بَرَاۤءَةࣱ مِّنَ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦۤ إِلَى ٱلَّذِینَ عَـٰهَدتُّم مِّنَ ٱلۡمُشۡرِكِینَ ﴿١﴾
এটা সম্পর্কচ্ছেদ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে, সে সব মুশরিকদের সাথে, যাদের সাথে তোমরা পারস্পারিক চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিলে [১]।
فَسِیحُواْ فِی ٱلۡأَرۡضِ أَرۡبَعَةَ أَشۡهُرࣲ وَٱعۡلَمُوۤاْ أَنَّكُمۡ غَیۡرُ مُعۡجِزِی ٱللَّهِ وَأَنَّ ٱللَّهَ مُخۡزِی ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿٢﴾
অতঃপর তোমরা যমীনে চারমাস সময় পরিভ্রমন কর [১] এবং জেনে রাখ যে, তোমরা আল্লাহ্কে হীনবল করতে পারবে না। আর নিশ্চয় আল্লাহ্ কাফেরদেরকে আপদস্থকারী [২]।
وَأَذَ ٰنࣱ مِّنَ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦۤ إِلَى ٱلنَّاسِ یَوۡمَ ٱلۡحَجِّ ٱلۡأَكۡبَرِ أَنَّ ٱللَّهَ بَرِیۤءࣱ مِّنَ ٱلۡمُشۡرِكِینَ وَرَسُولُهُۥۚ فَإِن تُبۡتُمۡ فَهُوَ خَیۡرࣱ لَّكُمۡۖ وَإِن تَوَلَّیۡتُمۡ فَٱعۡلَمُوۤاْ أَنَّكُمۡ غَیۡرُ مُعۡجِزِی ٱللَّهِۗ وَبَشِّرِ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ بِعَذَابٍ أَلِیمٍ ﴿٣﴾
আর মহান হজের দিনে [১] আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে মানুষের প্রতি এটা এক ঘোষণা যে, নিশ্চয় মুশরিকদের সম্পর্কে আল্লাহ্ দায়মুক্ত এবং তাঁর রাসূলও। অতএব, তোমরা যদি তওবাহ্ কর, তবে তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর তোমরা যদি মুখ ফিরাও তবে জেনে রাখ যে, তোমরা আল্লাহ্কে অক্ষম করতে পারবে না এবং কাফেরদেরকে যন্ত্রণাদয়ক শাস্তির সুসংবাদ দিন।
إِلَّا ٱلَّذِینَ عَـٰهَدتُّم مِّنَ ٱلۡمُشۡرِكِینَ ثُمَّ لَمۡ یَنقُصُوكُمۡ شَیۡـࣰٔا وَلَمۡ یُظَـٰهِرُواْ عَلَیۡكُمۡ أَحَدࣰا فَأَتِمُّوۤاْ إِلَیۡهِمۡ عَهۡدَهُمۡ إِلَىٰ مُدَّتِهِمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ یُحِبُّ ٱلۡمُتَّقِینَ ﴿٤﴾
তবে মুশরিকদের মধ্যে যাদের সাথে তোমরা চুক্তিতে আবদ্ধ ও পরে তোমাদের চুক্তি রক্ষায় কোনো ত্রুটি করেনি এবং তোমাদের বিরুদ্ধে কাউকেও সাহায্য করেনি [১], তোমরা তাদের সাথে নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত চুক্তি পূর্ণ কর; নিশ্চয় আল্লাহ্ মুত্তাকীদেরকে পছন্দ করেন [২]।
فَإِذَا ٱنسَلَخَ ٱلۡأَشۡهُرُ ٱلۡحُرُمُ فَٱقۡتُلُواْ ٱلۡمُشۡرِكِینَ حَیۡثُ وَجَدتُّمُوهُمۡ وَخُذُوهُمۡ وَٱحۡصُرُوهُمۡ وَٱقۡعُدُواْ لَهُمۡ كُلَّ مَرۡصَدࣲۚ فَإِن تَابُواْ وَأَقَامُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَوُاْ ٱلزَّكَوٰةَ فَخَلُّواْ سَبِیلَهُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿٥﴾
অতঃপর নিষিদ্ধ মাস [১] অতিবাহিত হলে মুশরিকদেরকে যেখানে পাবে হত্যা কর [২], তাদেরকে পাকড়াও কর [৩], অবরোধ কর এবং প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের জন্য ওঁৎ পেতে থাক; কিন্তু যদি তারা তাওবাহ্ করে, সালাত কায়েম করে এবং যাকাত দেয় [৪] তবে তাদের পথ ছেড়ে দাও [৫]; নিশ্চয় আল্লাহ্ অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু [৬]।
وَإِنۡ أَحَدࣱ مِّنَ ٱلۡمُشۡرِكِینَ ٱسۡتَجَارَكَ فَأَجِرۡهُ حَتَّىٰ یَسۡمَعَ كَلَـٰمَ ٱللَّهِ ثُمَّ أَبۡلِغۡهُ مَأۡمَنَهُۥۚ ذَ ٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ قَوۡمࣱ لَّا یَعۡلَمُونَ ﴿٦﴾
আর মুশরিকদের মধ্যে কেউ আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করলে আপনি তাকে আশ্রয় দিন; যাতে সে আল্লাহ্র বাণী শুনতে পায় [১] তারপর তাকে তার নিরাপদ স্থানে পৌছিয়ে দিন [২]; কারণ তারা এমন এক সম্প্রদায় যারা জানে না।
كَیۡفَ یَكُونُ لِلۡمُشۡرِكِینَ عَهۡدٌ عِندَ ٱللَّهِ وَعِندَ رَسُولِهِۦۤ إِلَّا ٱلَّذِینَ عَـٰهَدتُّمۡ عِندَ ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِۖ فَمَا ٱسۡتَقَـٰمُواْ لَكُمۡ فَٱسۡتَقِیمُواْ لَهُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ یُحِبُّ ٱلۡمُتَّقِینَ ﴿٧﴾
আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের কছে মুশরিকদের চুক্তি কি করে বলবৎ থাকবে? তবে যাদের সাথে মসজিদুল হারামের সন্নিকটে [১] তোমরা পারস্পারিক চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিলে, যতক্ষণ তারা তোমাদের চুক্তিতে স্থির থাকবে তোমরাও তাদের চুক্তিতে স্থির থাকবে [২]; নিশ্চয় আল্লাহ্ মুত্তাকীদেরকে পছন্দ করেন।
كَیۡفَ وَإِن یَظۡهَرُواْ عَلَیۡكُمۡ لَا یَرۡقُبُواْ فِیكُمۡ إِلࣰّا وَلَا ذِمَّةࣰۚ یُرۡضُونَكُم بِأَفۡوَ ٰهِهِمۡ وَتَأۡبَىٰ قُلُوبُهُمۡ وَأَكۡثَرُهُمۡ فَـٰسِقُونَ ﴿٨﴾
কেমন করে চুক্তি বলবৎ থাকবে? অথচ তারা যদি তোমাদের উপর জয়ী হয়, তবে তারা তোমাদের আত্মীয়তার ও অঙ্গীকারের কোনো মর্যাদা দেবে না তারা মুখে তোমাদেরকে সন্তুষ্ট রাখে; কিন্তু তাদের হৃদয় তা অস্বীকার করে; আর তাদের অধিকাংশই ফাসেক।
ٱشۡتَرَوۡاْ بِـَٔایَـٰتِ ٱللَّهِ ثَمَنࣰا قَلِیلࣰا فَصَدُّواْ عَن سَبِیلِهِۦۤۚ إِنَّهُمۡ سَاۤءَ مَا كَانُواْ یَعۡمَلُونَ ﴿٩﴾
তারা আল্লাহ্র আয়াতকে তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করে দিয়েছে ফলে তারা লোকদেরকে তাঁর পথ থেকে নিবৃত্ত করেছে। নিশ্চয় তারা যা করেছে তা অতি নিকৃষ্ট !
لَا یَرۡقُبُونَ فِی مُؤۡمِنٍ إِلࣰّا وَلَا ذِمَّةࣰۚ وَأُوْلَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡمُعۡتَدُونَ ﴿١٠﴾
তারা কোনো মুমিনের সাথে আত্মীয়তার ও অঙ্গীকারের মর্যাদা রক্ষা করে না আর তারাই সীমালংঘনকারী [১]।
فَإِن تَابُواْ وَأَقَامُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَوُاْ ٱلزَّكَوٰةَ فَإِخۡوَ ٰنُكُمۡ فِی ٱلدِّینِۗ وَنُفَصِّلُ ٱلۡـَٔایَـٰتِ لِقَوۡمࣲ یَعۡلَمُونَ ﴿١١﴾
অতএব তারা যদি তাওবাহ্ করে, সালাত কায়েম করে ও যাকাত দেয় তবে দীনের মধ্যে তারা তোমাদের ভাই [১]; আর আমরা আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করি এমন সম্প্রদায়ের জন্য যারা জানে [২]।
وَإِن نَّكَثُوۤاْ أَیۡمَـٰنَهُم مِّنۢ بَعۡدِ عَهۡدِهِمۡ وَطَعَنُواْ فِی دِینِكُمۡ فَقَـٰتِلُوۤاْ أَىِٕمَّةَ ٱلۡكُفۡرِ إِنَّهُمۡ لَاۤ أَیۡمَـٰنَ لَهُمۡ لَعَلَّهُمۡ یَنتَهُونَ ﴿١٢﴾
আর যদি তারা তাদের চুক্তির পর তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে এবং তোমাদের দীন সম্মন্ধে কটুক্তি করে [১], তবে কুফরের নেতাদের সাথে যুদ্ধ কর [২]; এরা এমন লোক যাদের কোনো প্রতিশ্রুতি নেই [৩]; যেন তারা নিবৃত হয় [৪]।
أَلَا تُقَـٰتِلُونَ قَوۡمࣰا نَّكَثُوۤاْ أَیۡمَـٰنَهُمۡ وَهَمُّواْ بِإِخۡرَاجِ ٱلرَّسُولِ وَهُم بَدَءُوكُمۡ أَوَّلَ مَرَّةٍۚ أَتَخۡشَوۡنَهُمۡۚ فَٱللَّهُ أَحَقُّ أَن تَخۡشَوۡهُ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿١٣﴾
তোমরা কি সে সম্প্রদায়ের সাথে যুদ্ধ করবে না, যারা নিজেদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে এবং রাসূলকে বের করে দেয়ার জন্য সংকল্প করেছে? আর তারাই প্রথম তোমাদের সাথে (যুদ্ধ) আরম্ভ করেছে [১]। তোমরা কি তাদেরকে ভয় কর? আল্লাহ্কে ভয় করাই তোমাদের পক্ষে বেশী সমীচীন যদি তোমরা মুমিন হও।
قَـٰتِلُوهُمۡ یُعَذِّبۡهُمُ ٱللَّهُ بِأَیۡدِیكُمۡ وَیُخۡزِهِمۡ وَیَنصُرۡكُمۡ عَلَیۡهِمۡ وَیَشۡفِ صُدُورَ قَوۡمࣲ مُّؤۡمِنِینَ ﴿١٤﴾
তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করবে। তোমাদের হাতে আল্লাহ্ তাদেরকে শাস্তি দেবেন, তাদেরকে অপদস্ত করবেন, তাদের উপর তোমাদেরকে বিজয়ী করেবেন এবং মুমিন সম্প্রদায়ের চিত্ত প্রশান্তি করবেন,
وَیُذۡهِبۡ غَیۡظَ قُلُوبِهِمۡۗ وَیَتُوبُ ٱللَّهُ عَلَىٰ مَن یَشَاۤءُۗ وَٱللَّهُ عَلِیمٌ حَكِیمٌ ﴿١٥﴾
আর তিনি তাদের [১] অন্তরের ক্ষোভ দূর করবেন এবং আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা তার তাওবা কবুল করবেন। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
أَمۡ حَسِبۡتُمۡ أَن تُتۡرَكُواْ وَلَمَّا یَعۡلَمِ ٱللَّهُ ٱلَّذِینَ جَـٰهَدُواْ مِنكُمۡ وَلَمۡ یَتَّخِذُواْ مِن دُونِ ٱللَّهِ وَلَا رَسُولِهِۦ وَلَا ٱلۡمُؤۡمِنِینَ وَلِیجَةࣰۚ وَٱللَّهُ خَبِیرُۢ بِمَا تَعۡمَلُونَ ﴿١٦﴾
তোমরা কি মনে করেছ যে, তোমাদেরকে এমনি ছেড়ে দেয়া হবে অথচ এখনও আল্লাহ্ প্রকাশ করেননি যে, তোমাদের মধ্যে কারা জিহাদ করেছে এবং কারা আল্লাহ্, তাঁর রাসূল ও মুমিনগণ ছাড়া অন্য কাউকেও অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহন করেনি [১]? আর তোমরা যা কর, সে সম্মন্ধে আল্লাহ্ সবিশেষে অবহিত।
مَا كَانَ لِلۡمُشۡرِكِینَ أَن یَعۡمُرُواْ مَسَـٰجِدَ ٱللَّهِ شَـٰهِدِینَ عَلَىٰۤ أَنفُسِهِم بِٱلۡكُفۡرِۚ أُوْلَـٰۤىِٕكَ حَبِطَتۡ أَعۡمَـٰلُهُمۡ وَفِی ٱلنَّارِ هُمۡ خَـٰلِدُونَ ﴿١٧﴾
