وَأَضَلُّواْ كَثِیرࣰا وَضَلُّواْ عَن سَوَاۤءِ ٱلسَّبِیلِ ﴿٧٧﴾
বলুন, ‘হে কিতাবীরা! তোমরা তোমাদের দীনে অন্যায় [১] বাড়াবাড়ি করো না [২]। আর যে সম্প্রদায় ইতোপূর্বে পথভ্রষ্ট হয়েছে ও অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে এবং সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে, তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না [৩]।’
لُعِنَ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ مِنۢ بَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ عَلَىٰ لِسَانِ دَاوُۥدَ وَعِیسَى ٱبۡنِ مَرۡیَمَۚ ذَ ٰلِكَ بِمَا عَصَواْ وَّكَانُواْ یَعۡتَدُونَ ﴿٧٨﴾
ইসরাঈল-বংশধরদের মধ্যে যারা কুফরী করেছিল তারা দাউদ ও মারইয়াম-পুত্র ‘ঈসার মুখে অভিশপ্ত হয়েছিল [১]। তা এ জন্যে যে, তারা অবাধ্যতা করেছিল আর তারা সীমালংঘন করত।
كَانُواْ لَا یَتَنَاهَوۡنَ عَن مُّنكَرࣲ فَعَلُوهُۚ لَبِئۡسَ مَا كَانُواْ یَفۡعَلُونَ ﴿٧٩﴾
তারা যেসব গর্হিত কাজ করত তা হতে তারা একে অন্যকে বারণ করত না। তারা যা করত তা কতই না নিকৃষ্ট!
تَرَىٰ كَثِیرࣰا مِّنۡهُمۡ یَتَوَلَّوۡنَ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْۚ لَبِئۡسَ مَا قَدَّمَتۡ لَهُمۡ أَنفُسُهُمۡ أَن سَخِطَ ٱللَّهُ عَلَیۡهِمۡ وَفِی ٱلۡعَذَابِ هُمۡ خَـٰلِدُونَ ﴿٨٠﴾
তাদের অনেককে আপনি কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব করতে দেখবেন। তাদের অন্তর যা তাদের জন্য পেশ করেছে (তাদের করা কাজগুলো) কত নিকৃষ্ট! যে কারণে আল্লাহ তাদের উপর রাগান্বিত হয়েছেন। আর তারা আযাবেই স্থায়ী হবে।
وَلَوۡ كَانُواْ یُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلنَّبِیِّ وَمَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡهِ مَا ٱتَّخَذُوهُمۡ أَوۡلِیَاۤءَ وَلَـٰكِنَّ كَثِیرࣰا مِّنۡهُمۡ فَـٰسِقُونَ ﴿٨١﴾
আর তারা আল্লাহ ও নবীর প্রতি এবং তার প্রতি যা নাযিল হয়েছে তাতে ঈমান আনলে কাফেরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করত না, কিন্তু তাদের অনেকেই ফাসিক।
۞ لَتَجِدَنَّ أَشَدَّ ٱلنَّاسِ عَدَ ٰوَةࣰ لِّلَّذِینَ ءَامَنُواْ ٱلۡیَهُودَ وَٱلَّذِینَ أَشۡرَكُواْۖ وَلَتَجِدَنَّ أَقۡرَبَهُم مَّوَدَّةࣰ لِّلَّذِینَ ءَامَنُواْ ٱلَّذِینَ قَالُوۤاْ إِنَّا نَصَـٰرَىٰۚ ذَ ٰلِكَ بِأَنَّ مِنۡهُمۡ قِسِّیسِینَ وَرُهۡبَانࣰا وَأَنَّهُمۡ لَا یَسۡتَكۡبِرُونَ ﴿٨٢﴾
অবশ্যই মুমিনদের মধ্যে শত্রুতায় মানুষের মধ্যে ইয়াহুদী ও মুশরিকদেরকেই আপনি সবচেয়ে উগ্র দেখবেন। আর যারা বলে, ‘আমরা নাসারা’ মানুষের মধ্যে তাদেরকেই আপনি মুমিনদের কাছাকাছি বন্ধুত্বে দেখবেন, তা এই কারণে যে, তাদের মধ্যে অনেক পণ্ডিত ও সংসারবিরাগী রয়েছে। আর এজন্যেও যে, তারা অহংকার করে না।
وَإِذَا سَمِعُواْ مَاۤ أُنزِلَ إِلَى ٱلرَّسُولِ تَرَىٰۤ أَعۡیُنَهُمۡ تَفِیضُ مِنَ ٱلدَّمۡعِ مِمَّا عَرَفُواْ مِنَ ٱلۡحَقِّۖ یَقُولُونَ رَبَّنَاۤ ءَامَنَّا فَٱكۡتُبۡنَا مَعَ ٱلشَّـٰهِدِینَ ﴿٨٣﴾
আর রাসূলের প্রতি যা নাযিল হয়েছে তা যখন তারা শুনে, তখন তারা যে সত্য উপলব্ধি করে তার জন্য আপনি তাদের চোখ অশ্রু বিগলিত দেখবেন [১]। তারা বলে, ‘হে আমাদের রব! আমরা ঈমান এনেছি; কাজেই আপনি আমাদেরকে সাক্ষ্যবহদের তালিকাভুক্ত করুন।’
وَمَا لَنَا لَا نُؤۡمِنُ بِٱللَّهِ وَمَا جَاۤءَنَا مِنَ ٱلۡحَقِّ وَنَطۡمَعُ أَن یُدۡخِلَنَا رَبُّنَا مَعَ ٱلۡقَوۡمِ ٱلصَّـٰلِحِینَ ﴿٨٤﴾
‘আর আল্লাহর প্রতি ও আমাদের কাছে আসা সত্যের প্রতি ঈমান না আনার কী কারণ থাকতে পারে যখন আমরা প্রত্যাশ্যা করি যে, আমাদের রব আমাদেরকে নেককার সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত করবেন?’
