Surah আল-কলম

Listen

Bangali বাংলা

Surah আল-কলম - Aya count 52

نۤۚ وَٱلۡقَلَمِ وَمَا یَسۡطُرُونَ ﴿١﴾

নূন---শপথ কলমের [১] এবং তারা যা লিপিবদ্ধ করে তার,

সূরা সংক্রান্ত আলোচনা: আয়াত সংখ্যা: ৫২ আয়াত। নাযিল হওয়ার স্থান: মক্কী। রহমান, রহীম আল্লাহর নামে [১] মুজাহিদ বলেন, কলম মানে যে কলম দিয়ে যিকর অর্থাৎ কুরআন মজীদ লেখা হচ্ছিলো। [কুরতুবী] কলম সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “সর্বপ্রথম আল্লাহ তা‘আলা কলম সৃষ্টি করে তাকে লেখার আদেশ করেন। কলম বলল, কী লিখব? তখন আল্লাহ্ বললেন, যা হয়েছে এবং যা হবে তা সবই লিখ। কলম আদেশ অনুযায়ী অনন্তকাল পর্যন্ত সম্ভাব্য সকল ঘটনা ও অবস্থা লিখে দিল।” [মুসনাদে আহমাদ ৫/৩১৭] অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “আল্লাহ তা‘আলা সমগ্র সৃষ্টির তাকদীর আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে লিখে দিয়েছিলেন।” [মুসলিম ২৬৫৩, তিরমিয়ী ২১৫৬, মুসনাদে আহমাদ ২/১৬৯] কুরআনের অন্যত্রও এ কলমের উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, “তিনি (আল্লাহ) কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন।” [সূরা আল-আলাক ৪]


Arabic explanations of the Qur’an:

مَاۤ أَنتَ بِنِعۡمَةِ رَبِّكَ بِمَجۡنُونࣲ ﴿٢﴾

আপনার রবের অনুগ্রহে আপনি উন্মাদ নন।


Arabic explanations of the Qur’an:

وَإِنَّ لَكَ لَأَجۡرًا غَیۡرَ مَمۡنُونࣲ ﴿٣﴾

আর নিশ্চয় আপনার জন্য রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার,


Arabic explanations of the Qur’an:

وَإِنَّكَ لَعَلَىٰ خُلُقٍ عَظِیمࣲ ﴿٤﴾

আর নিশ্চয় আপনি মহান চরিত্রের উপর রয়েছেন [১] ।

[১] আয়াতে উল্লেখিত, “মহৎ চরিত্র” এর অর্থ নির্ধারণে কয়েকটি মত বর্ণিত আছে। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন, মহৎ চরিত্রের অর্থ মহৎ দীন। কেননা আল্লাহ তা‘আলার কাছে ইসলাম অপেক্ষা অধিক প্রিয় কোনো দীন নেই। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন, স্বয়ং কুরআন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের “মহৎ চরিত্র”। অর্থাৎ কুরআন পাক যেসব উত্তম কর্ম ও চরিত্র শিক্ষা দেয়, তিনি সেসবের বাস্তব নমুনা। আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, “মহৎ চরিত্র” বলে কুরআনের শিষ্টাচার বোঝানো হয়েছে; অর্থাৎ যেসব শিষ্টাচার কুরআন শিক্ষা দিয়েছে। [কুরতুবী] রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নৈতিক চরিত্রের সর্বোত্তম সংজ্ঞা দিয়েছেন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা। তিনি বলেছেন, কুরআনই ছিলো তার চরিত্র। [মুসনাদে আহমাদ ৬/৯১] আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বৰ্ণনা করেছেন, “আমি দশ বছর যাবত রাসূলুল্লাহ্র খেদমতে নিয়োজিত ছিলাম। আমার কোনো কাজ সম্পর্কে তিনি কখনো উহ! শব্দ পর্যন্ত উচ্চারণ করেননি। আমার কোনো কাজ দেখে কখনো বলেননি, তুমি এ কাজ করলে কেন? কিংবা কোনো কাজ না করলে কখনো বলেননি, তুমি এ কাজ করলে না কেন? [বুখারী ৬০৩৮, মুসলিম ২৩০৯] রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সত্তায় আল্লাহ্ তা‘আলা যাবতীয় উত্তম চরিত্র পূর্ণমাত্রায় সন্নিবেশিত করে দিয়েছিলেন। তিনি নিজেই বলেন, “আমি উত্তম চরিত্রকে পূর্ণতা দান করার জন্যই প্রেরিত হয়েছি।” [মুসনাদে আহমাদ ২/৩৮১, মুস্তাদরাকে হাকিম ২/৬৭০]