মুশরিকরা যখন নিজেরাই নিজেদের কুফরী স্বীকার করে তখন তারা আল্লাহ্র মসজিদসমূহের আবাদ করবে--- এমন হতে পারে না [১]। তারা এমন যাদের সব কাজই নষ্ট হয়েছে [২] এবং তারা আগুনেই স্থায়ীভাবে অবস্থান করবে।
إِنَّمَا یَعۡمُرُ مَسَـٰجِدَ ٱللَّهِ مَنۡ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ وَأَقَامَ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَى ٱلزَّكَوٰةَ وَلَمۡ یَخۡشَ إِلَّا ٱللَّهَۖ فَعَسَىٰۤ أُوْلَـٰۤىِٕكَ أَن یَكُونُواْ مِنَ ٱلۡمُهۡتَدِینَ ﴿١٨﴾
তারাই তো আল্লাহ্র মসজিদের আবাদ করবে [১], যারা ঈমান আনে আল্লাহ্ ও শেষ দিনের প্রতি, সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করে না। অতএব, আশা করা যায়, তারা হবে সৎপথ প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত [২]।
۞ أَجَعَلۡتُمۡ سِقَایَةَ ٱلۡحَاۤجِّ وَعِمَارَةَ ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِ كَمَنۡ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ وَجَـٰهَدَ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِۚ لَا یَسۡتَوُۥنَ عِندَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿١٩﴾
হাজীদের জন্য পানি পান করানো ও মসজিদুল হারাম আবাদ করাকে তোমরা কি তার মত বিবেচনা কর, যে আল্লাহ্ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান এনেছে এবং আল্লাহ্র পথে জিহাদ করেছে [১]? তারা আল্লাহ্র কাছে সমান নয় [২]। আর আল্লাহ্ যলীম সম্প্রদায়কে হিদায়াত দেন না [৩]।
ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ وَهَاجَرُواْ وَجَـٰهَدُواْ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ بِأَمۡوَ ٰلِهِمۡ وَأَنفُسِهِمۡ أَعۡظَمُ دَرَجَةً عِندَ ٱللَّهِۚ وَأُوْلَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡفَاۤىِٕزُونَ ﴿٢٠﴾
যারা ঈমান এনেছে, হিজরত করেছে এবং নিজেদের সম্পদ ও নিজেদের জীবন দ্বারা আল্লাহ্র পথে জিহাদ করেছে তারা আল্লাহ্র কাছে মর্যদায় শ্রেষ্ঠ। আর তারাই সফলকাম [১]।
یُبَشِّرُهُمۡ رَبُّهُم بِرَحۡمَةࣲ مِّنۡهُ وَرِضۡوَ ٰنࣲ وَجَنَّـٰتࣲ لَّهُمۡ فِیهَا نَعِیمࣱ مُّقِیمٌ ﴿٢١﴾
তাদের রব তাদেরকে সুসংবাদ দিচ্ছেন, স্বীয় দয়া ও সন্তোষের [১] এবং এমন জান্নাতের যেখানে আছে তাদের জন্য স্থায়ী নেয়ামত।
خَـٰلِدِینَ فِیهَاۤ أَبَدًاۚ إِنَّ ٱللَّهَ عِندَهُۥۤ أَجۡرٌ عَظِیمࣱ ﴿٢٢﴾
সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে। নিশ্চয় আল্লাহ্র কাছে আছে মহাপুরস্কার [১]।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ لَا تَتَّخِذُوۤاْ ءَابَاۤءَكُمۡ وَإِخۡوَ ٰنَكُمۡ أَوۡلِیَاۤءَ إِنِ ٱسۡتَحَبُّواْ ٱلۡكُفۡرَ عَلَى ٱلۡإِیمَـٰنِۚ وَمَن یَتَوَلَّهُم مِّنكُمۡ فَأُوْلَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلظَّـٰلِمُونَ ﴿٢٣﴾
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের পিতৃবর্গ ও ভাতৃবৃন্দ যদি ঈমানের মুকাবিলায় কুফরীকে পছন্দ করে, তবে তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহন করো না [১]। তোমাদের মধ্যে যারা তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহন করে তারাই যালিম।
قُلۡ إِن كَانَ ءَابَاۤؤُكُمۡ وَأَبۡنَاۤؤُكُمۡ وَإِخۡوَ ٰنُكُمۡ وَأَزۡوَ ٰجُكُمۡ وَعَشِیرَتُكُمۡ وَأَمۡوَ ٰلٌ ٱقۡتَرَفۡتُمُوهَا وَتِجَـٰرَةࣱ تَخۡشَوۡنَ كَسَادَهَا وَمَسَـٰكِنُ تَرۡضَوۡنَهَاۤ أَحَبَّ إِلَیۡكُم مِّنَ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَجِهَادࣲ فِی سَبِیلِهِۦ فَتَرَبَّصُواْ حَتَّىٰ یَأۡتِیَ ٱللَّهُ بِأَمۡرِهِۦۗ وَٱللَّهُ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلۡفَـٰسِقِینَ ﴿٢٤﴾
বলুন, ‘তোমাদের নিকট যদি আল্লাহ্, তাঁর রাসূল এবং তাঁর (আল্লাহ্র) পথে জিহাদ করারা চেয়ে বেশি প্রিয় হয় [১] তোমাদের পিতৃবর্গ, তোমাদের সন্তানেরা, তোমাদের ভ্রাতাগণ, তোমাদের স্ত্রীগণ, তোমাদের আপনগোষ্ঠী, তোমাদের অর্জিত সম্পদ, তোমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য যার মন্দা পড়ার আশংকা কর এবং তোমাদের বাসস্থান যা তোমরf ভালবাস [২], তবে অপেক্ষা কর আল্লাহ্ তাঁর নির্দেশ নিয়ে আসা পর্যন্ত [৩]।’ আর আল্লাহ্ ফাসিক সম্প্রদায়কে হেদায়াত দেন না [৪]।
لَقَدۡ نَصَرَكُمُ ٱللَّهُ فِی مَوَاطِنَ كَثِیرَةࣲ وَیَوۡمَ حُنَیۡنٍ إِذۡ أَعۡجَبَتۡكُمۡ كَثۡرَتُكُمۡ فَلَمۡ تُغۡنِ عَنكُمۡ شَیۡـࣰٔا وَضَاقَتۡ عَلَیۡكُمُ ٱلۡأَرۡضُ بِمَا رَحُبَتۡ ثُمَّ وَلَّیۡتُم مُّدۡبِرِینَ ﴿٢٥﴾
অবশ্যই আল্লাহ্ তোমাদেরকে সাহায্য করেছেন বহু ক্ষেত্রে এবং হুনায়নের যুদ্ধের দিনে [১] যখন তোমাদেরকে উৎফুল্ল করেছিল তোমাদের সংখ্যাধিক্য হওয়া; কিন্তু তা তোমাদের কোনো কাজে আসেনি এবং বিস্তৃত হওয়া সত্বেও যমীন তোমাদের জন্য সংকুচিত হয়েছিল। তারপর তোমরা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে পালিয়েছিলে [২]।
ثُمَّ أَنزَلَ ٱللَّهُ سَكِینَتَهُۥ عَلَىٰ رَسُولِهِۦ وَعَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِینَ وَأَنزَلَ جُنُودࣰا لَّمۡ تَرَوۡهَا وَعَذَّبَ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْۚ وَذَ ٰلِكَ جَزَاۤءُ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿٢٦﴾
তারপর আল্লাহ্ তাঁর নিকট হতে তাঁর রাসূলের উপর ও মুমিনদের উপর প্রশান্তি নাযিল করেন [১] এবং এমন এক সৈন্যবাহিনী নাযিল করলেন যা তোমরা দেখতে পাওনি [২]। আর তিনি কাফেরদেরকে শাস্তি দিলেন; আর এটাই কাফেরদের প্রতিফল।
ثُمَّ یَتُوبُ ٱللَّهُ مِنۢ بَعۡدِ ذَ ٰلِكَ عَلَىٰ مَن یَشَاۤءُۗ وَٱللَّهُ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿٢٧﴾
এরপরও যার প্রতি ইচ্ছে আল্লাহ্ তার তাওবাহ্ কবুল করবেন; আর আল্লাহ্ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু [১]।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤاْ إِنَّمَا ٱلۡمُشۡرِكُونَ نَجَسࣱ فَلَا یَقۡرَبُواْ ٱلۡمَسۡجِدَ ٱلۡحَرَامَ بَعۡدَ عَامِهِمۡ هَـٰذَاۚ وَإِنۡ خِفۡتُمۡ عَیۡلَةࣰ فَسَوۡفَ یُغۡنِیكُمُ ٱللَّهُ مِن فَضۡلِهِۦۤ إِن شَاۤءَۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِیمٌ حَكِیمࣱ ﴿٢٨﴾
হে ঈমানদারগ্ণ ! মুশরিকরা তো অপবিত্র [১]; কাজেই এ বছরের পর [২] তারা যেন মসজিদুল হারামের ধারে-কাছে না আসে [৩]। আর যদি তোমরা দারিদ্রের আশংকা কর তবে আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে তাঁর নিজ করুণায় তোমাদেরকে অভাবমুক্ত করবেন [৪]। নিশ্চয় আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
قَـٰتِلُواْ ٱلَّذِینَ لَا یُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَلَا بِٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ وَلَا یُحَرِّمُونَ مَا حَرَّمَ ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥ وَلَا یَدِینُونَ دِینَ ٱلۡحَقِّ مِنَ ٱلَّذِینَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَـٰبَ حَتَّىٰ یُعۡطُواْ ٱلۡجِزۡیَةَ عَن یَدࣲ وَهُمۡ صَـٰغِرُونَ ﴿٢٩﴾
যাদেরকে কিতাব প্রদান করা হয়েছে [১] তাদের মধ্যে যারা আল্লাহ্তে ঈমান আনে না এবং শেষ দিনেও নয় এবং আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল যা হারাম করেছেন তা হারাম গণ্য করে না, আর সত্য দীন অনুসরণ করে ন; তাদের সাথে যুদ্ধ কর [২], যে পর্যন্ত না তারা নত হয়ে নিজ হাতে জিয্ইয়া [৩] দেয় [৪]।
وَقَالَتِ ٱلۡیَهُودُ عُزَیۡرٌ ٱبۡنُ ٱللَّهِ وَقَالَتِ ٱلنَّصَـٰرَى ٱلۡمَسِیحُ ٱبۡنُ ٱللَّهِۖ ذَ ٰلِكَ قَوۡلُهُم بِأَفۡوَ ٰهِهِمۡۖ یُضَـٰهِـُٔونَ قَوۡلَ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ مِن قَبۡلُۚ قَـٰتَلَهُمُ ٱللَّهُۖ أَنَّىٰ یُؤۡفَكُونَ ﴿٣٠﴾
আর ইয়াহূদীরা বলে, ‘উযাইর আল্লাহ্র পুত্র’ [১] এবং নাসারারা বলে, ‘মসীহ্ আল্লাহ্র পুত্র।’ এটা তাদের মুখের কথা আগে যারা কুফরী করেছিল তারা তাদের মত কথা বলে। আল্লাহ্ তাদেরকে ধ্বংস করুন। কোন্ দিকে তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে [২]!
ٱتَّخَذُوۤاْ أَحۡبَارَهُمۡ وَرُهۡبَـٰنَهُمۡ أَرۡبَابࣰا مِّن دُونِ ٱللَّهِ وَٱلۡمَسِیحَ ٱبۡنَ مَرۡیَمَ وَمَاۤ أُمِرُوۤاْ إِلَّا لِیَعۡبُدُوۤاْ إِلَـٰهࣰا وَ ٰحِدࣰاۖ لَّاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَۚ سُبۡحَـٰنَهُۥ عَمَّا یُشۡرِكُونَ ﴿٣١﴾
তারা আল্লাহ্ ব্যতীত তাদের পন্ডিত ও সংসার-বিরাগিদের [১] কে তাদের রবরূপে গ্রহণ করেছে [২] এবং মার্’ইয়াম- পুত্র মসীহ্ কেও। অথচ এক ইলাহের ‘ইবাদাত করার জন্যই তারা আদিষ্ট হয়েছিল। তিনি ব্যতীত অন্য কোনো সত্য ইলাহ্ নাই। তারা যে শরীক করে তা থেকে তিনি কত না পবিত্র [৩]!