فَأَثَـٰبَهُمُ ٱللَّهُ بِمَا قَالُواْ جَنَّـٰتࣲ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَاۚ وَذَ ٰلِكَ جَزَاۤءُ ٱلۡمُحۡسِنِینَ ﴿٨٥﴾
অতঃপর তাদের এ কথার জন্য আল্লাহ তাদের পুরস্কার নির্দিষ্ট করেছেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত; তারা সেখানে স্থায়ী হবে। আর এটা মুহসিনদের পুরস্কার।
وَٱلَّذِینَ كَفَرُواْ وَكَذَّبُواْ بِـَٔایَـٰتِنَاۤ أُوْلَـٰۤىِٕكَ أَصۡحَـٰبُ ٱلۡجَحِیمِ ﴿٨٦﴾
আর যারা কুফরী করেছে ও আমাদের আয়াতসমূহে মিথ্যারোপ করেছে, তারাই জাহান্নামবাসী।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ لَا تُحَرِّمُواْ طَیِّبَـٰتِ مَاۤ أَحَلَّ ٱللَّهُ لَكُمۡ وَلَا تَعۡتَدُوۤاْۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا یُحِبُّ ٱلۡمُعۡتَدِینَ ﴿٨٧﴾
হে মুমিনগণ! আল্লাহ তোমাদের জন্য উৎকৃষ্ট যেসব বস্তু হালাল করেছেন সেগুলোকে তোমরা হারাম করো না [১] এবং সীমালংঘন করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালংঘনকারীকে পছন্দ করেন না [২]।
وَكُلُواْ مِمَّا رَزَقَكُمُ ٱللَّهُ حَلَـٰلࣰا طَیِّبࣰاۚ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ ٱلَّذِیۤ أَنتُم بِهِۦ مُؤۡمِنُونَ ﴿٨٨﴾
আর আল্লাহ তোমাদেরকে যে হালাল ও উৎকৃষ্ট জীবিকা দিয়েছেন তা থেকে খাও এবং আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, যাঁর প্রতি তোমরা মুমিন।
لَا یُؤَاخِذُكُمُ ٱللَّهُ بِٱللَّغۡوِ فِیۤ أَیۡمَـٰنِكُمۡ وَلَـٰكِن یُؤَاخِذُكُم بِمَا عَقَّدتُّمُ ٱلۡأَیۡمَـٰنَۖ فَكَفَّـٰرَتُهُۥۤ إِطۡعَامُ عَشَرَةِ مَسَـٰكِینَ مِنۡ أَوۡسَطِ مَا تُطۡعِمُونَ أَهۡلِیكُمۡ أَوۡ كِسۡوَتُهُمۡ أَوۡ تَحۡرِیرُ رَقَبَةࣲۖ فَمَن لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ ثَلَـٰثَةِ أَیَّامࣲۚ ذَ ٰلِكَ كَفَّـٰرَةُ أَیۡمَـٰنِكُمۡ إِذَا حَلَفۡتُمۡۚ وَٱحۡفَظُوۤاْ أَیۡمَـٰنَكُمۡۚ كَذَ ٰلِكَ یُبَیِّنُ ٱللَّهُ لَكُمۡ ءَایَـٰتِهِۦ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ﴿٨٩﴾
তোমাদের বৃথা শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করবেন না, কিন্তু যেসব শপথ তোমরা ইচ্ছে করে কর সেগুলোর জন্য তিনি তোমাদেরকে পাকড়াও করবেন। তারপর এর কাফফারা দশজন দরিদ্রকে মধ্যম ধরনের খাদ্য দান, যা তোমরা তোমাদের পরিজনদেরকে খেতে দাও, বা তাদেরকে বস্ত্রদান, কিংবা একজন দাস মুক্তি [১]। অতঃপর যার সামর্থ নেই তার জন্য তিন দিন সিয়াম পালন [২]। তোমরা শপথ করলে এটাই তোমাদের শপথের কাফফারা। আর তোমরা তোমাদের শপথ রক্ষা করো [৩]। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা শোকর আদায় কর।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤاْ إِنَّمَا ٱلۡخَمۡرُ وَٱلۡمَیۡسِرُ وَٱلۡأَنصَابُ وَٱلۡأَزۡلَـٰمُ رِجۡسࣱ مِّنۡ عَمَلِ ٱلشَّیۡطَـٰنِ فَٱجۡتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ﴿٩٠﴾
হে মুমিনগণ! মদ [১], জুয়া, পূর্তিপূজার বেদী ও ভাগ্য নির্ণয় করার শর [২] তো কেবল ঘৃণার বস্তু, শয়তানের কাজ। কাজেই তোমরা সেগুলোকে বর্জন কর –যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার [৩]।
إِنَّمَا یُرِیدُ ٱلشَّیۡطَـٰنُ أَن یُوقِعَ بَیۡنَكُمُ ٱلۡعَدَ ٰوَةَ وَٱلۡبَغۡضَاۤءَ فِی ٱلۡخَمۡرِ وَٱلۡمَیۡسِرِ وَیَصُدَّكُمۡ عَن ذِكۡرِ ٱللَّهِ وَعَنِ ٱلصَّلَوٰةِۖ فَهَلۡ أَنتُم مُّنتَهُونَ ﴿٩١﴾
শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ ঘটাতে এবং তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণে ও সালাতে বাঁধা দিতে। তবে কি তোমরা বিরত হবে না [১]?