Arabic explanations of the Qur’an:

فَسَتُبۡصِرُ وَیُبۡصِرُونَ ﴿٥﴾

অতঃপর অচিরেই আপনি দেখবেন এবং তারাও দেখবে - - -


Arabic explanations of the Qur’an:

بِأَییِّكُمُ ٱلۡمَفۡتُونُ ﴿٦﴾

তোমাদের মধ্যে কে বিকারগ্রস্ত [১]।

[১] مفتون শব্দের অর্থ এস্থলে বিকারগ্রস্ত পাগল। [বাগভী]


Arabic explanations of the Qur’an:

إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعۡلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبِیلِهِۦ وَهُوَ أَعۡلَمُ بِٱلۡمُهۡتَدِینَ ﴿٧﴾

নিশ্চয় আপনার রব সম্যক অবগত আছেন কে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং তিনি সম্যক জানেন তাদেরকে, যারা হিদায়াতপ্রাপ্ত।


Arabic explanations of the Qur’an:

فَلَا تُطِعِ ٱلۡمُكَذِّبِینَ ﴿٨﴾

কাজেই আপনি মিথ্যারোপকারীদের আনুগত্য করবেন না।


Arabic explanations of the Qur’an:

وَدُّواْ لَوۡ تُدۡهِنُ فَیُدۡهِنُونَ ﴿٩﴾

তারা কামনা করে যে, আপনি আপোষকামী হোন, তাহলে তারাও আপোষকামী হবে,


Arabic explanations of the Qur’an:

وَلَا تُطِعۡ كُلَّ حَلَّافࣲ مَّهِینٍ ﴿١٠﴾

আর আপনি আনুগত্য করবেন না প্ৰত্যেক এমন ব্যক্তির যে অধিক শপথ কারী, লাঞ্ছিত,


Arabic explanations of the Qur’an:

هَمَّازࣲ مَّشَّاۤءِۭ بِنَمِیمࣲ ﴿١١﴾

পিছনে নিন্দাকারী, যে একের কথা অন্যের কাছে লাগিয়ে বেড়ায় [১],

[১] কুরআন ও হাদীসের বিভিন্ন স্থানে যারা “পিছনে নিন্দাকারী, যে একের কথা অন্যের কাছে লাগিয়ে বেড়ায়” তাদের নিন্দা করা হয়েছে। তাদের সম্পর্কে কঠিন সাবধানবাণী শোনানো হয়েছে। এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “কাত্তাত (যে একের কথা অন্যের কাছে লাগিয়ে বেড়ায় সে) জান্নাতে প্ৰবেশ করবে না।” [বুখারী ৬০৫৬]


Arabic explanations of the Qur’an:

مَّنَّاعࣲ لِّلۡخَیۡرِ مُعۡتَدٍ أَثِیمٍ ﴿١٢﴾

কল্যাণের কাজে বাধা দানকারী, সীমালঙ্ঘনকারী, পাপিষ্ঠ,


Arabic explanations of the Qur’an:

عُتُلِّۭ بَعۡدَ ذَ ٰ⁠لِكَ زَنِیمٍ ﴿١٣﴾

রূঢ় স্বভাব [১] এবং তদুপরি কুখ্যাত [২];