یُرِیدُونَ أَن یُطۡفِـُٔواْ نُورَ ٱللَّهِ بِأَفۡوَ ٰهِهِمۡ وَیَأۡبَى ٱللَّهُ إِلَّاۤ أَن یُتِمَّ نُورَهُۥ وَلَوۡ كَرِهَ ٱلۡكَـٰفِرُونَ ﴿٣٢﴾
তারা তাদের মুখের ফুৎকারে আল্লাহ্র নূরকে নিভিয়ে দিতে চায়। কিন্তু আল্লাহ্ তাঁর নূর পরিপূর্ণ করা ছাড়া আর কিছু করতে অস্বীকার করেছেন। যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে [১]।
هُوَ ٱلَّذِیۤ أَرۡسَلَ رَسُولَهُۥ بِٱلۡهُدَىٰ وَدِینِ ٱلۡحَقِّ لِیُظۡهِرَهُۥ عَلَى ٱلدِّینِ كُلِّهِۦ وَلَوۡ كَرِهَ ٱلۡمُشۡرِكُونَ ﴿٣٣﴾
তিনিই সে সত্তা যিনি তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্যদীনসহ [১] পাঠিয়েছেন, যেন তিনি আর সব দীনের উপর একে বিজয়ী করেন, যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে [২]।
۞ یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤاْ إِنَّ كَثِیرࣰا مِّنَ ٱلۡأَحۡبَارِ وَٱلرُّهۡبَانِ لَیَأۡكُلُونَ أَمۡوَ ٰلَ ٱلنَّاسِ بِٱلۡبَـٰطِلِ وَیَصُدُّونَ عَن سَبِیلِ ٱللَّهِۗ وَٱلَّذِینَ یَكۡنِزُونَ ٱلذَّهَبَ وَٱلۡفِضَّةَ وَلَا یُنفِقُونَهَا فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ فَبَشِّرۡهُم بِعَذَابٍ أَلِیمࣲ ﴿٣٤﴾
হে ঈমানদারগণ! পণ্ডিত এবং সংসার-বিরাগীদের মধ্যে অনেকেই তো জনসাধারণের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে খায় এবং মানুষকে আল্লাহ্র পথ থেকে নিবৃত্ত করে [১]। আর যারা স্বর্ণ ও রৌপ্য পুঞ্জীভূত করে এবং তা আল্লাহ্র পথে ব্যয় করে না [২] আপনি তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দিন [৩]।
یَوۡمَ یُحۡمَىٰ عَلَیۡهَا فِی نَارِ جَهَنَّمَ فَتُكۡوَىٰ بِهَا جِبَاهُهُمۡ وَجُنُوبُهُمۡ وَظُهُورُهُمۡۖ هَـٰذَا مَا كَنَزۡتُمۡ لِأَنفُسِكُمۡ فَذُوقُواْ مَا كُنتُمۡ تَكۡنِزُونَ ﴿٣٥﴾
যেদিন জাহান্নামের আগুনে সেগুলোকে উত্তপ্ত করা হবে এবং সে সব দিয়ে তাদের কপাল, পাঁজর আর পিঠে দাগ দেয়া হবে। বলা হবে, ‘এগুলোই তা যা তোমরা নিজেদের জন্য পুঞ্জীভূত করতে। কাজেই তোমরা যা পুঞ্জীভূত করেছিলে তার স্বাদ ভোগ কর [১]।’
إِنَّ عِدَّةَ ٱلشُّهُورِ عِندَ ٱللَّهِ ٱثۡنَا عَشَرَ شَهۡرࣰا فِی كِتَـٰبِ ٱللَّهِ یَوۡمَ خَلَقَ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ مِنۡهَاۤ أَرۡبَعَةٌ حُرُمࣱۚ ذَ ٰلِكَ ٱلدِّینُ ٱلۡقَیِّمُۚ فَلَا تَظۡلِمُواْ فِیهِنَّ أَنفُسَكُمۡۚ وَقَـٰتِلُواْ ٱلۡمُشۡرِكِینَ كَاۤفَّةࣰ كَمَا یُقَـٰتِلُونَكُمۡ كَاۤفَّةࣰۚ وَٱعۡلَمُوۤاْ أَنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلۡمُتَّقِینَ ﴿٣٦﴾
নিশ্চয় আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টির দিন থেকেই [১] আল্লাহ্র বিধানে [২] আল্লাহ্র কাছে গণনায় মাস বারটি [৩], তার মধ্যে চারটি নিষিদ্ধ মাস [৪], এটাই প্রতিষ্ঠিত দীন [৫]। কাজেই এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি যুলুম করো না এবং তোমরা মুশরিকদের সাথে সর্বাত্মকভাবে যুদ্ধ কর, যেমন তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে যুদ্ধ করে থাকে। আর জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ্ মুত্তাকীদের সাথে আছেন।
إِنَّمَا ٱلنَّسِیۤءُ زِیَادَةࣱ فِی ٱلۡكُفۡرِۖ یُضَلُّ بِهِ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ یُحِلُّونَهُۥ عَامࣰا وَیُحَرِّمُونَهُۥ عَامࣰا لِّیُوَاطِـُٔواْ عِدَّةَ مَا حَرَّمَ ٱللَّهُ فَیُحِلُّواْ مَا حَرَّمَ ٱللَّهُۚ زُیِّنَ لَهُمۡ سُوۤءُ أَعۡمَـٰلِهِمۡۗ وَٱللَّهُ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿٣٧﴾
কোন মাসকে পিছিয়ে দেয়া তো শুধু কুফরীতে বৃদ্ধি সাধন করা, যা দিয়ে কাফেরদেরকে বিভ্রান্ত করা হয়। তারা এটাকে কোনো বছর বৈধ করে এবং কোনো বছর অবৈধ করে যাতে তারা, আল্লাহ্ যেগুলোকে নিষিদ্ধ করেছেন, সেগুলোর গণনা পূর্ণ করতে পারে, ফলে আল্লাহ্ যা হারাম করেছেন তা হালাল করে। তাদের মন্দ কাজগুলো তাদের জন্য শোভনীয় করা হয়েছে; আর আল্লাহ্ কাফের সম্প্রদায়কে হিদায়াত দেন না।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ مَا لَكُمۡ إِذَا قِیلَ لَكُمُ ٱنفِرُواْ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ ٱثَّاقَلۡتُمۡ إِلَى ٱلۡأَرۡضِۚ أَرَضِیتُم بِٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَا مِنَ ٱلۡـَٔاخِرَةِۚ فَمَا مَتَـٰعُ ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَا فِی ٱلۡـَٔاخِرَةِ إِلَّا قَلِیلٌ ﴿٣٨﴾
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের কি হল যে, যখন তোমাদেরকে আল্লাহ্র পথে অভিযানে বের হতে বলা হয়, তখন তোমরা ভারাক্রান্ত হয়ে যমীনে ঝুঁকে পড়ে? তোমরা কি আখেরাতের পরিবর্তে দুনিয়ার জীবনে পরিতুষ্ট হয়েছ? আখেরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবনের ভোগের উপকরণ তো নগণ্য [১]।
إِلَّا تَنفِرُواْ یُعَذِّبۡكُمۡ عَذَابًا أَلِیمࣰا وَیَسۡتَبۡدِلۡ قَوۡمًا غَیۡرَكُمۡ وَلَا تَضُرُّوهُ شَیۡـࣰٔاۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرٌ ﴿٣٩﴾
যদি তোমরা অভিযানে বের না হও, তবে তিনি তোমাদেরকে যন্ত্রণাদয়ক শাস্তি দেবেন এবং অন্য জাতিকে তোমাদের পরিবর্তে আনয়ন করবেন এবং তোমরা তাঁর কোনোই ক্ষতি করতে পারবে না। আর আল্লাহ্ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান [১]।
إِلَّا تَنصُرُوهُ فَقَدۡ نَصَرَهُ ٱللَّهُ إِذۡ أَخۡرَجَهُ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ ثَانِیَ ٱثۡنَیۡنِ إِذۡ هُمَا فِی ٱلۡغَارِ إِذۡ یَقُولُ لِصَـٰحِبِهِۦ لَا تَحۡزَنۡ إِنَّ ٱللَّهَ مَعَنَاۖ فَأَنزَلَ ٱللَّهُ سَكِینَتَهُۥ عَلَیۡهِ وَأَیَّدَهُۥ بِجُنُودࣲ لَّمۡ تَرَوۡهَا وَجَعَلَ كَلِمَةَ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ ٱلسُّفۡلَىٰۗ وَكَلِمَةُ ٱللَّهِ هِیَ ٱلۡعُلۡیَاۗ وَٱللَّهُ عَزِیزٌ حَكِیمٌ ﴿٤٠﴾
যদি তোমরা তাঁকে সাহায্য না কর, তবে আল্লাহ্ তো তাঁকে সাহায্য করেছিলেন যখন কাফেরেরা তাঁকে বহিস্কার করেছিল এবং তিনি ছিলেন দুজনের দ্বিতীয়জন, যখন তারা উভয়ে গুহায় ছিলেন; তিনি তখন তাঁর সঙ্গীকে বলেছিলেন, ‘বিষন্ন হয়ো না, আল্লাহ্ তো আমাদের সাথে আছেন।’ অতঃপর আল্লাহ্ তার উপর তাঁর প্রশান্তি নাযিল করেন এবং তাঁকে শক্তিশালী করেন এমন এক সৈন্যবাহিনী দ্বারা যা তোমরা দেখনি এবং তিনি কাফেরদের কথা হেয় করেন। আর আল্লাহ্র কথাই সমুন্নত এবং আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় [১]।
ٱنفِرُواْ خِفَافࣰا وَثِقَالࣰا وَجَـٰهِدُواْ بِأَمۡوَ ٰلِكُمۡ وَأَنفُسِكُمۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِۚ ذَ ٰلِكُمۡ خَیۡرࣱ لَّكُمۡ إِن كُنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ﴿٤١﴾
অভিযানে বের হয়ে পড়, হালকা অবস্থায় হোক বা ভারি অবস্থায় এবং জিহাদ কর আল্লাহ্র পথে তোমাদের সম্পদ ও জীবন দ্বারা। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে [১]!
لَوۡ كَانَ عَرَضࣰا قَرِیبࣰا وَسَفَرࣰا قَاصِدࣰا لَّٱتَّبَعُوكَ وَلَـٰكِنۢ بَعُدَتۡ عَلَیۡهِمُ ٱلشُّقَّةُۚ وَسَیَحۡلِفُونَ بِٱللَّهِ لَوِ ٱسۡتَطَعۡنَا لَخَرَجۡنَا مَعَكُمۡ یُهۡلِكُونَ أَنفُسَهُمۡ وَٱللَّهُ یَعۡلَمُ إِنَّهُمۡ لَكَـٰذِبُونَ ﴿٤٢﴾
যদি সহজে সম্পদ লাভের আশা থাকত ও সফর সহজ হত তবে তারা অবশ্যই আপনার অনুসরণ করত, কিন্তু তাদের কাছে যাত্রাপথ সুদীর্ঘ মনে হল। আর অচিরেই তারা আল্লাহ্র নামে শপথ করে বলবে, ‘পারলে আমরা নিশ্চই তোমাদের সাথে বের হতাম।‘ তারা তাদের নিজেদেরকেই ধ্বংস করে। আর আল্লাহ্ জানেন নিশ্চয় তারা মিথ্যাবাদী [১]।
عَفَا ٱللَّهُ عَنكَ لِمَ أَذِنتَ لَهُمۡ حَتَّىٰ یَتَبَیَّنَ لَكَ ٱلَّذِینَ صَدَقُواْ وَتَعۡلَمَ ٱلۡكَـٰذِبِینَ ﴿٤٣﴾
আল্লাহ্ আপনাকে ক্ষমা করেছেন। কারা সত্যবাদী তা আপনার কাছে স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত এবং কারা মিথ্যাবাদী তা না জানা পর্যন্ত আপনি কেন তাদেরকে অব্যাহতি দিলেন?