وَأَطِیعُواْ ٱللَّهَ وَأَطِیعُواْ ٱلرَّسُولَ وَٱحۡذَرُواْۚ فَإِن تَوَلَّیۡتُمۡ فَٱعۡلَمُوۤاْ أَنَّمَا عَلَىٰ رَسُولِنَا ٱلۡبَلَـٰغُ ٱلۡمُبِینُ ﴿٩٢﴾
আর তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর। আর সাবধানতা অবলম্বন কর; তারপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তবে জেনে রাখ যে, আমাদের রাসূলের দায়িত্ব তো কেবল সুস্পষ্টভাবে প্রচার করা।
لَیۡسَ عَلَى ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ جُنَاحࣱ فِیمَا طَعِمُوۤاْ إِذَا مَا ٱتَّقَواْ وَّءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ ثُمَّ ٱتَّقَواْ وَّءَامَنُواْ ثُمَّ ٱتَّقَواْ وَّأَحۡسَنُواْۚ وَٱللَّهُ یُحِبُّ ٱلۡمُحۡسِنِینَ ﴿٩٣﴾
যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তারা আগে যা কিছু পানাহার করেছে তার জন্য তাদের কোনো গুনাহ্ নেই, যদি তারা তাকওয়া অবলম্বন করে, ঈমান আনে এবং সৎকাজ করে। তারপর তারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং ঈমান আনে। তারপর তারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং ইহসান করে। আর আল্লাহ মুহসিনদেরকে ভালবাসেন [১]।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ لَیَبۡلُوَنَّكُمُ ٱللَّهُ بِشَیۡءࣲ مِّنَ ٱلصَّیۡدِ تَنَالُهُۥۤ أَیۡدِیكُمۡ وَرِمَاحُكُمۡ لِیَعۡلَمَ ٱللَّهُ مَن یَخَافُهُۥ بِٱلۡغَیۡبِۚ فَمَنِ ٱعۡتَدَىٰ بَعۡدَ ذَ ٰلِكَ فَلَهُۥ عَذَابٌ أَلِیمࣱ ﴿٩٤﴾
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করবেন শিকারের এমন বস্তু দ্বারা যা তোমাদের হাত [১] ও বর্শা [২] নাগাল পায়, যাতে আল্লাহ প্রকাশ করে দেন, কে তাঁকে গায়েবের সাথে ভয় করে [৩]। কাজেই এরপর কেউ সীমালংঘন করলে তার জন্য কষ্টদায়ক শাস্তি রয়েছে।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ لَا تَقۡتُلُواْ ٱلصَّیۡدَ وَأَنتُمۡ حُرُمࣱۚ وَمَن قَتَلَهُۥ مِنكُم مُّتَعَمِّدࣰا فَجَزَاۤءࣱ مِّثۡلُ مَا قَتَلَ مِنَ ٱلنَّعَمِ یَحۡكُمُ بِهِۦ ذَوَا عَدۡلࣲ مِّنكُمۡ هَدۡیَۢا بَـٰلِغَ ٱلۡكَعۡبَةِ أَوۡ كَفَّـٰرَةࣱ طَعَامُ مَسَـٰكِینَ أَوۡ عَدۡلُ ذَ ٰلِكَ صِیَامࣰا لِّیَذُوقَ وَبَالَ أَمۡرِهِۦۗ عَفَا ٱللَّهُ عَمَّا سَلَفَۚ وَمَنۡ عَادَ فَیَنتَقِمُ ٱللَّهُ مِنۡهُۚ وَٱللَّهُ عَزِیزࣱ ذُو ٱنتِقَامٍ ﴿٩٥﴾
হে ঈমানদারগণ! ইহরামে থাকাকালে তোমরা শিকার-জন্তু হত্যা করো না [১]; তোমাদের মধ্যে কেউ ইচ্ছে করে সেটাকে হত্যা করলে যা সে হত্যা করল তার বিনিময় হচ্ছে অনুরূপ গৃহপালিত জন্তু, যার ফয়সালা করবে তোমাদের মধ্যে দু’জন ন্যায়বান লোক –কা’বাতে পাঠানো হাদঈরূপে [২] বা সেটার কাফ্ফারা হবে দরিদ্রকে খাদ্য দান করা কিংবা সমান সংখ্যক সিয়াম পালন করা, যাতে সে আপন কৃতকর্মের ফল ভোগ করে। যা গত হয়েছে আল্লাহ্ তা ক্ষমা করেছেন। কেউ তা আবারো করলে আল্লাহ্ তার থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করবেন এবং আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রতিশোধ গ্রহণকারী।