[১] রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আমি কি তোমাদেরকে জান্নাতবাসীদের স্বভাব-চরিত্র সম্পর্কে জানাব না? প্রতিটি দূর্বল, যাকে লোকেরা দূর্বল করে রাখে বা দূর্বল হিসেবে চলে নিজের শক্তিমত্তার অহংকারে মত্ত হয় না, সে যদি কোনো ব্যাপারে আল্লাহ্র কাছে শপথ করে বসে আল্লাহ্ সেটা পূর্ণ করে দেন। আমি কি তোমাদেরকে জাহান্নামবাসীদের চরিত্র সম্পর্কে জানাব না? প্রতিটি রূঢ় স্বভাববিশিষ্ট মানুষ, প্রচণ্ড কৃপন, অহংকারী।” [বুখারী ৪৯১৮] [২] কোনো কোনো বর্ণনায় এসেছে, زنيم বলে এমন লোক উদ্দেশ্য যার কানের অনেকাংশ কেটে লটকে রাখা হয়েছে যেমন কোনো কোনো ছাগলের কানের কর্তিত অংশ লটকে থাকে। [বুখারী ৪৯১৭]


Arabic explanations of the Qur’an:

أَن كَانَ ذَا مَالࣲ وَبَنِینَ ﴿١٤﴾

এজন্যে যে, সে ধন-সম্পদ ও সন্তান – সন্ততিতে সমৃদ্ধশালী।


Arabic explanations of the Qur’an:

إِذَا تُتۡلَىٰ عَلَیۡهِ ءَایَـٰتُنَا قَالَ أَسَـٰطِیرُ ٱلۡأَوَّلِینَ ﴿١٥﴾

যখন তার কাছে আমাদের আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করা হয় তখন সে বলে, ‘এ তো পূর্ববতীদের কল্প-কাহিনী মাত্ৰ।’


Arabic explanations of the Qur’an:

سَنَسِمُهُۥ عَلَى ٱلۡخُرۡطُومِ ﴿١٦﴾

আমরা অবশ্যই তার শুঁড় দাগিয়ে দেব।


Arabic explanations of the Qur’an:

إِنَّا بَلَوۡنَـٰهُمۡ كَمَا بَلَوۡنَاۤ أَصۡحَـٰبَ ٱلۡجَنَّةِ إِذۡ أَقۡسَمُواْ لَیَصۡرِمُنَّهَا مُصۡبِحِینَ ﴿١٧﴾

আমরা তো তাদেরকে পরীক্ষা করেছি [১], যেভাবে পরীক্ষা করেছিলাম উদ্যান-অধিপতিদেরকে, যখন তারা শপথ করেছিল যে, তারা প্ৰত্যুষে আহরণ করবে বাগানের ফল

[১] অর্থাৎ আমি মক্কাবাসীদের পরীক্ষায় ফেলেছি। [কুরতুবী]


Arabic explanations of the Qur’an:

وَلَا یَسۡتَثۡنُونَ ﴿١٨﴾

এবং তারা ‘ইন্শাআল্লাহ্’ বলেনি।


Arabic explanations of the Qur’an:

فَطَافَ عَلَیۡهَا طَاۤىِٕفࣱ مِّن رَّبِّكَ وَهُمۡ نَاۤىِٕمُونَ ﴿١٩﴾

অতঃপর আপনার রবের কাছ থেকে এক বিপর্যয় হানা দিল সে উদ্যানে, যখন তারা ছিল ঘুমন্ত।


Arabic explanations of the Qur’an:

فَأَصۡبَحَتۡ كَٱلصَّرِیمِ ﴿٢٠﴾

ফলে তা পুড়ে গিয়ে কালোবর্ণ ধারণ করল।


Arabic explanations of the Qur’an:

فَتَنَادَوۡاْ مُصۡبِحِینَ ﴿٢١﴾

প্রত্যুষে তারা একে অন্যকে ডেকে বলল,


Arabic explanations of the Qur’an:

أَنِ ٱغۡدُواْ عَلَىٰ حَرۡثِكُمۡ إِن كُنتُمۡ صَـٰرِمِینَ ﴿٢٢﴾

‘তোমরা যদি ফল আহরণ করতে চাও তবে সকাল সকাল তোমাদের বাগানে চল।’


Arabic explanations of the Qur’an:

فَٱنطَلَقُواْ وَهُمۡ یَتَخَـٰفَتُونَ ﴿٢٣﴾

তারপর তারা চলল নিম্নস্বরে কথা বলতে বলতে,


Arabic explanations of the Qur’an:

أَن لَّا یَدۡخُلَنَّهَا ٱلۡیَوۡمَ عَلَیۡكُم مِّسۡكِینࣱ ﴿٢٤﴾

‘আজ সেখানে যেন তোমাদের কাছে কোনো মিসকীন প্ৰবেশ করতে না পারে।’


Arabic explanations of the Qur’an:

وَغَدَوۡاْ عَلَىٰ حَرۡدࣲ قَـٰدِرِینَ ﴿٢٥﴾

আর তারা নিবৃত্ত করতে সক্ষম ---- এ বিশ্বাস নিয়ে বাগানে যাত্রা করল।


Arabic explanations of the Qur’an:

فَلَمَّا رَأَوۡهَا قَالُوۤاْ إِنَّا لَضَاۤلُّونَ ﴿٢٦﴾

অতঃপর তারা যখন বাগানের অবস্থা দেখতে পেল, তখন বলল, ‘নিশ্চয় আমরা পথ হারিয়ে ফেলেছি।’


Arabic explanations of the Qur’an:

بَلۡ نَحۡنُ مَحۡرُومُونَ ﴿٢٧﴾

‘বরং আমরা তো বঞ্চিত।’


Arabic explanations of the Qur’an:

قَالَ أَوۡسَطُهُمۡ أَلَمۡ أَقُل لَّكُمۡ لَوۡلَا تُسَبِّحُونَ ﴿٢٨﴾

তাদের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি বলল, ‘আমি কি তোমাদেরকে বলিনি, এখনো তোমরা আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছনা কেন ?’


Arabic explanations of the Qur’an:

قَالُواْ سُبۡحَـٰنَ رَبِّنَاۤ إِنَّا كُنَّا ظَـٰلِمِینَ ﴿٢٩﴾

তারা বলল ‘আমরা আমাদের রবের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি, আমরা তো যালিম ছিলাম।”


Arabic explanations of the Qur’an:

فَأَقۡبَلَ بَعۡضُهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضࣲ یَتَلَـٰوَمُونَ ﴿٣٠﴾

তারপর তারা একে অন্যের প্রতি দোষারোপ করতে লাগল।


Arabic explanations of the Qur’an:

قَالُواْ یَـٰوَیۡلَنَاۤ إِنَّا كُنَّا طَـٰغِینَ ﴿٣١﴾

তারা বলল, ‘হায়, দুর্ভোগ আমাদের! আমরা তো ছিলাম সীমালঙ্ঘনকারী।


Arabic explanations of the Qur’an:

عَسَىٰ رَبُّنَاۤ أَن یُبۡدِلَنَا خَیۡرࣰا مِّنۡهَاۤ إِنَّاۤ إِلَىٰ رَبِّنَا رَ ٰ⁠غِبُونَ ﴿٣٢﴾

সম্ভবতঃ আমাদের রব এ থেকে উৎকৃষ্টতর বিনিময় দেবেন; নিশ্চয় আমরা আমাদের রবের অভিমুখী হলাম।’


Arabic explanations of the Qur’an:

كَذَ ٰ⁠لِكَ ٱلۡعَذَابُۖ وَلَعَذَابُ ٱلۡـَٔاخِرَةِ أَكۡبَرُۚ لَوۡ كَانُواْ یَعۡلَمُونَ ﴿٣٣﴾

শাস্তি এরূপই হয়ে থাকে এবং আখিরাতের শাস্তি কঠিনতর। যদি তারা জানত [১] !