لَا یَسۡتَـٔۡذِنُكَ ٱلَّذِینَ یُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ أَن یُجَـٰهِدُواْ بِأَمۡوَ ٰلِهِمۡ وَأَنفُسِهِمۡۗ وَٱللَّهُ عَلِیمُۢ بِٱلۡمُتَّقِینَ ﴿٤٤﴾
যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে তারা নিজ সম্পদ ও জীবন দ্বারা জিহাদে যেতে আপনার কাছে অব্যাহতি প্রার্থনা করে না। আর আল্লাহ্ মুত্তাকীদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবগত।
إِنَّمَا یَسۡتَـٔۡذِنُكَ ٱلَّذِینَ لَا یُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ وَٱرۡتَابَتۡ قُلُوبُهُمۡ فَهُمۡ فِی رَیۡبِهِمۡ یَتَرَدَّدُونَ ﴿٤٥﴾
আপনার কাছে অব্যাহতি প্রার্থনা করে শুধু তারাই যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে না। আর তাদের অন্তরসমূহ সংশয়গ্রস্ত হয়ে গেছে, সুতরাং তারা আপন সংশয়ে দ্বিধাগ্রস্ত।
۞ وَلَوۡ أَرَادُواْ ٱلۡخُرُوجَ لَأَعَدُّواْ لَهُۥ عُدَّةࣰ وَلَـٰكِن كَرِهَ ٱللَّهُ ٱنۢبِعَاثَهُمۡ فَثَبَّطَهُمۡ وَقِیلَ ٱقۡعُدُواْ مَعَ ٱلۡقَـٰعِدِینَ ﴿٤٦﴾
আর যদি তারা বের হওয়ার ইচ্ছা করত, তবে অবশ্যই তারা সে জন্য প্রস্তুতির ব্যবস্থা করত, কিন্তু তাদের অভিযাত্রা আল্লাহ্ অপছন্দ করলেন। কাজেই তিনি তাদেরকে অলসতার মাধ্যমে বিরত রাখেন এবং তাদেরকে বলা হল, ‘যারা বসে আছে তাদের সাথে বসে থাক।‘
لَوۡ خَرَجُواْ فِیكُم مَّا زَادُوكُمۡ إِلَّا خَبَالࣰا وَلَأَوۡضَعُواْ خِلَـٰلَكُمۡ یَبۡغُونَكُمُ ٱلۡفِتۡنَةَ وَفِیكُمۡ سَمَّـٰعُونَ لَهُمۡۗ وَٱللَّهُ عَلِیمُۢ بِٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿٤٧﴾
যদি তারা তোমাদের সাথে বের হত, তবে তোমাদের ফাসাদই বৃদ্ধি করত এবং ফিৎনা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে তোমাদের মধ্যে ছুটোছুটি করত। আর তোমাদের মধ্যে তাদের জন্য কথা শুনার লোক রয়েছে [১]। আর আল্লাহ্ যালিমদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবগত।
لَقَدِ ٱبۡتَغَوُاْ ٱلۡفِتۡنَةَ مِن قَبۡلُ وَقَلَّبُواْ لَكَ ٱلۡأُمُورَ حَتَّىٰ جَاۤءَ ٱلۡحَقُّ وَظَهَرَ أَمۡرُ ٱللَّهِ وَهُمۡ كَـٰرِهُونَ ﴿٤٨﴾
অবশ্য তারা আগেও [১] ফিৎনা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল এবং তারা আপনার বহু কাজে ওলট-পালট করেছিল, অবশেষে সত্যের আগমন ঘটল এবং আল্লাহ্র হুকুম বিজয়ী হল [২], অথচ তারা ছিল অপছন্দকারী।
وَمِنۡهُم مَّن یَقُولُ ٱئۡذَن لِّی وَلَا تَفۡتِنِّیۤۚ أَلَا فِی ٱلۡفِتۡنَةِ سَقَطُواْۗ وَإِنَّ جَهَنَّمَ لَمُحِیطَةُۢ بِٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿٤٩﴾
আর তাদের মধ্যে এমন লোক আছে যে বলে, ‘আমাকে অব্যাহতি দিন এবং আমাকে ফিৎনায় ফেলবেন না।‘ সাবধান! তারাই ফিৎনাতে পড়ে আছে [১]। আর জাহান্নাম তো কাফেরদের বেষ্টন করেই আছে [২]।
إِن تُصِبۡكَ حَسَنَةࣱ تَسُؤۡهُمۡۖ وَإِن تُصِبۡكَ مُصِیبَةࣱ یَقُولُواْ قَدۡ أَخَذۡنَاۤ أَمۡرَنَا مِن قَبۡلُ وَیَتَوَلَّواْ وَّهُمۡ فَرِحُونَ ﴿٥٠﴾
আপনার মঙ্গল হলে তা তাদেরকে কষ্ট দেয়, আর আপনার বিপদ ঘটলে তারা বলে, ‘আমরা তো আগেই আমাদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করেছিলাম’ এবং তারা উৎফুল্ল চিত্তে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
قُل لَّن یُصِیبَنَاۤ إِلَّا مَا كَتَبَ ٱللَّهُ لَنَا هُوَ مَوۡلَىٰنَاۚ وَعَلَى ٱللَّهِ فَلۡیَتَوَكَّلِ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ﴿٥١﴾
বলুন, ‘আমাদের জন্য আল্লাহ্ যা লিখেছেন তা ছাড়া আমাদের অন্য কিছু ঘটবে না; তিনি আমাদের অভিভাবক। আর আল্লাহ্র উপরই মুমিনদের নির্ভর করা উচিত [১]।
قُلۡ هَلۡ تَرَبَّصُونَ بِنَاۤ إِلَّاۤ إِحۡدَى ٱلۡحُسۡنَیَیۡنِۖ وَنَحۡنُ نَتَرَبَّصُ بِكُمۡ أَن یُصِیبَكُمُ ٱللَّهُ بِعَذَابࣲ مِّنۡ عِندِهِۦۤ أَوۡ بِأَیۡدِینَاۖ فَتَرَبَّصُوۤاْ إِنَّا مَعَكُم مُّتَرَبِّصُونَ ﴿٥٢﴾
বলুন, ‘তোমরা আমাদের দুটি মঙ্গলের একটির প্রতীক্ষা করছ এবং আমরা প্রতীক্ষা করছি যে, আল্লাহ্ তোমাদেরকে শাস্তি দেবেন সরাসরি নিজ পক্ষ থেকে অথবা আমাদের হাত দ্বারা। অতএব তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমরাও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষা করছি [১]।
قُلۡ أَنفِقُواْ طَوۡعًا أَوۡ كَرۡهࣰا لَّن یُتَقَبَّلَ مِنكُمۡ إِنَّكُمۡ كُنتُمۡ قَوۡمࣰا فَـٰسِقِینَ ﴿٥٣﴾
বলুন, ‘তোমরা ইচ্ছাকৃত ব্যয় কর অথবা অনিচ্ছাকৃত, তোমাদের কাছে থেকে তা কিছুতেই গ্রহণ করা হবে না। নিশ্চয় তোমরা হচ্ছ ফাসিক সম্প্রদায়।’
وَمَا مَنَعَهُمۡ أَن تُقۡبَلَ مِنۡهُمۡ نَفَقَـٰتُهُمۡ إِلَّاۤ أَنَّهُمۡ كَفَرُواْ بِٱللَّهِ وَبِرَسُولِهِۦ وَلَا یَأۡتُونَ ٱلصَّلَوٰةَ إِلَّا وَهُمۡ كُسَالَىٰ وَلَا یُنفِقُونَ إِلَّا وَهُمۡ كَـٰرِهُونَ ﴿٥٤﴾
আর তাদের অর্থসাহায্য গ্রহন করা নিষেধ করা হয়েছে এজন্যেই যে, তারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের সাথে কুফরী করেছে [১] এবং সালাতে উপস্থিত হয় কেবল শৈথিল্যের সাথে, আর অর্থসাহায্য করে কেবল অনিচ্ছাকৃতভাবে [২]।
فَلَا تُعۡجِبۡكَ أَمۡوَ ٰلُهُمۡ وَلَاۤ أَوۡلَـٰدُهُمۡۚ إِنَّمَا یُرِیدُ ٱللَّهُ لِیُعَذِّبَهُم بِهَا فِی ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَا وَتَزۡهَقَ أَنفُسُهُمۡ وَهُمۡ كَـٰفِرُونَ ﴿٥٥﴾
কাজেই তাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি আপনাকে যেন বিমুগ্ধ না করে, আল্লাহ্ তো এসবের দ্বারাই তাদেরকে দুনিয়ার জীবনে শাস্তি দিতে চান। আর তাদের আত্মা দেহত্যাগ করবে কাফের থাকা অবস্থায় [১]।
وَیَحۡلِفُونَ بِٱللَّهِ إِنَّهُمۡ لَمِنكُمۡ وَمَا هُم مِّنكُمۡ وَلَـٰكِنَّهُمۡ قَوۡمࣱ یَفۡرَقُونَ ﴿٥٦﴾
আর তারা আল্লাহ্র নামে শপথ করে যে, তারা তোমাদেরই অন্তর্ভুক্ত, অথচ তারা তোমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়, বস্তুত তারা এমন এক সম্প্রদায়ের যারা ভয় করে থাকে।
لَوۡ یَجِدُونَ مَلۡجَـًٔا أَوۡ مَغَـٰرَ ٰتٍ أَوۡ مُدَّخَلࣰا لَّوَلَّوۡاْ إِلَیۡهِ وَهُمۡ یَجۡمَحُونَ ﴿٥٧﴾
তারা কোনো আশ্রয়স্থল, কোনো গিরিগুহা অথবা লুকিয়ে থাকার কোনো প্রবেশস্থল পেলে সেদিকেই পালিয়ে যাবে দ্রুততার সাথে।
وَمِنۡهُم مَّن یَلۡمِزُكَ فِی ٱلصَّدَقَـٰتِ فَإِنۡ أُعۡطُواْ مِنۡهَا رَضُواْ وَإِن لَّمۡ یُعۡطَوۡاْ مِنۡهَاۤ إِذَا هُمۡ یَسۡخَطُونَ ﴿٥٨﴾
আর তাদের মধ্যে এমন লোক আছে, যে সদকা বন্টন সম্পর্কে আপনাকে দোষারোপ করে, তারপর এর কিছু তাদেরকে দেয়া হলে [১] তারা সন্তুষ্ট হয়, আর এর কিছু তাদেরকে না দেয়া হলে সাথে সাথেই তারা বিক্ষুদ্ধ হয়।
وَلَوۡ أَنَّهُمۡ رَضُواْ مَاۤ ءَاتَىٰهُمُ ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥ وَقَالُواْ حَسۡبُنَا ٱللَّهُ سَیُؤۡتِینَا ٱللَّهُ مِن فَضۡلِهِۦ وَرَسُولُهُۥۤ إِنَّاۤ إِلَى ٱللَّهِ رَ ٰغِبُونَ ﴿٥٩﴾
আর ভাল হত যদি আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল তাদেরকে যা দিয়েছেন তাতে সন্তুষ্ট হত এবং বলত, ‘আল্লাহ্ই আমাদের জন্য যথেষ্ট, অচিরেই আল্লাহ্ আমাদেরকে দেবেন নিজ করুণায় ও তাঁর রাসূলও; নিশ্চয় আমরা আল্লাহ্রই প্রতি অনুরক্ত।
۞ إِنَّمَا ٱلصَّدَقَـٰتُ لِلۡفُقَرَاۤءِ وَٱلۡمَسَـٰكِینِ وَٱلۡعَـٰمِلِینَ عَلَیۡهَا وَٱلۡمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمۡ وَفِی ٱلرِّقَابِ وَٱلۡغَـٰرِمِینَ وَفِی سَبِیلِ ٱللَّهِ وَٱبۡنِ ٱلسَّبِیلِۖ فَرِیضَةࣰ مِّنَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ عَلِیمٌ حَكِیمࣱ ﴿٦٠﴾
সদকা [১] তো শুধু [২] ফকীর, মিসকীন [৩] ও সদকা আদায়ের কাজে নিযুক্ত কর্মচারীদের জন্য [৪], যাদের অন্তর আকৃষ্ট করতে হয় তাদের জন্য [৫], দাসমুক্তিতে [৬], ঋণ ভারাক্রান্তদের জন্য [৭], আল্লাহ্র পথে [৮] ও মুসাফিরদের [৯] জন্য। এটা আল্লাহ্র পক্ষ থেকে নির্ধারিত [১০]। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময় [১১]।
وَمِنۡهُمُ ٱلَّذِینَ یُؤۡذُونَ ٱلنَّبِیَّ وَیَقُولُونَ هُوَ أُذُنࣱۚ قُلۡ أُذُنُ خَیۡرࣲ لَّكُمۡ یُؤۡمِنُ بِٱللَّهِ وَیُؤۡمِنُ لِلۡمُؤۡمِنِینَ وَرَحۡمَةࣱ لِّلَّذِینَ ءَامَنُواْ مِنكُمۡۚ وَٱلَّذِینَ یُؤۡذُونَ رَسُولَ ٱللَّهِ لَهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمࣱ ﴿٦١﴾
আর তাদের মধ্যে এমন লোকও আছে যারা নবীকে কষ্ট দেয় এবং বলে, ‘সে তো কর্ণপাতকারী।’ বলুন, ‘তাঁর কান তোমাদের জন্য যা মঙ্গল তা-ই শুনে।‘ তিনি আল্লাহ্র উপর ঈমান আনেন এবং মুমিনদেরকে বিশ্বাস করে; আর তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার তিনি তাদের জন্য রহমত। আর যারা আল্লাহ্র রাসূলকে কষ্ট দেয় তাদের জন্য আছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি [১]।
یَحۡلِفُونَ بِٱللَّهِ لَكُمۡ لِیُرۡضُوكُمۡ وَٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥۤ أَحَقُّ أَن یُرۡضُوهُ إِن كَانُواْ مُؤۡمِنِینَ ﴿٦٢﴾
তারা তোমাদেরকে সন্তুষ্ট করার জন্য তোমাদের কাছে আল্লাহ্র শপথ করে [১]। অথচ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলই এর বেশি হকদার যে, তারা তাঁদেরকেই সন্তুষ্ট করবে [২], যদি তারা মুমিন হয়।
أَلَمۡ یَعۡلَمُوۤاْ أَنَّهُۥ مَن یُحَادِدِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَأَنَّ لَهُۥ نَارَ جَهَنَّمَ خَـٰلِدࣰا فِیهَاۚ ذَ ٰلِكَ ٱلۡخِزۡیُ ٱلۡعَظِیمُ ﴿٦٣﴾
তারা কি জানে না যে, যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করে [১] তার জন্য তো আছে জাহান্নামের আগুন, যেখানে সে স্থায়ী হবে? এটাই চরম লাঞ্ছনা।
یَحۡذَرُ ٱلۡمُنَـٰفِقُونَ أَن تُنَزَّلَ عَلَیۡهِمۡ سُورَةࣱ تُنَبِّئُهُم بِمَا فِی قُلُوبِهِمۡۚ قُلِ ٱسۡتَهۡزِءُوۤاْ إِنَّ ٱللَّهَ مُخۡرِجࣱ مَّا تَحۡذَرُونَ ﴿٦٤﴾
মুনাফেকরা ভয় করে, তাদের সম্পর্কে এমন এক সূরা না নাযিল হয়, যা ওদের অন্তরের কথা ব্যক্ত করে দেবে [১]! বলুন, ‘তোমরা বিদ্রূপ করতে থাক; তোমরা যা ভয় কর নিশ্চয় আল্লাহ্ তা বের করে দেবেন।‘
وَلَىِٕن سَأَلۡتَهُمۡ لَیَقُولُنَّ إِنَّمَا كُنَّا نَخُوضُ وَنَلۡعَبُۚ قُلۡ أَبِٱللَّهِ وَءَایَـٰتِهِۦ وَرَسُولِهِۦ كُنتُمۡ تَسۡتَهۡزِءُونَ ﴿٦٥﴾
আর আপনি তাদেরকে প্রশ্ন করলে অবশ্যই তারা বলবে, ‘আমরা তো আলাপ-আলোচনা ও খেলা-তামাশা করছিলাম।‘ বলুন, ‘তোমরা কি আল্লাহ্, তাঁর আয়াতসমূহ ও তাঁর রাসূলকে বিদ্রূপ করছিলে [১]?’