أُحِلَّ لَكُمۡ صَیۡدُ ٱلۡبَحۡرِ وَطَعَامُهُۥ مَتَـٰعࣰا لَّكُمۡ وَلِلسَّیَّارَةِۖ وَحُرِّمَ عَلَیۡكُمۡ صَیۡدُ ٱلۡبَرِّ مَا دُمۡتُمۡ حُرُمࣰاۗ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ ٱلَّذِیۤ إِلَیۡهِ تُحۡشَرُونَ ﴿٩٦﴾
তোমাদের জন্য সমুদ্রের শিকার ও তা খাওয়া হালাল করা হয়েছে, তোমাদের ও পর্যটকদের ভোগের জন্য। তোমরা যতক্ষণ ইহরামে থাকবে ততক্ষণ স্থলের শিকার তোমাদের জন্য হারাম। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, যাঁর কাছে তোমাদেরকে একত্র করা হবে।
۞ جَعَلَ ٱللَّهُ ٱلۡكَعۡبَةَ ٱلۡبَیۡتَ ٱلۡحَرَامَ قِیَـٰمࣰا لِّلنَّاسِ وَٱلشَّهۡرَ ٱلۡحَرَامَ وَٱلۡهَدۡیَ وَٱلۡقَلَـٰۤىِٕدَۚ ذَ ٰلِكَ لِتَعۡلَمُوۤاْ أَنَّ ٱللَّهَ یَعۡلَمُ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِ وَأَنَّ ٱللَّهَ بِكُلِّ شَیۡءٍ عَلِیمٌ ﴿٩٧﴾
পবিত্র কা’বা ঘর, পবিত্র মাস, হাদঈ ও গলায় মালা পরানো পশুকে [১] আল্লাহ মানুষের কল্যাণের [২] জন্য নির্ধারিত করেছেন। এটা এ জন্য যে, তোমরা যেন জানতে পার, নিশ্চয় যা কিছু আসমানসমূহে ও যমীনে আছে আল্লাহ তা জানেন এবং নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু সম্পর্কে সম্যক অবগত।
ٱعۡلَمُوۤاْ أَنَّ ٱللَّهَ شَدِیدُ ٱلۡعِقَابِ وَأَنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿٩٨﴾
জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তিদানে কঠোর, আর আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
مَّا عَلَى ٱلرَّسُولِ إِلَّا ٱلۡبَلَـٰغُۗ وَٱللَّهُ یَعۡلَمُ مَا تُبۡدُونَ وَمَا تَكۡتُمُونَ ﴿٩٩﴾
প্রচার করাই শুধু রাসূলের কর্তব্য। আর তোরমা যা প্রকাশ কর ও গোপন রাখ আল্লাহ তা জানেন [১]।
قُل لَّا یَسۡتَوِی ٱلۡخَبِیثُ وَٱلطَّیِّبُ وَلَوۡ أَعۡجَبَكَ كَثۡرَةُ ٱلۡخَبِیثِۚ فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ یَـٰۤأُوْلِی ٱلۡأَلۡبَـٰبِ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ﴿١٠٠﴾
বলুন, ‘মন্দ ও ভাল এক নয় [১] যদিও মন্দের আধিক্য তোমাকে [২] চমৎকৃত করে [৩]। কাজেই হে বোধশক্তিসম্পন্ন লোকেরা! তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।’
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ لَا تَسۡـَٔلُواْ عَنۡ أَشۡیَاۤءَ إِن تُبۡدَ لَكُمۡ تَسُؤۡكُمۡ وَإِن تَسۡـَٔلُواْ عَنۡهَا حِینَ یُنَزَّلُ ٱلۡقُرۡءَانُ تُبۡدَ لَكُمۡ عَفَا ٱللَّهُ عَنۡهَاۗ وَٱللَّهُ غَفُورٌ حَلِیمࣱ ﴿١٠١﴾
হে মুমিনগণ! তোমরা সেসব বিষয়ে প্রশ্ন করো না যা তোমাদের কাছে প্রকাশ হলে তা তোমাদেরকে কষ্ট দেবে [১]। আর কুরআন নাযিলের সময় তোমরা যদি সেসব বিষয়ে প্রশ্ন কর তবে তা তোমাদের কাছে প্রকাশ করা হবে [২]। আল্লাহ সেসব [৩] ক্ষমা করেছেন এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, সহনশীল।