[১] মক্কাবাসীদের ওপর দুর্ভিক্ষরূপী আযাবের সংক্ষিপ্ত এবং উদ্যান মালিকদের ক্ষেত জ্বলে যাওয়ার বিস্তারিত বর্ণনার পর সাধারণ বিধি বর্ণনা করা হয়েছে যে, যখন আল্লাহর আযাব আসে, তখন এভাবেই আসে। দুনিয়ার এই আযাব আসার পরও তাদের আখেরাতের আযাব দূর হয়ে যায় না; বরং আখেরাতের আযাব ভিন্ন এবং তদপেক্ষা কঠোর হয়ে থাকে। [দেখুন-কুরতুবী]


Arabic explanations of the Qur’an:

إِنَّ لِلۡمُتَّقِینَ عِندَ رَبِّهِمۡ جَنَّـٰتِ ٱلنَّعِیمِ ﴿٣٤﴾

নিশ্চয় মুত্তাকীদের জন্য রয়েছে নেয়ামতপূর্ণ জান্নাত তাদের রবের কাছে।

‘দ্বিতীয় রুকূ’


Arabic explanations of the Qur’an:

أَفَنَجۡعَلُ ٱلۡمُسۡلِمِینَ كَٱلۡمُجۡرِمِینَ ﴿٣٥﴾

তবে কি আমরা মুসলিমদেরকে (অনুগতদেরকে) অপরাধীদের সমান গণ্য করব ?


Arabic explanations of the Qur’an:

مَا لَكُمۡ كَیۡفَ تَحۡكُمُونَ ﴿٣٦﴾

তোমাদের কী হয়েছে, তোমরা এ কেমন সিদ্ধান্ত দিচ্ছ ?


Arabic explanations of the Qur’an:

أَمۡ لَكُمۡ كِتَـٰبࣱ فِیهِ تَدۡرُسُونَ ﴿٣٧﴾

তোমাদের কাছে কি কোনো কিতাব আছে যাতে তোমরা অধ্যয়ন কর ---


Arabic explanations of the Qur’an:

إِنَّ لَكُمۡ فِیهِ لَمَا تَخَیَّرُونَ ﴿٣٨﴾

যে, নিশ্চয় তোমাদের জন্য তাতে রয়েছে যা তোমরা পছন্দ কর?


Arabic explanations of the Qur’an:

أَمۡ لَكُمۡ أَیۡمَـٰنٌ عَلَیۡنَا بَـٰلِغَةٌ إِلَىٰ یَوۡمِ ٱلۡقِیَـٰمَةِ إِنَّ لَكُمۡ لَمَا تَحۡكُمُونَ ﴿٣٩﴾

অথবা তোমাদের কি আমাদের সাথে কিয়ামত পর্যন্ত বলবৎ এমন কোনো অঙ্গীকার রয়েছে যে, তোমরা নিজেদের জন্য যা স্থির করবে তাই পাবে ?


Arabic explanations of the Qur’an:

سَلۡهُمۡ أَیُّهُم بِذَ ٰ⁠لِكَ زَعِیمٌ ﴿٤٠﴾

আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন তাদের মধ্যে এ দাবির যিম্মাদার কে?