لَا تَعۡتَذِرُواْ قَدۡ كَفَرۡتُم بَعۡدَ إِیمَـٰنِكُمۡۚ إِن نَّعۡفُ عَن طَاۤىِٕفَةࣲ مِّنكُمۡ نُعَذِّبۡ طَاۤىِٕفَةَۢ بِأَنَّهُمۡ كَانُواْ مُجۡرِمِینَ ﴿٦٦﴾
‘তোমরা ওজর পেশ করো না। তোমরা তো ঈমান আনার পর কুফরী করেছ। আমরা তোমাদের মধ্যে কোনো দলকে ক্ষমা করলেও অন্য দলকে শাস্তি দেব---কারণ তারা অপরাধী [১]।
ٱلۡمُنَـٰفِقُونَ وَٱلۡمُنَـٰفِقَـٰتُ بَعۡضُهُم مِّنۢ بَعۡضࣲۚ یَأۡمُرُونَ بِٱلۡمُنكَرِ وَیَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمَعۡرُوفِ وَیَقۡبِضُونَ أَیۡدِیَهُمۡۚ نَسُواْ ٱللَّهَ فَنَسِیَهُمۡۚ إِنَّ ٱلۡمُنَـٰفِقِینَ هُمُ ٱلۡفَـٰسِقُونَ ﴿٦٧﴾
মুনাফেক পুরুষ ও মুনাফেক নারী একে অপরের অংশ, তারা অসৎকাজের নির্দেশ দেয় এবং সৎকাজে নিষেধ করে, তারা তাদের হাত গুটিয়ে রাখে, তারা আল্লাহ্কে ভুলে গিয়েছে, ফলে তিনিও তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছেন; মুনাফেকরা তো ফাসিক।
وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلۡمُنَـٰفِقِینَ وَٱلۡمُنَـٰفِقَـٰتِ وَٱلۡكُفَّارَ نَارَ جَهَنَّمَ خَـٰلِدِینَ فِیهَاۚ هِیَ حَسۡبُهُمۡۚ وَلَعَنَهُمُ ٱللَّهُۖ وَلَهُمۡ عَذَابࣱ مُّقِیمࣱ ﴿٦٨﴾
মুনাফেক পুরুষ, মুনাফেক নারী ও কাফেরদেরকে আল্লাহ্ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জাহান্নামের আগুনের, যেখানে তারা স্থায়ী হবে, এটাই তাদের জন্যে যথেষ্ট। আর আল্লাহ তাদেরকে লা’নত করেছেন এবং তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী শাস্তি;
كَٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِكُمۡ كَانُوۤاْ أَشَدَّ مِنكُمۡ قُوَّةࣰ وَأَكۡثَرَ أَمۡوَ ٰلࣰا وَأَوۡلَـٰدࣰا فَٱسۡتَمۡتَعُواْ بِخَلَـٰقِهِمۡ فَٱسۡتَمۡتَعۡتُم بِخَلَـٰقِكُمۡ كَمَا ٱسۡتَمۡتَعَ ٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِكُم بِخَلَـٰقِهِمۡ وَخُضۡتُمۡ كَٱلَّذِی خَاضُوۤاْۚ أُوْلَـٰۤىِٕكَ حَبِطَتۡ أَعۡمَـٰلُهُمۡ فِی ٱلدُّنۡیَا وَٱلۡـَٔاخِرَةِۖ وَأُوْلَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡخَـٰسِرُونَ ﴿٦٩﴾
তাদের মত, যারা তোমাদের পূর্বে ছিল, তারা শক্তিতে তোমাদের চেয়ে প্রবল ছিল এবং তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি ছিল তোমাদের চেয়ে বেশী। অতঃপর তারা তাদের ভাগ্যে যা ছিল তা ভোগ করেছে; আর তোমরাও তোমাদের ভগ্যে যা ছিল তা ভোগ করলে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীরা তাদের ভাগ্যে যা ছিল তা ভোগ করেছে। আর তোমরাও সেরূপ অনর্থক আলাপ-আলোচনায় লিপ্ত রয়েছ যেরূপ অনর্থক আলাপ-আলোচনায় তারা লিপ্ত ছিল [১]। ওরা তারাই যাদের আমল দুনিয়া ও আখেরাতে নিস্ফল হয়ে গিয়েছে, আর তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।
أَلَمۡ یَأۡتِهِمۡ نَبَأُ ٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِهِمۡ قَوۡمِ نُوحࣲ وَعَادࣲ وَثَمُودَ وَقَوۡمِ إِبۡرَ ٰهِیمَ وَأَصۡحَـٰبِ مَدۡیَنَ وَٱلۡمُؤۡتَفِكَـٰتِۚ أَتَتۡهُمۡ رُسُلُهُم بِٱلۡبَیِّنَـٰتِۖ فَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِیَظۡلِمَهُمۡ وَلَـٰكِن كَانُوۤاْ أَنفُسَهُمۡ یَظۡلِمُونَ ﴿٧٠﴾
তাদের পূর্ববর্তী নূহ, ‘আদ ও সামূদের সম্প্রদায়, ইবরাহীমের সম্প্রদায় এবং মাদ্ইয়ান ও বিধ্বস্ত নগরের অধিবাসীদের সংবাদ কি তাদের কাছে আসেনি? তাদের কাছে স্পষ্ট প্রমাণাদিসহ তাদের রাসূলগণ এসেছিলেন। অতএব, আল্লাহ্ এমন নন যে, তাদের উপর যুলম করেন, কিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি যুলুম করছিল।
وَٱلۡمُؤۡمِنُونَ وَٱلۡمُؤۡمِنَـٰتُ بَعۡضُهُمۡ أَوۡلِیَاۤءُ بَعۡضࣲۚ یَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَیَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَیُقِیمُونَ ٱلصَّلَوٰةَ وَیُؤۡتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَیُطِیعُونَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥۤۚ أُوْلَـٰۤىِٕكَ سَیَرۡحَمُهُمُ ٱللَّهُۗ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِیزٌ حَكِیمࣱ ﴿٧١﴾
আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী একে অপরের বন্ধু [১], তারা সৎকাজের নির্দেশ দেয় ও অসৎকাজে নিষেধ করে, সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে; তারাই, যাদেরকে আল্লাহ্ অচিরেই দয়া করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ وَٱلۡمُؤۡمِنَـٰتِ جَنَّـٰتࣲ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَا وَمَسَـٰكِنَ طَیِّبَةࣰ فِی جَنَّـٰتِ عَدۡنࣲۚ وَرِضۡوَ ٰنࣱ مِّنَ ٱللَّهِ أَكۡبَرُۚ ذَ ٰلِكَ هُوَ ٱلۡفَوۡزُ ٱلۡعَظِیمُ ﴿٧٢﴾
আল্লাহ্ মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জান্নাতের---যার নিচে নদীসমূহ প্রবাহিত, সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আরও (ওয়াদা দিচ্ছেন) স্থায়ী জান্নাতসমূহে উত্তম বাসস্থানের [১]। আর আল্লাহর সন্তুষ্টিই সর্বশ্রেষ্ঠ এবং এটাই মহাসাফল্য।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلنَّبِیُّ جَـٰهِدِ ٱلۡكُفَّارَ وَٱلۡمُنَـٰفِقِینَ وَٱغۡلُظۡ عَلَیۡهِمۡۚ وَمَأۡوَىٰهُمۡ جَهَنَّمُۖ وَبِئۡسَ ٱلۡمَصِیرُ ﴿٧٣﴾
হে নবী! কাফের ও মুনাফেকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করুন [১], তাদের প্রতি কঠোর হোন [২]; এবং তাদের আবাসস্থল জাহান্নাম, আর তা কত নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তন স্থল!
یَحۡلِفُونَ بِٱللَّهِ مَا قَالُواْ وَلَقَدۡ قَالُواْ كَلِمَةَ ٱلۡكُفۡرِ وَكَفَرُواْ بَعۡدَ إِسۡلَـٰمِهِمۡ وَهَمُّواْ بِمَا لَمۡ یَنَالُواْۚ وَمَا نَقَمُوۤاْ إِلَّاۤ أَنۡ أَغۡنَىٰهُمُ ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥ مِن فَضۡلِهِۦۚ فَإِن یَتُوبُواْ یَكُ خَیۡرࣰا لَّهُمۡۖ وَإِن یَتَوَلَّوۡاْ یُعَذِّبۡهُمُ ٱللَّهُ عَذَابًا أَلِیمࣰا فِی ٱلدُّنۡیَا وَٱلۡـَٔاخِرَةِۚ وَمَا لَهُمۡ فِی ٱلۡأَرۡضِ مِن وَلِیࣲّ وَلَا نَصِیرࣲ ﴿٧٤﴾
তারা আল্লাহ্র শপথ করে যে, তারা কিছু বলেনি [১]; অথচ তারা তো কুফরী বাক্য বলেছে এবং ইসলাম গ্রহণের পর তারা কুফরী করেছে; আর তারা এমন কিছুর সংকল্প করেছিল যা তারা পায়নি। আর আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করেছিলেন বলেই তারা বিরোধিতা করেছিল [২]। অতঃপর তারা তাওবাহ্ করলে তা তাদের জন্য ভাল হবে, আর তারা মুখ ফিরিয়ে নিলে আল্লাহ্ দুনিয়া ও আখেরাতে তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেবেন; আর যমীনে তাদের কোনো অভিভাবক নেই এবং কোনো সাহায্যকারীও নেই।
۞ وَمِنۡهُم مَّنۡ عَـٰهَدَ ٱللَّهَ لَىِٕنۡ ءَاتَىٰنَا مِن فَضۡلِهِۦ لَنَصَّدَّقَنَّ وَلَنَكُونَنَّ مِنَ ٱلصَّـٰلِحِینَ ﴿٧٥﴾
আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহ্র কাছে অঙ্গীকার করেছিল, ‘আল্লাহ্ নিজে কৃপায় আমাদেরকে দান করলে আমরা অবশ্যই সদকা দেব এবং অবশ্যই সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হবে।‘
فَلَمَّاۤ ءَاتَىٰهُم مِّن فَضۡلِهِۦ بَخِلُواْ بِهِۦ وَتَوَلَّواْ وَّهُم مُّعۡرِضُونَ ﴿٧٦﴾
অতঃপর যখন তিনি তাদেরকে নিজে অনুগ্রহ হতে দান করলেন, তখন তারা এ বিষয়ে কার্পণ্য করল এবং বিমুখ হয়ে ফিরে গেল।
فَأَعۡقَبَهُمۡ نِفَاقࣰا فِی قُلُوبِهِمۡ إِلَىٰ یَوۡمِ یَلۡقَوۡنَهُۥ بِمَاۤ أَخۡلَفُواْ ٱللَّهَ مَا وَعَدُوهُ وَبِمَا كَانُواْ یَكۡذِبُونَ ﴿٧٧﴾
পরিণামে তিনি তাদের অন্তরে মুনাফেকী রেখে দিলেন [১] সে দিন পর্যন্ত, যেদিন তারা তার সাথে সাক্ষাত করবে, তারা আল্লাহ্র কাছে যে অঙ্গীকার করেছিল তা ভঙ্গ করার কারণে এবং তারা যে মিথ্যা বলেছিল সে কারণে।
أَلَمۡ یَعۡلَمُوۤاْ أَنَّ ٱللَّهَ یَعۡلَمُ سِرَّهُمۡ وَنَجۡوَىٰهُمۡ وَأَنَّ ٱللَّهَ عَلَّـٰمُ ٱلۡغُیُوبِ ﴿٧٨﴾
তারা কি জানে না যে, নিশ্চয় আল্লাহ্ তাদের অন্তরের গোপন কথা ও তাদের গোপন পরামর্শ জানেন এবং নিশ্চয় আল্লাহ্ গায়েবসমূহের ব্যাপারে সম্যক জ্ঞাত?
ٱلَّذِینَ یَلۡمِزُونَ ٱلۡمُطَّوِّعِینَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ فِی ٱلصَّدَقَـٰتِ وَٱلَّذِینَ لَا یَجِدُونَ إِلَّا جُهۡدَهُمۡ فَیَسۡخَرُونَ مِنۡهُمۡ سَخِرَ ٱللَّهُ مِنۡهُمۡ وَلَهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمٌ ﴿٧٩﴾
মুমিনদের মধ্যে যারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সদকা দেয় এবং যারা নিজ শ্রম ছাড়া কিছুই পায় না, তাদেরকে যারা দোষারোপ করে [১]। অতঃপর তারা তাদের নিয়ে উপহাস করে, আল্লাহ্ তাদেরকে নিয়ে উপহাস করেন [২]; আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
ٱسۡتَغۡفِرۡ لَهُمۡ أَوۡ لَا تَسۡتَغۡفِرۡ لَهُمۡ إِن تَسۡتَغۡفِرۡ لَهُمۡ سَبۡعِینَ مَرَّةࣰ فَلَن یَغۡفِرَ ٱللَّهُ لَهُمۡۚ ذَ ٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ كَفَرُواْ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦۗ وَٱللَّهُ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلۡفَـٰسِقِینَ ﴿٨٠﴾
আপনি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন অথবা তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা না করুন একই কথা; আপনি সত্তর বার তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলেও আল্লাহ্ তাদেরকে কখনই ক্ষমা করবেন না। এটা এ জন্য যে, তারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের সাথে কুফরী করেছে। আর আল্লাহ্ ফাসেক সম্প্রদায়কে হিদায়াত দেন না [১]।
فَرِحَ ٱلۡمُخَلَّفُونَ بِمَقۡعَدِهِمۡ خِلَـٰفَ رَسُولِ ٱللَّهِ وَكَرِهُوۤاْ أَن یُجَـٰهِدُواْ بِأَمۡوَ ٰلِهِمۡ وَأَنفُسِهِمۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ وَقَالُواْ لَا تَنفِرُواْ فِی ٱلۡحَرِّۗ قُلۡ نَارُ جَهَنَّمَ أَشَدُّ حَرࣰّاۚ لَّوۡ كَانُواْ یَفۡقَهُونَ ﴿٨١﴾
যারা পিছনে রয়ে গেল [১] তারা আল্লাহ্র রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ [২] করে বসে থাকতেই আনন্দ বোধ করল এবং তাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহ্র পথে জিহাদ করা অপছন্দ করল এবং তারা বলল, ‘গরমের মধ্যে অভিযানে বের হয়ো না।‘ বলুন, ‘উত্তাপে জাহান্নামের আগুন প্রচন্ডতম [৩]’, যদি তারা বুঝত!
فَلۡیَضۡحَكُواْ قَلِیلࣰا وَلۡیَبۡكُواْ كَثِیرࣰا جَزَاۤءَۢ بِمَا كَانُواْ یَكۡسِبُونَ ﴿٨٢﴾
কাজেই তারা অল্প কিছু হেসে নিক, তারা প্রচুর কাঁদবে [১] সেসব কাজের প্রতিফল হিসেবে যা কিছু তারা করেছে।
فَإِن رَّجَعَكَ ٱللَّهُ إِلَىٰ طَاۤىِٕفَةࣲ مِّنۡهُمۡ فَٱسۡتَـٔۡذَنُوكَ لِلۡخُرُوجِ فَقُل لَّن تَخۡرُجُواْ مَعِیَ أَبَدࣰا وَلَن تُقَـٰتِلُواْ مَعِیَ عَدُوًّاۖ إِنَّكُمۡ رَضِیتُم بِٱلۡقُعُودِ أَوَّلَ مَرَّةࣲ فَٱقۡعُدُواْ مَعَ ٱلۡخَـٰلِفِینَ ﴿٨٣﴾
অতঃপর আল্লাহ্ যদি আপনাকে তাদের কোনো দলের কাছে ফেরত আনেন এবং তারা অভিযানে বের হওয়ার জন্য আপনার অনুমতি প্রার্থনা করে, তখন আপনি বলবেন, ‘তোমরা তো আমার সাথে কখনো বের হবে না [১] এবং তোমরা আমার সঙ্গী হয়ে কখনো শত্রুর সাথে যুদ্ধ করবে না। তোমরা তো প্রথমবার বসে থাকাই পছন্দ করেছিলে; কাজেই যারা পিছনে থাকে তাদের সাথে বসেই থাক।’
وَلَا تُصَلِّ عَلَىٰۤ أَحَدࣲ مِّنۡهُم مَّاتَ أَبَدࣰا وَلَا تَقُمۡ عَلَىٰ قَبۡرِهِۦۤۖ إِنَّهُمۡ كَفَرُواْ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَمَاتُواْ وَهُمۡ فَـٰسِقُونَ ﴿٨٤﴾
আর তাদের মধ্যে কারো মৃত্যু হলে আপনি কখনো তার জন্য জানাযার সালাত পড়বেন না এবং তার কবরের পাশে দাঁড়াবেন না [১]; তারা তো আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলকে অস্বীকার করেছিল এবং ফাসেক অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়েছে।
وَلَا تُعۡجِبۡكَ أَمۡوَ ٰلُهُمۡ وَأَوۡلَـٰدُهُمۡۚ إِنَّمَا یُرِیدُ ٱللَّهُ أَن یُعَذِّبَهُم بِهَا فِی ٱلدُّنۡیَا وَتَزۡهَقَ أَنفُسُهُمۡ وَهُمۡ كَـٰفِرُونَ ﴿٨٥﴾
আর তাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি আপনাকে যেন বিমুগ্ধ না করে; আল্লাহ্ তো এগুলোর দ্বারাই তাদেরকে পার্থিব জীবনে শাস্তি দিতে চান; আর তারা কাফের থাকা অবস্থায় তাদের আত্মা দেহ-ত্যাগ করে [১]।
وَإِذَاۤ أُنزِلَتۡ سُورَةٌ أَنۡ ءَامِنُواْ بِٱللَّهِ وَجَـٰهِدُواْ مَعَ رَسُولِهِ ٱسۡتَـٔۡذَنَكَ أُوْلُواْ ٱلطَّوۡلِ مِنۡهُمۡ وَقَالُواْ ذَرۡنَا نَكُن مَّعَ ٱلۡقَـٰعِدِینَ ﴿٨٦﴾
আর ‘আল্লাহর প্রতি ঈমান আন এবং রাসূলের সঙ্গী হয়ে জিহাদ কর’---এ মর্মে যখন কোন সূরা নাযিল হয় তখন তাদের মধ্যে যাদের শক্তিসামর্থ্য আছে তারা আপনার কাছে অব্যাহতি চায় এবং বলে, ‘আমাদেরকে রেহাই দিন, যারা বসে থাকে আমরা তাদের সাথেই থাকব।‘
رَضُواْ بِأَن یَكُونُواْ مَعَ ٱلۡخَوَالِفِ وَطُبِعَ عَلَىٰ قُلُوبِهِمۡ فَهُمۡ لَا یَفۡقَهُونَ ﴿٨٧﴾
তারা অন্তঃপুর বাসিনীদের সাথে অবস্থান করাই পছন্দ করেছে এবং তাদের অন্তরের উপর মোহর এঁটে দেয়া হলো; ফলে তারা বুঝতে পারে না।
لَـٰكِنِ ٱلرَّسُولُ وَٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ مَعَهُۥ جَـٰهَدُواْ بِأَمۡوَ ٰلِهِمۡ وَأَنفُسِهِمۡۚ وَأُوْلَـٰۤىِٕكَ لَهُمُ ٱلۡخَیۡرَ ٰتُۖ وَأُوْلَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ ﴿٨٨﴾
কিন্তু রাসূল এবং যারা তাঁরা সাথে ঈমান এনেছে তারা নিজ সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহ্র পথে জিহাদ করেছে; আর তারা তাদের জন্যই রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ এবং তারাই সফলকাম।
أَعَدَّ ٱللَّهُ لَهُمۡ جَنَّـٰتࣲ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَاۚ ذَ ٰلِكَ ٱلۡفَوۡزُ ٱلۡعَظِیمُ ﴿٨٩﴾
আল্লাহ্ তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন জান্নাত, যার নিচে নদী প্রবাহিত, যেখানে তারা স্থায়ী হবে; এটাই মহাসাফল্য।
وَجَاۤءَ ٱلۡمُعَذِّرُونَ مِنَ ٱلۡأَعۡرَابِ لِیُؤۡذَنَ لَهُمۡ وَقَعَدَ ٱلَّذِینَ كَذَبُواْ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥۚ سَیُصِیبُ ٱلَّذِینَ كَفَرُواْ مِنۡهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمࣱ ﴿٩٠﴾
আর মরুবাসীদের মধ্যে কিছু লোক অজুহাত পেশ করতে আসল যেন এদেরকে অব্যাহতি দেয়া হয় এবং যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের সাথে মিথ্যা বলেছিল, তারা বসে রইল, তাদের মধ্যে যারা কুফরী করেছে অচিরেই তারা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি পাবে [১]।
لَّیۡسَ عَلَى ٱلضُّعَفَاۤءِ وَلَا عَلَى ٱلۡمَرۡضَىٰ وَلَا عَلَى ٱلَّذِینَ لَا یَجِدُونَ مَا یُنفِقُونَ حَرَجٌ إِذَا نَصَحُواْ لِلَّهِ وَرَسُولِهِۦۚ مَا عَلَى ٱلۡمُحۡسِنِینَ مِن سَبِیلࣲۚ وَٱللَّهُ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿٩١﴾
যারা দুর্বল, যারা পীড়িত এবং যারা অর্থ সাহায্যে অসমর্থ, তাদের কোনো অপরাধ নেই, যদি আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের হিতাকাঙ্খী হয় [১]। মুহসিনদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো পথ নেই; আর আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
وَلَا عَلَى ٱلَّذِینَ إِذَا مَاۤ أَتَوۡكَ لِتَحۡمِلَهُمۡ قُلۡتَ لَاۤ أَجِدُ مَاۤ أَحۡمِلُكُمۡ عَلَیۡهِ تَوَلَّواْ وَّأَعۡیُنُهُمۡ تَفِیضُ مِنَ ٱلدَّمۡعِ حَزَنًا أَلَّا یَجِدُواْ مَا یُنفِقُونَ ﴿٩٢﴾
আর তাদেরও কোনো অপরাধ নেই যারা আপনার কাছে বাহনের জন্য আসলে আপনি বলেছিলেন, ‘তোমাদের জন্য কোনো বাহন আমি পাচ্ছি না’; তারা অশ্রুবিগলিত চোখে ফিরে গেল, কারণ তারা খরচ করার মত কিছুই পায়নি [১]।
۞ إِنَّمَا ٱلسَّبِیلُ عَلَى ٱلَّذِینَ یَسۡتَـٔۡذِنُونَكَ وَهُمۡ أَغۡنِیَاۤءُۚ رَضُواْ بِأَن یَكُونُواْ مَعَ ٱلۡخَوَالِفِ وَطَبَعَ ٱللَّهُ عَلَىٰ قُلُوبِهِمۡ فَهُمۡ لَا یَعۡلَمُونَ ﴿٩٣﴾
যারা অভাবমুক্ত হয়েও অব্যাহতি প্রার্থনা করেছে, অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কারণ আছে। তারা অন্তঃপুরবাসিনীদের সাথে থাকাই পছন্দ করেছিল; আর আল্লাহ্ তাদের অন্তরের উপর মোহর এঁটে দিয়েছেন, ফলে তারা জানতে পারে না।
یَعۡتَذِرُونَ إِلَیۡكُمۡ إِذَا رَجَعۡتُمۡ إِلَیۡهِمۡۚ قُل لَّا تَعۡتَذِرُواْ لَن نُّؤۡمِنَ لَكُمۡ قَدۡ نَبَّأَنَا ٱللَّهُ مِنۡ أَخۡبَارِكُمۡۚ وَسَیَرَى ٱللَّهُ عَمَلَكُمۡ وَرَسُولُهُۥ ثُمَّ تُرَدُّونَ إِلَىٰ عَـٰلِمِ ٱلۡغَیۡبِ وَٱلشَّهَـٰدَةِ فَیُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمۡ تَعۡمَلُونَ ﴿٩٤﴾
তোমরা তাদের কাছে ফিরে আসলে তারা তোমাদের কাছে অজুহাত পেশ করবে [১]। বলুন, ‘তোমরা অজুহাত পেশ করো না, আমরা তোমাদেরকে কখনো বিশ্বাস করব না; অবশ্যই আল্লাহ্ আমাদেরকে তোমাদের খবর জানিয়ে দিয়েছেন এবং আল্লাহ্ অবশ্যই তোমাদের কাজকর্ম দেখবেন এবং তাঁর রাসূলও। তারপর গায়েব ও প্রকাশ্যের জ্ঞানীর কাছে তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে, অতঃপর তোমরা যা করতে, তা তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দেবেন [২]।‘
سَیَحۡلِفُونَ بِٱللَّهِ لَكُمۡ إِذَا ٱنقَلَبۡتُمۡ إِلَیۡهِمۡ لِتُعۡرِضُواْ عَنۡهُمۡۖ فَأَعۡرِضُواْ عَنۡهُمۡۖ إِنَّهُمۡ رِجۡسࣱۖ وَمَأۡوَىٰهُمۡ جَهَنَّمُ جَزَاۤءَۢ بِمَا كَانُواْ یَكۡسِبُونَ ﴿٩٥﴾
তোমরা তাদের কাছে ফিরে আসলে অচিরেই তারা তোমাদের কাছে আল্লাহ্র শপথ করবে যাতে তোমরা তাদের উপেক্ষা কর [১]। কাজেই তোমরা তাদেরকে উপেক্ষা কর। নিশ্চয় তারা অপবিত্র এবং তাদের কৃতকর্মের ফলস্বরূপ জাহান্নামই তাদের আবাসস্থল।
یَحۡلِفُونَ لَكُمۡ لِتَرۡضَوۡاْ عَنۡهُمۡۖ فَإِن تَرۡضَوۡاْ عَنۡهُمۡ فَإِنَّ ٱللَّهَ لَا یَرۡضَىٰ عَنِ ٱلۡقَوۡمِ ٱلۡفَـٰسِقِینَ ﴿٩٦﴾
তারা তোমাদের কাছে শপথ করবে যাতে তোমরা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হও। অতঃপর তোমরা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হলেও আল্লাহ্ তো ফাসিক সম্প্রদায়ের প্রতি সন্তুষ্ট হবেন না [১]।
ٱلۡأَعۡرَابُ أَشَدُّ كُفۡرࣰا وَنِفَاقࣰا وَأَجۡدَرُ أَلَّا یَعۡلَمُواْ حُدُودَ مَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ عَلَىٰ رَسُولِهِۦۗ وَٱللَّهُ عَلِیمٌ حَكِیمࣱ ﴿٩٧﴾
আ’রাব [১] বা মরুবাসীরা কুফরী ও মুনাফেকীতে শক্ত এবং আল্লাহ্ তাঁর রাসূলের উপর যা নাযিল করেছেন, তার সীমারেখা সম্পর্কে অজ্ঞ থাকার অধিক উপযোগী [২]। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
وَمِنَ ٱلۡأَعۡرَابِ مَن یَتَّخِذُ مَا یُنفِقُ مَغۡرَمࣰا وَیَتَرَبَّصُ بِكُمُ ٱلدَّوَاۤىِٕرَۚ عَلَیۡهِمۡ دَاۤىِٕرَةُ ٱلسَّوۡءِۗ وَٱللَّهُ سَمِیعٌ عَلِیمࣱ ﴿٩٨﴾
আর মরুবাসীদের কেউ কেউ, যা তারা আল্লাহ্র পথে ব্যয় করে তা জরিমানা গণ্য করে এবং তোমাদের বিপর্যয়ের প্রতীক্ষা করে। তাদের উপরই হোক নিকৃষ্টতম বিপর্যয় [১]। আর আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
وَمِنَ ٱلۡأَعۡرَابِ مَن یُؤۡمِنُ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ وَیَتَّخِذُ مَا یُنفِقُ قُرُبَـٰتٍ عِندَ ٱللَّهِ وَصَلَوَ ٰتِ ٱلرَّسُولِۚ أَلَاۤ إِنَّهَا قُرۡبَةࣱ لَّهُمۡۚ سَیُدۡخِلُهُمُ ٱللَّهُ فِی رَحۡمَتِهِۦۤۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿٩٩﴾
আর মরুবাসীদের কেউ কেউ আল্লাহ্ ও শেষ দিনের উপর ঈমান রাখে এবং যা ব্যয় করে তাকে আল্লাহ্র সান্নিধ্য ও রাসূলের দো’আ লাভের উপায় গণ্য করে। জেনে রাখ, নিশ্চয় তা তাদের জন্য আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভের উপায়; অচিরেই আল্লাহ্ তাদেরকে নিজ রহমতে দাখিল করবেন [১]। নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু [২]।
وَٱلسَّـٰبِقُونَ ٱلۡأَوَّلُونَ مِنَ ٱلۡمُهَـٰجِرِینَ وَٱلۡأَنصَارِ وَٱلَّذِینَ ٱتَّبَعُوهُم بِإِحۡسَـٰنࣲ رَّضِیَ ٱللَّهُ عَنۡهُمۡ وَرَضُواْ عَنۡهُ وَأَعَدَّ لَهُمۡ جَنَّـٰتࣲ تَجۡرِی تَحۡتَهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَاۤ أَبَدࣰاۚ ذَ ٰلِكَ ٱلۡفَوۡزُ ٱلۡعَظِیمُ ﴿١٠٠﴾
আর মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যারা প্রথম অগ্রগামী [১] এবং যারা ইহসানের সাথে তাদের অনুসরণ করে [২] আল্লাহ্ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তাঁর উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন [৩]। আর তিনি তাদের জন্য তৈরী করেছেন জান্নাত, যার নিচে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে। এ তো মহাসাফল্য।
وَمِمَّنۡ حَوۡلَكُم مِّنَ ٱلۡأَعۡرَابِ مُنَـٰفِقُونَۖ وَمِنۡ أَهۡلِ ٱلۡمَدِینَةِ مَرَدُواْ عَلَى ٱلنِّفَاقِ لَا تَعۡلَمُهُمۡۖ نَحۡنُ نَعۡلَمُهُمۡۚ سَنُعَذِّبُهُم مَّرَّتَیۡنِ ثُمَّ یُرَدُّونَ إِلَىٰ عَذَابٍ عَظِیمࣲ ﴿١٠١﴾
আর মরুবাসীদের মধ্যে যারা তোমাদের আশপাশে আছে তাদের কেউ কেউ মুনাফেক এবং মদীনাবাসীদের মধ্যেও কেউ কেউ, তারা মুনাফেকীতে চরমে পৌছে গেছে। আপনি তাদেরকে জানেন না [১]; আমরা তাদেরকে জানি। অচিরেই আমরা তাদেরকে দু’বার শাস্তি দেব তারপর তাদেরকে মহাশাস্তির দিকে প্রত্যাবর্তন করানো হবে।
وَءَاخَرُونَ ٱعۡتَرَفُواْ بِذُنُوبِهِمۡ خَلَطُواْ عَمَلࣰا صَـٰلِحࣰا وَءَاخَرَ سَیِّئًا عَسَى ٱللَّهُ أَن یَتُوبَ عَلَیۡهِمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمٌ ﴿١٠٢﴾
আর অপর কিছু লোক আছে নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেছে, তারা এক সৎকাজের সাথে অন্য অসৎকাজ মিশিয়ে ফেলেছে; আল্লাহ্ হয়ত তাদেরকে ক্ষমা করবেন [১]; নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
خُذۡ مِنۡ أَمۡوَ ٰلِهِمۡ صَدَقَةࣰ تُطَهِّرُهُمۡ وَتُزَكِّیهِم بِهَا وَصَلِّ عَلَیۡهِمۡۖ إِنَّ صَلَوٰتَكَ سَكَنࣱ لَّهُمۡۗ وَٱللَّهُ سَمِیعٌ عَلِیمٌ ﴿١٠٣﴾
আপনি তাদের সম্পদ থেকে ‘সদকা’ গ্রহন করুন [১]। এর দ্বারা আপনি তাদেরকে পবিত্র করবেন এবং পরিশোধিত করবেন। আর আপনি তেদের জন্য দো’আ করুন। আপনার দো’আ তো তোদের জন্য প্রশান্তি কর [২]। আর আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
أَلَمۡ یَعۡلَمُوۤاْ أَنَّ ٱللَّهَ هُوَ یَقۡبَلُ ٱلتَّوۡبَةَ عَنۡ عِبَادِهِۦ وَیَأۡخُذُ ٱلصَّدَقَـٰتِ وَأَنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلتَّوَّابُ ٱلرَّحِیمُ ﴿١٠٤﴾
তারা কি জানে না যে, নিশ্চয় আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের তাওবাহ্ কবুল করেন এবং ‘সদকা’ গ্রহণ করেন [১], আর নিশ্চয় আল্লাহ্ তাওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু?
وَقُلِ ٱعۡمَلُواْ فَسَیَرَى ٱللَّهُ عَمَلَكُمۡ وَرَسُولُهُۥ وَٱلۡمُؤۡمِنُونَۖ وَسَتُرَدُّونَ إِلَىٰ عَـٰلِمِ ٱلۡغَیۡبِ وَٱلشَّهَـٰدَةِ فَیُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمۡ تَعۡمَلُونَ ﴿١٠٥﴾
আর বলুন, ‘তোমরা কাজ করতে থাক, আল্লাহ্ তো তোমাদের কাজকর্ম দেখবেন এবং তাঁর রাসূল ও মুমিনগণও। আর অচিরেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে গায়েব ও প্রকাশ্যের জ্ঞানীর নিকট, অতঃপর তিনি তোমরা যা করতে তা তোমাদেরকে জানিয়ে দেবেন।‘
وَءَاخَرُونَ مُرۡجَوۡنَ لِأَمۡرِ ٱللَّهِ إِمَّا یُعَذِّبُهُمۡ وَإِمَّا یَتُوبُ عَلَیۡهِمۡۗ وَٱللَّهُ عَلِیمٌ حَكِیمࣱ ﴿١٠٦﴾
আর আল্লাহর আদেশের প্রতীক্ষায় অপর কিছু সংখ্যক সম্পর্কে সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দেয়া হল--- তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন, না ক্ষমা করবেন [১]। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
وَٱلَّذِینَ ٱتَّخَذُواْ مَسۡجِدࣰا ضِرَارࣰا وَكُفۡرࣰا وَتَفۡرِیقَۢا بَیۡنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ وَإِرۡصَادࣰا لِّمَنۡ حَارَبَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ مِن قَبۡلُۚ وَلَیَحۡلِفُنَّ إِنۡ أَرَدۡنَاۤ إِلَّا ٱلۡحُسۡنَىٰۖ وَٱللَّهُ یَشۡهَدُ إِنَّهُمۡ لَكَـٰذِبُونَ ﴿١٠٧﴾
আর যারা মসজিদ নির্মাণ করেছে ক্ষতিসাধন [১], কুফরী ও মুমিনদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এবং এর আগে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যে লড়াই করেছে তার গোপন ঘাটিস্বরূপ ব্যবহারের উদ্দেশ্যে [২], আর তারা অবশই শপথ করবে, ‘আমরা কেবল ভালো চেয়েছি;’ আর আল্লাহ্ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, অবশ্যই তারা মিথ্যাবাদী।
لَا تَقُمۡ فِیهِ أَبَدࣰاۚ لَّمَسۡجِدٌ أُسِّسَ عَلَى ٱلتَّقۡوَىٰ مِنۡ أَوَّلِ یَوۡمٍ أَحَقُّ أَن تَقُومَ فِیهِۚ فِیهِ رِجَالࣱ یُحِبُّونَ أَن یَتَطَهَّرُواْۚ وَٱللَّهُ یُحِبُّ ٱلۡمُطَّهِّرِینَ ﴿١٠٨﴾
আপনি তাতে কখনো সালাতের জন্য দাঁড়াবেন না [১]; যে মসজিদের ভিত্তি প্রথম দিন থেকেই স্থাপিত হয়েছে তাক্ওয়ার উপর [২], তাই আপনার সালাতের জন্য দাঁড়ানোর বেশী হকদার। সেখানে এমন লোক আছে যারা উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন ভালবাসে, আর পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে আল্লাহ্ পছন্দ করেন[৩]।
أَفَمَنۡ أَسَّسَ بُنۡیَـٰنَهُۥ عَلَىٰ تَقۡوَىٰ مِنَ ٱللَّهِ وَرِضۡوَ ٰنٍ خَیۡرٌ أَم مَّنۡ أَسَّسَ بُنۡیَـٰنَهُۥ عَلَىٰ شَفَا جُرُفٍ هَارࣲ فَٱنۡهَارَ بِهِۦ فِی نَارِ جَهَنَّمَۗ وَٱللَّهُ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿١٠٩﴾
যে ব্যাক্তি তার ঘরের ভিত্তি আল্লাহ্র তাকওয়া ও সন্তুষ্টির উপর স্থাপন করে সে উত্তম, না ঐ ব্যাক্তি উত্তম যে তার ঘরের ভিত্তি স্থাপন করে এক খাদের ধ্বংসোন্মুখ কিনারে, ফলে যা তাকেসহ জাহান্নামের আগুনে গিয়ে পড়ে? আর আল্লাহ্ যালিম সম্প্রদায়কে হেদায়াত দেন না।
لَا یَزَالُ بُنۡیَـٰنُهُمُ ٱلَّذِی بَنَوۡاْ رِیبَةࣰ فِی قُلُوبِهِمۡ إِلَّاۤ أَن تَقَطَّعَ قُلُوبُهُمۡۗ وَٱللَّهُ عَلِیمٌ حَكِیمٌ ﴿١١٠﴾
তাদের ঘর যা তারা নির্মাণ করেছে তা তাদের অন্তরে সন্দেহের কারণ হয়ে থাকবে- যে পর্যন্ত না তাদের অন্তর ছিন্ন-বিছিন্ন হয়ে যায়। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
۞ إِنَّ ٱللَّهَ ٱشۡتَرَىٰ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ أَنفُسَهُمۡ وَأَمۡوَ ٰلَهُم بِأَنَّ لَهُمُ ٱلۡجَنَّةَۚ یُقَـٰتِلُونَ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ فَیَقۡتُلُونَ وَیُقۡتَلُونَۖ وَعۡدًا عَلَیۡهِ حَقࣰّا فِی ٱلتَّوۡرَىٰةِ وَٱلۡإِنجِیلِ وَٱلۡقُرۡءَانِۚ وَمَنۡ أَوۡفَىٰ بِعَهۡدِهِۦ مِنَ ٱللَّهِۚ فَٱسۡتَبۡشِرُواْ بِبَیۡعِكُمُ ٱلَّذِی بَایَعۡتُم بِهِۦۚ وَذَ ٰلِكَ هُوَ ٱلۡفَوۡزُ ٱلۡعَظِیمُ ﴿١١١﴾
নিশ্চয় আল্লাহ্ মুমিনদের কাছ থেকে তাদের জীবন ও সম্পদ কিনে নিয়েছেন (এর বিনিময়ে) যে, তাদের জন্য আছে জান্নাত। তারা আল্লাহ্র পথে যুদ্ধ করে, অতঃপর তারা মারে ও মরে। তাওরাত, ইনজীল ও কুরআনে এ সম্পর্কে তাদের হক ওয়াদা রয়েছে। আর নিজ প্রতিজ্ঞা পালনে আল্লাহর চেয়ে শ্রেষ্ঠতর কে আছে? সুতরাং তোমরা যে সওদা করেছ সে সওদার জন্য আনন্দিত হও। আর সেটাই তো মহাসাফল্য [১]।
ٱلتَّـٰۤىِٕبُونَ ٱلۡعَـٰبِدُونَ ٱلۡحَـٰمِدُونَ ٱلسَّـٰۤىِٕحُونَ ٱلرَّ ٰكِعُونَ ٱلسَّـٰجِدُونَ ٱلۡـَٔامِرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَٱلنَّاهُونَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَٱلۡحَـٰفِظُونَ لِحُدُودِ ٱللَّهِۗ وَبَشِّرِ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿١١٢﴾
তারা [১] তাওবাহকারী, ‘ইবাদাতকারী, আল্লাহ্র প্রশংসাকারী, সিয়াম পালনকারী [২], রুকূ’কারী, সিজদাকারী, সৎকাজের আদেশদাতা, অসৎকাজের নিষেধকারী এবং আল্লাহ্র নির্ধারিত সীমারেখা সংরক্ষণকারী [৩]; আর আপনি মুমিনদেরকে শুভ সংবাদ দিন।
مَا كَانَ لِلنَّبِیِّ وَٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤاْ أَن یَسۡتَغۡفِرُواْ لِلۡمُشۡرِكِینَ وَلَوۡ كَانُوۤاْ أُوْلِی قُرۡبَىٰ مِنۢ بَعۡدِ مَا تَبَیَّنَ لَهُمۡ أَنَّهُمۡ أَصۡحَـٰبُ ٱلۡجَحِیمِ ﴿١١٣﴾
আত্মীয়-স্বজন হলেও মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা নবী ও যারা ঈমান এনেছে তাদের জন্য সংগত নয় যখন এটা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে যে, নিশ্চিতই তারা প্রজ্বলিত আগুনের অধিবাসী [১]।
وَمَا كَانَ ٱسۡتِغۡفَارُ إِبۡرَ ٰهِیمَ لِأَبِیهِ إِلَّا عَن مَّوۡعِدَةࣲ وَعَدَهَاۤ إِیَّاهُ فَلَمَّا تَبَیَّنَ لَهُۥۤ أَنَّهُۥ عَدُوࣱّ لِّلَّهِ تَبَرَّأَ مِنۡهُۚ إِنَّ إِبۡرَ ٰهِیمَ لَأَوَّ ٰهٌ حَلِیمࣱ ﴿١١٤﴾
আর ইবরাহীম তাঁর পিতার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছিল, তাকে এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বলে; তারপর যখন এটা তার কাছে সুস্পষ্ট হল যে, সে আল্লাহ্র শত্রু তখন ইবরাহীম তার সম্পর্ক ছিন্ন করলেন। ইবরাহীম তো কোমল হৃদয় [১] ও সহনশীল।
وَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِیُضِلَّ قَوۡمَۢا بَعۡدَ إِذۡ هَدَىٰهُمۡ حَتَّىٰ یُبَیِّنَ لَهُم مَّا یَتَّقُونَۚ إِنَّ ٱللَّهَ بِكُلِّ شَیۡءٍ عَلِیمٌ ﴿١١٥﴾
আর আল্লাহ্ এমন নন যে, তিনি কোনো সম্প্রদায়কে হিদায়াত দানের পর তাদেরকে বিভ্রান্ত করবেন--- যতক্ষণ না তাদের জন্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করবেন, যা থেকে তারা তাক্ওয়া অবলম্বন করবে তা; নিশ্চয় আল্লাহ্ সবকিছু সম্পর্কে সর্বজ্ঞ।
إِنَّ ٱللَّهَ لَهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۖ یُحۡیِۦ وَیُمِیتُۚ وَمَا لَكُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ مِن وَلِیࣲّ وَلَا نَصِیرࣲ ﴿١١٦﴾
নিশ্চয় আল্লাহ্, আসমান ও যমীনের মালিকানা তাঁরই; তিনি জীবন দান করেন এবং তিনি মৃত্যু ঘটান। আর আল্লাহ্ ছাড়া তোমাদের কোনো অভিভাবক নেই, সাহায্যকারীও নেই।
لَّقَد تَّابَ ٱللَّهُ عَلَى ٱلنَّبِیِّ وَٱلۡمُهَـٰجِرِینَ وَٱلۡأَنصَارِ ٱلَّذِینَ ٱتَّبَعُوهُ فِی سَاعَةِ ٱلۡعُسۡرَةِ مِنۢ بَعۡدِ مَا كَادَ یَزِیغُ قُلُوبُ فَرِیقࣲ مِّنۡهُمۡ ثُمَّ تَابَ عَلَیۡهِمۡۚ إِنَّهُۥ بِهِمۡ رَءُوفࣱ رَّحِیمࣱ ﴿١١٧﴾
আল্লাহ্ অবশ্যই নবী, মুহাজির ও আনসারদের তাওবা কবুল করলেন, যারা তার অনুসরণ করেছিল সংকটময় মুহূর্তে [১]- তাদের এক দলের হৃদয় সত্যচুত হওয়ার উপক্রম হবার পর। তারপর আল্লাহ্ তাদের তাওবা কবুল করলেন; নিশ্চয় তিনি তাদের প্রতি অতি স্নেহশীল, পরম দয়ালু।
وَعَلَى ٱلثَّلَـٰثَةِ ٱلَّذِینَ خُلِّفُواْ حَتَّىٰۤ إِذَا ضَاقَتۡ عَلَیۡهِمُ ٱلۡأَرۡضُ بِمَا رَحُبَتۡ وَضَاقَتۡ عَلَیۡهِمۡ أَنفُسُهُمۡ وَظَنُّوۤاْ أَن لَّا مَلۡجَأَ مِنَ ٱللَّهِ إِلَّاۤ إِلَیۡهِ ثُمَّ تَابَ عَلَیۡهِمۡ لِیَتُوبُوۤاْۚ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلتَّوَّابُ ٱلرَّحِیمُ ﴿١١٨﴾
আর তিনি তাওবা কবুল করলেন অন্য তিনজনেরও [১], যাদের সম্পর্কে সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়েছিল, যে পর্যন্ত না যমীন বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও তাদের জন্য সেটা সংকুচিত হয়েছিল এবং তাদের জীবন তাদের জন্য দুর্বিষহ হয়েছিল আর তারা নিশ্চিত উপলব্ধি করেছিল যে, আল্লাহর পাকড়াও থেকে বাঁচার জন্য তিনি ছাড়া আর কোনো আশ্রয়স্থল নেই। তারপর তিনি তাদের তাওবাহ্ কবুল করলেন যাতে তারা তাওবায় স্থির থাকে। নিশ্চয় আল্লাহ্ অধিক তাওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَكُونُواْ مَعَ ٱلصَّـٰدِقِینَ ﴿١١٩﴾
হে ইমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ্র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক [১]।
مَا كَانَ لِأَهۡلِ ٱلۡمَدِینَةِ وَمَنۡ حَوۡلَهُم مِّنَ ٱلۡأَعۡرَابِ أَن یَتَخَلَّفُواْ عَن رَّسُولِ ٱللَّهِ وَلَا یَرۡغَبُواْ بِأَنفُسِهِمۡ عَن نَّفۡسِهِۦۚ ذَ ٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ لَا یُصِیبُهُمۡ ظَمَأࣱ وَلَا نَصَبࣱ وَلَا مَخۡمَصَةࣱ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ وَلَا یَطَـُٔونَ مَوۡطِئࣰا یَغِیظُ ٱلۡكُفَّارَ وَلَا یَنَالُونَ مِنۡ عَدُوࣲّ نَّیۡلًا إِلَّا كُتِبَ لَهُم بِهِۦ عَمَلࣱ صَـٰلِحٌۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا یُضِیعُ أَجۡرَ ٱلۡمُحۡسِنِینَ ﴿١٢٠﴾
মদীনাবাসী ও তাদের পার্শ্ববর্তী মরুবাসীদের জন্য সংগত নয় যে তারা আল্লাহ্র রাসূলের সহগামী না হয়ে পিছনে রয়ে যাবে এবং তার জীবনের চেয়ে নিজেদের জীবনকে প্রিয় মনে করবে; কারণ আল্লাহর পথে তাদেরকে যে তৃষ্ণা, ক্লান্তি ও ক্ষুদা পেয়ে বসে এবং কাফেরদের ক্রোধ উদ্রেক করে তাদের এমন প্রতিটি পদক্ষেপ আর শত্রুদেরকে কোনো কষ্ট প্রদান করে [১], তা তাদের জন্য সৎকাজরূপে লিপিবদ্ধ করা হয়। নিশ্চয় আল্লাহ্ মুহসিনদের কাজের প্রতিফল নষ্ট করেন না।
وَلَا یُنفِقُونَ نَفَقَةࣰ صَغِیرَةࣰ وَلَا كَبِیرَةࣰ وَلَا یَقۡطَعُونَ وَادِیًا إِلَّا كُتِبَ لَهُمۡ لِیَجۡزِیَهُمُ ٱللَّهُ أَحۡسَنَ مَا كَانُواْ یَعۡمَلُونَ ﴿١٢١﴾
আর তারা ছোট বা বড় যা কিছুই ব্যয় করে এবং যে কোন প্রান্তরই অতিক্রম করে তা তাদের অনুকূলে লিপিবদ্ধ হয়--- যাতে তারা যা করে আল্লাহ্ তার উৎকৃষ্টতর পুরস্কার তাদেরকে দিতে পারেন।
۞ وَمَا كَانَ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ لِیَنفِرُواْ كَاۤفَّةࣰۚ فَلَوۡلَا نَفَرَ مِن كُلِّ فِرۡقَةࣲ مِّنۡهُمۡ طَاۤىِٕفَةࣱ لِّیَتَفَقَّهُواْ فِی ٱلدِّینِ وَلِیُنذِرُواْ قَوۡمَهُمۡ إِذَا رَجَعُوۤاْ إِلَیۡهِمۡ لَعَلَّهُمۡ یَحۡذَرُونَ ﴿١٢٢﴾
আর মুমিনদের সকলের একসাথে অভিযানে বের হওয়া সংগত নয়। অতঃপর তাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ কেন বের হয় না, যাতে তারা দীনের গভীর জ্ঞান অর্জন [১] করতে পারে [২] এবং তাদের সম্প্রদায়কে ভীতিপ্রদর্শন করতে পারে, যখন তারা তাদের কাছে ফিরে আসবে [৩], যাতে তারা সতর্ক হয়।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ قَـٰتِلُواْ ٱلَّذِینَ یَلُونَكُم مِّنَ ٱلۡكُفَّارِ وَلۡیَجِدُواْ فِیكُمۡ غِلۡظَةࣰۚ وَٱعۡلَمُوۤاْ أَنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلۡمُتَّقِینَ ﴿١٢٣﴾
হে ঈমানদারগণ! কাফেরদের মধ্যে যারা তোমাদের কাছাকাছি তাদের সাথে যুদ্ধ কর [১] এবং তারা যেন তোমাদের মধ্যে কঠোরতা [২] দেখতে পায়। আর জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ্ মুত্তাকীদের সাথে আছেন।
وَإِذَا مَاۤ أُنزِلَتۡ سُورَةࣱ فَمِنۡهُم مَّن یَقُولُ أَیُّكُمۡ زَادَتۡهُ هَـٰذِهِۦۤ إِیمَـٰنࣰاۚ فَأَمَّا ٱلَّذِینَ ءَامَنُواْ فَزَادَتۡهُمۡ إِیمَـٰنࣰا وَهُمۡ یَسۡتَبۡشِرُونَ ﴿١٢٤﴾
আর যখনই কোনো সূরা নাযিল হয়। তখন তাদের কেউ কেউ বলে, ‘এটা তোমাদের মধ্যে কার ঈমান বৃদ্ধি করল [১]? অতঃপর যারা মুমিন এটা তাদেরই ঈমান বৃদ্ধি করে এবং তারাই আনন্দিত হয়।
وَأَمَّا ٱلَّذِینَ فِی قُلُوبِهِم مَّرَضࣱ فَزَادَتۡهُمۡ رِجۡسًا إِلَىٰ رِجۡسِهِمۡ وَمَاتُواْ وَهُمۡ كَـٰفِرُونَ ﴿١٢٥﴾
আর যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে, এটা তাদের কলুষের সাথে আরো কলুষ যুক্ত করে। আর তাদের মৃত্যু ঘটে কাফের অবস্থায়।
أَوَلَا یَرَوۡنَ أَنَّهُمۡ یُفۡتَنُونَ فِی كُلِّ عَامࣲ مَّرَّةً أَوۡ مَرَّتَیۡنِ ثُمَّ لَا یَتُوبُونَ وَلَا هُمۡ یَذَّكَّرُونَ ﴿١٢٦﴾
তারা কি দেখে না যে, ‘তাদেরকে প্রতিবছর একবার বা দু’বার বিপর্যস্ত করা হয় [১]?’ এর পরও তারা তাওবাহ্ করে না এবং উপদেশ গ্রহন করে না।
وَإِذَا مَاۤ أُنزِلَتۡ سُورَةࣱ نَّظَرَ بَعۡضُهُمۡ إِلَىٰ بَعۡضٍ هَلۡ یَرَىٰكُم مِّنۡ أَحَدࣲ ثُمَّ ٱنصَرَفُواْۚ صَرَفَ ٱللَّهُ قُلُوبَهُم بِأَنَّهُمۡ قَوۡمࣱ لَّا یَفۡقَهُونَ ﴿١٢٧﴾
আর যখনই কোন সূরা নাযিল হয়, তখন তারা একে অপরের দিকে তাকায় এবং জিজ্ঞেস করে, ‘তোমাদেরকে কেউ লক্ষ্য করছে কি?’ তারপর তারা সরে পড়ে। আল্লাহ্ তাদের হৃদয়কে সত্যবিমুখ করে দেন। কারণ, তারা এমন এক সম্প্রদায় যারা ভালভাবে বোঝে না।
لَقَدۡ جَاۤءَكُمۡ رَسُولࣱ مِّنۡ أَنفُسِكُمۡ عَزِیزٌ عَلَیۡهِ مَا عَنِتُّمۡ حَرِیصٌ عَلَیۡكُم بِٱلۡمُؤۡمِنِینَ رَءُوفࣱ رَّحِیمࣱ ﴿١٢٨﴾
অবশ্যই তোমাদের নিকট তোমাদের মধ্য হতেই একজন রাসূল এসেছেন, তোমাদের যে দুঃখ-কষ্ট হয়ে থাকে তা তার জন্য বড়ই বেদনাদায়ক। তিনি তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি তিনি করুণাশীল ও অতি দয়ালু [১]।
فَإِن تَوَلَّوۡاْ فَقُلۡ حَسۡبِیَ ٱللَّهُ لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَۖ عَلَیۡهِ تَوَكَّلۡتُۖ وَهُوَ رَبُّ ٱلۡعَرۡشِ ٱلۡعَظِیمِ ﴿١٢٩﴾
অতঃপর তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে আপনি বলুন, ‘আমার জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট, তিনি ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ্ নেই [১]। আমি তাঁরই উপর নির্ভর করি এবং তিনি মহা’আরশের [২] রব।‘