قَدۡ سَأَلَهَا قَوۡمࣱ مِّن قَبۡلِكُمۡ ثُمَّ أَصۡبَحُواْ بِهَا كَـٰفِرِینَ ﴿١٠٢﴾
তোমাদের আগেও এক সম্প্রদায় এ রকম প্রশ্ন করেছিল; তারপর তারা তাতে কাফির হয়ে গিয়েছিল [১]।
مَا جَعَلَ ٱللَّهُ مِنۢ بَحِیرَةࣲ وَلَا سَاۤىِٕبَةࣲ وَلَا وَصِیلَةࣲ وَلَا حَامࣲ وَلَـٰكِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ یَفۡتَرُونَ عَلَى ٱللَّهِ ٱلۡكَذِبَۖ وَأَكۡثَرُهُمۡ لَا یَعۡقِلُونَ ﴿١٠٣﴾
বাহীরাহ্, সায়েবাহ্, ওছীলাহ্ ও হামী আল্লাহ্ প্রবর্তণ করেননি; কিন্তু কাফেররা আল্লাহ্র উপর মিথ্যা আরোপ করে এবং তাদের অধিকাংশই বুঝে না [১]।
وَإِذَا قِیلَ لَهُمۡ تَعَالَوۡاْ إِلَىٰ مَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ وَإِلَى ٱلرَّسُولِ قَالُواْ حَسۡبُنَا مَا وَجَدۡنَا عَلَیۡهِ ءَابَاۤءَنَاۤۚ أَوَلَوۡ كَانَ ءَابَاۤؤُهُمۡ لَا یَعۡلَمُونَ شَیۡـࣰٔا وَلَا یَهۡتَدُونَ ﴿١٠٤﴾
আর যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার দিকে ও রাসূলের দিকে আস', তখন তারা বলে, ‘আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যেটাতে পেয়েছি সেটাই আমাদের জন্য যথেষ্ট।’ যদিও তাদের পূর্বপুরুষরা কিছুই জানত না এবং সৎপথপ্রাপ্তও ছিল না, তবুও কি?
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ عَلَیۡكُمۡ أَنفُسَكُمۡۖ لَا یَضُرُّكُم مَّن ضَلَّ إِذَا ٱهۡتَدَیۡتُمۡۚ إِلَى ٱللَّهِ مَرۡجِعُكُمۡ جَمِیعࣰا فَیُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمۡ تَعۡمَلُونَ ﴿١٠٥﴾
হে মুমিনগণ! তোমাদের দায়িত্ব তোমাদেরই উপর। তোমরা যদি সৎপথে পরিচালিত হও তবে যে পথ ভ্রষ্ট হয়েছে সে তোমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না [১]। আল্লাহ্র দিকেই তোমাদের সবার প্রত্যাবর্তন; তারপর তোমারা যা করতে তিনি সে সম্বন্ধে তোমাদেরকে অবহিত করবেন।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ شَهَـٰدَةُ بَیۡنِكُمۡ إِذَا حَضَرَ أَحَدَكُمُ ٱلۡمَوۡتُ حِینَ ٱلۡوَصِیَّةِ ٱثۡنَانِ ذَوَا عَدۡلࣲ مِّنكُمۡ أَوۡ ءَاخَرَانِ مِنۡ غَیۡرِكُمۡ إِنۡ أَنتُمۡ ضَرَبۡتُمۡ فِی ٱلۡأَرۡضِ فَأَصَـٰبَتۡكُم مُّصِیبَةُ ٱلۡمَوۡتِۚ تَحۡبِسُونَهُمَا مِنۢ بَعۡدِ ٱلصَّلَوٰةِ فَیُقۡسِمَانِ بِٱللَّهِ إِنِ ٱرۡتَبۡتُمۡ لَا نَشۡتَرِی بِهِۦ ثَمَنࣰا وَلَوۡ كَانَ ذَا قُرۡبَىٰ وَلَا نَكۡتُمُ شَهَـٰدَةَ ٱللَّهِ إِنَّاۤ إِذࣰا لَّمِنَ ٱلۡـَٔاثِمِینَ ﴿١٠٦﴾
হে মুমিনগণ! তোমাদের কারো যখন মৃত্যু উপস্থিত হয় তখন ওসিয়াত করার সময় তোমাদের মধ্য থেকে দুজন ন্যায়পরায়ণ লোককে সাক্ষী রাখবে অথবা [১] অন্যদের (অমুসলিমদের) থেকে দু’জন সাক্ষী মনোনীত করবে,যদি তোমারা সফরে থাক এবং তোমাদেরকে মৃত্যুর বিপদ পেয়ে বসে। যদি তোমাদের সন্দেহে হয়, তবে উভয়কে সালাতের পর অপেক্ষমান রাখবে। তারপর তারা আল্লাহ্র নামে শপথ করে বলবে, ‘আমারা তার বিনিময়ে মূল্য কোনো গ্রহণ করব না যদি সে আত্মীয় হয় এবং আমরা আল্লাহর সাক্ষ্য গোপন করব না, করলে অবশ্যই আমারা পাপীদের অন্তর্ভুক্ত হব।’