Arabic explanations of the Qur’an:

أَمۡ لَهُمۡ شُرَكَاۤءُ فَلۡیَأۡتُواْ بِشُرَكَاۤىِٕهِمۡ إِن كَانُواْ صَـٰدِقِینَ ﴿٤١﴾

অথবা তাদের কি (আল্লাহর সাথে) অনেক শরীক আছে ? থাকলে তারা তাদের শরীকগুলোকে উপস্থিত করুক --- যদি তারা সত্যবাদী হয়।


Arabic explanations of the Qur’an:

یَوۡمَ یُكۡشَفُ عَن سَاقࣲ وَیُدۡعَوۡنَ إِلَى ٱلسُّجُودِ فَلَا یَسۡتَطِیعُونَ ﴿٤٢﴾

স্মরণ করুন, সে দিনের কথা যেদিন পায়ের গোছা উন্মোচিত করা হবে [১], সেদিন তাদেরকে ডাকা হবে সাজদা করার জন্য, কিন্তু তারা সক্ষম হবে না;

[১] আয়াতে বলা হয়েছে, “যেদিন পায়ের গোছা উম্মোচিত করা হবে।” পায়ের গোছা উম্মোচিত করার এক অৰ্থ অবস্থা কঠিন হওয়াও হয়। আর তখন অর্থ হবে, যেদিন মানুষের অবস্থা অত্যন্ত কঠিন হবে। [বাগভী; ফাতহুল কাদীর] কিন্তু এ আয়াতের তাফসীরে সহীহ হাদীসে স্পষ্ট এসেছে যে, এখানে মহান আল্লাহর “পায়ের গোছা” বোঝানো হয়েছে। আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আমাদের রব তাঁর পায়ের গোছা” অনাবৃত করবেন, ফলে প্রতিটি মুমিন নর ও নারী তাঁর জন্য সাজদাহ করবেন। পক্ষান্তরে যারা দুনিয়াতে প্রদর্শনেচ্ছা কিংবা শুনানোর উদ্দেশ্যে সাজদাহ করেছিল, তারা সাজদাহ করতে সক্ষম হবে না। তারা সাজদাহ করতে যাবে কিন্তু তাদের পিঠ বাঁকা হবে না।” [বুখারী ৪৯১৯]


Arabic explanations of the Qur’an:

خَـٰشِعَةً أَبۡصَـٰرُهُمۡ تَرۡهَقُهُمۡ ذِلَّةࣱۖ وَقَدۡ كَانُواْ یُدۡعَوۡنَ إِلَى ٱلسُّجُودِ وَهُمۡ سَـٰلِمُونَ ﴿٤٣﴾

তাদের দৃষ্টি অবনত, হীনতা তাদেরকে আচ্ছন্ন করবে অথচ যখন তারা নিরাপদ ছিল তখন তো তাদেরকে ডাকা হত সাজদা করতে।


Arabic explanations of the Qur’an:

فَذَرۡنِی وَمَن یُكَذِّبُ بِهَـٰذَا ٱلۡحَدِیثِۖ سَنَسۡتَدۡرِجُهُم مِّنۡ حَیۡثُ لَا یَعۡلَمُونَ ﴿٤٤﴾

অতএব, ছেড়ে দিন আমাকে এবং যারা এ বাণীতে মিথ্যারোপ করে তাদেরকে, আমরা তাদেরকে ক্রমে ক্রমে ধরব এমনভাবে যে, তারা জানতে পারবে না।


Arabic explanations of the Qur’an:

وَأُمۡلِی لَهُمۡۚ إِنَّ كَیۡدِی مَتِینٌ ﴿٤٥﴾

আর আমি তাদেরকে সময় দিয়ে থাকি, নিশ্চয় আমার কৌশল অত্যন্ত বলিষ্ঠ।


Arabic explanations of the Qur’an:

أَمۡ تَسۡـَٔلُهُمۡ أَجۡرࣰا فَهُم مِّن مَّغۡرَمࣲ مُّثۡقَلُونَ ﴿٤٦﴾

আপনি কি তাদের কাছে পারিশ্রমিক চাচ্ছেন যে, তা তাদের কাছে দুর্বহ দণ্ড মনে হয় ?