فَإِنۡ عُثِرَ عَلَىٰۤ أَنَّهُمَا ٱسۡتَحَقَّاۤ إِثۡمࣰا فَـَٔاخَرَانِ یَقُومَانِ مَقَامَهُمَا مِنَ ٱلَّذِینَ ٱسۡتَحَقَّ عَلَیۡهِمُ ٱلۡأَوۡلَیَـٰنِ فَیُقۡسِمَانِ بِٱللَّهِ لَشَهَـٰدَتُنَاۤ أَحَقُّ مِن شَهَـٰدَتِهِمَا وَمَا ٱعۡتَدَیۡنَاۤ إِنَّاۤ إِذࣰا لَّمِنَ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿١٠٧﴾
অতঃপর যদি এটা প্রকাশ হয় যে,তারা দুজন অপরাধে লিপ্ত হয়েছে তবে যাদের স্বার্থহানি ঘটেছে তাদের মধ্য থেকে নিকটতম দুজন তাদের স্থলবর্তী হবে এবং আল্লাহ্র নামে শপথ করে বলবে, ‘আমাদের সাক্ষ্য অবশ্যই তাদের সাক্ষ্য থেকে অধিকতর সত্য এবং আমারা সীমালঙ্ঘন করিনি, করলে অবশ্যই আমারা যালেমদের অন্তর্ভুক্ত হব [১]।’
ذَ ٰلِكَ أَدۡنَىٰۤ أَن یَأۡتُواْ بِٱلشَّهَـٰدَةِ عَلَىٰ وَجۡهِهَاۤ أَوۡ یَخَافُوۤاْ أَن تُرَدَّ أَیۡمَـٰنُۢ بَعۡدَ أَیۡمَـٰنِهِمۡۗ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَٱسۡمَعُواْۗ وَٱللَّهُ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلۡفَـٰسِقِینَ ﴿١٠٨﴾
এ পদ্ধতিই [১] বেশী নিকটর যে, তারা সাক্ষ্য সঠিকভাবে উপস্থাপন করবে অথবা তারা (মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদানকারীরা) ভয় করবে যে, তাদের (নিকটাত্নীয়দের) শপথের পর (পুর্বোক্ত) শপথ প্রত্যাখ্যান করা হবে। আর তোমরা আল্লাহ্র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং শুন [২]; আল্লাহ ফাসেক সম্প্রদায়কে হিদায়েত করেন না।
۞ یَوۡمَ یَجۡمَعُ ٱللَّهُ ٱلرُّسُلَ فَیَقُولُ مَاذَاۤ أُجِبۡتُمۡۖ قَالُواْ لَا عِلۡمَ لَنَاۤۖ إِنَّكَ أَنتَ عَلَّـٰمُ ٱلۡغُیُوبِ ﴿١٠٩﴾
স্মরণ করুন, যেদিন আল্লাহ্ রাসুলগণকে একত্র করবেন এবং জিজ্ঞেস করবেন, ‘আপনারা কী উত্তর পেয়েছিলেন?’ তারা বলবেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের কোনো জ্ঞানই নেই; আপনিইতো গায়েব সম্বন্ধে সবচেয়ে ভাল জানেন [১]।’
إِذۡ قَالَ ٱللَّهُ یَـٰعِیسَى ٱبۡنَ مَرۡیَمَ ٱذۡكُرۡ نِعۡمَتِی عَلَیۡكَ وَعَلَىٰ وَ ٰلِدَتِكَ إِذۡ أَیَّدتُّكَ بِرُوحِ ٱلۡقُدُسِ تُكَلِّمُ ٱلنَّاسَ فِی ٱلۡمَهۡدِ وَكَهۡلࣰاۖ وَإِذۡ عَلَّمۡتُكَ ٱلۡكِتَـٰبَ وَٱلۡحِكۡمَةَ وَٱلتَّوۡرَىٰةَ وَٱلۡإِنجِیلَۖ وَإِذۡ تَخۡلُقُ مِنَ ٱلطِّینِ كَهَیۡـَٔةِ ٱلطَّیۡرِ بِإِذۡنِی فَتَنفُخُ فِیهَا فَتَكُونُ طَیۡرَۢا بِإِذۡنِیۖ وَتُبۡرِئُ ٱلۡأَكۡمَهَ وَٱلۡأَبۡرَصَ بِإِذۡنِیۖ وَإِذۡ تُخۡرِجُ ٱلۡمَوۡتَىٰ بِإِذۡنِیۖ وَإِذۡ كَفَفۡتُ بَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ عَنكَ إِذۡ جِئۡتَهُم بِٱلۡبَیِّنَـٰتِ فَقَالَ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ مِنۡهُمۡ إِنۡ هَـٰذَاۤ إِلَّا سِحۡرࣱ مُّبِینࣱ ﴿١١٠﴾
স্মরণ করুন,যখন আল্লাহ্ বলবেন, ‘হে মারইয়ামের পুত্র ‘ঈসা ! আপনার প্রতি ও আপনার জননীর প্রতি আমার নেয়ামত [১] স্মরণ করুন, যখন ‘রুহুল কুদুস [২] দিয়ে আমি আপনাকে শক্তিশালী করেছিলাম এবং আপনি দোলনায় থাকা অবস্থায় ও পরিণত বয়সে মানুষের সাথে কথা বলতেন; আপনাকে কিতাব ,হিকমত, তাওরাত ও ইঞ্জীল শিক্ষা দিয়েছিলাম; আপনি কাদামাটি দিয়ে আমার অনুমতিক্রমে পাখির মত আকৃতি গঠন করতেন এবং তাতে ফুঁ দিতেন, ফলে আমার অনুমতিক্রমে তা পাখি হয়ে যেত; জন্মান্ধ ও কুষ্ঠরোগীদেরকে আপনি আমার অনুমতিক্রমে নিরাময় করতেন এবং আমার অনুমতিক্রমে আপনি মৃতকে জীবিত করতেন; আর যখন আমি আপনার থেকে ইসরাঈল-সন্তানগণকে বিরত রেখেছিলাম [৩]; আপনি যখন তাদের কাছে স্পষ্ট নিদর্শন এনেছিলেন তখন তাদের মধ্যে যারা কুফরী করেছিলো তারা বলেছিল, ‘এটাতো স্পষ্ট জাদু।’
وَإِذۡ أَوۡحَیۡتُ إِلَى ٱلۡحَوَارِیِّـۧنَ أَنۡ ءَامِنُواْ بِی وَبِرَسُولِی قَالُوۤاْ ءَامَنَّا وَٱشۡهَدۡ بِأَنَّنَا مُسۡلِمُونَ ﴿١١١﴾
আরো স্বরণ করুন, যখন আমি হাওয়ারীদের মনে ইলহাম করেছিলাম যে [১], ‘তোমরা আমার প্রতি ও আমার রাসূলের প্রতি ঈমান আন’, তারা বলেছিল, আমারা ঈমান আনলাম এবং আপনি সাক্ষী থাকুন যে, নিশ্চয় আমারা মুসলিম।’
إِذۡ قَالَ ٱلۡحَوَارِیُّونَ یَـٰعِیسَى ٱبۡنَ مَرۡیَمَ هَلۡ یَسۡتَطِیعُ رَبُّكَ أَن یُنَزِّلَ عَلَیۡنَا مَاۤىِٕدَةࣰ مِّنَ ٱلسَّمَاۤءِۖ قَالَ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿١١٢﴾
স্মরণ করুন, যখন হাওয়ারীগণ বলেছিল, ‘হে মারইয়াম-তনয় ‘ঈসা! আপনার রব কি আমাদের জন্য আসমান থেকে খাদ্য পরিপূর্ণ খাঞ্চা পাঠাতে সক্ষম?’ তিনি বলেছিলেন, ‘আল্লাহ্র তাকওয়া অবলম্বন কর, যদি তোমারা মুমিন হও [১]।’
قَالُواْ نُرِیدُ أَن نَّأۡكُلَ مِنۡهَا وَتَطۡمَىِٕنَّ قُلُوبُنَا وَنَعۡلَمَ أَن قَدۡ صَدَقۡتَنَا وَنَكُونَ عَلَیۡهَا مِنَ ٱلشَّـٰهِدِینَ ﴿١١٣﴾
তারা বলেছিল, ‘আমরা চাই যে, তা থেকে কিছু খাব ও আমাদের চিত্ত প্রশান্তি লাভ করবে। আর আমারা জানব যে, আপনি আমাদেরকে সত্য বলেছেন এবং আমারা এর সাক্ষী থাকতে চাই।’
قَالَ عِیسَى ٱبۡنُ مَرۡیَمَ ٱللَّهُمَّ رَبَّنَاۤ أَنزِلۡ عَلَیۡنَا مَاۤىِٕدَةࣰ مِّنَ ٱلسَّمَاۤءِ تَكُونُ لَنَا عِیدࣰا لِّأَوَّلِنَا وَءَاخِرِنَا وَءَایَةࣰ مِّنكَۖ وَٱرۡزُقۡنَا وَأَنتَ خَیۡرُ ٱلرَّ ٰزِقِینَ ﴿١١٤﴾
মারইয়াম-তনয় ‘ঈসা বললেন, ‘হে আল্লাহ্ আমাদের রব! আমাদের জন্য আসমান থেকে খাদ্যপূর্ণ খাঞ্চা পাঠান; এটা আমাদের ও আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সবার জন্য হবে আনন্দোৎসব স্বরুপ এবং আপনার কাছ থেকে নিদর্শন।আর আমাদের জীবিকা দান করুন; আপনিই তো শ্রেষ্ঠ জীবিকাদাতা।’
قَالَ ٱللَّهُ إِنِّی مُنَزِّلُهَا عَلَیۡكُمۡۖ فَمَن یَكۡفُرۡ بَعۡدُ مِنكُمۡ فَإِنِّیۤ أُعَذِّبُهُۥ عَذَابࣰا لَّاۤ أُعَذِّبُهُۥۤ أَحَدࣰا مِّنَ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿١١٥﴾
আল্লাহ্ বললেন, ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের কাছে তা নাযিল করব; কিন্তু এর পর তোমাদের মধ্যে কেউ কুফরী করলে তাকে আমি এমন শাস্তি দেব, যে শাস্তি সৃষ্টিকুলের আর কাউকেও দেব না [১]।’
وَإِذۡ قَالَ ٱللَّهُ یَـٰعِیسَى ٱبۡنَ مَرۡیَمَ ءَأَنتَ قُلۡتَ لِلنَّاسِ ٱتَّخِذُونِی وَأُمِّیَ إِلَـٰهَیۡنِ مِن دُونِ ٱللَّهِۖ قَالَ سُبۡحَـٰنَكَ مَا یَكُونُ لِیۤ أَنۡ أَقُولَ مَا لَیۡسَ لِی بِحَقٍّۚ إِن كُنتُ قُلۡتُهُۥ فَقَدۡ عَلِمۡتَهُۥۚ تَعۡلَمُ مَا فِی نَفۡسِی وَلَاۤ أَعۡلَمُ مَا فِی نَفۡسِكَۚ إِنَّكَ أَنتَ عَلَّـٰمُ ٱلۡغُیُوبِ ﴿١١٦﴾
আরও স্মরণ করুন, আল্লাহ্ যখন বলবেন, ‘হে মারইয়াম –তনয় ‘ঈসা! আপনি কি লোকদেরকে বলেছিলেন যে, তোমরা আল্লাহ্ ছাড়া আমাকে আমার জননীকে দুই ইলাহরূপে গ্রহণ কর? ‘তিনি বলবেন, ‘আপনিই মহিমান্বিত! যা বলার অধিকার আমার নেই তা বলা আমার পক্ষে শোভনীয় নয়। যদি আমি তা বলতাম তবে আপনি তো তা জানতেন। আমার অন্তরের কথাতো আপনি জানেন, কিন্তু আপনার অন্তরের কথা আমি জানি না; নিশ্চয় আপনি অদৃশ্য সম্বদ্ধে সবচেয়ে ভালো জানেন।’
مَا قُلۡتُ لَهُمۡ إِلَّا مَاۤ أَمَرۡتَنِی بِهِۦۤ أَنِ ٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ رَبِّی وَرَبَّكُمۡۚ وَكُنتُ عَلَیۡهِمۡ شَهِیدࣰا مَّا دُمۡتُ فِیهِمۡۖ فَلَمَّا تَوَفَّیۡتَنِی كُنتَ أَنتَ ٱلرَّقِیبَ عَلَیۡهِمۡۚ وَأَنتَ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ شَهِیدٌ ﴿١١٧﴾
‘আপনি আমাকে যে আদেশ করেছেন তা ছাড়া তাদেরকে আমি কিছুই বলিনি, তা এই যে, তোমরা আমার রব ও তোমাদের রব আল্লাহ্র ইবাদত কর এবং যতদিন আমি তাদের মধ্যে ছিলাম ততদিন আমি ছিলাম তাদের কাজ-কর্মের সাক্ষী, কিন্তু যখন আপনি আমাকে তুলে নিলেন [১] তখন আপনিই তো ছিলেন তাদের কাজ-কর্মের তত্ত্বাবধায়ক এবং আপনিই সব বিষয়ে সাক্ষী [২]।’
إِن تُعَذِّبۡهُمۡ فَإِنَّهُمۡ عِبَادُكَۖ وَإِن تَغۡفِرۡ لَهُمۡ فَإِنَّكَ أَنتَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلۡحَكِیمُ ﴿١١٨﴾
‘আপনি যদি তাদেরকে শাস্তি দেন তবে তারাতো আপনারই বান্দা [১],আর যদি তাদেরকে ক্ষমা করেন তবে আপনি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় [২]।’
قَالَ ٱللَّهُ هَـٰذَا یَوۡمُ یَنفَعُ ٱلصَّـٰدِقِینَ صِدۡقُهُمۡۚ لَهُمۡ جَنَّـٰتࣱ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَاۤ أَبَدࣰاۖ رَّضِیَ ٱللَّهُ عَنۡهُمۡ وَرَضُواْ عَنۡهُۚ ذَ ٰلِكَ ٱلۡفَوۡزُ ٱلۡعَظِیمُ ﴿١١٩﴾
আল্লাহ্ বলবেন, ‘এ সে দিন যেদিন সত্যবাদিগণ তাদের সত্যের জন্য উপকৃত হবে, তাদের জন্য আছে জান্নাত যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত। তারা সেখানে চিরস্থায়ী হবে; আল্লাহ্ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট [১]; এটা মহাসফলতা [২]।’