Arabic explanations of the Qur’an:

أَمۡ عِندَهُمُ ٱلۡغَیۡبُ فَهُمۡ یَكۡتُبُونَ ﴿٤٧﴾

নাকি তাদের কাছে গায়েবের জ্ঞান আছে যে, তারা তা লিখে রাখে !


Arabic explanations of the Qur’an:

فَٱصۡبِرۡ لِحُكۡمِ رَبِّكَ وَلَا تَكُن كَصَاحِبِ ٱلۡحُوتِ إِذۡ نَادَىٰ وَهُوَ مَكۡظُومࣱ ﴿٤٨﴾

অতএব, আপনি ধৈর্য ধারণ করুন আপনার রবের নির্দেশের অপেক্ষায়, আর আপনি মাছওয়ালার ন্যায় হবেন না, যখন তিনি বিষাদ আচ্ছন্ন অবস্থায় আহ্বান করেছিলেন [১]।

[১] পবিত্র কুরআনের অন্যত্র এ ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, মাছের পেটের এবং সাগরের পানির অন্ধকারে ইউনুস আলাইহিস সালাম উচ্চস্বরে এ বলে প্রার্থনা করলেন: তোমার পবিত্র সত্তা ছাড়া আর কোনো সত্য ইলাহ নেই। আসলে আমি অপরাধী। আল্লাহ্ তা‘আলা তার ফরিয়াদ গ্রহণ করলেন এবং তাকে এ দুঃখ ও মুসিবত থেকে মুক্তি দান করলেন। [সূরা আম্বিয়া ৮৭-৮৮]


Arabic explanations of the Qur’an:

لَّوۡلَاۤ أَن تَدَ ٰ⁠رَكَهُۥ نِعۡمَةࣱ مِّن رَّبِّهِۦ لَنُبِذَ بِٱلۡعَرَاۤءِ وَهُوَ مَذۡمُومࣱ ﴿٤٩﴾

যদি তার রবের অনুগ্রহ তার কাছে না পৌঁছত তবে তিনি লাঞ্ছিত অবস্থায় নিক্ষিপ্ত হতেন উন্মুক্ত প্ৰান্তরে।


Arabic explanations of the Qur’an:

فَٱجۡتَبَـٰهُ رَبُّهُۥ فَجَعَلَهُۥ مِنَ ٱلصَّـٰلِحِینَ ﴿٥٠﴾

অতঃপর তার রব তাকে মনোনীত করে তাকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত করলেন।


Arabic explanations of the Qur’an:

وَإِن یَكَادُ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ لَیُزۡلِقُونَكَ بِأَبۡصَـٰرِهِمۡ لَمَّا سَمِعُواْ ٱلذِّكۡرَ وَیَقُولُونَ إِنَّهُۥ لَمَجۡنُونࣱ ﴿٥١﴾

আর কাফিররা যখন কুরআন শোনে তখন তারা যেন তাদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দ্বারা আপনাকে আছড়ে ফেলবে এবং বলে, ‘এ তো এক পাগল।’


Arabic explanations of the Qur’an:

وَمَا هُوَ إِلَّا ذِكۡرࣱ لِّلۡعَـٰلَمِینَ ﴿٥٢﴾

অথচ তা [১] তো কেবল সৃষ্টিকুলের জন্য উপদেশ।

[১] এখানে ‘তা’ বলে অধিকাংশ মুফাসসিরের মতে কুরআন বোঝানো হয়েছে। তবে কোনো কোনো মুফাসসির বলেন, এখানে ‘তা’ বলে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বোঝানো হয়েছে। অথচ দুটি অর্থই এখানে হতে পারে। কুরআন যেমন সমস্ত সৃষ্টিজগতের জন্য উপদেশ তেমনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও সমস্ত সৃষ্টিজগতের জন্য উপদেশ ও সম্মানের পাত্র। [কুরতুবী]


Arabic explanations of the Qur’an: